অধ্যায় ৩৫

সিংহাসন থেকে সাতটি বজ্র উৎসারিত হয়ে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডকে আন্দোলিত করে তোলে, স্বর্গ ও পৃথিবীকে ওলটপালট করে দেয়, এবং আকাশজুড়ে সেই ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। এই আওয়াজ কর্ণবিদারী, মানুষ তা এড়িয়ে যেতে পারে না, এর থেকে লুকিয়েও পড়তে পারে না। বজ্র ও বিদ্যুৎ নিক্ষিপ্ত হয়, এবং এক মুহূর্তের মধ্যে, স্বর্গ ও পৃথিবীর রূপান্তর ঘটে এবং মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এবং বিদ্যুতের গতি যত বাড়ে, এই মহাবিশ্ব, স্বর্গ থেকে পতিত প্রবল ঝড়বৃষ্টির দ্বারা আবৃত হয়! পৃথিবীর সুদূরতম কোণও এই বারিধারায় সিঞ্চিত হয়, এই বৃষ্টিধারা কোনো কলিমা সহ্য না করে পা থেকে মাথা অবধি ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়; কোনোকিছুকেই এর থেকে লুকিয়ে রাখা যাবে না, কোনো ব্যক্তিই এর হাত থেকে নিজেকে বন্ধ করে রাখতে পারবে না। বিদ্যুৎ-ঝলকানির মতো বজ্রপাতেও যে শীতল আলোর আভা রয়েছে তা মানুষকে ভয়ে কম্পিত করে তোলে! দুদিকে ধার বিশিষ্ট এই তরোয়াল বিদ্রোহের পুত্রদের আঘাত করে পতিত করে এবং শত্রুরা প্রবল বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়, তাদের লুকোনোর কোনো জায়গা থাকে না, ঝড় ও বৃষ্টির বেগে তারা হতভম্ব হয়ে পড়ে, এবং, এই আঘাতে সুতীব্রভাবে আহত হয়ে, মুহূর্তের মধ্যে সেই প্রবহমান জলরাশির মধ্যে তাদের মৃত্যু হয় এবং তারা ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায়। সেখানে শুধু মৃত্যুই রয়েছে, তাদের বেঁচে থাকার কোনো পথ নেই। আমার কাছ থেকে সাতটি বজ্র নির্ঘোষিত হয় এবং আমার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে, যা হল মিশরের জ্যেষ্ঠ পুত্রদের আঘাত করা, দুষ্টদের শাস্তি দিয়ে আমার গির্জাকে পরিশুদ্ধ করা, যাতে সকলেরই পরস্পরের প্রতি নৈকট্যবোধ থাকে এবং নিজেদের প্রতি সততার সঙ্গে আচরণ করতে পারে এবং আমার সঙ্গে অভিন্নহৃদয় হতে পারে, এবং যাতে এই মহাবিশ্বের সমস্ত গির্জা এক হয়ে হয়ে যেতে পারে। এটিই আমার উদ্দেশ্য।

