অধ্যায় ৩৪
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই সকল ক্ষমতার আধার, সকল কিছু সাফল্যের সঙ্গে অর্জন করেন, এবং সম্পূর্ণরূপে প্রকৃত ঈশ্বর! তিনি শুধু সাতটি তারাই ধারণ করেন না, তিনি সাতটি আত্মা দ্বারা সমৃদ্ধ, তিনি সাতটি সীল উম্নুক্ত করেন এবং পুঁথি খোলেন, কিন্তু তার চেয়েও বড়ো কথা তিনি সাতটি ব্যাধি ও সাতটি পাত্রের প্রয়োগ ঘটান, এবং সাতটি বজ্রের প্রকাশ ঘটান। বহুদিন আগেও তিনি সাতটি ভেরী বাজিয়েছিলেন! তাঁর দ্বারা যা কিছু সৃষ্ট ও সম্পূর্ণ হয়েছে তাদের সকলেরই তাঁর স্তুতি করা উচিত, তাঁকে গৌরবান্বিত করা উচিত ও তাঁর সিংহাসনকে মহিমান্বিত করা উচিত। আহা, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! তুমিই সমস্তকিছু। তুমিই সমস্ত কিছু সম্পন্ন করেছ, এবং তোমার সঙ্গেই সমস্ত কিছু সম্পূর্ণ, উজ্জ্বল, মুক্ত, স্বাধীন, সুদৃঢ় এবং ক্ষমতাশালী! কিছুই আড়াল বা গোপন নেই; তোমাতে সকল রহস্যই উদ্ঘাটিত। সর্বোপরি, তুমি তোমার অগণিত শত্রুর বিচার করেছ, তুমি তোমার তোমার মহিমার প্রকাশ ঘটাও, তুমি তোমার প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকে প্রতীয়মান করে তোলো, তুমি তোমার ক্রোধ প্রদর্শন করো, এবং সর্বোপরি তুমি তোমার অভূতপূর্ব, চিরস্থায়ী, অনাদি-অনন্ত মহিমাকে মেলে ধরো! সমস্ত মানুষকে জেগে উঠে অকুণ্ঠচিত্তে হর্ষধ্বনিতে, গীতে মেতে উঠতে হবে, এবং সর্বশক্তিমান, যিনি সম্পূর্ণ নিখাদ, সর্বৈব-জীবন্ত, উদার, মহিমামণ্ডিত এবং সত্য ঈশ্বর যিনি অনাদি হতে অনন্ত, তাঁর স্তুতি করতে হবে। তাঁর সিংহাসনকে নিরন্তর গৌরবান্বিত করতে হবে, তাঁর পবিত্র নামকে বন্দিত ও মহিমান্বিত করতে হবে। ইনিই আমার – ঈশ্বরের – চিরন্তন ইচ্ছা, এবং একটি অপরিসীম আশীর্বাদ যা তিনি প্রকাশ করেন এবং আমাদের উপর বর্ষণ করেন! আমাদের মধ্যে কে এর উত্তরাধিকার বহন করে না? ঈশ্বরের আশীর্বাদের উত্তরাধিকার বহন করতে গেলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই তাঁর পবিত্র নামকে মহিমান্বিত করতে হবে এবং পূজার মাধ্যমে তাঁর সিংহাসনকে এসে পরিবেষ্টন করতে হবে। অন্য উদ্দেশ্য ও অন্য অভিপ্রায় নিয়ে যারা তাঁর সামনে যাবে তারা তাঁর প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে বিনষ্ট হয়ে যাবে। আজই সেইদিন যেদিন তাঁর শত্রুদের বিচার হবে, এবং এই দিনেই তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। অধিকন্তু, এই হল সেই দিন যেদিন আমি, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, প্রকাশিত হব এবং ঐদিন আমি মহিমা ও সম্মান অর্জন করব। আহা, সকল মানুষ! সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি স্মরণাতীত কাল থেকে অনন্ত কাল পর্যন্ত আমাদের কাছে মায়ামমতা প্রেরণ করেন, পরিত্রাণ কার্যকর করেন এবং আমাদের উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন, তাঁর পুত্রদের সম্পূর্ণ করেন এবং সাফল্যের সঙ্গে তাঁর রাজ্য অর্জন করেন, তাঁকে স্বাগত ও বন্দনা জানানোর জন্য দ্রুত উঠে দাঁড়াও! এটি ঈশ্বরের বিস্ময়কর কার্য! এই হল ঈশ্বরের পূর্বনির্ধারণ এবং ব্যবস্থাপনা – যে তিনি নিজেই আমাদের রক্ষা করতে, আমাদের সম্পূর্ণ করতে এবং আমাদের মহিমায় নিয়ে যেতে এসেছেন।
