অধ্যায় ১০১
আমার ব্যবস্থাপনায় যারা হস্তক্ষেপ করে বা আমার পরিকল্পনাকে বিপর্যস্ত করতে চায়, তাদের কারো প্রতি আমি সামান্যতম নরম মনোভাব দেখাবো না। প্রত্যেকেরই আমার উচ্চারিত বাক্য থেকে আমার অর্থ অনুধাবন করা উচিত, এবং আমার বক্তব্যের বিষয়ে এক সুস্পষ্ট উপলব্ধি থাকা উচিত। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, তোমাদের প্রত্যেকের নিজেকে পরীক্ষা করে দেখা উচিত: তুমি কী ধরনের ভূমিকা পালন করছো? তুমি কি আমার নিমিত্ত জীবনযাপন করছো, নাকি শয়তানের সেবা করছো? তোমার প্রতিটি ক্রিয়াকর্ম কি আমার থেকে উদ্ভূত, নাকি শয়তানের থেকে? আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের লঙ্ঘন এবং ফলস্বরূপ আমার উন্মত্ত ক্রোধের উদ্রেক এড়াতে এই সমস্ত বিষয়ে তোমাদের পরিষ্কার ধারণা থাকে উচিত। অতীতের বিষয়ে চিন্তা করলে দেখা যায়, মানুষ সততই আমার প্রতি আনুগত্যহীন ও অসন্তানোচিত ছিল; তাদের আচরণ ছিল অসম্মানজনক এবং, উপরন্তু, তারা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এইসকল কারণেই, এই মানুষগুলি আজ আমার বিচারের সম্মুখীন। যদিও, দৃশ্যত আমায় একজন মানুষের মতোই দেখায়, কিন্তু যাদের আমি অনুমোদন করি না তারা সকলেই আমার দ্বারা বহিষ্কৃত হবে (এর থেকে আমার ইপ্সিত অর্থটি তোমাদের উপলব্ধি করা উচিত: তুমি দেখতে কতখানি রূপবান বা আকর্ষক সেটি বিচার্য নয়, বিচার্য হল তুমি আমার দ্বারা পূর্বনির্ধারিত ও মনোনীত হয়েছো কি না)। এই বাক্য চূড়ান্তরূপে সত্য। এর কারণ হল, বাহ্যিকভাবে আমায় মানুষের মতো দেখাতে পারে, কিন্তু আমার দেবত্বকে উপলব্ধি করতে হলে তোমায় আমার মানবতাকে অতিক্রম করে দৃষ্টি প্রসারিত করতে হবে। যেমনটি আমি বহুবার বলেছি: “স্বাভাবিক মানবতা ও সামগ্রিক দেবত্ব সম্পূর্ণ স্বয়ং ঈশ্বরের দুই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।” তথাপি, তোমরা এখনো আমায় উপলব্ধি করো না; তুমি কেবল তোমার ঐ অস্পষ্ট ঈশ্বরের উপর গুরুত্ব আরোপ করো। তুমি এমন এক মানুষ যে আধ্যাত্মিক বিষয়সমূহ উপলব্ধি করে না। তা সত্ত্বেও, এরকম মানুষেরা এখনো আমার প্রথমজাত পুত্র হতে চায়। কী নির্লজ্জ! নিজেদের প্রকৃত আত্মিক উচ্চতা তারা দেখতে পায় না! আমার লোক হিসাবে সেবাপ্রদানের উপযুক্ত আত্মিক উচ্চতাও তাদের নেই, তাহলে কীভাবে তারা আমার প্রথমজাত পুত্র হয়ে আমার সাথে রাজা হয়ে উঠতে পারে? এজাতীয় মানুষগুলি নিজেদের জানে না; তারা শয়তানের সমগোত্রীয়, এবং আমার পরিবারের স্তম্ভ হওয়ার অযোগ্য, আমার সম্মুখে সেবাদান তো দূর অস্ত। অতএব আমি একে একে তাদের বহিষ্কার করবো, এবং একে একে তাদের প্রকৃত অবয়ব প্রকাশ করবো।
