অধ্যায় ১০৬
যারা আমার বাক্যসমূহের বিষয়ে অনবহিত, যারা আমার স্বাভাবিক মানবতাকে জানে না, এবং যারা আমার দেবত্বের বিরোধিতা করে, তাদের সকলকেই ধ্বংস করে অস্তিত্বের বিলোপ ঘটানো হবে। এর থেকে কেউই নিস্তার পাবে না, এবং সকলকেই এই বিষয়ে পর্যাপ্ত মান অর্জন করতে হবে, কারণ এ হল আমার প্রশাসনিক ফরমান, এবং এটিই সেগুলের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণভাবে অনুশীলনীয়। আমার দ্বারা সুস্পষ্টভাবে নির্দেশিত বিষয়সমূহ শ্রবণ করা সত্ত্বেও যাদের সেগুলির বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, তারাই আমার বাক্যকে জানে না; অন্যভাবে বলা যায়, তাদের আধ্যাত্মিক বিষয়ে বোধের অভাব রয়েছে (যেহেতু আধ্যাত্মিক বিষয়সমূহের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো মানবীয় দক্ষতা আমি সৃষ্টি করিনি, সেহেতু তাদের কাছে খুব বেশি কিছু আমি দাবি করি না; আমি শুধু চাই যে আমার বাক্যসমূহ তারা শ্রবণ করুক এবং সেগুলির অনুশীলন করতে সক্ষম হোক)। তারা আমার গৃহের লোকজন নয়, আমার অনুরূপ প্রকারেরও নয়; তারা শয়তানের দেশের অন্তর্গত। অতএব আধ্যাত্মিক বিষয়ে বোধের অভাব রয়েছে এমন একজন মানুষকেও আমি চাই না। পূর্বে, তোমরা ভেবেছিলে আমি বুঝি মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছি, কিন্তু এখন তোমাদের উপলব্ধি করা উচিত। পশুদের পক্ষে কীভাবেই বা ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথন করা সম্ভব হতে পারে? তা কি এক উদ্ভট ব্যাপার হবে না? যে মানুষেরা আমার স্বাভাবিক মানবতাকে জানে না, তারাই আমার মানবতার দ্বারা সম্পাদিত কার্যকে পরিমাপ করতে নিজেদের পূর্বধারণাসমূহকে ব্যবহার করে। সমর্পণ করার পরিবর্তে, তাদের চর্মচক্ষুর সাহায্যে, তারা আমার ভুলত্রুটি ধরতে আসে। আমার উচ্চারিত বাক্যগুলি কি তাহলে বিফলেই গিয়েছে? আমি বলেছি যে আমার স্বাভাবিক মানবতা আমার, সম্পূর্ণ স্বয়ং ঈশ্বরের, এক অপরিহার্য অঙ্গ, এবং আমার স্বাভাবিক মানবতা ও সম্পূর্ণ দেবত্বের একে-অপরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কার্যসাধনের এটাই হল যথাযথ পদ্ধতি: আমার স্বাভাবিক মানবতার মাধ্যমে সম্পন্ন কার্যগুলি যখন মানুষের পূর্বধারণাসমূহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না, তখন যারা আমার বিরোধিতা করে এবং যারা আমার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তারা প্রকাশিত হয়ে পড়ে। এরপর, আমার সম্পূর্ণ দেবত্ব মানবতার মাধ্যমে বাক্যোচ্চারণ করে, এবং এই ভাবে, আমি কিছু মানুষের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমি কী করি তা উপলব্ধি না করা সত্ত্বেও যদি তুমি সমর্পণ করো, তাহলে তুমি হলে সেই ধরনের মানুষ যাদের আমি দোষী সাব্যস্ত করি না; এমন মানুষদের আমি শুধু আলোকিত করি। এজাতীয় মানুষদের আমি ভালোবাসি, এবং তোমার