পথ … (৫)
অতীতে, কেউই পবিত্র আত্মাকে চিনত না, যে পথে তিনি চলেন সে বিষয়ে অবহিত হওয়া তো আরোই দূরের কথা। সেকারণেই, ঈশ্বরের সামনে মানুষ বারবার মানুষ বোকা বনেছে। এটা বলা সঙ্গত যে, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখে, তাদের প্রায় কেউই আত্মাকে জানে না, এবং তাদের বিশ্বাসে বিস্তর গোলমাল ও বিভ্রান্তি রয়েছে। স্পষ্টতই, মানুষ ঈশ্বরকে বোঝে না; এবং, যদিও তারা মুখে বলে যে তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখে, কিন্তু মূলগতভাবে, তাদের আচরণের উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, তারা শুধু নিজেদেরই বিশ্বাস করে, ঈশ্বরকে নয়। আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতায়, আমি দেখেছি যে অবতাররূপী ঈশ্বরের অবতারের সাক্ষ্য দেন ঈশ্বর, এবং বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, মানুষ ঈশ্বরের সাক্ষ্য স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, তারা যে ঈশ্বরের আত্মাকে সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত বলে বিশ্বাস করে, সেকথা বলা মুশকিল। তবে, আমি বলি যে, মানুষ এই দেহরূপকে বিশ্বাস করে না, ঈশ্বরের আত্মাকে বিশ্বাস করা তো দূর অস্ত, তারা কেবল তাদের নিজস্ব অনুভূতিকে মান্যতা দেয়। এর ফলে তারা কি শুধু নিজেদেরকেই বিশ্বাস করে চলেছে না? আমার বাক্যগুলি সত্যি। আমি মানুষকে দাগিয়ে দিচ্ছি না, কিন্তু একটা বিষয় আমাকে পরিষ্কার করে দিতে হবে: মানুষকে আজকের দিনে উপনীত করার ক্ষেত্রে, তাদের মনে স্বচ্ছতা বা বিভ্রান্তি যাই থাকুক না কেন, সবকিছুই পবিত্র আত্মার বিচার্য বিষয়। এই বিষয়ে মানুষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পবিত্র আত্মার মানুষের বিশ্বাসের উপর বলপ্রয়োগ করার বিষয়ে আমি আগে যা উল্লেখ করেছি, এটা তারই এক উদাহরণ; পবিত্র আত্মা এই পদ্ধতিতেই কার্য সম্পন্ন করেন, এবং এই হল তার দ্বারা গৃহিত পন্থা। মানুষ অন্তরে কাকে বিশ্বাস তা নির্বিশেষেই, পবিত্র আত্মা বলপূর্বক মানুষের মধ্যে এক প্রকার অনুভূতির সঞ্চার ঘটান, স্বীয় অন্তরের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস করতে তাদের বাধ্য করেন। তুমি কি এরকম ভাবেই বিশ্বাস করো না? তোমার কি মনে হয় না ঈশ্বরের প্রতি তোমার বিশ্বাস একটি অদ্ভুত বিষয়? এই যে তুমি এই স্রোতের বাইরে বেরোতে পারো না এটা কি তোমার কাছে অস্বাভাবিক ঠেকে না? এই বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার কোনো প্রচেষ্টাই কি তুমি করোনি? সমস্ত অলৌকিক ও অদ্ভুত ঘটনার মধ্যে এটাই তো শ্রেষ্ঠ, তাই নয় কি? এমনকি, যদি তুমি এর থেকে মুক্ত হওয়ার তাগিদ বহুবার অনুভব করেও থাকো, তবু, সবসময়ই এক প্রবল জীবনীশক্তি তোমায় টেনে রাখে এবং সরে যেতে অনীহ করে তোলে। এবং, যতবারই তুমি এরকম পরিস্থিতিতে পড়ো, এরপর কী করবে সেটা বুঝে উঠতে না পেরে, প্রত্যেক বার তুমি কান্নাকাটি করতে শুরু করো। তোমাদের কেউ কেউ সত্যিই চলে যাওয়ার চেষ্টা করো, কিন্তু যখন যেতে চাও, তখন এই যাওয়াটা তোমাদের হৃদয়ে ছুরির আঘাতের মতো বেঁধে, মনে হয় যেন কোনো পার্থিব প্রেতাত্মা তোমার আত্মাকে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে তোমার অন্তরকে অস্থির ও অশান্ত করে তুলেছে। এর পর, নিজের মনকে দৃঢ়সংহত করে ঈশ্বরের কাছে প্রত্যাবর্তন ছাড়া তোমার কিছুই করণীয় থাকে না। … তোমার কি এমন অভিজ্ঞতা হয় নি? আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, আমার অনুজ ভাইবোনেরা, যারা খোলামনে কথা বলতে পারে, তারা বলবে: “হ্যাঁ! আমি বহুবার এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি, সে কথা ভাবতেই আমার লজ্জা করে!” আমার দৈনন্দিন জীবনে, আমি আমার ছোট ভাইবোনেদের সাথে আমার কাছের মানুষ হিসাবে আচরণ করতে আমি সবসময় পছন্দ করি, কারণ তাদের মধ্যে অনেকখানি সারল্য রয়েছে—তারা খুবই শুদ্ধ এবং সুন্দর। তারা আমার নিজের সখাস্বরূপ। সেজন্যই, আমি সবসময় আমার সকল কাছের মানুষদের একত্রিত করে আমাদের আদর্শ ও পরিকল্পনার বিষয়ে কথাবার্তা বলার সুযোগ খুঁজছি। ঈশ্বর ইচ্ছা আমাদের মধ্যে এমনভাবে কার্যকর হোক যাতে আমরা সবাই নিজেদের মধ্যে কোনরকম অন্তরায় বা ব্যবধান ছাড়াই আত্মার আত্মীয়ের মতো হয়ে উঠতে পারি। আমরা সবাই যেন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি: “হে ঈশ্বর! যদি আপনার এমনই ইচ্ছা হয়, তবে আমরা আপনার কাছে মিনতি করছি যে, আমাদের সঠিক পরিবেশ দিন যাতে আমরা আমাদের অন্তরের ইচ্ছাগুলি পূরণ করতে পারি! আমরা, যারা বয়সে তরুণ এবং যুক্তিতে দুর্বল, তারা যেন আপনার করুণা লাভ করি, এবং আমাদের অন্তরের শক্তিকে প্রয়োগ করার সুযোগ দিন!” আমার বিশ্বাস, ঈশ্বরের এমনই ইচ্ছা, কারণ বহুকাল আগে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, বলেছিলাম: “পিতা! পৃথিবীতে, আপনার উদ্দেশ্যে আমরা নিরন্তর আর্তরব করি, আমরা কামনা করি যেন আপনার ইচ্ছা ধরাতলে অচিরেই পূর্ণ হতে পারে। আমি আপনার ইচ্ছার অন্বেষণ করব। আপনি যা চান তা যেন আপনি সম্পন্ন করতে পারেন এবং আমার উপর আপনার অর্পিত দায়িত্ব সত্বর সম্পূর্ণ করতে পারেন। এমনকি, আমি এ-ও চাই যে আপনি আমাদের মধ্যে এক নতুন পথ উন্মুক্ত করুন, যদি এর ফলে আপনার ইচ্ছা শীঘ্রই সম্পন্ন হয়! আমি শুধুমাত্র এই কামনা করি, যেন আপনার কার্য শীঘ্রই সুসম্পন্ন হতে পারে, এবং আমি ভরসা রাখি যে, কোনও নিয়ম তা প্রতিহত করতে পারবে না!” এ-ই হল বর্তমানে ঈশ্বরের কার্য; তুমি কি পবিত্র আত্মার চলার পথ দেখতে পাও না? যতবার, আমি প্রবীণ ভ্রাতা-ভগিনীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি, ততবারই আমি এই অবর্ণনীয় নিপীড়ন অনুভব করি। তাদের সঙ্গে দেখা হলে, আমি তাদের মধ্যে এক সামাজিক দুর্গন্ধ টের পাই; তাদের ধর্মীয় পূর্বধারণা, বিষয়সকল পরিচালনার অভিজ্ঞতা, বাচনভঙ্গি, তাদের ব্যবহৃত শব্দাবলী, ইত্যাদি সবকিছুই খুব বিরক্তিকর। অনুমান মতো তারা “প্রজ্ঞা”-য় পরিপূর্ণ। আমি সবসময় তাদের থেকে যথাসম্ভব সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখি, কারণ ব্যক্তিগতভাবে আমি পৃথিবীতে জীবনধারণের উপযোগী দর্শন খুব একটা জানিনা। প্রতিবারই এদের সঙ্গে দেখা হলে, আমি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি, আমার কপাল ঘেমে নেয়ে ওঠে; মাঝেমাঝে আমি এত প্রপীড়িত বোধ করি যে আমার শ্বাস প্রায় রুদ্ধ হয়ে আসে। তাই এই বিপজ্জনক মুহূর্তে, ঈশ্বর আমায় একটি দারুণ সমাধান বাতলে দেন। এটা শুধুমাত্র আমার ভ্রান্ত ধারণাও হতে পারে। আমি শুধু ঈশ্বরের কীসে উপকার হবে সেই চিন্তাই করি; ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করাটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি এইসব লোকের থেকে বহু দূরে থাকি, কিন্তু যদি ঈশ্বর চান যে আমি তাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করি, তাহলে তা-ও আমি মান্য করি। এমন নয় যে লোকগুলি ঘৃণ্য, কিন্তু তাদের “প্রজ্ঞা”, ধারণা, এবং এই বিশ্বে জীবনযাপনের দর্শন অত্যন্ত বিতৃষ্ণাজনক। সেখানে আমি ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করতে গিয়েছি, তারা কীভাবে কী করে তা জানতে আসিনি। আমার মনে আছে, কীভাবে ঈশ্বর একবার আমায় বলেছিলেন, “পৃথিবীতে তুমি শুধু তোমার পিতার ইচ্ছার অন্বেষণ করে তাঁর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন কোরো। আর অন্য কিছু নিয়ে ভাবিত হোয়ো না।” এটা ভাবলে আমি খানিকটা শান্তি পাই। এর কারণ হল যে, মানুষের কাজকর্ম চিরকালই আমার বড্ড বেশি জটিল মনে হয়; ওইসব কিছুই আমার মাথায় ঢোকে না, এবং আমি কখনো বুঝতেই পারি না যে আমার কী করা উচিত। তাই অসংখ্যবার, এর ফলে আমি বিক্ষিপ্তচিত্ত হয়ে পড়েছি, এবং মানবজাতিকে ঘৃণা করেছি; মানুষের এতটা জটিল হওয়ার দরকারটা কী? কেন তারা সাদাসিধে হতে পারে না? এত চালাক হওয়ার চেষ্টা করে লাভটা কী? মানুষের সঙ্গে আমার দেখাসাক্ষাৎ করাটা, প্রায় সবক্ষেত্রেই, আমার উপর ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বের উপর ভিত্তি করে সম্পন্ন হয়। খুব কম ক্ষেত্রেই এর অন্যথা হয়, তবে আমার অন্তরের অন্তঃস্থলে কী লুকিয়ে আছে, তা কে-ই বা বলতে পারে?
অনেকসময়, আমি আমার সঙ্গের ভাই ও বোনেদের পরামর্শ দিয়েছি যে, তারা যেন অন্তর থেকে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, তারা যেন নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি মনোযোগী হয়। বহুবার, নিদারুন মনঃকষ্টে আমি ঈশ্বরের সামনে কেঁদেছি: মানুষ ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি কেন মনোযোগী নয়? নিশ্চয়ই, কোনো কারণ ছাড়াই ঈশ্বরের কাজ চিহ্নমাত্র না রেখে স্রেফ অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে না? আর আমি এটার কারণও বুঝতে পারি না—এটা আমার মনে যেন প্রায় এক প্রহেলিকা হয়ে উঠেছে—কেন মানুষ কিছুতেই পবিত্র আত্মার চলার পথ শনাক্ত করে উঠতে পারে না, অন্যদের সঙ্গে তাদের যে অস্বাভাবিক সম্পর্ক এখনো তা আঁকড়ে ধরে থাকে? এই ধরনের মানুষকে দেখে আমার বিবমিষার উদ্রেক হয়। পবিত্র আত্মার পথের দিকে মনোনিবেশ না করে, তারা মানুষের ক্রিয়াকাজের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। ঈশ্বর কি এতে সন্তুষ্ট হতে পারেন? আমি প্রায়শই এই কারণে কষ্ট পাই। এটা আমার প্রায় বোঝাসমান হয়ে উঠেছে—এবং পবিত্র আত্মাকেও তা বিচলিত করে। তোমার অন্তরে কি কোনো অনুতাপ অনুভূত হয় না? প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন আমাদের আত্মার চোখ খুলে দেন। বহুবার, আমি, যে আমি ঈশ্বরের কার্যে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে মানুষকে পথপ্রদর্শন করে থাকি, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি; “হে পিতা! আমি চাই আপনার ইচ্ছাই মর্মবস্তু হোক, আমি আপনার ইচ্ছার সন্ধান করব, আমি আপনার অর্পিত দায়িত্বের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে চাই, যাতে আপনি এই জনগোষ্ঠীকে অর্জন করতে পারেন। আপনি যেন আমাদের স্বাধীনতার দেশে নিয়ে যান, যাতে আমাদের আত্মার সাহায্যে আমরা আপনাকে স্পর্শ করতে পারি এবং আপনি যেন আমাদের অন্তরের আধ্যাত্মিক অনুভূতিকে জাগিয়ে তুলতে পারেন!” আমি চাই যেন ঈশ্বরের ইচ্ছা নিষ্পন্ন হয়, এবং সেইজন্যই আমরা অবিরাম প্রার্থনা করি তাঁর আত্মা যেন আমাদের আলোকিত করা অব্যাহত রাখেন, যাতে আমরা পবিত্র আত্মার প্রদর্শিত পথে হেঁটে যেতে পারি—কারণ আমি যে পথে চলি তা পবিত্র আত্মারই পথ। এবং আমার বদলে আর কে-ই বা এই পথে হাঁটতে পারে? এই বিষয়টাই আমার বোঝা আরও গুরুভার করে তোলে। আমার মনে হয় যেন আমি অধঃপতিত হতে যাচ্ছি, কিন্তু আমার প্রতীতি আছে যে ঈশ্বর কখনো তাঁর কার্য বিলম্বিত করবেন না। হয়তো, তাঁর অর্পিত দায়িত্ব সমাপ্ত হলে তবেই আমরা পরস্পরের থেকে বিদায় নেবো। তাই, হয়তো ঈশ্বরের আত্মার প্রভাবেই আমি সর্বদা অন্যরকম বোধ করেছি। যেন, এমন কার্য আছে যা ঈশ্বর সম্পন্ন করতে চান, অথচ সেটা যা কী আমি এখনো তা আঁচ করতে পারছি না। তবু, আমি বিশ্বাস করি যে, এই পৃথিবীতে আমার ঘনিষ্ঠ মানুষদের চেয়ে ভালো কেউ হয় না, এবং এ-ও বিশ্বাস করি যে, তারা আমার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে, যার জন্য আমি তাদের কাছে অপরিসীম কৃতজ্ঞ। আমি চাই আমার ভাইবোনেরা আমার সঙ্গে বলুক: “হে ঈশ্বর! আমাদের মধ্যে, অন্তিম সময়ের মানুষের মধ্যে, আপনার ইচ্ছা সম্পূর্ণরূপে প্রতিভাত হোক, যাতে আমরা আত্মার জীবন লাভ করে আশীর্বাদধন্য হতে পারি, এবং ঈশ্বরের আত্মার কার্যসমূহ প্রত্যক্ষ করতে পারি, এবং তাঁর প্রকৃত অবয়ব দেখতে পাই!” একবার এই পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, আমরা বস্তুতই আত্মার নির্দেশিকার অধীনে বসবাস করবো, এবং একমাত্র তখনই আমরা ঈশ্বরের প্রকৃত মুখচ্ছবি চাক্ষুষ করতে সক্ষম হবো। অর্থাৎ, মানুষ সমস্ত সত্যের আসল অর্থ উপলব্ধি করতে পারবে, এবং সেটা মানুষের পূর্বধারণা অনুযায়ী উপলব্ধি বা হৃদয়ঙ্গম করবে না, বুঝবে ঈশ্বরের আত্মার ইচ্ছার আলোকপ্রদানের সূত্র ধরে। এ-ই হল স্বয়ং ঈশ্বরের নিজের সামগ্রিক কার্য, এর মধ্যে কোথাও মানুষের ধারণার কোনো স্থান নেই; পৃথিবীর বুকে যে সকল কার্যকলাপ তিনি সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে চান, এ হল তাঁর সেই কার্যগুলিরই কর্মপরিকল্পনা, এবং এটি পৃথিবীতে তাঁর কার্যের অন্তিম অংশ। তুমি কি এই কার্যের সাথে যুক্ত হতে চাও? তুমি কি এর অংশ হয়ে উঠতে চাও? তুমি কি পবিত্র আত্মার দ্বারা নিখুঁত হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা করো এবং আত্মার জীবনের অংশভাগ চাও?
