পিতরের অভিজ্ঞতা: শাস্তি ও বিচার সম্পর্কে তার জ্ঞান

যখন তাকে ঈশ্বর শাস্তি প্রদান করছিলেন, তখন পিতর প্রার্থনা করেছিল, “হে ঈশ্বর! আমার দেহ আনুগত্যহীন, এবং তুমি আমাকে শাস্তি প্রদান করো ও আমার বিচার করো। আমি তোমার শাস্তি ও বিচার পেয়ে আনন্দিত, এবং এমনকি তুমি যদি আমাকে না চাও, তবুও তোমার বিচারে আমি তোমার পবিত্র ও ন্যায়পরায়ণ স্বভাব দেখতে পাই। যখন তুমি আমার বিচার করো যাতে অন্যরা তোমার বিচারে তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করতে পারে, আমি তখন সন্তুষ্ট বোধ করি। তা যদি তোমার স্বভাবকে ব্যক্ত করতে পারে এবং সমস্ত প্রাণীকে তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করাতে পারে, এবং যদি তা তোমার প্রতি আমার ভালবাসাকে আরও বিশুদ্ধ করে তুলতে পারে, যে আমি একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সদৃশ হয়ে উঠতে পারি, তাহলে তোমার বিচার মঙ্গলময়, কারণ তোমার অনুগ্রহপূর্ণ ইচ্ছাও মঙ্গলময়। আমি জানি যে আমার মধ্যে এখনও অনেক কিছুই আছে যা বিদ্রোহপূর্ণ, এবং আমি এখনও তোমার সামনে আসার উপযুক্ত নই। আমি চাই তুমি আমার আরও বেশি বিচার করো, তা প্রতিকূল পরিবেশের মাধ্যমেই হোক বা প্রভূত যন্ত্রণার মধ্যে দিয়েই হোক; তুমি যাই করো না কেন, তা আমার কাছে মূল্যবান। তোমার ভালবাসা অত্যন্ত গভীর, এবং আমি সামান্যতম অভিযোগ ছাড়াই তোমার সমন্বয়সাধনের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে ইচ্ছুক।” ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর পিতর এই জ্ঞান লাভ করেছিল, এবং এটি ঈশ্বরের প্রতি তার ভালবাসারও একটি সাক্ষ্য। আজ, তোমাদের ইতিমধ্যেই জয় করা হয়েছে—কিন্তু এই বিজয় তোমার মধ্যে কীভাবে প্রকাশিত হয়? কেউ কেউ বলে, “আমার বিজিত হওয়া হল ঈশ্বরের সর্বোচ্চ অনুগ্রহ এবং উন্নতিসাধন। সবেমাত্র এখন আমি বুঝতে পারছি যে মানুষের জীবন শূন্যগর্ভ এবং তাৎপর্যহীন। মানুষ ব্যস্ততার সাথে, একের পর এক প্রজন্মের উৎপাদন এবং প্রতিপালন করে তার জীবন অতিবাহিত করে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত তার কিছুই থাকে না। আজ, শুধুমাত্র ঈশ্বরের কাছে বিজিত হওয়ার পরেই আমি দেখতে পেয়েছি যে এভাবে বেঁচে থাকার কোনো মূল্য নেই; এটা সত্যিই এক অর্থহীন জীবন। আমি মরে যেতেও পারি এবং এ জীবন এখানেই শেষ করতে পারি!” এই ধরনের মানুষ যারা বিজিত হয়েছে তারা কি ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হতে পারে? তারা কি আদর্শ এবং উদাহরণস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে? এই ধরনের মানুষ নিষ্ক্রিয়তার একটি উদাহরণ; তাদের কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই, এবং তারা নিজেদের উন্নতি করার কোনও চেষ্টা করে না। যদিও তারা বিজিত হয়েছে বলে নিজেদের গণ্য করে, কিন্তু এই ধরনের নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিরা নিখুঁত হয়ে উঠতে অক্ষম। তার জীবনের শেষের দিকে, নিখুঁত হয়ে ওঠার পরে, পিতর বলেছিল, “হে ঈশ্বর! আমি যদি আরও কিছু বছর