সমর্পণের দরুন আমি তোমায় আলোকিত করি। যারা আমার বাক্যসমূহকে জানে না, যারা আমার স্বাভাবিক মানবতার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ, এবং দেবত্বে আমার সম্পাদিত কার্যাদি যারা অনুমোদন করে না (উদাহরণস্বরূপ, আমার ক্রুদ্ধ হওয়া, বা গির্জার নির্মাণ, ইত্যাদি), তারা আমার দেবত্বের বিরোধিতাকারীদের অন্তর্ভুক্ত। এগুলি সকলই হল আমার দেবত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অভিব্যক্তি। যা-ই হোক, একটি বিষয় আমায় জোর দিয়ে বলতেই হবে, এবং তোমাদের প্রত্যেকের এর প্রতি অভিনিবেশ দান করা উচিত: অধুনা আমার যে ছবি, তার সাথে যারা অসঙ্গতিপূর্ণ, তারা আমার দেবত্বকে প্রতিরোধ করছে। বারংবার কেন আমি বলে চলি যে আমার যে ছবি তা-ই হল সম্পূর্ণ ঈশ্বর স্বয়ং? আমার যে ছবি তার স্বভাবটি সমগ্র ঐশ্বরিক স্বভাবকে ধারণ করে; আমার পরিমাপ করতে মানবীয় পূর্বধারণাসমূহ প্রয়োগ কোরো না। এমনকি আজও অনেক মানুষ বলে থাকে যে আমি স্বাভাবিক মানবতার অধিকারী এবং আমার সম্পাদিত সকল কার্যই যে যথাযথ এমনটি নয়। মানুষ যখন এরকম, তখন তুমি কি নিছকই মৃত্যুকে আমন্ত্রণ করছো না? আমার বক্তব্যের একটি বর্ণও তারা জানে না, এবং সম্পূর্ণরূপে তারা অন্ধের বংশধর ও অতিকায় লাল ড্রাগনের সন্তানসন্ততি! প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে আমি আরেকবার বলবো (এবং পরবর্তীকালে আমি তা পুনরুক্তি করবো না, এবং যারা এই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করবে তারা সকলেই নিশ্চিতভাবে অভিশপ্ত হবে): আমার বাক্যসমূহ, আমার হাস্য, আমার ভক্ষণ, আমার যাপন, আমার বাচনভঙ্গি, এবং আমার আচরণ, সকলই আমার দ্বারা—স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারা সম্পাদিত—এবং এর মধ্যে মানুষের সামান্যতম চিহ্নও মিশে নেই। কিছুমাত্র নেই! আদৌ কিছুমাত্রই নেই! সকল মানুষকে অবশ্যই মানসিক ক্রীড়ায় নিরত হওয়া থেকে নিবৃত্ত হতে হবে, এবং তাদের তুচ্ছ হিসাবনিকাশ ত্যাগ করতে হবে। এসব কাজ মানুষ যত বেশি করে চালিয়ে যাবে, ততই তারা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনবে। আমার উপদেশের প্রতি মনোযোগ দাও!
সততই আমি প্রত্যেকের অন্তরের অন্তঃস্থল অনুসন্ধান করছি, প্রতিটি মানুষের প্রত্যেক বাক্য ও ক্রিয়াকর্ম ঘেঁটে দেখছি। যাদের আমি পছন্দ করি এবং যাদের অপছন্দ করি তাদের একে একে আমি সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি। এ হল মানুষের কল্পনাতীত এক বিষয়, উপরন্তু তা নিষ্পাদনে তারা অক্ষমও বটে। এতো বাক্য আমি উচ্চারণ করেছি, এবং এতো কার্য আমি সম্পন্ন করেছি; আমার বাক্য ও কার্যের উদ্দেশ্য কে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হতো? কেউই পারতো না। আজ থেকে, আমি আরো বেশি বাক্য উচ্চারণ করবো; একদিকে তা আমার সকল অপছন্দের লোককে বহিষ্কার