আমার কার্য, অপ্রতিহতভাবে ও সামান্যতম প্রতিবন্ধকতা ব্যতিরেকে, ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়, কারণ আমি বিজয় অর্জন করেছি এবং সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে নৃপতি হিসাবে রাজত্ব করেছি। (যার প্রতি আমি নির্দেশ করছি তা হল, শয়তানকে পরাভূত করার পর, আমি আমার শক্তি নতুন করে পুনরুদ্ধার করেছি।) যখন আমি আমার সকল প্রথমজাত পুত্রদের অর্জন করবো, তখন সিয়োন পর্বতের ঊর্ধ্বে বিজয়কেতন উত্তোলিত হবে। অর্থাৎ, আমার প্রথমজাত পুত্রেরাই আমার বিজয়নিশান, আমার মহিমা, এবং আমার অহংকার; তারা হল আমার শয়তানকে অপদস্থ করার এক চিহ্ন, এবং তারা আমার কার্যসাধনের পদ্ধতি। (আমার দ্বারা পূর্বনির্ধারিত হওয়ার পর শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট হয়েছে, কিন্তু পুনরায় আমার পক্ষে প্রত্যাবর্তন করেছে এমন একদল মানুষের মাধ্যমে, আমি অতিকায় লাল ড্রাগনকে অপদস্থ করি এবং বিদ্রোহের সকল সন্তানকে শাসন করি।) আমার প্রথমজাত পুত্রদের মধ্যেই আমার সর্বশক্তিমানতা নিহিত রয়েছে; অপরিবর্তনীয় ও অবিসংবাদিতভাবে তারা আমার মহান সাফল্য। তাদের মাধ্যমেই আমি আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনাকে সম্পূর্ণ করবো। অতীতে যখন আমি বলেছিলাম, “তোমাদের মাধ্যমে আমি সকল রাষ্ট্র ও সকল মানুষকে আমার সিংহাসনের সম্মুখে প্রত্যাবর্তন করাবো”, তখন আমি এই অর্থই নির্দেশ করেছিলাম। যখন আমি “তোমাদের স্কন্ধের গুরুভার দায়িত্ব” সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছিলাম, তখনও এর প্রতিই আমি উদ্দেশ করেছিলাম। বিষয়টি কি পরিষ্কার? তোমরা কি বুঝতে পেরেছো? প্রথমজাত পুত্রেরা আমার সমগ্র পরিচালনামূলক পরিকল্পনার কেলাসিত রূপ; সেই কারণেই এই গোষ্ঠীটির প্রতি আমি কখনো নরম আচরণ করিনি, এবং আমি সততই তাদের কঠোরভাবে অনুশাসন করেছি (এই কঠোর অনুশাসন হল জাগতিক দুঃখকষ্টভোগ, পারিবারিক দুর্দৈব, এবং পিতা-মাতা, স্বামী, স্ত্রী, ও সন্তানদের দ্বারা পরিবর্জিত হওয়া—সংক্ষেপে, বিশ্বের দ্বারা পরিত্যক্ত ও যুগের দ্বারা বর্জিত হওয়া), এবং এই কারণেই তোমরা আজ আমার সম্মুখে উপনীত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছো। এ-ই হল সেই প্রশ্নটির উত্তর যে বিষয়ে তোমরা প্রায়শই চিন্তাভাবনা করেছো: “অন্য লোকেরা এই নাম গ্রহণ করেনি, অথচ আমি কেন তা করেছিলাম?” এখন উত্তরটি তোমাদের জানা!