এই বজ্র ধ্বনিত হয় এবং তার অনুসরণেই ক্রন্দনরোল উত্থিত হয়। কেউ কেউ তাদের সুষুপ্তি ভেঙে জেগে ওঠে, এবং ভীষণভাবে আশঙ্কিত হয়ে, তারা নিজেদের আত্মার গভীরে অনুসন্ধান করে সিংহাসনের সামনে ছুটে আসে। তারা তাদের অবাধ ছল-চাতুরি ও কুৎসিত কাণ্ডকারখানা বন্ধ করে দেয়; এই ধরনের মানুষদের জেগে ওঠার জন্য খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি। আমি সিংহাসন থেকে লক্ষ্য করি। আমি মানুষের হৃদয়ের অন্তঃস্থল তলিয়ে দেখি। যারা আমাকে আন্তরিক এবং আকুল ভাবে কামনা করে আমি তাদের উদ্ধার করি এবং আমি তাদের করুণা করি। আমাকে যারা নিজের হৃদয়ে অন্য সমস্ত কিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসে, যারা আমার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করে এবং পথের শেষ অবধি আমাকে অনুসরণ করে, তাদের অনন্তকালের জন্য উদ্ধার করি। আমার হাত তাদের নিরাপদ ভাবে ধরে রাখে যাতে তারা সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি না হয় এবং তাদের কোনো ক্ষতি না হয়। কেউ কেউ এই বিদ্যুৎ-ঝলকানি যখন দেখে তখন তারা হৃদয়ে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা অনুভব করে এবং চূড়ান্ত ভাবে অনুতপ্ত বোধ করে। এই ধরনের আচরণে তারা যদি অনড় হয়ে থাকে তাহলে তাদের পক্ষে খুব দেরি হয়ে গিয়েছে। আহ্‌, সব এবং সকলকিছু! সব কিছুই তাদের জন্য শেষ। এও আমার পরিত্রাণেরই এক উপায়। আমাকে যারা ভালোবাসে তাদের আমি উদ্ধার করি এবং দুষ্টদের বিনাশ করি, এবং পৃথিবীতে আমার রাজ্যকে আমি সুস্থিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করি এবং সমস্ত দেশ, সমস্ত মনুষ্যজাতি, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড ও পৃথিবীর শেষ প্রান্তে যারা রয়েছে তাদের জানাই যে, আমিই মহামহিম, আমিই প্রজ্জ্বলিত অগ্নি, আমিই সেই ঈশ্বর যিনি প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের অন্তঃস্থল সন্ধান করেন। এই সময়ের পর থেকে থেকে মহান শুভ্র সিংহাসনের বিচার জনসাধারণের কাছে এবং সকল মনুষ্যের নিকটে প্রকাশ্যে উদ্ঘাটিত হয়েছে, এবং এই মর্মে ঘোষিত হয়েছে যে, বিচারের সূচনা ঘটেছে! সন্দেহাতীত ভাবেই, যে সকলের সেই সমস্ত বাক্য হৃদয় থেকে অনুভূত হয়নি, যারা সন্দিহান এবং নিশ্চিত নয়, যে সমস্ত সময় অপচয়কারী আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করেও তা বাস্তবে প্রয়োগ করে না – তাদের সকলের বিচার হবেই। তোমাদের অবশ্যই নিজেদের অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্যগুলিকে পরীক্ষা করে দেখার উদ্দেশ্যে যত্ন নিতে হবে, এবং নিজেদের সঠিক স্থান গ্রহণ করতে হবে; আমার বাক্যগুলি ঐকান্তিক ভাবে অনুশীলন করো, নিজেদের জীবন অভিজ্ঞতাকে মূল্য দাও, কিন্তু অগভীর উদ্যম নিয়ে কাজ কোরো না, বরং নিজেদের জীবনকে আরো বিকশিত, পরিণত, সুস্থিত এবং অভিজ্ঞ করে তোলো – একমাত্র তারপরেই তোমরা আমার ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

শয়তানের দালাল ও দুরাত্মাদের নিজেদের স্বার্থে আমার নির্মাণকে ব্যাহত ও ধ্বংস করার কোনো সুযোগ তাদের দিয়ো না। তাদের প্রচণ্ডভাবে সীমিত ও আবদ্ধ করে রাখতেই হবে, একমাত্র ধারালো তরোয়াল দিয়েই তাদের মোকাবিলা করা যেতে পারে। ভবিষ্যতের সমস্যা এড়ানোর জন্য যারা সবচেয়ে দুষ্ট তাদের অবিলম্বে নির্মূল করতে হবে। এবং গীর্জা নিখুঁত হবে, সমস্ত বিকৃতি থেকে মুক্ত হবে এবং তা সুস্থ তথা জীবনীশক্তি ও তেজে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। বিদ্যুতের ঝলকানির পরেই মুহুর্মুহু বজ্রধ্বনি শোনা যায়। তোমরা একে উপেক্ষা কোরো না, কোনো মতেই হাল ছেড়ে দিয়ো না, বরং এর নাগাল পাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করো, তাহলে তোমরা ভাবে দেখতে সক্ষম হবে যে আমার হস্ত কী কার্য সম্পাদন করে, আমি কী অর্জন করতে চাই, আমি কী বর্জন করতে চাই, কী আমি নিখুঁত করতে চাই, আমি কী নির্মূল করতে চাই এবং আমি কী বিনাশ করতে চাই – এ সমস্ত কিছুই তোমাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হবে এবং আমার অসীম শক্তি চাক্ষুষ করতে তোমাদের অনুমোদিত করবে।

