অধ্যায় ১০৭
আমার বাক্যগুলি যখন একটি নির্দিষ্ট স্তরের কঠোরতায় উপনীত হয়, তখন অধিকাংশ মানুষ সেগুলির কারণে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়—এবং ঠিক এই মুহুর্তটিতেই আমার প্রথমজাত পুত্রগণ প্রকাশিত হয়। আমি বলেছি যে আমি একটিও অঙ্গুলিহেলনমাত্র করি না, বরং সমস্ত বিষয়সমূহ অর্জন করতে কেবল আমার বাক্যের ব্যবহার করি। আমার বাক্যের মাধ্যমে আমি আমার ঘৃণিত সকলকিছু ধ্বংস করি, এবং আমার প্রথমজাত পুত্রগণকে নিখুঁত করে তুলতেও আমি আমার বাক্য প্রয়োগ করি। (আমার বাক্য উচ্চারিত হলে সপ্ত বজ্র ধ্বনিত হবে, এবং সেই মুহুর্তটিতেই আমার প্রথমজাত পুত্রগণ এবং আমি রূপ পরিবর্তন করে আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করব।) আমি যখন বলেছিলাম যে আমার আত্মা দেহরূপে কার্য সম্পাদন করে, তখন আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম যে আমার বাক্য সমস্তকিছু অর্জন করে, এবং এ থেকে সুস্পষ্ট হয় যে আমি সর্বশক্তিমান। অতএব, আমার উচ্চারিত প্রতিটি বাক্যের নিহিত লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্পষ্টতরভাবে বোঝা যেতে পারে। আগেই যেমন বলেছি, যা কিছু আমি আমার মনুষ্যত্বের ভিতর থেকে বাঙ্ময় করে তুলি, তা সবই আমার উদ্ভাসের একটি দিক। সুতরাং, আমার স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের মাধ্যমে আমি যা বলি সেগুলির বিষয়ে যে ব্যক্তিগণ নিশ্চিত হতে পারে না, এবং যারা সেগুলি প্রকৃতরূপে বিশ্বাস করে না, তাদের অপসারিত হতেই হবে! আমি বারংবার এই বিষয়ে জোর দিয়েছি যে আমার স্বাভাবিক মনুষ্যত্ব আমার সম্পূর্ণ দেবত্বেরই এক অপরিহার্য আঙ্গিক, তবু অনেক মানুষ দ্বিতীয়টির দিকেই মন দেয়, প্রথমটিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে। তুমি অন্ধ! তুমি বলো যে আমি তোমার পূর্বধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নই, এবং ব্যক্তিরূপে আমি তোমার ঈশ্বরের সাথে সঙ্গত নই। এই মানুষগুলি কি আমার রাজ্যে থাকতে পারে? তোমায় আমি পদদলিত করব! দেখি তোমার কত স্পর্ধা আমার বিরুদ্ধে আরও বিদ্রোহ করার! দেখি তোমার কত স্পর্ধা এই স্বেচ্ছাচারিতা বজায় রাখার! আমার হাসিমুখ তোমার পূর্বধারণার সাথে খাপ খায় না, আমার সম্ভাষণ তোমার কানে শ্রুতিমধুর নয়, আর আমার ক্রিয়াকলাপগুলি তোমার উপকার করে না—ঠিক বললাম? এই সমস্ত বিষয় তোমার পছন্দমতো হতেই হবে। ঈশ্বর কি এমন? এবং এই মানুষগুলি এখনও আমার গৃহে থেকে যেতে আর আমার রাজ্যে আশীর্বাদ পেতে চায়? তুমি কি দিবাস্বপ্ন দেখছ না? বিষয়গুলি কবে থেকে এমন চমৎকার হল? তুমি আমাকে অমান্য করতে চাও, তা সত্ত্বেও তুমি এখনও আমার কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করো। আমি তোমায় বলছি: একেবারেই নয়! যেমন আমি বহুবার বলেছি, যারা আমার রাজ্যে প্রবেশ করে এবং আশীর্বাদ গ্রহণ করে, তাদেরকে অবশ্যই আমার প্রীতিভাজন হতে হবে। এই