আজকে কোনোকিছুই অতীতের মতো নয়। আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনা নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে, পূর্বের তুলনায় আমার কার্য অনেক আলাদা, এবং আমার উচ্চারণসমূহ অধুনা আরো বেশি নজিরবিহীন। সেকারণেই আমি বারংবার জোর দিয়ে বলেছি যে তোমাদের আমাকে যথাযথভাবে সেবা প্রদান করা উচিত (এটি সেবা-প্রদানকারীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়)। নিজের প্রতি নেতিবাচক আচরণ কোরো না, বরং এক ঐকান্তিক অন্বেষণ বজায় রেখো। কিছু অনুগ্রহ অর্জন করা কি উপভোগ্য নয়? জগতে যন্ত্রণাভোগ অপেক্ষা তা অনেকাংশে শ্রেয়। আমি তোমায় বলছি! তুমি যদি সর্বান্তঃকরণে আমায় সেবাদান না করো, পরিবর্তে অনুযোগ করো যে আমি অধার্মিক, তাহলে আগামীদিনে তুমি মৃতস্থানে ও নরকে অবতরণ করবে। কোনো মানুষই অকালমৃত্যু চায় না—তাই নয় কি? এমনকি জীবনের অতিরিক্ত একখানি দিনও এক গুরুত্বপূর্ণ দিবস, সেকারণেই সর্বতোভাবে তুমি নিজেকে আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার কাছে সমর্পণ করবে এবং, তারপর, তোমার বিষয়ে আমার বিচারের জন্য অপেক্ষা করবে এবং তোমার উপর আমার ধার্মিক শাস্তি নেমে আসার জন্য প্রতীক্ষা করবে। আমার বক্তব্যসমূহকে অর্থহীন ধরে নিও না; আমি আমার ন্যায়পরায়ণতা ও আমার স্বভাব থেকে বাক্যোচ্চারণ করি। অধিকন্তু, আমি কার্যও সম্পাদন করি আমার মহিমা ও ন্যায়পরায়ণতা থেকে। সকল মানুষ যে আমায় ধার্মিকতাহীন বলে, তার কারণ তারা আমায় জানে না; এ হল তাদের বিদ্রোহী স্বভাবের এক সুস্পষ্ট অভিব্যক্তি। আমার মধ্যে কোনো আবেগ নেই; বরং, শুধু ন্যায়পরায়ণতা, মহিমা, বিচার, এবং ক্রোধ রয়েছে। সময় যত অতিবাহিত হবে, তত বেশি করে তোমরা আমার স্বভাবকে প্রত্যক্ষ করবে। বর্তমান সময়টি এক ক্রান্তিকালীন পর্যায়, এবং তোমরা এর সামান্য একাংশই শুধু দেখতে সক্ষম; তোমরা কেবল বাহ্যিকভাবে প্রতিভাত কিছু বিষয় দেখতে পাও। আমার প্রথমজাত পুত্রেরা যখন আবির্ভূত হবে, তখন তোমাদের আমি সমস্তকিছু দেখার ও উপলব্ধি করার সুযোগ দেবো। সকলেই তাদের অন্তরে ও কথাবার্তায় প্রতীত হবে। তোমাদের আমি আমার সাক্ষ্যে উচ্চকিত করতে চাই, তোমাদের দিয়ে অনন্তকালব্যাপী আমার বন্দনা, এবং শাশ্বতকালব্যাপী আমার প্রশংসা করাতে চাই। এটি অনিবার্য, এবং কেউ এর পরিবর্তনে সক্ষম নয়। মানুষের পক্ষে তা কল্পনা করাই কঠিন, বিশ্বাস করা তো দূর অস্ত।
যারা প্রথমজাত পুত্র, এই দর্শনের বিষয়ে তাদের ক্রমবর্ধমান স্বচ্ছতা রয়েছে, এবং আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। (এ কোনো প্রণয়মূলক ভালোবাসা নয়, যে ভালোবাসা হল আমার প্রতি শয়তানের প্রলোভন, যার আসল রূপ অবশ্যই যথার্থরূপে বুঝতে হবে। এই কারণে, পূর্বেই আমি উল্লেখ করেছি যে কিছু মানুষ রয়েছে যারা আমার সম্মুখে তাদের মনোহারিতা জাহির করে। এজাতীয় মানুষগুলি শয়তানের অনুচর, ভাবে আমি বুঝি তাদের সৌন্দর্য দেখে আকৃষ্ট হবো। বেহায়া! তারা নরাধমদের মধ্যে নিকৃষ্টতম!) কিন্তু যে মানুষগুলি স্বয়ং প্রথমজাত পুত্র নয়, এই সময়কালে আমার কথিত বাক্যসমূহের মাধ্যমে, দর্শনসমূহের বিষয়ে তারা