করবে, অন্যদিকে এবিষয়ে তোমাদের আরেকটু বেশি কষ্টস্বীকার করাবে, যাতে আরেকবার তোমরা, তীব্রতর রূপে, পুনরুত্থানের স্বাদ গ্রহণ করতে পারো। মানুষের দ্বারা তা নির্ধারিত হতে পারে না, এবং এর সংঘটন কেউ রোধও করতে পারে না। এমনকি এই মুহূর্তে যদি তোমরা এ বিষয়ে অবগতও হও, তবু সময় যখন আসবে, তখনও তোমরা এই ধরনের যন্ত্রণা এড়াতে সক্ষম হবে না, কারণ এ-ই হল আমার কার্যপ্রণালী। আমার লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্ত, এবং তোমাদের মধ্যে আমার ইচ্ছার পরিপূরণ ঘটাতে, আমায় এভাবেই কার্য সম্পাদন করতে হবে। এই কারণেই একে “তোমাদের অন্তিম সহনীয় যন্ত্রণা” বলা হয়। এর পর, তোমাদের দেহ আর কোনোদিন কোনো কষ্টভোগ করবে না, কারণ অতিকায় লাল ড্রাগন তখন আমার দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এবং পুনরায় কখনো রণমূর্তি ধারণের স্পর্ধা করবে না। আধ্যাত্মিক শরীরে প্রবেশের পূর্বে এটিই চূড়ান্ত ধাপ; এ হল সংক্রমণকালীন পর্যায়। কিন্তু শঙ্কিত হোয়ো না—নিশ্চিতরূপেই আমি তোমাদের একের পর এক বিপত্তির মধ্য দিয়ে পথপ্রদর্শন করবো। বিশ্বাস রেখো যে আমিই ধার্মিক ঈশ্বর স্বয়ং, এবং আমি যা বলি তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। আমিই স্বয়ং বিশ্বাসভাজন ঈশ্বর। সকল রাষ্ট্র, যাবতীয় ভূমি, এবং সকল সম্প্রদায় আমার নিকট প্রত্যাগমন করছে এবং দলে দলে এসে আমার সিংহাসনের সামনে জমায়েত হচ্ছে। এ-ই হল আমার বিপুল ক্ষমতা, এবং বিদ্রোহের সকল সন্তানকে আমি বিচার করবো এবং ব্যত্যয়হীনভাবে তাদের জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে নিক্ষেপ করবো। সকলকে পশ্চাদপসরণ করতেই হবে। এ-ই হল আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার শেষ ধাপ, এবং একবার তা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, আমি বিশ্রামে প্রবেশ করবো, কারণ সমস্তকিছুই তখন সম্পন্ন হয়ে যাবে, এবং আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা এক পরিসমাপ্তিতে এসে উপনীত হবে।
যেহেতু আমার কার্যের বেগ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে (যদিও আমি বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন বোধ করি না), সেহেতু প্রতিদিন আমি তোমাদের নিকট স্বীয় বাক্যসমূহ প্রকাশ করি এবং প্রত্যহ তোমাদের নিকট আমার ধারণ করা রহস্যসমূহ উদ্ঘাটন করি, যাতে ঘনিষ্ঠভাবে তোমরা আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারো। (এ হল আমার প্রজ্ঞা; স্বীয় বাক্যসমূহ আমি ব্যবহার করি মানুষকে নিখুঁত করতে, সেইসাথে মানুষদের আঘাত করতেও বটে। সকলে আমার বাক্যসমূহ পাঠ করে এবং আমার বাক্যে প্রকাশিত আমার ইচ্ছা অনুযায়ী কার্য সম্পাদনে সক্ষম। যারা নেতিবাচক তারা নেতিবাচকই রইবে, এবং যাদের প্রকাশিত করতে হবে তারা নিজেদের প্রকৃত বর্ণ প্রদর্শন করবে; অবাধ্যরা