বাক্যগুলির উপর কেন আমি জোর দিই? সকলে কী ভাবছে, তা আমি জানি এবং উপলব্ধি করি; তাদের চিন্তাভাবনাগুলি আমার এক এক করে দেখিয়ে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আমার বিচারের বাক্যের মাধ্যমের তাদের প্রকৃত স্বরূপগুলি অনাবৃত হবে, এবং আমার বিচারের আসনের সামনে সকলেই দুঃখে বিলাপ করে উঠবে। এ এক সুস্পষ্ট সত্য, যা কেউ পরিবর্তন করতে পারে না! অন্তিমে, আমি তাদের একে একে অতল গহ্বরে প্রবেশ করাব। দুষ্ট শয়তানের প্রতি আমার বিচারের মাধ্যমে এই চরম ফলাফলটিই আমি পেতে চাই। প্রতিটি ব্যক্তির সাথে আচরণের জন্য আমায় আমার বিচার এবং প্রশাসনিক ফরমানসমূহের ব্যবহার করতেই হবে, এবং এভাবেই আমি মানুষকে শাস্তি দিই। এবিষয়ে কি তোমাদের কোনও প্রকৃত অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে? শয়তানকে কোনও কারণ দর্শানোর প্রয়োজন নেই আমার; আমি শুধুই আমার লৌহদণ্ডটি দিয়ে তাকে প্রহার করে চলি যতক্ষণ না পর্যন্ত তার মৃত্যুর উপক্রম ঘটছে এবং সে বারংবার কৃপা ভিক্ষা করছে। অতএব, মানুষ যখন আমার বিচারের বাক্যগুলি পড়ে, তখন তারা সেগুলি বিন্দুমাত্র উপলব্ধি করতে পারে না, কিন্তু আমার পরিপ্রেক্ষিত থেকে, প্রতিটি বাক্য ও অনুচ্ছেদই আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের রূপায়ন। এ এক সুস্পষ্ট সত্য।
যেহেতু আজ আমি বিচারের উল্লেখ করেছি, সেহেতু এই বিষয়বস্তুটি বিচারের আসনের সাথে জড়িত। অতীতে, তোমরা প্রায়শই বলেছ যে খ্রীষ্টের আসনের সামনে তোমরা বিচার গ্রহণ করবে। বিচারের বিষয়ে তোমাদের কিছু ধারণা রয়েছে, কিন্তু তোমরা বিচারের আসন কল্পনা করতে পারো না। কেউ কেউ হয়ত ভাবে যে বিচারের আসন কোনও ভৌত বস্তু, বা তারা হয়ত সেটিকে একটি বৃহৎ টেবিল হিসাবে কল্পনা করতে পারে, বা পার্থিব জগতের কোনও বিচারকের আসন হিসাবে হয়ত তারা সেটিকে মনে মনে চিত্রিত করে। অবশ্যই, আমার এইবারের বিশ্লেষণে, তোমরা যা বলেছ তা আমি অস্বীকার করব না, কিন্তু আমার কাছে মানুষের কল্পজগতের বিষয়গুলি এখনও প্রতীকী অর্থ বহন করে। তাই মানুষ যা কল্পনা করে আর আমার অর্থের মধ্যকার ব্যবধান এখনও স্বর্গ-মর্ত্যের ব্যবধানের মতোই বিস্তর। মানুষের ধারণা অনুসারে, বিচারের আসনের সামনে অনেক লোকজন লুটিয়ে পড়ে রয়েছে, শোকার্তভাবে বিলাপ করছে এবং করুণা ভিক্ষা করছে। মানুষের কল্পনা এখানেই চরমে উঠেছে, এর চেয়ে বেশি কিছু কেউ কল্পনা করতে পারে না। বিচারের আসন তাহলে কী? এই রহস্য আমি উদ্ঘাটন করার আগে, তোমাদেরকে অবশ্যই পূর্বকালের ভুল ধারণাগুলি বর্জন করতে হবে; তবেই আমার লক্ষ্য পূর্ণ হবে। একমাত্র এভাবেই এই বিষয়বস্তুটি সম্বন্ধে তোমাদের পূর্বধারণা এবং ভাবনাগুলিকে দূরীভূত করা যাবে। যখনই আমি কথা বলি, তোমাদের অবশ্যই মনোযোগ দিতে হবে। এখন থেকে আর অমনোযোগী হওয়া একেবারেই চলবে না তোমাদের। বিশ্বসৃষ্টির সময় থেকেই আমার বিচারের আসন প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। অতীতের