বেঁচে থাকতে পারতাম, আমি চাইতাম তোমার প্রতি আরও বিশুদ্ধ ও গভীর ভালবাসা অর্জন করতে।” তাকে যখন ক্রুশে বিদ্ধ করা হতে যাচ্ছে, তখন সে তার অন্তরে প্রার্থনা করেছিল, “হে ঈশ্বর! তোমার সময় এখন উপস্থিত হয়েছে; আমার জন্য যে সময় তুমি প্রস্তুত করে রেখেছিলে তা এবার উপস্থিত হয়েছে। আমাকে তোমার জন্য ক্রুশবিদ্ধ হতে হবে, আমাকে অবশ্যই তোমার এই সাক্ষ্য বহন করতে হবে, এবং আমি আশা করি যে আমার ভালবাসা তোমার প্রয়োজনীয়তাগুলিকে পূর্ণ করতে পারবে, এবং বিশুদ্ধতর হয়ে উঠবে। আজ, তোমার জন্য প্রাণ দিতে পারা, এবং তোমার জন্য ক্রুশের সাথে পেরেক বিদ্ধ হতে পারা আমাকে সান্ত্বনা দেয় এবং আশ্বস্ত করে, কারণ তোমার জন্য ক্রুশবিদ্ধ হতে ও তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে সক্ষম হওয়ার চেয়ে, এবং তোমার প্রতি নিজেকে নিবেদন করতে ও তোমার প্রতি আমার জীবন উৎসর্গ করতে সক্ষম হওয়ার চেয়ে অধিক তৃপ্তিদায়ক আমার কাছে আর কিছুই নয়। হে ঈশ্বর! তুমি এতো মনোরম! তুমি যদি আমাকে বাঁচার অনুমতি দিতে, আমি তোমাকে ভালবাসতে আরও বেশি উৎসুক হতাম। আমি যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন তোমাকে ভালোবেসে যাবো। আমি তোমাকে আরও গভীরভাবে ভালবাসতে চাই। তুমি আমার বিচার করো, আমাকে শাস্তি দাও এবং আমাকে পরীক্ষা করো কারণ আমি ন্যায়পরায়ণ নই, কারণ আমি পাপ করেছি। এবং তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব আমার কাছে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এটি আমার জন্য একটি আশীর্বাদ, কারণ আমি তোমাকে আরও গভীরভাবে ভালবাসতে পারি, এবং তুমি আমাকে না ভালোবাসলেও আমি তোমাকে এইভাবেই ভালবাসতে ইচ্ছুক। আমি তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করতে চাই, কারণ তা আমাকে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করতে আরও বেশি করে সক্ষম করে তোলে। আমি অনুভব করছি যে আমার জীবন এখন আরও বেশি অর্থপূর্ণ, কারণ আমি তোমার জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি, এবং তোমার জন্য মৃত্যুবরণ করতে পারাটা অর্থপূর্ণ। কিন্তু তবুও আমি সন্তুষ্ট বোধ করি না, কারণ আমি তোমার সম্পর্কে খুব কম জানি, আমি জানি যে আমি তোমার ইচ্ছা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করতে পারি না, এবং তোমাকে খুবই কম পরিশোধ করেছি। আমার জীবনে, আমি আমার সম্পূর্ণতা তোমার কাছে ফিরিয়ে দিতে অক্ষম ছিলাম; আমি তা থেকে অনেক দূরে রয়েছি। আমি এই মুহুর্তে যখন পিছনে ফিরে তাকাই, আমি তোমার কাছে অত্যন্ত ঋণী বোধ করি, এবং আমার সমস্ত ভুল, এবং সমস্ত ভালবাসা যা আমি তোমাকে পরিশোধ করিনি, তা পূর্ণ করার জন্য আমার কাছে এই মুহূর্তটি ছাড়া আর কিছুই নেই।”