উত্তরোত্তর বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে এবং আমার যে স্বরূপ তার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। অতঃপর, পরিশেষে পতন না ঘটা পর্যন্ত, তারা ক্রমশ উদাসীন হয়ে পড়ে। এই ধরনের মানুষগুলি নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই-ই হল বর্তমান সময়কালে আমার বক্তব্যসমূহের লক্ষ্য; প্রত্যেকের তা চাক্ষুষ করা উচিত (আমি প্রথমজাত পুত্রদের উদ্দেশ্যে বলছি), এবং আমার উচ্চারণ ও কার্যাবলীর মধ্য দিয়ে আমার বিস্ময়করতা দর্শন করা উচিত। এমন কেন বলা হয় যে আমি শান্তির রাজপুত্র, চিরন্তন পিতা, কেন বলা হয় যে আমি বিস্ময়কর, এবং আমি পরামর্শদাতা? আমার পরিচয়, আমার উচ্চারণসমূহ, বা আমার কার্যাবলীর পরিপ্রেক্ষিত থেকে এর ব্যাখ্যা করাটা অতিরিক্ত মাত্রায় উপরিগত হয়ে যাবে; এমনকি তা উল্লেখের উপযুক্ততাও হারিয়ে ফেলবে। আমায় শান্তির রাজপুত্র বলে অভিহিত করার কারণটি উদ্ভূত হয় আমার প্রথমজাত পুত্রদের সম্পূর্ণ করার ক্ষমতা, শয়তানের বিষয়ে আমার বিচার, এবং প্রথমজাত পুত্রদের উপর আমার অর্পিত সীমাহীন আশীর্বাদসমূহ থেকে। অন্যভাবে বলা যায়, শুধুমাত্র প্রথমজাত পুত্রেরাই আমায় শান্তির রাজপুত্র বলে ডাকার যোগ্যতাসম্পন্ন, কারণ আমার প্রথমজাত পুত্রদের আমি ভালোবাসি, এবং “শান্তির রাজপুত্র” আখ্যাটি তাদের মুখ থেকেই নিঃসৃত হওয়া উচিত। তাদের কাছে, আমি শান্তির রাজপুত্র। আমার পুত্র ও আমার লোকেদের কাছে আমি চিরন্তন পিতা হিসাবে পরিচিত। আমার প্রথমজাত পুত্রদের অস্তিত্বের কারণে, এবং যেহেতু তারা আমার সাথে একত্রে রাজপদ ধারণ করতে এবং সমস্ত রাষ্ট্র ও সমুদয় মানুষকে (অর্থাৎ, পুত্র ও লোকেদের) শাসন করতে সক্ষম, সেহেতু পুত্র ও লোকেদের আমায় চিরন্তন পিতা বলে আখ্যাত করা উচিত—যার অর্থ ঈশ্বর স্বয়ং, যাঁর স্থান প্রথমজাত পুত্রদের ঊর্ধ্বে। যারা পুত্র, লোকজন, বা প্রথমজাত পুত্র নয়, তাদের নিকট আমি বিস্ময়কর। আমার কার্যের বিস্ময়করতার দরুন, অবিশ্বাসীরা আমায় আদৌ দেখতেই পায় না (কারণ তাদের চক্ষু আমি অবগুণ্ঠিত করেছি), এবং আমার কার্যের বিষয়ে তাদের কোনো তাদের কোনও সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নেই। অতএব, তাদের নিকট আমি বিস্ময়কর। সকল দুষ্ট আত্মা ও শয়তানের নিকট আমি হলাম পরামর্শদাতা, কারণ আমার সকল কার্য তাদের লজ্জিত করে; আমার যাবতীয় ক্রিয়াকলাপ আমার প্রথমজাত পুত্রদের স্বার্থে। আমার প্রতিটি পদক্ষেপ মসৃণভাবে অগ্রসর হয়, এবং প্রত্যেক পদক্ষেপে আমি বিজয় অর্জন করি। উপরন্তু, শয়তানের সকল অভিসন্ধির স্বরূপ আমি দেখতে পাই এবং সেগুলিকে আমার সেবায় ব্যবহার করি, এইভাবে শয়তানকে আমি নেতিবাচক দিক থেকে স্বীয় উদ্দেশ্য পূরণের এক বস্তুতে পরিণত করি। এ-ই হল আমার “পরামর্শদাতা” হওয়ার অর্থ, কেউই যার পরিবর্তন ঘটাতে পারে না এবং কেউই যা সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারে না। কিন্তু, আমার ছবি অনুসারে, আমি হলাম শান্তির রাজপুত্র ও চিরন্তন পিতা, এবং সেই সঙ্গেই পরামর্শদাতা ও বিস্ময়কর। এর মধ্যে অসত্য কিছু নেই। এ হল এক অখণ্ডনীয় ও অপরিবর্তনীয় সত্য!