যুগগুলিতে এবং অতীত প্রজন্মের অনেকেই এর সামনে মৃত্যুবরণ করেছে, এবং এর সামনেই উঠেও দাঁড়িয়েছে, জীবন ফিরে পেয়েছে। এমনও বলা যেতে পারে যে শুরু থেকে শেষ অবধি আমার বিচার কখনোই বিরত হয় না, এবং সেহেতু আমার বিচারের আসনও নিয়তই বিদ্যমান। যখনই বিচারের আসনের উল্লেখ করা হয়, সমস্ত মানুষ কিঞ্চিৎ ভীতি অনুভব করে। অবশ্যই, উপরে আমি যা বলেছি তার থেকে বিচারের আসন কী, সে বিষয়ে তোমাদের কোনও ধারণা হয়নি। বিচারের আসন ও বিচার যুগপৎ অবস্থান করে, কিন্তু সেগুলি দুই ভিন্ন প্রকারের উপাদানে প্রস্তুত। (এখানে “উপাদান” কোনও ভৌত পদার্থকে বোঝায় না, বোঝায় বাক্যকে। মানুষেরা এই উপাদানটিকে একেবারেই দেখতে পায় না।) বিচার হল আমার বাক্যসমূহ। (সেগুলি কঠিন হোক বা কোমল, সবই আমার বিচারের অন্তর্গত। সুতরাং, আমার মুখনিঃসৃত সকলকিছুই আমার বিচার।) পূর্বে, মানুষ আমার বাক্যকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করত, যার মধ্যে ছিল বিচারের বাক্য, নম্রতার বাক্য এবং জীবনদায়ী বাক্য। আজ, আমি তোমাদের কাছে স্পষ্ট করব যে বিচার এবং আমার কথন একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ, বিচার হল আমারই বাক্য, এবং আমার বাক্যই বিচার; দুটির বিষয়ে তোমাদের একেবারেই পৃথকভাবে বলা উচিত নয়। মানুষ কল্পনা করে যে কঠোর বাক্যগুলিই হল বিচার, কিন্তু তাদের উপলব্ধি সম্পূর্ণ নয়। আমি যা কিছু বলি তা সকলই বিচার। অতীতে যে বিচার আরম্ভের কথা বলা হয়েছিল তা তা নির্দেশ করে সেই সময়ের প্রতি যখন আমার আত্মা আনুষ্ঠানিকভাবে সমস্ত স্থানে কাজ করতে শুরু করেছিল এবং আমার প্রশাসনিক ফরমান বাস্তবায়িত করতে আরম্ভ করেছিল। এই বাক্যটিতে “বিচার” প্রকৃত বাস্তবিকতাকে বোঝায়। এইবারে আমি বিচারের আসন বিষয়টি ব্যাখ্যা করব: কেন আমি বলি যে বিচারের আসন অনন্ত থেকে অনন্তকাল অবধি বিরাজমান এবং আমার বিচারের পাশাপাশি চলমান? বিচার সম্পর্কে আমার ব্যাখ্যা থেকে তোমরা কী এবিষয়ে কিছুটা উপলব্ধি অর্জন করেছ? বিচারের আসন বলতে বোঝায় আমি যে মানুষটি, তাঁকে। অনন্ত থেকে অনন্তকাল অবধি আমি সর্বদাই আমার কণ্ঠস্বর ধ্বনিত করছি এবং কথা বলছি। আমি চিরজীবী, তাই আমার বিচারের আসন এবং আমার বিচার চিরকাল সহাবস্থান করে। এতক্ষণে এটি স্পষ্ট হওয়া উচিত! মানুষ নিজের কল্পনা অনুসারে আমায় একটি বস্তু হিসাবে বিবেচনা করে, কিন্তু এ প্রসঙ্গে আমি তোমাদের দোষারোপও করি না, নিন্দাও করি না। আমি কেবল আশা করি যে তোমরা অনুগত হবে এবং আমার উদ্ঘাটন গ্রহণ করবে, এবং তা থেকে জানবে যে আমিই সমস্তকিছুকে বেষ্টন করে রাখা ঈশ্বর স্বয়ং।