মানুষকে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের অন্বেষণ করতে হবে, এবং তার বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। পিতরের ভাবমুর্তিতে জীবন যাপন করতে হলে, তার অবশ্যই পিতরের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মানুষকে অবশ্যই উচ্চতর ও গভীরতর বিষয়গুলি অনুসরণ করতে হবে। তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের প্রতি অধিকতর গভীর ও বিশুদ্ধ প্রেম, এবং মূল্য ও অর্থ রয়েছে এমন একটি জীবন অন্বেষণ করতে হবে। শুধুমাত্র এটাই হল জীবন; তবেই মানুষ পিতরের মতো হবে। তোমাকে অবশ্যই ইতিবাচক দিকে তোমার প্রবেশের প্রতি সক্রিয় হওয়ার উপর মনোনিবেশ করতে হবে, এবং আরও গভীর, আরও সুনির্দিষ্ট এবং আরও বাস্তব সত্যকে উপেক্ষা করে ক্ষণিকের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নতমস্তকে পিছিয়ে গেলে চলবে না। তোমার ভালবাসাকে অবশ্যই হতে হবে ব্যাবহারিক, এবং তোমাকে অবশ্যই নিজেকে মুক্ত করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে এই কলুষিত, উদ্বেগহীন জীবন থেকে যা কিনা একটি পশুর জীবন থেকে কোনোভাবে আলাদা নয়। তোমাকে অবশ্যই অর্থপূর্ণ, মূল্যবান, একটি জীবন যাপন করতে হবে, এবং নিজের সঙ্গে কখনো প্রতারণা করবে না বা নিজের জীবনের সাথে খেলার পুতুলের মতো আচরণ করবে না। যারা ঈশ্বরকে ভালোবাসার আকাঙ্খা পোষণ করে তাদের সকলের জন্য, কোনো সত্যই অনৰ্জনীয় নয়, এবং এমন কোন ন্যায়বিচার নেই যার জন্য তারা তাদের অবস্থানে দৃঢ় থাকতে পারে না। তোমার নিজের জীবন কীভাবে যাপন করা উচিত? কীভাবে তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসবে, এবং তাঁর আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার জন্য এই ভালবাসা ব্যবহার করবে? তোমার জীবনে এর চেয়ে বড় কোনো বিষয় নেই। সর্বোপরি, তোমার অবশ্যই এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং অধ্যবসায় থাকতে হবে, এবং যারা মেরুদণ্ডহীন, যারা দুর্বল তাদের মতো হলে চলবে না। তোমাকে অবশ্যই কীভাবে একটি অর্থপূর্ণ জীবন অনুভব করতে হয় এবং অর্থপূর্ণ সত্যের অভিজ্ঞতা লাভ করতে হয় তা শিখতে হবে, এবং তোমার নিজেকে ওইরকম অগভীর ভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। তুমি উপলব্ধিও করবে না, অথচ তোমার জীবন তোমাকে অতিক্রম করে যাবে; এর পরে, ঈশ্বরকে ভালবাসার আর কোন সুযোগ কি তুমি পাবে? মানুষ মারা যাওয়ার পর কি আর ঈশ্বরকে ভালোবাসতে পারে? তোমারও পিতরের মতো একই রকমের আকাঙ্খা এবং বিবেকবোধ থাকতে হবে; তোমার জীবনকে অবশ্যই হতে হবে অর্থপূর্ণ, এবং তুমি নিজের সঙ্গে খেলা করবে না। একজন মানুষ হিসাবে, এবং একজন ঈশ্বরের অন্বেষণকারী ব্যক্তি হিসাবে, তোমাকে অবশ্যই নিজের জীবন কীভাবে যাপন করবে, কীভাবে নিজেকে ঈশ্বরের কাছে অর্পণ করবে, কীভাবে ঈশ্বরের প্রতি আরও অর্থপূর্ণ বিশ্বাস রাখবে, এবং যেহেতু তুমি ঈশ্বরকে ভালোবাসো, তাই কীভাবে আরও বিশুদ্ধতর, সুন্দরতর ও উন্নততর উপায়ে তাঁকে ভালোবাসবে, সে সব সাবধানতার সাথে বিবেচনা করতে হবে। আজ, তোমাকে যেভাবে জয় করা হয়েছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকলে তোমার চলবে না, বরং ভবিষ্যতে তুমি যে পথে হাঁটবে তাও তোমাকে বিবেচনা করতে হবে। নিখুঁত হয়ে ওঠার জন্য তোমার অবশ্যই আকাঙ্খা এবং সাহস থাকতে হবে, এবং সবসময় তোমার নিজেকে