অধ্যায় ২১
পবিত্র আত্মার কাজ এখন তোমাদের এক নতুন স্বর্গ ও নতুন পৃথিবীতে উপনীত করেছে। সকল বস্তুই নবায়িত হচ্ছে, সকলকিছুই রয়েছে আমারই করতলে, সকলকিছুরই নব সূচনা ঘটছে! মানুষ, তাদের পূর্বধারণাসমূহ নিয়ে, তা উপলব্ধি করতে পারে না, এবং তা তাদের কাছে অযৌক্তিক মনে হয়, কিন্তু আমিই কাজ করছি, এবং এতেই নিহিত রয়েছে আমার প্রজ্ঞা। অতএব তোমাদের নিজেদের মধ্যেকার সমস্ত ধারণা ও মতামত বর্জন করা, এবং সমর্পিত হয়ে ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করার বিষয়েই চিন্তা করা উচিত; এই বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকা উচিত নয়। আমি এই উপায়ে কাজ করছি বলে, আমার কাঁধে এক পবিত্র দায়িত্বভার রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মানুষের কোনো নির্দিষ্ট ভাব পরিগ্রহ করার প্রয়োজন নেই। বরং, ঈশ্বরই বিস্ময়কর কাণ্ড ঘটাচ্ছেন, তাঁর সর্বশক্তিমত্তা প্রকাশিত করছেন। ঈশ্বর ব্যতীত আর কোনো বিষয়েই লোকেদের বড়াই করা উচিত নয়। নয়ত তোমারই ক্ষতি হবে। ঈশ্বর অভাবগ্রস্তদের ধূলা থেকে উত্থিত করেন; বিনয়ীকে অবশ্যই উন্নীত করা হবে। বিশ্বজনীন গির্জাকে ও সকল জাতি ও মানুষদের পরিচালনা করার জন্যই আমি আমার প্রজ্ঞার সমস্ত রূপ ব্যবহার করব, যাতে তারা সকলে আমার অন্তরেই থাকে, যাতে গির্জাস্থিত তোমরা সকলেই আমার প্রতি সমর্পণ করতে পারো। আগে যারা আমার অবাধ্য ছিল, তাদের এখন অবশ্যই আমার সম্মুখে অনুগত হতে হবে, একে অপরের প্রতি সমর্পণ করতে হবে, একে অপরের প্রতি সহনশীল হতে হবে; তোমাদের জীবন অবশ্যই পরস্পর-সংযুক্ত হতে হবে, একে অপরকে তোমরা অবশ্যই ভালোবাসবে, একে অপরের শক্তি তুলে ধরে সকলে নিজেদের দুর্বলতাসকল দূরীভূত করবে, এবং সমন্বিত ভাবে কাজ করবে। এই উপায়েই গির্জা গড়ে উঠবে, এবং শয়তান আর শোষণ করার সুযোগ পাবে না। কেবল তখনই আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে না। আমি তোমাদের আরো একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি। অমুক বা তমুক ব্যক্তি হেন প্রকারের বলে, অথবা সে অমুক ভাবে কাজ করেছে বলে, নিজের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়ে দিয়ো না, কারণ তার ফলে তোমার আধ্যাত্মিক অবস্থার অধঃপতন ঘটবে। আমি যেমনভাবে বিষয়টিকে দেখি, তা হল এক অনুপযুক্ত ও অর্থহীন বিষয়। তুমি যাকে বিশ্বাস করো তিনি কি ঈশ্বর নন? তিনি কোনো ব্যক্তিবিশেষ নন। তাদের কার্যকলাপ এক নয়। এখানে একটাই কাঠামো রয়েছে। প্রত্যেকে নিজের দায়িত্ব পালন করছে, প্রত্যেকেই নিজের পদে নিজের সেরাটুকু করছে—প্রতিটি স্ফুলিঙ্গই আলোকের ঝলকানি সৃষ্টি করছে—এবং জীবনে পরিণত হওয়ার অন্বেষণ করছে। এভাবেই আমি সন্তুষ্ট হব।
আমার সম্মুখে তোমাদের কেবল প্রশান্ত থাকার বিষয়েই উদ্বিগ্ন থাকা উচিত। আমার সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখো, যেখানে কিছু বুঝতে পারবে না সেখানে আরো বেশি করে অন্বেষণ করো, প্রার্থনা করো, এবং আমার সময়ের অপেক্ষা করো। আত্মার থেকেই সকল বিষয়কে স্পষ্টভাবে দেখো। বেপরোয়াভাবে কাজ কোরো না, যাতে নিজেকে বিপথগামী হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারো। কেবলমাত্র এইভাবে আমার বাক্য ভোজন ও পান করলে তবেই তুমি প্রকৃত ফল লাভ করতে পারবে। প্রায়শই আমার বাক্য ভোজন ও পান করো, আমার বলা বাক্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করো, আমার বাক্য অনুশীলনের প্রতি মনযোগী হও এবং আমার বাক্যের বাস্তবিকতা যাপন করো; এটাই হল মূল বিষয়। গির্জা গড়ে তোলার প্রক্রিয়াটি জীবনের বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও বটে। তোমার জীবনের বৃদ্ধি থেমে গেলে, তোমায় গড়ে তোলা যাবে না। তোমার স্বাভাবিকতা, দেহ, উদ্যোগ, অবদান, যোগ্যতায় তুমি যতই ভালো হও না কেন, এই বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে থাকলে তোমায় গড়ে তোলা যাবে না। তোমাকে অবশ্যই জীবনের বাক্য অনুসারে জীবনযাপন করতে হবে, পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি ও প্রদীপ্তির মধ্যে বাস করতে হবে, নিজের প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে হবে, এবং এক পরিবর্তিত মানুষ হয়ে উঠতে হবে। আত্মার মধ্যেও অবশ্যই এই অন্তর্দৃষ্টি থাকতে হবে, নতুন আলোকপ্রাপ্তি থাকতে হবে, নতুন আলোর সাথে এগিয়ে যেতে হবে। তোমাকে অবশ্যই নিরবচ্ছিন্নভাবে আমার ঘনিষ্ঠ হতে, আমার সাথে যোগাযোগ করতে, সক্ষম হতে হবে, আমার বাক্য অনুসারে দৈনন্দিন জীবনে তোমার কর্মের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে, আমার বাক্যের ভিত্তিতেই তোমাকে সমস্ত ধরনের মানুষ, বিষয়বস্তু এবং ঘটনাবলীর সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হতে হবে, এবং আমার বাক্যগুলিকেই তোমার মান হিসাবে ধারণ করতে হবে, এবং তোমার জীবনের সমস্ত ক্রিয়াকলাপে আমার স্বভাবকে যাপন করতে হবে।
আমার ইচ্ছার গভীরতা উপলব্ধি করতে চাইলে, তার পরিচর্যা করতে চাইলে, তোমাকে অবশ্যই আমার বাক্যের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। তাড়াহুড়ো করে কাজ কোরো না। যেগুলোতে আমার সম্মতি নেই, সেগুলোর পরিণতি ভালো হবে না। কেবল আমার আদিষ্ট বিষয়সকল দ্বারাই আশীর্বাদ লাভ করা যায়। আমাকে ক্রোধান্বিত না করতে চাইলে, আমার অননুমোদিত কোনো কাজ একেবারেই কোরো না। যদি করো, তাহলে অনুশোচনা করার মতো সময়টুকুও তুমি পাবে না!