আমার বাক্যগুলি মানুষের কাছে পূর্ণত দুর্বোধ্য, আমার পদচিহ্নগুলি তাদের পক্ষে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব, এবং তাদের পক্ষে আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করা অসম্ভব। সুতরাং, আজ তোমরা যে অবস্থায় রয়েছ (আমার উদ্ঘাটন গ্রহণ করতে, তাতে নিহিত আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে, এবং তার মধ্য দিয়ে আমার পদচিহ্ন অনুসরণ করতে সক্ষম হচ্ছ), তা সম্পূর্ণভাবেই আমার চমকপ্রদ ক্রিয়াকর্ম, আমার অনুগ্রহ, এবং আমার সহমর্মিতার ফল। একদিন আমি তোমাদের এমনকি আমার প্রজ্ঞা চাক্ষুষ করার, আমার স্বহস্তে কৃত কার্যের দিকে দৃষ্টিপাত করার, এবং আমার কাজের বিস্ময়করতা একঝলক দেখে নেওয়ারও অনুমতি দেবো। যখন সেই সময়কাল উপনীত হবে, তখন আমার সমগ্র পরিচালনামূলক পরিকল্পনার নীলনকশাগুলি তোমাদের চোখের সামনে প্রকাশিত হবে। মহাবিশ্ব জুড়ে এবং প্রত্যহ আমার বিস্ময়কর কাজকর্মগুলির অংশ উদ্ভাসিত হয়, এবং সকলকিছুই আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা সিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সেবা প্রদান করে। যখন তা পূর্ণত প্রকাশিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা দেখতে পাবে আমি কী ধরনের লোকজনকে সেবা প্রদানের জন্য আয়োজিত করেছি, কোন প্রকারের ব্যক্তিগণকে আমার ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য আয়োজিত করেছি, শয়তানকে শোষণ করে আমি কী অর্জন করেছি, আমি স্বয়ং কী সম্পন্ন করেছি, কোন ধরনের মানুষেরা ক্রন্দন করছে, কোন ধরনের মানুষেরা দাঁতে দাঁত ঘষছে, কোন ধরনের মানুষেরা ধ্বংস হয়ে যাবে, এবং কোন ধরনের মানুষেরা নরকবাস ভোগ করবে। “ধ্বংস” হয়ে যাবে বলতে আমি উল্লেখ করছি তাদের কথা যারা জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে নিক্ষিপ্ত তথা পূর্ণত ভস্মীভূত হবে; “নরকবাস” ভোগ করবে বলতে উল্লেখ করছি তাদের কথা যারা অতল গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হবে এবং সেখানেই চিরতরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকবে। অতএব, ধ্বংস হয়ে যাওয়া এবং নরকবাস ভোগ করাকে অভিন্ন বলে ভুল কোরো না; বরং তার বিপরীতক্রমে, এই দুটি খুবই আলাদা বিষয়। আজ যে সেবাপ্রদানকারীরা আমার নাম থেকে প্রস্থান করবে, তারা নরকবাস ভোগ করবে, এবং যারা আমার নামের নয়, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এই কারণেই আমি বলি যে যারা নরকবাস ভোগ করবে তারা আমার বিচারের পর চিরন্তন আমার স্তুতি করবে; এবং তবু, সেই মানুষগুলি কখনোই আমার শাস্তি থেকে মুক্ত হবে না, এবং সততই আমার নিয়ম মেনে নেবে। এই কারণেই আমি বলি যে অতল গহ্বর হল সেই হস্ত যা দ্বারা আমি মানুষকে শাস্তিদান করি। আমি এ-ও বলি যে সকলই আমার হাতে রয়েছে। যদিও আমি বলেছি যে “অতল গহ্বর” বলতে শয়তানের প্রভাবকে বোঝায়, তবু তা-ও আমারই হাতে, যা দিয়ে আমি মানুষকে শাস্তি দিই। এভাবে, সবকিছুই আমার হাতেই রয়েছে, এবং এতে কোনও অসঙ্গতি নেই। আমার বাক্যগুলি দায়িত্বজ্ঞানহীন নয়; সেগুলি সকলই যথাযথ ও সুসংলগ্ন। সেগুলি বানানো অথবা অর্থহীন নয়, এবং সকলেরই উচিত আমার কথনে বিশ্বাস