অধ্যায় ১১৫
তোমার দরুন আমার হৃদয় নিরতিশয় আহ্লাদিত হবে, তোমার দরুন আমার হস্ত আনন্দে নৃত্যরত হবে, এবং আমি তোমায় অশেষ আশীর্বাদ প্রদান করবো, কারণ সৃষ্টিকালের পূর্বেই তুমি আমার থেকে উদ্ভূত হয়েছিলে। আজ তোমায় আমার পার্শ্বে প্রত্যাবর্তন করতেই হবে, কারণ তুমি এই বিশ্বের বা বসুন্ধরার কেউ নও, তুমি আমার। আমি চিরকাল তোমায় ভালোবাসবো, আমি শাশ্বত কালব্যাপী তোমায় আশীর্বাদ করবো, এবং চিরদিন আমি তোমায় সুরক্ষা প্রদান করবো। একমাত্র যারা আমার থেকে উদ্ভূত তারাই আমার ইচ্ছাকে জানে; একমাত্র তারাই আমার দায়ভারের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করবে, একমাত্র তারাই সেই কার্য সম্পাদন করবে যা আমি করতে চাই। আজ, সকলকিছুই সম্পন্ন হয়েছে। আমার হৃদয় উৎসাহে ভরপুর, ব্যাকুলভাবে তা সত্ত্বর আমার প্রিয় পুত্রদের আমার সঙ্গে পুনর্মিলন, এবং শীঘ্রই আমার সত্তার সম্পূর্ণরূপে সিয়োনে প্রত্যাবর্তন আকাঙ্ক্ষা করছে। এ বিষয়ে কিছু জ্ঞান তোমার রয়েছে। যদিও আত্মায় আমরা পরস্পরকে ঘন-ঘন অনুসরণ করতে পারি না, কিন্তু প্রায়শই আত্মারূপে আমরা একে অপরের সহগামী হতে এবং দেহরূপে একে অপরের সাথে মিলিত হতে পারি। পিতা এবং পুত্রেরা চিরকালই অবিচ্ছেদ্য; তারা নিবিড়রূপে সংযুক্ত। সিয়োন পর্বতে প্রত্যাবর্তনের কাল পর্যন্ত কেউই তোমায় আমার পাশ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারবে না। আমার থেকে আগত সকল প্রথমজাত পুত্রদের আমি ভালোবাসি, এবং আমার বিরোধিতাকারী সকল শত্রুদের আমি ঘৃণা করি। যারা আমার প্রিয়পাত্র তাদেরকে আমি সিয়োনে ফিরিয়ে আনবো এবং যাদের আমি ঘৃণা করি তাদের মৃতস্থানে, নরকে নিক্ষেপ করবো। এ-ই হল আমার সমস্ত প্রশাসনিক ফরমানসমূহের মূল নীতি। আমার প্রথমজাত পুত্রদের সকল উক্তি বা কার্য হল আমার আত্মার এক অভিব্যক্তি। আবশ্যকভাবে এই বিষয়ে এক সুস্পষ্ট উপলব্ধি সহকারে প্রত্যেককে আমার প্রথমজাত পুত্রদের সাক্ষ্য বহন করতে হবে। আমার কার্যের এটি পরবর্তী ধাপ, এবং কেউ যদি প্রতিরোধ করে, তাহলে আমার প্রিয় পুত্রদের আমি তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলবো। বর্তমান সময়টি আগের থেকে আলাদা। আমার প্রেমাস্পদরা যদি একটি বিচারের কথা বলে, তাহলে তৎক্ষণাৎ মৃতস্থানে শয়তানের পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটবে, কারণ ইতিমধ্যেই আমি আমার প্রথমজাত পুত্রদের কর্তৃত্ব প্রদান করেছি। এর অর্থ হল, এখন থেকে আমার প্রথমজাত পুত্রগণ ও আমার যৌথভাবে শাসন করার সময় এসেছে। (এটি হল দেহের পর্যায়, যা আধ্যাত্মিক শরীরে একত্রে রাজত্ব করার থেকে সামান্য পৃথক।) কেউ যদি তার চিন্তায় অমান্য করে, তাহলে সে আমার সত্তার প্রতিরোধকারীদের ন্যায় একই পরিণতি ভোগ করবে। আমার প্রতি যে আচরণ করা হয়, আমার প্রথমজাত পুত্রদের প্রতি সেইরূপ আচরণ করা উচিত, কারণ আমরা একই শরীরের ও অচ্ছেদ্য। অতীতে যেমন আমার সাক্ষ্য বহন করা হয়েছিল, তেমনি আজ একইভাবে আমার প্রথমজাত পুত্রদের সাক্ষ্য বহন করা বিধেয়। এ হল আমার প্রশাসনিক ফরমানগুলির একটি; সকলকে আবশ্যকভাবে উঠে দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য বহন করতে হবে।