এই সিংহাসনে থেকে সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডে এবং পৃথিবীর শেষ প্রান্তে সাতটি বজ্র প্রতিধ্বনিত হয়। এক বিরাট সংখ্যক মানুষ উদ্ধার পাবে এবং আমার সিংহাসনের সামনে নিজেদের সমর্পণ করবে। জীবনের এই আলোকে অনুসরণ করে মানুষ বেঁচে থাকার পথ অনুসন্ধান করবে এবং তখন আমার কাছে না এসে, উপাসনায় নতজানু না হয়ে, এবং মুখ দিয়ে সর্বশক্তিমান ইশ্বরের নাম উচ্চারণ না করে, এবং কণ্ঠ দিয়ে নিজেদের অনুনয় না জানিয়ে তারা পারবে না। কিন্তু যারা আমাকে প্রতিরোধ করে, যারা নিজেদের হৃদয় কঠিন করে রাখে এই বজ্রনির্ঘোষ তাদের কানে প্রতিধ্বনিত হবে এবং সন্দেহাতীত ভাবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবেই। এই পরিণামই তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমার যে প্রিয়পুত্ররা বিজয়ী হয় তারা সিয়োনেই অবস্থান করবে, এবং তারা কী অর্জন করবে তা সমস্ত মানূষ চাক্ষুষ করতে পারবে, এবং তোমাদের সামনে অপার মহিমা উদ্ভাসিত হবে। প্রকৃত পক্ষেই এ এক বিরাট আশীর্বাদ, এ এমন এক মাধুর্য যার তুলনা করা খুব কঠিন।

আমাকে যারা ভালোবাসে, সত্য হৃদয় দিয়ে যারা আমাকে কামনা করে, উৎসারিত এই সপ্তবজ্রধ্বনিই তাদের জন্য পরিত্রাণ। যারা আমার অধীন এবং যাদের আমি পূর্বনির্ধারণ ও নির্বাচন করেছি তারা সকলেই আমার নামের ছত্রছায়ায় আসতে সক্ষম। তারা আমার কণ্ঠস্বর শুনতে পায়, যা হল তাদের প্রতি ঈশ্বরের আহ্বান। পৃথিবীর শেষপ্রান্তগুলিতে যারা রয়েছে তারা দেখুক যে আমি ন্যায়পরায়ণ, আমি বিশ্বস্ত, আমি মায়ামমতাময়, আমি সমবেদনা-স্বরূপ, আমি মহামহিম, আমি প্রজ্জ্বলিত অগ্নি এবং, শেষ পর্যন্ত, আমিই নির্দয় বিচার।

এই পৃথিবীর সকলেই দেখুক যে আমিই স্বয়ং প্রকৃত ও সম্পূর্ণ ঈশ্বর। সমস্ত মানুষ সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত এবং কেউই আমাকে আর প্রতিরোধ করার স্পর্ধা করবে না, আমার বিচার বা আমার অবমাননাও আর করবে না। নতুবা, তৎক্ষণাৎ তাদের উপর অভিশাপ নেমে আসবে এবং তাদের বিপর্যয় ঘনিয়ে আসবে। নিজেদের ধ্বংস নিজেরাই ডেকে আনার পরে তারা শুধু ক্রন্দন করতে পারবে আর নিজেদের দাঁতে দাঁত ঘষতে পারবে।

সমস্ত মানুষ এটা জানুক, মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর শেষপ্রান্ত জুড়ে, প্রতিটি গৃহে এবং সমস্ত মানুষের দ্বারা এটা জ্ঞাত হোক, যে: সর্বশক্তিমান ঈশ্বররই একমাত্র সত্য ঈশ্বর। সকলে একে একে আমার সামনে নতজানু হয়ে আমাকে পূজা করবে, এবং এমনকি, যে শিশুরা সবেমাত্র কথা বলতে শিখেছে তারাও “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর” বলে ডেকে উঠবে! যে কর্মকর্তারা ক্ষমতা প্রয়োগ করে তারাও নিজের চোখে দেখবে যে ঈশ্বর তাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছেন, এবং তারাও ভূপতিত হয়ে তাঁর পূজা করবে, তাঁর করুণা ও ক্ষমা ভিক্ষা করবে, কিন্তু এখন সত্যিই খুব দেরি হয়েছে, কারণ তাদের বিলুপ্তির সময় আগত হয়েছে। তাদের কেবলমাত্র বিনাশই ঘটবে এবং তারা অতল গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার দণ্ড পাবে। আমি এই সম্পূর্ণ যুগকে সমাপ্ত করব, এবং আমার রাজ্যকে আরো মজবুত করব। সমস্ত দেশ এবং সকল মানুষ চিরদিনের জন্য আমার সামনে নিজেদের সমর্পণ করবে!

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৩৪

পরবর্তী: অধ্যায় ৩৬

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন