অধ্যায় ২২
ঈশ্বরে বিশ্বাস করা সহজ কাজ নয়। তুমি বিহ্বল হয়ে যাও, সবকিছুই আত্মস্থ করছ এবং সবকিছুকে এত আকর্ষণীয়, এত সুস্বাদু ভাবছো! কেউ কেউ এখনও সাধুবাদ জানাচ্ছে—তাদের আত্মার মধ্যে কোনও বিচক্ষণতা নেই। এটি তোমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যার যোগ্য একটি অভিজ্ঞতা। অন্তিম সময়ে, সমস্ত ধরনের আত্মা তাদের ভূমিকা পালন করতে আবির্ভূত হয়, প্রকাশ্যে ঈশ্বরের সন্তানদের অগ্রগতির বিরোধিতা করে এবং গির্জার নির্মাণকে অন্তর্দ্বন্দ্বের মাধ্যমে বিনষ্ট করায় অংশ নেয়। যদি এটিকে হালকাভাবে নেওয়া হয় এবং শয়তানকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে এটি গির্জায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, মানুষ আতঙ্কিত হবে এবং মরিয়া হবে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মানুষের দর্শন অদৃশ্য হয়ে যাবে। এইরূপে, বহু বছর ধরে আমি যে শ্রমসাধ্য মূল্য পরিশোধ করেছি তা নিষ্ফল হবে।
যে সময়টিতে গির্জা নির্মিত হবে উক্ত সময়টি হল সেই সময় যখন শয়তান তার উন্মত্ততার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছয়। শয়তান ঘনঘন কিছু মানুষের মাধ্যমে ঝামেলা ও বাধা সৃষ্টি করে এবং এরা তারাই যারা আত্মাকে জানে না এবং যারা নতুন বিশ্বাসী তারাই শয়তানের ভূমিকা সবচেয়ে সহজে পালন করতে পারে। প্রায়শই, মানুষ পবিত্র আত্মার কাজ বুঝতে না পারায়, তারা স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজ করে, সম্পূর্ণরূপে তাদের নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী, তাদের কাজ করার নিজস্ব উপায়ে এবং নিজস্ব ধারণা অনুসারে। তোমার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করো—এটি তোমার নিজের সুরক্ষার জন্য। ভালোভাবে শোনো এবং মান্য করো। গির্জা সমাজের থেকে আলাদা। তুমি সাধারণভাবে বলতে পারবে না তোমাকে কী পরিতৃপ্ত করে; তুমি যা মনে করো তা বলতে পারবে না। এখানে তা হবে না, কারণ এ হল ঈশ্বরের গৃহ। মানুষ যেভাবে কাজ করে ঈশ্বর তা গ্রহণ করেন না। তোমায় আত্মাকে অনুসরণ করে কাজ করতে হবে; তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বাক্যগুলি যাপন করতে হবে এবং তারপরেই অন্যরা তোমাকে শ্রদ্ধা করবে। প্রথমে ঈশ্বরের উপর ভরসা করে নিজের ভেতরের সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে হবে। অধঃপতিত স্বভাবের অবসান ঘটাও এবং তোমার নিজের অবস্থাকে প্রকৃত অর্থে উপলব্ধি করতে সক্ষম হও এবং কীভাবে আচরণ করা উচিত তা জানো; যা উপলব্ধি করতে পারবে না, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাও। একজন ব্যক্তির পক্ষে নিজেকে না জানাটাই অগ্রহণযোগ্য। প্রথমে নিজের অসুস্থতা নিরাময় করো এবং, আমার বাক্যগুলি প্রায়শই ভোজন ও পান করে এবং সেগুলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে, জীবনযাপন করো এবং আমার বাক্যের ভিত্তিতে কাজ করো; বাড়িতেই থাকো বা অন্য কোথাও, ঈশ্বরকে নিজের মধ্যে শক্তি চালনা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। দৈহিকতা এবং প্রাকৃতিকতা পরিত্যাগ করো। সর্বদা ঈশ্বরের বাক্যকে নিজের মধ্যে রাজত্ব করতে দাও। তোমার জীবন পরিবর্তন হচ্ছে না ভেবে চিন্তা করার কোনও দরকার নেই; সময়ের সাথে সাথে, তুমি অনুভব করবে যে তোমার স্বভাব অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগে, তুমি প্রচারের আলোয় থাকতে আগ্রহী ছিলে, তুমি হয় কাউকে মান্য করতে না, বা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, নিজের নৈতিকতার বিষয়ে উদ্ধত বা ছিলেঅহঙ্কারী ছিলে—এগুলি হল এমন বিষয় যেগুলি থেকে তুমি ধীরে ধীরে নিষ্কৃতি পাবে। যদি তুমি এখনই সেগুলি বাদ দিতে চাও, তা সম্ভব নয়! এর কারণ হল, তোমার পুরোনো সত্তা অন্যদের তা স্পর্শ করতে অনুমতি দেবে না, এতই গভীর এর শিকড়। সুতরাং, অবশ্যই একটি বিষয়নিষ্ঠ প্রচেষ্টা করতে হবে, ইতিবাচকভাবে এবং সক্রিয়ভাবে পবিত্র আত্মার কাজকে মান্য করতে হবে, ঈশ্বরের সাথে সহযোগিতা করার জন্য তোমার ইচ্ছা ব্যবহার করতে হবে, এবং আমার বাক্য অনুশীলন করতে ইচ্ছুক হতে হবে। যদি তুমি পাপ করে থাকো, ঈশ্বর তোমাকে শিক্ষা দেবেন। যখন তুমি পিছনে ফিরে দেখো এবং উপলব্ধিতে উপনীত হও, তখনই তোমার মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। যদি তুমি অসংযত ভাবে কথা বলো, তাহলে তুমি অবিলম্বে নিজের অন্তরে অনুশাসিত হবে। তুমি দেখতে পাবে যে ঈশ্বর এই ধরনের বিষয়গুলিতে খুশি হন না, তাই তুমি যদি এখুনি থেমে যাও তাহলে তুমি অভ্যন্তরীণ শান্তি অনুভব করবে। কিছু নতুন বিশ্বাসী আছে যারা উপলব্ধি করতে পারে না জীবনের অনুভূতি কী বা কীভাবে সেই অনুভূতির মধ্যে থাকতে হয়। মাঝে মাঝে তুমি অবাক হও, তুমি কিছু না বললেও, কেন এত অস্থির বোধ করো? এইসব সময়ে, তোমার চিন্তা এবং তোমার মন ভ্রান্ত হয়। কখনও কখনও তোমার নিজস্ব পছন্দ, নিজস্ব ধারণা এবং মতামত থাকে; কখনও কখনও তুমি অন্যকে তোমার চেয়ে ছোট মনে করো; কখনও কখনও তুমি নিজের জন্য স্বার্থপরভাবে হিসাব নিকাশ করো এবং প্রার্থনা করো না বা নিজেকে পরীক্ষা করো না। এই কারণেই ভিতরে ভিতরে অস্থির লাগে। সম্ভবত তুমি জানো সমস্যাটি কী, তাই, অবিলম্বে মনে মনে ঈশ্বরের নাম নাও, ঈশ্বরের কাছাকাছি এসো এবং তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে। যখন হৃদয় ক্রমশ উদ্বেলিত এবং অস্থির হয়ে ওঠে, তখন তুমি একেবারেই ভেবো না যে ঈশ্বর তোমাকে কথা বলার অনুমতি দিচ্ছেন। নতুন বিশ্বাসীদের এই ক্ষেত্রে ঈশ্বরকে মান্য করার প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিত। ঈশ্বর মানুষের ভিতরে যে অনুভূতিগুলি প্রোথিত করেন তা হল শান্তি, আনন্দ, স্বচ্ছতা এবং নিশ্চয়তা। প্রায়শই, এমন কিছু মানুষ আছে যারা উপলব্ধি করতে পারে না, যারা গন্ডগোল করবে এবং স্বেচ্ছাচারীভাবে কাজ করবে—এগুলি সব হল বাধা; এইগুলিতে সাবধানে মনোযোগ দাও। তুমি এই অবস্থাপ্রবণ হলে, তা বন্ধ করার জন্য “প্রতিরোধমূলক ওষুধ” গ্রহণ করা উচিত; অন্যথায়, তুমি বাধা সৃষ্টি করবে এবং ঈশ্বর তোমাকে আঘাত করবেন। নিজের নৈতিকতার বিষয়ে উদ্ধত হয়ো না; নিজের ঘাটতি পূরণের জন্য অন্যদের থেকে শক্তি নাও, ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে অন্যরা কীভাবে জীবনযাপন করে তা দেখো; এবং দেখো তাদের জীবন, কর্ম এবং বক্তৃতা অনুকরণযোগ্য কিনা। তুমি যদি অন্যদেরকে তোমার থেকে হীন মনে করো, তবে তুমি নিজের নৈতিকতার বিষয়ে উদ্ধত, অহঙ্কারী, এবং কারও উপকারে আসবে না। এখন যা অত্যাবশ্যক তা হল জীবনের প্রতি মনোযোগ দেওয়া, আমার বাক্য বেশি করে ভোজন ও পান করা, আমার বাক্যগুলিকে অনুভব করা, আমার বাক্যগুলিকে জানা, আমার বাক্যকে প্রকৃতপক্ষেই তোমার জীবনে পরিণত করা—এইগুলিই হল মুখ্য বিষয়। যদি কেউ ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে জীবনযাপন করতে না পারে, তাহলে কি তাদের জীবন পরিপক্ব হতে পারে? না, তা তেমনটা হতে পারে না। সর্বদা অবশ্যই আমার বাক্য অনুসারে জীবনযাপন করতে হবে এবং আমার বাক্যই জীবনের আচরণবিধি হতে হবে, যাতে তুমি অনুভব করতে পারো যে উক্ত নীতি অনুসারে কাজ করাই ঈশ্বরকে আনন্দ দেয় এবং অন্যভাবে কাজ করাকে ঈশ্বর ঘৃণা করেন; এবং ধীরে ধীরে, তুমি সঠিক পথে হাঁটবে। তোমাকে অবশ্যই বুঝতে হবে ঈশ্বরের কাছ থেকে কী আসে এবং শয়তানের কাছ থেকে কী আসে। ঈশ্বরের কাছ থেকে যা আসে তা তোমাকে স্পষ্টতর দর্শন প্রদান করে এবং তোমাকে ঈশ্বরের আরও কাছে নিয়ে আসে; তুমি তোমার ভাই ও বোনদের সাথে আন্তরিক ভালোবাসা ভাগ করে নিতে পারো, তুমি ঈশ্বরের দায়িত্বের প্রতি বিবেচনা প্রদর্শন করতে সক্ষম, এবং তোমার হৃদয়ে রয়েছে ঈশ্বর-প্রেম, যা কখনও হ্রাস পায় না। চলার জন্য তোমার সামনে একটি পথ রয়েছে। শয়তানের কাছ থেকে যা আসে তা তোমার মধ্যে দর্শন অদৃশ্য করে দেয়, এবং যার ফলে তোমার আগে যা ছিল তা হারিয়ে যায়; তুমি ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ো, তোমার ভাই ও বোনদের প্রতি কোনও ভালোবাসা থাকে না এবং তোমার হৃদয় ঘৃণাপূর্ণ থাকে। তুমি মরিয়া হয়ে ওঠো, তুমি আর গির্জার জীবনযাপন করতে চাও না, এবং তোমার ঈশ্বর-প্রেমী হৃদয়টি আর থাকে না। এ-ই হল শয়তানের কাজ, এবং এ হল সেই পরিণতি, যে দিকে মন্দ আত্মারা নিয়ে যায়।
এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। চূড়ান্ত কর্মভার গ্রহণের আগে পর্যন্ত তোমাকে অবশ্যই তোমার পদে থাকতে হবে, ভালো এবং মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য তোমার আত্মার দৃষ্টিকে স্বচ্ছ করতে হবে, এবং গির্জা নির্মাণে তোমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শয়তানের দালাল, ধর্মীয় বিশৃঙ্খলা এবং মন্দ আত্মার কাজকে দূর করো। গির্জাকে শুদ্ধ করো, আমার ইচ্ছাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন করো, এবং সত্যই, বিপর্যয়গুলির আগের এই স্বল্প সময়ের মধ্যে আমি তোমাদের যত শীঘ্র সম্ভব সম্পূর্ণ এবং মহিমান্বিত করব।