আমার রাজ্য পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং আমার প্রথমজাত পুত্রগণ আমার সাথে পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত ভ্রমণ করে। তোমাদের কায়িক দেহের প্রতিবন্ধকতার দরুন, আমার বলা সত্ত্বেও অনেক বাক্য তোমরা উপলব্ধি করো না, ফলে কার্যের বেশিরভাগ আবশ্যিকভাবে সিয়োনে প্রত্যাবর্তনের পর সম্পূর্ণ করা হবে। আমার বাক্য থেকে বোঝা যায় যে এই প্রত্যাবর্তনের কাল সুদূরপরাহত নয়—বস্তুত, মুহূর্তটি সমাগতপ্রায়। সেকারণেই ক্রমাগত আমি সিয়োন ও সিয়োনের বিষয়গুলির উল্লেখ করছি। আমার বাক্যসমূহের উদ্দেশ্যে কী সে বিষয়ে তোমরা কি অবহিত? আমার অন্তরে কী রয়েছে তা কি তোমরা জানো? সত্ত্বর সিয়োনে ফিরে যেতে, পুরাতন যুগে সম্পূর্ণরূপে ইতি টানতে, ধরাধামে আমাদের জীবন পরিসমাপ্ত করতে (কারণ পার্থিব মানুষ, বিষয়, ও বস্তুসমূহকে আমি ঘৃণা করি, এবং দেহরূপী জীবনকে তো আরো বেশি অপছন্দ করি, এবং দেহের প্রভূত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে; একমাত্র সিয়োনে প্রত্যাবর্তনের পরেই সমস্তকিছু সমৃদ্ধ হবে), এবং রাজ্যে আমাদের জীবনকে পুনরুদ্ধার করতে আমার হৃদয় ব্যাকুল। আমার প্রথম অবতারের উদ্দেশ্য ছিল দ্বিতীয়টির ভিত্তিভূমি স্থাপন করা। এই পথেই পাড়ি দিতে হতো। একমাত্র নিজেকে সম্পূর্ণরূপে শয়তানের হাতে সমর্পণ করার মাধ্যমেই আমি তোমাদের পুনরুদ্ধার করতে পারতাম, যাতে অন্তিম পর্যায়ে তোমরা আমার আধ্যাত্মিক শরীরে ফিরে আসতে পারো। (আমার প্রথম অবতার না থাকলে আমি মহিমা অর্জন করতে সক্ষম হতাম না, এবং পাপস্খালনের বলি প্রত্যাহার করে নিতেও অসমর্থ হতাম, ফলে পাপী হিসাবে তোমরা ধরাধামে পদার্পণ করতে।) যেহেতু আমার সীমাহীন প্রজ্ঞা রয়েছে, সেহেতু আমি যে তোমাদের নেতৃত্ব দিয়ে সিয়োন থেকে নিষ্ক্রান্ত করে এনেছিলাম এই সত্যটির অর্থ হল সিয়োনে তোমাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমি নিশ্চিত রইবো। রাস্তা অবরোধ করার লক্ষ্যে শয়তানের প্রচেষ্টাসমূহ সফল হবে না, কারণ আমার মহান কার্য বহুপূর্বেই সুসম্পন্ন হয়েছে। আমার প্রথমজাত পুত্রেরা আমার মতোই—তারা পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক, সুতরাং তারপরেও আমি আমার প্রথমজাত পুত্রদের সাথে সিয়োনে প্রত্যাবর্তন করবো, এবং আমরা কখনো বিচ্ছিন্ন হবো না।
আমার সমগ্র পরিচালনামূলক পরিকল্পনা ক্রমশ তোমাদের নিকট প্রকাশিত করা হচ্ছে। সকল রাষ্ট্রে ও সমস্ত মানুষের মাঝে আমি আমার কার্যের নিষ্পাদন শুরু করেছি। এটাই পর্যাপ্তরূপে প্রমাণ করে যে আমার সিয়োনে প্রত্যাবর্তন খুব দূরবর্তী নয়, কারণ সকল রাষ্ট্রে ও সমস্ত মানুষের মাঝে আমার কার্যের নিষ্পাদন এমন একটি বিষয় যা সিয়োনে ফেরার পর সম্পন্ন করা যাবে। আমার বেগ ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে। (আমার সিয়োনে ফেরার দিন নিকটবর্তী হচ্ছে বলে, প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই ধরাধামে আমার কাজ আমি সমাপ্ত করতে চাই।) আমার কার্যে আমি উত্তরোত্তর ব্যস্ততর হয়ে পড়ছি, অথচ পৃথিবীবক্ষে আমার করণীয় কাজ ক্রমাগত কমে আসছে—আদৌ কোনো কাজ নেই বললেই চলে। (আমার ব্যস্ততা আত্মারূপে কার্যের প্রতি লক্ষ্যনিষ্ঠ, যা খালি চোখে মানুষের দৃষ্টিগোচর নয়, কিন্তু আমার বাক্য থেকে এর বিষয়ে তথ্যাদি আহরণ করা যায়; আমার ব্যস্ততা দেহরূপে ব্যস্ততার অনুরূপ নয়, বরং তা প্রভূত কার্য বিষয়ে আমার পরিকল্পনাকে নির্দেশ করে।) এর কারণ হল, যেমনটি আমি বলেছি, পৃথিবীতে আমার কার্য ইতিপূর্বেই আনুপুঙ্খিকভাবে সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে, এবং আমার অবশিষ্ট কাজ অবশ্যই আমি সিয়োনে প্রত্যাবর্তন না করা অবধি অপেক্ষারত থাকবে। (কার্য সম্পাদনের জন্য আমাকে অবশ্যই সিয়োনে ফিরতে হবে, তার কারণ ভবিষ্যতের কাজ দেহরূপে সম্পাদনযোগ্য নয়, এবং এই কাজ যদি দেহরূপে নিষ্পন্ন হয়, তাহলে তা আমার নামকে অসম্মানিত করবে।) যখন আমি আমার শত্রুদের পরাভূত করে সিয়োনে প্রত্যাবর্তন করবো, তখন জীবন যুগযুগান্তের পূর্ববর্তী জীবন অপেক্ষা সুন্দরতর ও আরো শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠবে। (এর কারণ, বিশ্বকে আমি সম্পূর্ণরূপে জয় করেছি, এবং আমার প্রথম ও দ্বিতীয় অবতারের কারণে/সৌজন্যে/বদান্যতায়, আমি সর্বাঙ্গীণ মহিমা অর্জন করেছি। আমার প্রথম অবতারে, আমি স্বীয় মহিমার একাংশ মাত্র অর্জন করেছি, কিন্তু আমার দ্বিতীয় অবতারে, আমার ছবি পূর্ণ মহিমা লাভ করেছে, সুতরাং শয়তানের হাতে আর কাজে লাগানোর মতো কোনো সুযোগ নেই। সেকারণেই, সিয়োনে পরবর্তীকালীন জীবন আরো বেশি মনোরম ও শান্তিপূর্ণ হবে।) অতিকায় লাল ড্রাগনকে অপদস্থ করার জন্য বিশ্বজগৎ ও শয়তানের সম্মুখে আমার ছবি আরো মহিমান্বিতভাবে দৃশ্যমান হবে; এ-ই হল আমার প্রজ্ঞার কেন্দ্রবিন্দু। যত বেশি করে আমি বাহ্যিক বিষয়গুলির সম্পর্কে বক্তব্য রাখি, তোমরা তত বেশি উপলব্ধি করতে সক্ষম হও; যত বেশি করে আমি মানুষের দৃষ্টির অগোচর সিয়োনের বিষয়াদির সম্বন্ধে কথন করবো, বিষয়গুলি তোমাদের কাছে তত বেশি অন্তঃসারশূন্য বোধ হবে, এবং সেগুলিকে কল্পনায় আনা তোমাদের পক্ষে তত বেশি দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে; তোমরা ভাববে আমি বুঝি রূপকথার গল্প বলছি। কিন্তু, তোমাদের অবশ্যই সজাগ হতে হবে। আমার মুখগহ্বরে কোনো শূন্যগর্ভ বাক্য নেই; আমার মুখনিঃসৃত বাক্যগুলি নির্ভরযোগ্য। এই বাক্য সম্পূর্ণ সত্য, যদিও তোমাদের চিন্তনপদ্ধতিতে তা উপলব্ধি করা কঠিন। (দেহের সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ ও আনুপুঙ্খিকভাবে উপলব্ধি করতে অক্ষম, এবং আমার বক্তব্যের অনেক বিষয় আমি সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করিনি। তবু, আমাদের সিয়োনে প্রত্যাবর্তনের পর আমার ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়বে না; তোমরা স্বাভাবিকভাবেই উপলব্ধি করবে।) বিষয়টি কোনোক্রমেই লঘুভাবে নেওয়া যাবে না।
মানবদেহ ও মানবীয় পূর্বধারণাগুলির সীমাবদ্ধতা থাকলেও, উদ্ঘাটিত রহস্যসমূহের মাধ্যমে আমি তোমাদের দেহীসুলভ চিন্তাভাবনার উন্নয়ন ঘটাতে ও তোমাদের পূর্বধারণাগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাই, কারণ, যেমনটি বহুবার আমি বলেছি, এ হল আমার কার্যের এক ধাপ (এবং সিয়োনে প্রবেশ না করা পর্যন্ত এই কার্য স্থগিত হবে না।) প্রত্যেক মানুষের মনেই এক “সিয়োন পর্বত” রয়েছে, এবং প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই তা স্বতন্ত্র। আমি প্রায়শই তোমাদের কাছে সিয়োনের উল্লেখ করি বলে এর বিষয়ে তোমাদের আমি কিছু সাধারণ তথ্য পরিবেশন করবো, যাতে তোমরা এর সম্পর্কে কিছুটা অবহিত হতে পারো। সিয়োন পর্বতে থাকার অর্থ আধ্যাত্মিক জগতে প্রত্যাবর্তন করা। আধ্যাত্মিক জগতকে নির্দেশ করলেও, এটি মানুষের দর্শন বা স্পর্শের অতীত কোনো পরিসর নয়; এটি আধ্যাত্মিক শরীরের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়। মোটেই তা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য বা অধরা নয়, কারণ আধ্যাত্মিক শরীর যখন আবির্ভূত হয়, তখন তা-র আকার ও আকৃতি থাকে, কিন্তু আধ্যাত্মিক শরীরের আবির্ভাব না ঘটলে, তা-র কোনো আকার-আকৃতি নেই। সিয়োন পর্বতে, খাদ্য, বস্ত্র, দৈনন্দিন চাহিদাসমূহ বা আশ্রয়ের ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ থাকবে না, বিবাহ বা পরিবারও থাকবে না, এবং রইবে না কোনো লিঙ্গবিভাজন (সিয়োন পর্বতের সকল বাসিন্দা আমার ছবি, তারা একাঙ্গ, সুতরাং কোনো বিবাহ, পরিবার বা লিঙ্গবিভেদ নেই), এবং আমার ছবি যা কিছুর উল্লেখ করে সমস্তই অর্জিত হবে। মানুষ যখন অপ্রস্তুত, তখন আমার ছবি তাদের মাঝে আবির্ভূত হবে, এবং মানুষ যখন অমনোযোগী, আমার ছবি তখন অন্তর্হিত হবে। (এটি রক্ত-মাংসের মানুষের সম্পাদনসাধ্য কোনো বিষয় নয়, সেকারণেই বর্তমানে তোমাদের পক্ষে তা কল্পনা করা কষ্টকর।) ভবিষ্যতে, তখনো একটি সূর্য, একখানা