প্রতিরোধ করবে, এবং যারা আমায় বিশ্বস্তভাবে ভালোবাসে তারা আরো বিশ্বস্ত হয়ে উঠবে। এইভাবে, সকলেই আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে সমর্থ হবে। আমার বর্ণিত এই সকল পরিস্থিতিগুলি হল আমার কার্যপদ্ধতি এবং সেই লক্ষ্যসমূহ যা আমি অর্জন করতে চাই।) অতীতে, আমি এজাতীয় উক্তি করেছি: আমি যেভাবেই তোমাদের পথ দেখাই, সেভাবেই তোমাদের অন্বেষণ করা উচিত; তোমাদের আমি যা-ই বলি তা-ই তোমাদের শোনা উচিত। এই উক্তির মাধ্যমে আমি কী বলতে চেয়েছি? তোমরা কি জানো? আমার বাক্যের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য কী? তোমরা কি উপলব্ধি করো? কতজন মানুষ তা সম্পূর্ণরূপে ভাষায় প্রকাশ করতে পারে? আমি যখন বলি, “আমি যেভাবেই তোমাদের পথ দেখাই, সেভাবেই তোমাদের অন্বেষণ করা উচিত”, তখন আমি কেবল আমার নিজের ছবি দ্বারা প্রদত্ত পথনির্দেশনার প্রতিই ইঙ্গিত করছি না; উপরন্তু আমার উচ্চারিত বাক্য ও আমার গৃহীত পথকেও নির্দেশ করছি। আজ, এই বাক্যগুলি প্রকৃতই সফল হয়েছে। আমার বাক্য উচ্চারণমাত্র, আমার উপস্থিতির আলোকের সম্মুখে সকল প্রকার দানবীয় মুখাবয়ব অনাবৃত হয়, তাদের সকলকে তোমরা সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাও। আমার এই উচ্চারণগুলি শুধুমাত্র শয়তানের উদ্দেশ্যে এক ঘোষণা নয়, সেইসাথে তোমাদের সকলের উপর এক দায়িত্ব অর্পণও বটে। এই বাক্যগুলিকে তোমাদের উপর অর্পিত এক দায়িত্ব মনে করে তোমাদের অধিকাংশ এগুলিকে উপেক্ষা করো; তোমরা উপলব্ধি করো না যে এগুলি বিচারের বাক্য, এবং কর্তৃত্ববাহী বাক্যাবলী। আমার বাক্যসমূহের উদ্দেশ্য হল আমার নিমিত্ত যথাযথভাবে সেবাদান করতে এবং আমার নিকট সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করতে শয়তানকে আদেশ করা। অতীতে আমার দ্বারা উদ্ঘাটিত রহস্যগুলির মধ্যে আজও এমন অনেক রহস্য রয়ে গিয়েছে যেগুলি তোমরা এখনো হৃদয়ঙ্গম করো না। এভাবে, ভবিষ্যতে আমি আরো রহস্য প্রকাশ করবো যাতে তোমরা এক স্পষ্টতর ও অধিকতর আনুপুঙ্খিক উপলব্ধি অর্জন করতে পারো।
যখন দুর্যোগ নেমে আসে, তখন সকলেই আতঙ্কিত হয়। সমুদয় মানুষ দুঃখে ক্রন্দন করে এবং অতীতে তাদের কৃত মন্দ কাজগুলির দরুন ঘৃণা বোধ করে, কিন্তু ততক্ষণে অনেক বিলম্ব হয়ে গিয়েছে, কারণ এ হল ক্রোধের যুগ। এটি মানুষকে উদ্ধার করার ও অনুগ্রহ প্রদানের সময় নয়, বরং সকল সেবা-প্রদানকারীকে অপসারণ করার এবং আমার পুত্রদের আমার হয়ে রাজত্ব করতে অনুমোদন প্রদানের সময়। এই সময়কালটি অতীতের থেকে বস্তুতই স্বতন্ত্র; বিশ্ব-সৃষ্টির পর থেকে এমন কাল নজিরবিহীন। যেহেতু একদা আমি জগৎ সৃষ্টি করেছিলাম, সেহেতু একদিন আমি তা ধ্বংস করবো, এবং আমি যা পূর্বনির্ধারিত করে রেখেছি, কেউ তার পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। দুটি পরিভাষা, “যৌথ খ্রীষ্টান মানব” ও “যৌথ বিশ্বজনীন