অক্ষম ভাবা উচিত নয়। সত্যের কি কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব আছে? সত্য কি ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের বিরোধিতা করতে পারে? তুমি যদি সত্যের অনুসরণ করো তাহলে তা কি তোমাকে অভিভূত করতে পারে? তুমি যদি ন্যায়বিচারের জন্য দৃঢ় থাকো, তাহলে তা কি তোমাকে পরাভূত করবে? তোমার যদি সত্যিই জীবনের সাধনা করার আকাঙ্ক্ষা হয়, তাহলে জীবন কি তোমাকে এড়িয়ে যেতে পারে? তুমি যদি সত্যবিহীন হও, তবে তার কারণ এই নয় যে সত্য তোমাকে উপেক্ষা করে, বরং তার কারণ এই যে তুমি সত্য থেকে দূরে থাকো; তুমি যদি ন্যায়ের জন্য দৃঢ় অবস্থান নিতে না পারো, তাহলে তার কারণ এই নয় যে ন্যায়বিচারে কিছু ভুল আছে, বরং তুমি বিশ্বাস করো যে তা সত্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়; তুমি যদি বহু বছর ধরে জীবনের সাধনা করার পরেও তা অর্জন না করে থাকো তাহলে তার কারণ এই নয় যে জীবনের তোমার প্রতি কোনো বিবেকবোধ নেই, বরং জীবনের প্রতি তোমার বিবেকবোধ নেই এবং তুমি জীবনকে সরিয়ে দিয়েছ; তুমি যদি আলোতে বাস করে থাকো, এবং তা সত্ত্বেও আলোক অর্জন করতে অক্ষম হও, তাহলে তার কারণ এই নয় যে আলোক তোমাকে প্রদীপ্ত করতে অক্ষম, বরং তার কারণ হল এই যে তুমি আলোকের অস্তিত্বের প্রতি কোন মনোযোগ দাওনি, এবং তাই আলোক তোমার কাছ থেকে নিঃশব্দে চলে গেছে। যদি তুমি অন্বেষণ না করো, তাহলে এটাই শুধু বলা যেতে পারে যে তুমি মূল্যহীন আবর্জনা, এবং তোমার জীবনে কোন সাহস নেই, এবং অন্ধকারের শক্তিকে প্রতিরোধ করার চেতনা তোমার নেই। তুমি অত্যন্ত দুর্বল! শয়তানের যেসকল শক্তি তোমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে তুমি তা থেকে অব্যাহতি পেতে অক্ষম, এবং তুমি শুধুমাত্র এরকম নিরাপদ ও সুরক্ষিত জীবন যাপন করতে এবং অজ্ঞানতার মধ্যে মৃত্যুবরণ করতে ইচ্ছুক। তোমার যা অর্জন করা উচিত তা হল বিজিত হওয়ার সাধনা; এটা তোমার বাধ্যতামূলক কর্তব্য। তুমি যদি বিজিত হতে সন্তুষ্ট হও, তাহলে তুমি আলোর অস্তিত্বকে দূরে সরিয়ে দাও। সত্যের জন্য তোমাকে কষ্ট পেতে হবে, তোমাকে সত্যের প্রতি নিজেকে প্রদান করতে হবে, তোমাকে সত্যের জন্য অপমান সহ্য করতে হবে, এবং আরও বেশি করে সত্যকে অর্জন করতে তোমাকে আরও বেশি কষ্ট সহ্য করতে হবে। এটাই তোমার করা উচিত। একটি শান্তিপূর্ণ পারিবারিক জীবনের স্বার্থে তুমি সত্যকে ছুঁড়ে ফেলে দিও না, এবং ক্ষণিকের আনন্দের জন্য নিজের জীবনের মর্যাদা এবং সততা হারিয়ে ফেলো না। যা কিছু সুন্দর এবং যা কিছু ভালো, সে সব তোমার অন্বেষণ করা উচিত, এবং তোমার জীবনে আরো অর্থবহ পথ অনুসরণ করা উচিত। তুমি যদি এমন অমার্জিত জীবন যাপন করো, এবং কোনো উদ্দেশ্যের অনুসরণ না করো, তাহলে কি তুমি তোমার জীবন নষ্ট করছ না? এমন জীবন থেকে তুমি কী লাভ করতে পারো? একটি সত্যের জন্য তোমার যাবতীয় দৈহিক ইচ্ছা ত্যাগ করা উচিত, সামান্য ভোগ-বিলাসের জন্য যাবতীয় সত্যকে ত্যাগ করা উচিত নয়। এই ধরনের মানুষের কোন সততা বা মর্যাদা নেই; তাদের অস্তিত্ব অর্থহীন!