করা। ভবিষ্যতে, এই কারণের জন্য তোমরা সকলেই কষ্টভোগ করবে। আমার বাক্যের কারণে অনেক মানুষ উদাসীন অথবা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, অথবা বিফলমনোরথ হয়ে পড়ে, অথবা তিক্ত ক্রন্দন করে বা বিলাপ করে। সকল ধরনের প্রতিক্রিয়াই থাকবে। একদিন, যখন আমার দ্বারা ঘৃণিত সকল ব্যক্তিই প্রত্যাহৃত হবে, তখন আমার মহান কার্য সিদ্ধ হবে। ভবিষ্যতে অনেক মানুষেরই প্রথমজাত পুত্রগণের কারণে পতন ঘটবে, এবং পরিশেষে, ধাপে ধাপে তারা সকলেই প্রস্থান করবে। প্রকারান্তরে বললে, আমার গৃহ ক্রমশ পবিত্র হয়ে উঠবে, ক্রমশ সকল প্রকার দানব আমার পাশ থেকে পশ্চাদপসারণ করবে, শান্ত ও অনুগতভাবে, এবং বিন্দুমাত্র অনুযোগটুকু না করেই চলে যাবে। তারপর, আমার সকল প্রথমজাত পুত্রগণ প্রকাশিত হবে, এবং আমি আমার কার্যের পরবর্তী পদক্ষেপটি আরম্ভ করব। কেবলমাত্র তখনই প্রথমজাত পুত্রগণ আমার সাথে রাজা হয়ে সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উপর রাজত্ব করবে। এগুলিই হল আমার কার্যের পদক্ষেপ, এবং এগুলি আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ গঠন করে। এই বিষয়টি উপেক্ষা কোরো না, নাহলে তুমি ভুল করবে।
আমার বাক্যগুলি যখন তোমাদের কাছে প্রকাশিত হয়, সেই সময়টিতেই আমি আমার কাজ শুরু করি। আমার একটি বাক্যও অপূর্ণ রয়ে যাবে না। আমার কাছে একটি দিন হল এক হাজার বছরের মতো, এবং এক হাজার বছর হল একটি দিনের মতো। তোমরা কীভাবে তা দেখো? সময় সম্বন্ধে তোমাদের ধারণা আমার চেয়ে অত্যন্ত ভিন্নতর, কারণ আমি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করি, এবং আমিই সকল কিছু সম্পন্ন করি। আমার কার্য নির্বাহ হয় প্রত্যহ, ধাপে ধাপে, এবং পর্যায়ক্রমে; উপরন্তু, আমার কার্যের সম্মুখপানে অগ্রসর হওয়া একটি লহমার জন্যও স্থগিত হয় না: প্রতিটি মুহুর্তে তা ক্রমাগত নির্বাহ হয়ে চলেছে। বিশ্বসৃষ্টির সময়কাল থেকে আমার বাক্যসমূহ কখনোই বিঘ্নিত হয়নি। আজ অবধি আমি আমার কথনের উচ্চারণ করেছি ও সেগুলিকে কণ্ঠস্বরপ্রদান করে এসেছি; তা ভবিষ্যতেও অপরিবর্তিত থাকবে। তবে, আমার সময় সযত্নে আয়োজিত ও সংগঠিত, তা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল। যখন আমার যা করা প্রয়োজন, তখন আমি তা করব (আমার সঙ্গে, সকলই হবে মুক্ত, সকলই হবে স্বাধীন), এবং আমার কার্যের পদক্ষেপগুলিতে আমি কখনোই বিন্দুমাত্রও ব্যাহত হই না। আমার গৃহে আমি সকলের আয়োজন করতে পারি; বিশ্বে আমি সকলেরই আয়োজন করতে পারি—তবে, আমি বিন্দুমাত্রও ব্যস্ত নই, কারণ আমার আত্মা কর্মরত রয়েছে। আমার আত্মা সকল স্থান পরিপূর্ণ করে, কারণ আমিই অনন্য ঈশ্বর স্বয়ং, এবং সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড রয়েছে আমার হস্তে। এভাবে, দেখতে পাওয়া যায় যে আমি সর্বশক্তিমান, আমি প্রাজ্ঞ, এবং আমার মহিমা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি কোণায় পূর্ণ।