অধ্যায় ৩৭
আমার উপস্থিতি নিয়ে তোমাদের মধ্যে প্রকৃতই বিশ্বাসের অভাব রয়েছে এবং প্রায়শই কাজের জন্য তোমরা নিজেদের উপরই নির্ভর করো। “আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পারবে না!” তা সত্ত্বেও তোমরা ভ্রষ্ট মানুষেরা আমার বাক্য এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দাও। আজকাল জীবন হল বাক্যের জীবন; বাক্য ছাড়া কোনো জীবন নেই এবং কোনো অভিজ্ঞতা নেই, আর বলা-ই বাহুল্য যে বিশ্বাস তো নেই-ই। বাক্যের মধ্যেই রয়েছে বিশ্বাস; ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে আরো বেশি করে নিজেদের উজাড় করে দিলে একমাত্র তবেই তোমরা সবকিছু অর্জন করবে। এমনটা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ো না যে তোমরা বিকশিত হবে না: জীবন বিকশিত হয়, এবং সেটা মানুষের উদ্বেগ থেকে নয়।
তোমাদের মধ্যে সর্বদা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠার একটা প্রবণতা রয়েছে, এবং তোমরা আমার নির্দেশাবলী শোন না। তোমরা সর্বদাই আমার গতি অতিক্রম করে যেতে চাও। এটা কী? এটা মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। তোমাদের স্পষ্টভাবে এই পার্থক্য নিরূপণ করা উচিত যে কোন বিষয়টি ঈশ্বরের কাছ থেকে আসছে আর কোন বিষয়টি তোমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসছে। আমার উপস্থিতিতে উদ্দীপনা কখনোই প্রশংসিত হবে না। আমি চাই যে তোমরা শেষ অবধি অটল আনুগত্য নিয়ে আমাকে অনুসরণ করতে সক্ষম হও। তোমরা বিশ্বাস করো যে এইরূপ আচরণের অর্থ ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি। তোমরা অন্ধ মানুষ! অন্বেষণের জন্য নিজে নিজে বিশৃঙ্খলভাবে চলার পরিবর্তে কেন তোমরা আরো ঘনঘন আমার সম্মুখে আসোনা? তোমাদের স্পষ্টভাবে দেখতে হবে! বর্তমানে যিনি কার্যসাধন করেছেন তিনি অবশ্যই কোনো মানুষ নন, বরং তিনি সকলের উপর সার্বভৌম, একমাত্র প্রকৃত ঈশ্বর—সর্বশক্তিমান! তোমাদের অযত্নশীল হলে চলবে না, বরং তোমাদের যা কিছু রয়েছে তা নিরন্তর ধরে রাখতে হবে, কারণ আমার দিবস আসন্ন। এমন এক সময়ে তোমরা কি সত্যিই জেগে উঠবে না? তোমরা কি এখনো স্পষ্ট ভাবে দেখোনি? তোমরা এখনও দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছ; তোমরা দুনিয়া থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে পারো না। কেন? তোমরা কি প্রকৃতই আমাকে ভালোবাসো? তোমরা কি আমার কাছে নিজেদের হৃদয়কে উন্মুক্ত করতে পারো, যাতে আমি তা দেখতে পাই? তোমরা কি তোমাদের সামগ্রিক সত্তা আমার কাছে উৎসর্গ করতে সক্ষম?
আমার বাক্যগুলি নিয়ে আরো বেশি চিন্তা করো, এবং সেগুলি সম্বন্ধে একটা স্পষ্ট উপলব্ধি রাখো। দ্বিধাগ্রস্থ বা অমনোযোগী হয়ো না। আমায় উপস্থিতিতে আরো বেশি সময় ব্যয় করো, আমার পবিত্র বাক্যগুলিকে আরো বেশি করে গ্রহণ করো, এবং আমার অভিপ্রায়গুলিকে ভুল বুঝো না। এর বেশি আর কী তোমরা আমার কাছ থেকে শুনতে চাও? মানুষের হৃদয় কঠিন, মানুষ তার পূর্বধারণাগুলির গুরুভারে ন্যূব্জ। তারা সর্বদাই ভাবে যে শুধুমাত্র চালিয়ে যেতে পারাটাই যথেষ্ট, এবং তারা সর্বদাই নিজেদের জীবনকে নিয়ে তামাশা করে। মূর্খ শিশুগণ! অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে; এটা আমোদপ্রমোদ খোঁজার সময় নয়। তোমাদের উচিত চক্ষু উন্মীলন করে দেখা উচিত যে এটা কোন সময়। সূর্য দিগন্তরেখা অতিক্রম করে পৃথিবীকে আলোকিত করতে চলেছে। ভালো করে চোখ খোলো এবং দেখো; অমনোযোগী হয়ো না।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বিষয়টিকে এমন লঘু ভাবে দেখ এবং বিষয়টি নিয়ে এমন আচরণ করো! আমি উদ্বিগ্ন, কিন্তু খুব অল্পজনই আছে যারা আমার হৃদয়ের প্রতি বিবেচনাশীল, যারা আমার সদুপোদেশ শুনতে এবং আমার পরামর্শগুলি মানতে সক্ষম। এই অভীষ্টসাধন দুরূহ, কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছো যারা আমার এই ভার ভাগ করে নিতে পারে। তোমরা এখনো এমন এক মানসিকতা বজায় রাখো। অতীতের তুলনায় তোমরা কিছুটা অগ্রগতি করেছ, কিন্তু তোমরা চিরদিন এই পর্যায়ে থাকতে পারো না! আমার পদক্ষেপ দ্রুত সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমাদের গতি একই রকম রয়েছে। আজকের আলো এবং আমার পদক্ষেপের সঙ্গে কীভাবে তোমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারবে? আর ইতস্তত কোরো না। আমি বার বার তোমাদের কাছে এটা জোর দিয়েছি: আমার দিবসের আগমন আর বিলম্বিত হবে না!
আজকের আলো, আজকেরই অঙ্গ, একে যেমন অতীতের আলোর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে না, তেমনই একে ভবিষ্যতের আলোর সঙ্গেও তুলনা করা যেতে পারে না। প্রতিটি দিন অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন উদ্ঘাটন ও নতুন আরো জোরালো ও উজ্জ্বলতর হয়। আর হতবাক হয়ো না; আর নির্বোধ হয়ো না; পুরোনো পথগুলিকে আর আঁকড়ে থেকো না; এবং আর কোনো বিলম্ব বা আমার সময়ের অপচয় কোরো না।
সতর্ক হও! সতর্ক হও! আমার নিকটে আরো প্রার্থনা করো এবং আমার উপস্থিতিতে আরো সময় ব্যয় করো, এবং তোমরা অবশ্যই সবকিছু অর্জন করবে! বিশ্বাস করো যে, এইরূপ করলে, তোমরা নিশ্চিতভাবেই সবকিছু অর্জন করবে!