আমার এতকিছু বলার রয়েছে; বস্তুত বর্ণনযোগ্য কোনো সাদৃশ্যই নেই। সে কারণেই আমি চাই যে তোমরা ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করো। যা-ই করো না কেন, ঝোঁকের মাথায় প্রস্থান কোরো না। কারণে অতীতে তোমরা যা উপলব্ধি করেছিলে এখন তা সেকেলে, তা আর প্রযোজ্য নয়, এবং বর্তমান সময়টি হল পরিবর্তনের কাল—এক রাজবংশ থেকে অন্য এক রাজবংশে পরিবর্তনের অনুরূপ। এই কারণেই, আমি চাই যে তোমরা নিজেদের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনো এবং পুরাতন পূর্বধারণাসমূহ বর্জন করো। এ-ই হল “ন্যায়পরায়ণতার পবিত্র আঙরাখা পরিধান করা”-র প্রকৃত অর্থ। একমাত্র আমিই আমার নিজ বাক্যের ব্যাখ্যা দিতে পারি, এবং স্বয়ং আমিই জানি কোন কার্যভার আমি গ্রহণ করেছি। সুতরাং, একমাত্র আমার বাক্যসমূহই অশুদ্ধিমুক্ত এবং সম্পূর্ণরূপে আমার অভিপ্রায় অনুসারী, এবং সেহেতু তা হল ন্যায়পরায়ণতার পবিত্র আঙরাখা পরিধান করা। মানব-মননের উপলব্ধি নিছকই কল্পনামাত্র; মানবীয় উপলব্ধি অশুদ্ধ এবং আমার অভিপ্রায় পূরণে অক্ষম। অতএব, আমি স্বয়ং বাক্যোচ্চারণ করি, এবং স্বয়ং আমিই তা ব্যাখ্যা করি, এবং আমি যখন বলেছিলাম যে “আমি নিজেই কার্যসাধন করি”, তখন এই অর্থই আমি নির্দেশ করেছিলাম। আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার এ এক অপরিহার্য অঙ্গ, এবং সকল মানুষ অবশ্যই আমায় মহিমান্বিত করবে এবং আমার বন্দনা করবে। আমার বাক্যসমূহের মর্মগ্রহণ করার বিষয়ে বলা যায়, মানুষকে আমি কখনো সেই ক্ষমতা প্রদান করিনি, এবং তারা আদৌ তা করার মতো ধীশক্তির অধিকারীও নয়। এ হল আমার শয়তানকে অপদস্থ করার অন্যতম পদ্ধতি। (মানুষ যদি আমার উচ্চারণসমূহ উপলব্ধি করতো এবং প্রতি পদক্ষেপে আমার অভিপ্রায়ের মর্ম অনুসন্ধান করতে পারতো, তাহলে চাওয়ামাত্র শয়তান মানুষের দখল নিতে সক্ষম হতো, এবং ফলস্বরূপ, তারা আমার বিপক্ষে চলে যেতো এবং প্রথমজাত পুত্রদের বাছাই করার আমার যে লক্ষ্য তার অর্জন অসম্ভব করে তুলতো। আমি যদি প্রতিটি রহস্য উপলব্ধি করতাম, এবং আমার সত্তার দ্বারা যদি এমন উচ্চারণসমূহ ব্যক্ত হতে পারতো যা সকল মানুষের কাছে দুর্জ্ঞেয়, তাহলে আমিও শয়তানের দ্বারা অধিকৃত হতে পারতাম। এই কারণেই আমি দেহরূপে রয়েছি, মোটেই আমি অতিপ্রাকৃত নই।) এই বাক্যসমূহের তাৎপর্যের বিষয়ে এক পরিষ্কার উপলব্ধি লাভ করা এবং আমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা প্রত্যেকের পক্ষে জরুরি। নিগূঢ় বাক্য ও মতবাদসমূহ নিজেরাই উপলব্ধি করার চেষ্টা কোরো না।