আজকের যা মূল চাবিকাঠি, তা হল আমাদের আদি উৎস থেকে আরও গভীরে প্রবেশ করা। আমাদের অবশ্যই সত্যের, দৃষ্টিভঙ্গির, এবং জীবনের আরও গভীরে যেতে হবে—কিন্তু প্রথমে, আমি অবশ্যই আমার ভাইবোনেদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, কাজের এই পর্যায়ে প্রবেশ করতে হলে তোমাকে অবশ্যই পূর্ববর্তী সমস্ত ধারণা বাতিল করতে হবে। অর্থাৎ, তোমাকে অবশ্যই জীবনধারণের পদ্ধতি বদলাতে হবে, নতুন পরিকল্পনা করতে হবে, নতুন অধ্যায় শুরু করতে হবে। তুমি যদি এখনও অতীতের প্রিয় বিষয়বস্তুগুলি আঁকড়ে পড়ে থাকো, পবিত্র আত্মার তোমার মধ্যে কাজ করতে পারবে না, এবং তিনি শুধুমাত্র তোমার জীবনটুকুই কোনোক্রমে টিঁকিয়ে রাখতে পারবেন। যারা অনুশীলন, প্রবেশ অথবা পরিকল্পনা করে না, তারা নিশ্চিতভাবে পবিত্র আত্মার দ্বারা সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হবে—এবং সেইজন্যই বলা হয় যে তারা যুগের দ্বারা পরিত্যক্ত। আমি আশা করি যে, সকল ভাইবোনেরা আমার অন্তরকে উপলব্ধি করবে, এবং আমি এ-ও আশা করি যে, “নব নিয়োজিত” গণ সকলে ঈশ্বরের কাজের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত থাকবে এবং একসঙ্গে এই কাজ সম্পূর্ণ করবে। আমি বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর আমাদেরকে আশীর্বাদ করবেন। আমি এমনও বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর আমাকে আরও অনেক ঘনিষ্ঠজনদের সাহচর্য দেবেন, যাতে আমি পৃথিবীর প্রতিটি কোণে পা রাখতে পারি এবং, তাতে হয়তো আমাদের মধ্যে আরও গভীর ভালোবাসা তৈরি হবে। অধিকন্তু, আমি বিশ্বাস করি, ঈশ্বর, আমাদের প্রচেষ্টার কারণে তাঁর রাজ্য বিস্তৃত করবেন; আমি চাইব আমাদের এই প্রচেষ্টা অভূতপূর্ব পর্যায়ে পৌঁছাক, যাতে ঈশ্বর আরও নতুন তরুণদের অর্জন করতে করেন। আমি চাই যে, আমরা যেন আরও বেশি সময় এই উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করি, আমি চাই যে, আমরা যেন অবিরাম প্রার্থনা করি, যাতে আমরা আমাদের সম্পূর্ণ জীবন ঈশ্বরের সম্মুখে কাটাতে পারি, এবং ঈশ্বরের যথাসম্ভব নিকটজন হতে পারি। আমাদের মধ্যে যেন আর কখনো কিছু না হয় এবং আমরা যেন ঈশ্বরের কাছে শপথ নিতে পারি: কঠোর পরিশ্রম করার! শেষ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থাকার! কখনো বিচ্ছিন্ন না হওয়ার, সর্বদা একত্রে থাকার! আমি আশা করি যে, ভাইবোনেরা ঈশ্বরের সম্মুখে এই প্রতিজ্ঞা করেছে, যাতে আমাদের হৃদয় কখনো বদলে না যায়, এবং যাতে আমাদের সংকল্প কখনো শিথিল না হয়! ঈশ্বরের ইচ্ছার দোহাই, আমি আবারও বলছি: চলো, কঠিন পরিশ্রম করি! এসো সর্বশক্তি সহকারে আমরা লড়াই করি! ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমাদের আশীর্বাদ করবেন!