যারা উঠে দাঁড়ায় না এবং সাক্ষ্য বহন করে না তারা অন্ধদের পূর্বপুরুষ এবং অজ্ঞনতার রাজা। তারা চিরকাল অজ্ঞ রয়ে যাবে, তারা চিরকালের মূর্খ; সেই অন্ধজনেরা চিরকালীন ভাবে মৃত। এই কারণেই আমাদের আত্মাকে জেগে উঠতে হবে! সমস্ত মানুষকে উঠে দাঁড়াতে হবে! হর্ষ-উল্লাস করো, স্তুতি করো এবং নিরন্তর মহিমার রাজা, করুণার পিতা, পরিত্রাণের পুত্র, প্রাচুর্যমণ্ডিত সপ্ত আত্মা, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বন্দনাগান গাও যিনি মহিমান্বিত প্রজ্জ্বলিত অগ্নি ও ন্যায়পরায়ণ বিচারকে আনয়ন করেন, যিনি সম্পূর্ণভাবে পর্যাপ্ত, প্রাচুর্যপূর্ণ, সর্বশক্তিমান এবং সম্পূর্ণ। চিরকালের জন্য তাঁর সিংহাসন মহিমান্বিত হবে! সকল মানুষের দেখা উচিত যে এটি ঈশ্বরের প্রজ্ঞা; এই হল তাঁর পরিত্রাণের বিস্ময়কর পথ এবং তাঁর মহিমাময় ইচ্ছার সাফল্য। আমরা যদি উঠে না দাঁড়াই এবং সাক্ষ্য বহন না করি, তাহলে, এই মুহূর্তটি পার হয়ে গেলে, ফিরবার আর পথ থাকবে না। আমরা আশীর্বাদ অর্জন করব না দুর্ভোগ, তা আমাদের যাত্রাপথের এই চলতি পর্যায়েই আমরা কী করি, আমরা কী ভাবি, ঠিক এই মুহূর্তে আমরা কীভাবে বাঁচছি তার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়ে চলেছে। তোমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত? চিরকালের মতো ঈশ্বরের জন্য সাক্ষ্য বহন করো এবং ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করো, অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট – চিরন্তন, অনন্য, প্রকৃত ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে মহিমান্বিত কর!
এখন থেকে তোমরা স্পষ্ট দেখবে যে, যারা ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করে না – যারা এই অনন্য, প্রকৃত ঈশ্বরের সাক্ষ্য বহন করে না, এবং সেইসঙ্গে যারা তাঁকে নিয়ে মনে সন্দেহ লালন করে – তারা সকলেই অসুস্থ ও মৃত, এবং তারাই হল সেই ধরনের মানুষ যারা ঈশ্বরকে অস্বীকার করে! সেই প্রাচীন কাল থেকেই ঈশ্বরের বাক্য ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে: আমার সঙ্গে যারা একত্রিত হয় না তারা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে, যারা আমার সঙ্গে নেই তারা আমার বিরুদ্ধে; এ হল এক অপরিবর্তনীয় সত্য যা পাথরে খোদাই হয়ে আছে! যারা ঈশ্বরের হয়ে সাক্ষ্য বহন করে না তারা শয়তানের দালাল। তারা ঈশ্বরের সন্তানদের বিরক্ত ও প্রতারণা করতে এবং তাঁরা ব্যবস্থাপনাকে ব্যাহত করতে এসেছে, তাদের তরোয়ালের উপর নিক্ষেপ করতেই হবে! যারা তাদের প্রতি ভালো অভিপ্রায় দেখায় তারা নিজেদের ধ্বংসই ডেকে আনে। তোমার ঈশ্বরের আত্মার কথনকে শ্রবণ ও বিশ্বাস করা, ঈশ্বরের আত্মার পথে চলা এবং ঈশ্বরের আত্মার বাক্য অনুসারেই জীবনযাপন করা উচিত। সর্বোপরি, তোমার অনন্ত কাল ধরে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সিংহাসনকে মহিমান্বিত করে যাওয়া উচিত।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই সপ্ত আত্মার ঈশ্বর! তিনিই সপ্ত চক্ষু ও সপ্ত তারার ঈশ্বর; তিনি সাতটি সীল উন্মুক্ত করেন এবং তাঁর দ্বারাই সম্পূর্ণ পুঁথি উন্মোচিত হয়েছে! তিনি সপ্ত ভেরী বাজিয়েছেন এবং সাতটি পাত্র ও সাতটি ব্যাধি রয়েছে তাঁরই মুঠোয়, যা তাঁর ইচ্ছা অনুসারে নিক্ষিপ্ত হবে। আহা, সাতটি বজ্র চিরকালই সীলের ভিতর আবৃত থেকেছে! সেগুলি প্রকাশ করার সময় আগত! যিনি এই সাতটি বজ্রকে আনয়ন করবেন তিনি ইতিমধ্যেই আমাদের চোখের সামনে আবির্ভূত হয়েছেন!