চাঁদ, এবং এক ভৌত স্বর্গ ও পৃথিবী থাকবে, কিন্তু আমার ছবি সিয়োনে থাকার কারণে, সূর্যের কোনো দাবদাহ, কোনো দিবাভাগ, এবং প্রকৃতিক বিপর্যয়জনিত কোনো দুর্ভোগ থাকবে না। সিয়োনে অবস্থিতির প্রসঙ্গেই আমি বলেছিলাম যে, ঈশ্বর আমাদের দীপ্তি প্রদান করবেন বলে আমাদের প্রদীপ কিম্বা সূর্যালোকের প্রয়োজন হবে না। মানবীয় পূর্বধারণা অনুসারে, ব্রহ্মাণ্ডের সমস্তকিছুই আবশ্যিকভাবে অপসৃত হবে, এবং সকল মানুষ অবশ্যই আমার আলোকের মাঝে বাস করবে। তারা মনে করে এ-ই হল “ঈশ্বর আমাদের দীপ্তি প্রদান করবেন বলে আমাদের প্রদীপ কিম্বা সূর্যালোকের প্রয়োজন হবে না” বাক্যটির প্রকৃত অর্থ, কিন্তু বস্তুত এ এক ভ্রান্ত ব্যাখ্যা। আমি যখন বলেছিলাম “প্রতিমাসে তরুটি বারো রকমের ফল ধারণ করবে”, তখন আমি সিয়োনের বিষয়সমূহের প্রতিই নির্দেশ করেছিলাম। এই বাক্যটি সিয়োনের সামগ্রিক সিয়োনের জীবন-পরিস্থিতির প্রতিনিধিত্ব করে। সিয়োনে, সময় সীমিত হবে না, এবং ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিসরের সীমাবদ্ধতাও থাকবে না। এই কারণেই আমি “প্রতিমাসে” শব্দটি প্রয়োগ করেছিলাম। “বারো রকমের ফল” আজকের দিনে তোমাদের যাপিত আচরণ-পদ্ধতির প্রতিনিধিত্ব করে না; বরং তা সিয়োনের স্বাধীন জীবনকে নির্দেশ করে। এই বাক্যগুলি হল সিয়োনের জীবনের এক সামান্যীকরণ। এর থেকে বোঝা যায় যে সিয়োনের জীবন হবে উন্নত মানসম্পন্ন ও বৈচিত্র্যময় (কারণ “বারো” শব্দটি এখানে পরিপূর্ণতাকে নির্দেশ করে)। এ হবে এক শোকমুক্ত ও অশ্রুবিবর্জিত জীবন, এবং কোনো শোষণ বা উৎপীড়ন থাকবে না, ফলে সকলেই হবে বন্ধনমুক্ত ও স্বাধীন। এর কারণ, সমস্তকিছুই আমার ছবির মধ্যে অস্তিমান, এদের বিচ্ছেদ ঘটানো কোনো মানুষের সাধ্য নয়, এবং সমস্তকিছুই মনোরম ও চির-অভিনবত্বময় এক দৃশ্যপট হয়ে উঠবে। এ হবে এমন এক কাল যখন সকলকিছুই প্রস্তুত, এবং সিয়োনে প্রত্যাবর্তনের পর আমাদের জীবনের সূত্রপাত।
ধরাধামে আমার কার্য আনুপুঙ্খিকভাবে সম্পন্ন হলেও, এখনো আমি চাই যে আমার প্রথমজাত পুত্রগণ পৃথিবীতে তাদের কাজ অব্যাহত রাখুক, ফলে এখনি আমি সিয়োনে প্রত্যাবর্তন করতে অপারগ। একাকী কেবল আমি সিয়োনে ফিরে যেতে পারি না। আমার প্রথমজাত পুত্রগণ পৃথিবীতে তাদের কার্য সম্পন্ন করার পর তাদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে আমি সিয়োনে প্রত্যাবর্তন করবো। সুতরাং, ন্যায্যতই বলা যেতে পারে যে আমরা একত্রে মহিমা অর্জন করছি; এ হল আমার ছবির পূর্ণ প্রতিভাস। (এই যে আমি বলছি, ধরাধামে আমার প্রথমজাত পুত্রদের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে, তার কারণ হল আমার প্রথমজাত পুত্রদের এখনও প্রকাশিত করা হয়নি। এখনো এই কাজ আজ্ঞাকারী ও সৎ সেবা-প্রদানকারীদের দ্বারা সম্পন্ন হওয়া আবশ্যক।)