নব মানব”, পূর্বে বেশ ঘন-ঘন উল্লিখিত হয়েছিল। এগুলি কীভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত? “যৌথ খ্রীষ্টান মানব” বলতে কি প্রথমজাত পুত্রদের বোঝায়? “যৌথ বিশ্বজনীন নব মানব”-ও কি প্রথমজাত পুত্রদেরই সূচিত করে? না; এই শব্দবন্ধগুলি মানুষ যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করেনি। যেহেতু বিষয়াদি উপলব্ধির ক্ষেত্রে মানবীয় পূর্বধারণা তাদের কেবল এই মাত্রা পর্যন্তই সহায়তা করতে পারে, সেহেতু এই মুহূর্তেই, বিষয়দুটি আমি তোমাদের কাছে প্রাঞ্জল করে দেবো। যৌথ খ্রীষ্টান মানব ও যৌথ বিশ্বজনীন নব মানব অভিন্ন নয়; তাদের অর্থ আলাদা। যদিও এই পরিভাষাদুটির শব্দগঠন অত্যন্ত সদৃশ, এবং এই দুটিকে একই বস্তু বলে মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। “যৌথ খ্রীষ্টান মানব” ঠিক কাদের নির্দেশ করে? কিংবা, তা কোন বিষয়টিকে নির্দেশ করে? খ্রীষ্টান মানবের প্রসঙ্গ উঠলে, সকলেই একবাক্যে আমার বিষয়ে চিন্তা করবে। তাদের এমন করাটা আদৌ ভুল কিছু নয়। উপরন্তু, মানবীয় পূর্বধারণায়, “মানব” শব্দটি নিশ্চিতরূপে মনুষ্যগণকেই সূচিত করবে; একজন মানুষও শব্দটিকে অন্যকিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত করবে না। “যৌথ” শব্দটি বলা হলেই, মানুষ ভাববে এর অর্থ বহু মানুষের এক জমায়েত যারা প্রকৃতপক্ষে এক অবিভক্ত একক, এবং সেকারণেই, “যৌথ” বলা হয়। এতে প্রতিভাত হয় যে মানব-মন নিতান্তই সরল; আমার বক্তব্যের অর্থ তারা আদৌ উপলব্ধি করতে পারে না। এখন, যৌথ খ্রীষ্টান মানব কী সে বিষয়ে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে সহভাগিতা আরম্ভ করবো (কিন্তু সকল মানুষকে অবশ্যই তাদের নিজস্ব পূর্বধারণাগুলি একপাশে সরিয়ে রাখতে হবে; নচেৎ, তাদের একজনও উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না, এবং এমনকি শব্দটি আমি যদি ব্যাখ্যাও করি, তবু তারা তা বিশ্বাস করবে না, এবং অনুধাবন করতেও অসমর্থ হবে): আমার বাক্যসমূহ উক্ত হওয়া মাত্র, আমার সকল প্রথমজাত পুত্র আমার ইচ্ছা অনুযায়ী কার্যসাধন করতে, এবং আমার ইচ্ছা প্রকাশ করতে সক্ষম হবে, সুতরাং অন্তরে ও বচনে তারা একাত্ম। তারা যখন সকল রাষ্ট্র ও সমুদয় মানুষকে বিচার করবে, তখন তারা আমার ন্যায়পরায়ণতাকে বাস্তবায়িত করতে এবং আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহ কার্যকর করতে সক্ষম হবে; তারা আমারই এক অভিব্যক্তি, এবং তারা আমারই প্রতিভাস। অতএব, বলা যেতে পারে যে যৌথ খ্রীষ্টান মানব হল প্রথমজাত পুত্রগণ দ্বারা আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের কার্যায়নের বাস্তব সত্যতা; তারা প্রথমজাত পুত্রদের হস্তধৃত কর্তৃত্ব। এই সমস্তই খ্রীষ্টের সঙ্গে সম্পর্কিত—সেকারণেই “খ্রীষ্টান মানব” পরিভাষাটির উদ্ভব হয়েছে। তার উপর, সকল প্রথমজাত পুত্র আমার ইচ্ছা অনুসারে কার্যসাধনে সক্ষম, এবং সেই কারণে, আমি “যৌথ” শব্দটি প্রয়োগ করি। “যৌথ বিশ্বজনীন নব মানব” আমার নামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত মানুষকে বোঝায়; প্রকারান্তরে বললে, তারা হল আমার প্রথমজাত পুত্রগণ, আমার পুত্রেরা, এবং আমার লোকজন। “নব” শব্দটি আমার নামের সূত্রে প্রযুক্ত হয়। যেহেতু তারা আমার নামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট (আমার নাম সমস্তকিছু বহন করে, এবং তা চিরনতুন, কখনোই তা পুরাতন হয় না; মানুষ তা পরিবর্তনে অপারগ), এবং যেহেতু তারা ভবিষ্যতে অনন্তকালব্যাপী জীবিত রইবে, সেহেতু তারা হল বিশ্বজনীন নব মানব। এখানে “যৌথ” শব্দটি মানুষের সংখ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং তা পূর্বোক্ত ব্যাখ্যার অনুরূপ নয়। আমার বাক্য যখন কথিত হয়, তখন সকলের তাতে বিশ্বাস রাখা উচিত। সংশয়ান্বিত হোয়ো না। তোমাদের মানবীয় পূর্বধারণা ও মানবীয় চিন্তা-ভাবনা থেকে নিজেদের মুক্ত করো। আমার রহস্যসমূহ উদ্ঘাটনের বর্তমান পদ্ধতিটি সুনির্দিষ্টভাবে মানবীয় পূর্বধারণা ও চিন্তা-ভাবনা অপসারণের পদ্ধতি (যেহেতু আমাকে ও আমার বাক্যসমূহকে পরিমাপ করতে মানুষ তাদের নিজস্ব পূর্বধারণাগুলি প্রয়োগ করে, সেহেতু মানবীয় পূর্বধারণা ও চিন্তা-ভাবনা অপসারণ করতে আমি আমার নিজের উদ্ঘাটিত রহস্যগুলি ব্যবহার করি)। এই কার্য শীঘ্রই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আমার রহস্যসমূহ যখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় উদ্ঘাটিত হবে, তখন আমার বাক্যাবলীর বিষয়ে মানুষের আর কোনো চিন্তন-প্রক্রিয়া থাকবে না বললেই চলে, এবং তারা নিজেদের মানবীয় পূর্বধারণাসমূহ দ্বারা আমায় পরিমাপ করা থেকে বিরত হবে। প্রতিদিন তারা যা চিন্তা করবে, আমি তা প্রকাশিত করবো, এবং আমি প্রত্যাঘাত করবো। একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে এসে, মানুষ আর চিন্তা করবে না; তাদের মস্তিষ্ক থেকে যাবতীয় চিন্তা বিদূরিত হবে, এবং আমার বাক্যসমূহের নিকট তারা সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করবে। সেটিই হবে তোমাদের আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করার সময়। এ হল আমার কার্যের এমন এক পদক্ষেপ যা তোমাদের আমি আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের অনুমতিদানের পূর্বেই সম্পন্ন হবে। পবিত্র ও নির্মল হয়ে উঠে আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের পূর্বে তোমাদের আবশ্যিকভাবে সকল মানবীয় পূর্বধারণা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে হবে। এ-ই হল “আমি এক পবিত্র আধ্যাত্মিক দেহ” বাক্যটির অর্থ। যা-ই হোক, তোমাদের অবশ্যই আমার পদক্ষেপ অনুযায়ী কার্যসাধন করতে হবে, এবং তোমরা উপলব্ধি করে ওঠার আগেই আমার সময় সমাগত হবে।