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! তোমাতে সকলই মুক্ত ও স্বাধীন; সেখানে কোনো জটিলতা নেই, এবং সমস্তকিছুই মসৃণ ভাবে প্রবাহিত হয়! কোনোকিছুই তোমার পথরোধ করার অথবা তোমাকে বাধা দেওয়ার স্পর্ধা রাখে না, এবং সকলেই তোমার সামনে নিজেদের সমর্পিত করে। যারা নিজেদের নিবেদন করে না তাদের মৃত্যু ঘটবে!
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, সপ্তচক্ষুবিশিষ্ট ঈশ্বর! সকলই সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার, সকলই উজ্জ্বল এবং অনাবৃত, এবং সমস্ত কিছু প্রকাশিত ও উম্নোচিত। তাঁর সঙ্গে সমস্ত কিছু স্ফটিকের ন্যায় স্বচ্ছ, শুধুমাত্র ঈশ্বরই এইরূপ নন, বরং তাঁর পুত্ররাও এইরূপ। কোনো ব্যক্তি, কোনো বস্তু ও কোনো বিষয়ই তাঁর এবং তাঁর পুত্রদের কাছ থেকে গোপন করা যেতে পারে না!
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সাতটি তারা ভাস্বর! তাঁর দ্বারা গির্জা নিখুঁত হয়েছে; তিনি তাঁর গির্জার বার্তাবাহকদের প্রতিষ্ঠিত করেন, এবং সমগ্র গির্জা তাঁরই ব্যবস্থার অধীন। তিনি সাতটি সীলকেই উন্মুক্ত করেন এবং তিনি স্বয়ং তাঁর পরিচালনামূলক পরিকল্পনা ও ইচ্ছাকে সম্পূর্ণ করেন। পুঁথিটি তাঁর ব্যবস্থাপনার গুপ্ত আধ্যাত্মিক ভাষা, এবং সেটি তাঁর দ্বারা উন্মোচিত এবং প্রকাশিত হয়েছে!
সমস্ত মানুষের তাঁর সাতটি ভেরীর অনুনাদ শোনা উচিত। তাঁর সঙ্গে সকল কিছু জ্ঞাত হয়, কোনোদিন আর তা আড়াল হয় না, এবং আর কোনো দুঃখ থাকে না। সকল কিছু প্রকাশিত, এবং সকলেই বিজয়ী!
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সাতটি ভেরী উন্মুক্ত, মহিমান্বিত এবং জয়যুক্ত ভেরী! এই ভেরীগুলিই তাঁর শত্রুদের বিচার করে! তাঁর বিজয়ের মাঝে তাঁর ভেরী মহিমান্বিত হচ্ছে! তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ওপর শাসন করে চলেছেন!
তিনি সাতটি ব্যাধির পাত্র তৈরি করেছেন, তাঁর শত্রুদের দিকে লক্ষ্য শানানো হয়েছে এবং সেগুলিকে প্রবল বেগে নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে, এবং সেই শত্রুগণ প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখায় বিলীন হয়ে যাবে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর কর্তৃত্বের শক্তি প্রদর্শন করেন এবং তাঁর সকল শত্রুরা ধ্বংস হয়ে যায়। চূড়ান্ত সাতটি বজ্র আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সম্মুখে বদ্ধ থাকতে পারে না; সেগুলি সকলই প্রকাশিত! সেগুলি সকলই প্রকাশিত! এই সাতটি বজ্র দিয়ে তিনি তাঁর শত্রুদের সংহার করেন, পৃথিবীকে স্থিতিশীল করেন এবং পৃথিবীকে তাঁকে সেবাদানের উপযুক্ত করে তোলেন, এবং তা আর কখনো বিনষ্ট হয়ে যায় না!
ন্যায়পরায়ণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর! আমরা চিরকালের জন্য তোমার স্তুতি করি। তুমি অনন্ত বন্দনা, চিরন্তন জয়ধ্বনি ও গৌরবের যোগ্য! তোমার সাতটি বজ্র শুধু তোমার বিচারের কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, বরং, সকল বস্তুকে সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে, তোমার মহিমা ও কর্তৃত্বের উদ্দেশ্যেও সেগুলি আরো বেশি করে ব্যবহৃত হবে!
সিংহাসনের সামনে সকল মানুষ উৎসবে মেতে উঠেছে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট, তাঁর বন্দনা ও স্তুতিতে তারা রত! তাদের কণ্ঠস্বর বজ্রের মতো পুরো ব্রহ্মাণ্ডকে কম্পিত করে তুলছে! সম্পূর্ণ তাঁর কারণেই সকল বস্তুর অস্তিত্ব এবং তাঁর কারণেই সেগুলির উত্থান। কে এই সমস্ত মহিমা, সম্মান, কর্তৃত্ব, প্রজ্ঞা, পবিত্রতা, বিজয় ও উদ্ঘাটনকে সম্পূর্ণ রূপে তাঁকে উপর অর্পণ না করার স্পর্ধা রাখতে পারে? এই হল তাঁর ইচ্ছার সাধন এবং এই-ই হল তাঁর ব্যবস্থাপনা নির্মাণের চূড়ান্ত সমাপন।