ঈশ্বর মানুষকে শাস্তি দেন এবং বিচার করেন কারণ তাঁর কাজের জন্য তা প্রয়োজন, এবং তাছাড়াও, কারণ তা মানুষের প্রয়োজন। মানুষের শাস্তি পাওয়া ও বিচার হওয়া প্রয়োজন, তবেই সে ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা অর্জন করতে পারে। আজ, তোমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছ, কিন্তু যখন সামান্যতম বিপত্তির সম্মুখীন হও, তখনই তোমরা সমস্যায় পড়ো; তোমার আত্মিক উচ্চতা এখনও খুব কম, এবং গভীরতর জ্ঞান অর্জনের জন্য তোমার এখনও এই ধরনের শাস্তি ও বিচারের অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রয়োজন। আজ, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি কিছুটা সম্মান আছে, এবং তুমি ঈশ্বরকে ভয় করো, এবং তুমি জানো যে তিনিই সত্য ঈশ্বর, কিন্তু তোমার তাঁর প্রতি সুবিশাল ভালবাসা নেই, বিশুদ্ধ ভালবাসা অর্জন করা তো দূরের কথা; তোমাদের জ্ঞান খুবই অগভীর, এবং তোমার আত্মিক উচ্চতা এখনও অপর্যাপ্ত। তুমি যখন সত্যিই একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হও, তখনও তুমি সাক্ষ্য দাওনি, তোমার প্রবেশের খুব সামান্য অংশই যথেষ্ট পরিমাণ সক্রিয়, এবং কীভাবে অনুশীলন করবে সেই বিষয়ে তোমার কোন ধারণা নেই। অধিকাংশ মানুষ নিশ্চেষ্ট এবং নিষ্ক্রিয়; তারা কেবল তাদের অন্তরে গোপনে ঈশ্বরকে ভালবাসে, কিন্তু তারা অনুশীলনের কোন উপায় জানে না, বা তাদের লক্ষ্য কী তা তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। যাদের নিখুঁত করা হয়েছে তারা কেবল স্বাভাবিক মানবতারই অধিকারী নয়, বরং এমন সত্যের অধিকারী যা বিবেকের পরিমাপের চেয়ে বেশি, যা বিবেকের মানদণ্ডের চেয়ে উচ্চতর; তারা ঈশ্বরের ভালবাসার প্রতিদান দেওয়ার জন্য শুধু তাদের বিবেক ব্যবহার করে না, বরং, তার চেয়েও বেশি, তারা ঈশ্বরকে চিনতে পেরেছে, এবং দেখেছে যে ঈশ্বর মনোরম, এবং মানুষের ভালবাসার যোগ্য, এবং ঈশ্বরের মধ্যে ভালবাসার মতো প্রচুর কিছু আছে; মানুষ তাঁকে ভালো না বেসে পারে না! যাদেরকে নিখুঁত করে তোলা হয়েছে, ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা হল তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত আকাঙ্খা পূরণ করার জন্য। তাদের ভালবাসা স্বতঃস্ফূর্ত, এমন এক ভালবাসা যা বিনিময়ে কিছুই চায় না এবং যা কোনো লেনদেন নয়। তারা ঈশ্বরকে ভালবাসে শুধুমাত্র তাঁর সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের কারণে, তাছাড়া আর কিছুই নয়। ঈশ্বর তাদের অনুগ্রহ প্রদান করেন কিনা সে বিষয়ে এই ধরণের ব্যক্তিরা যত্নশীল নয়, তাদের পরিতৃপ্তির জন্য ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার চেয়ে বেশি কিছু তারা চায় না। তারা ঈশ্বরের কাছে শর্ত আরোপ করে না, অথবা তারা বিবেকবোধ দ্বারা ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা পরিমাপ করে না: “আপনি আমাকে দান করেছেন, তাই তার বিনিময়ে আমি আপনাকে ভালবাসি; যদি আপনি আমাকে না দেন, তবে বিনিময়ে আপনার জন্য আমার কাছে কিছুই নেই।” যাদের নিখুঁত করে তোলা হয়েছে তারা সর্বদা বিশ্বাস করে যে: “ঈশ্বর হলেন সৃষ্টিকর্তা, এবং তিনি আমাদের উপর তাঁর কাজ সম্পাদন করেন। যেহেতু আমার কাছে নিখুঁত হয়ে ওঠার জন্য এই সুযোগ, পরিস্থিতি, ও যোগ্যতা রয়েছে, তাই আমার সাধনা হওয়া উচিত একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করা এবং আমার উচিত তাঁকে সন্তুষ্ট করা।” এটা ঠিক সেরকমই যেমনটা পিতরের অভিজ্ঞতা হয়েছিল: যখন সে দুর্বলতম অবস্থায় ছিল, তখন সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিল, “হে ঈশ্বর! সময় বা স্থান নির্বিশেষে, তুমি জানো যে আমি সর্বদা তোমাকে স্মরণ করি। সময় বা স্থান যাই হোক না কেন, তুমি জানো যে আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই, কিন্তু আমার উচ্চতা খুবই কম, আমি অত্যন্ত দুর্বল এবং শক্তিহীন, আমার ভালবাসা খুবই সীমিত, এবং তোমার প্রতি আমার আন্তরিকতা খুবই কম। তোমার ভালোবাসার তুলনায় আমি বেঁচে থাকারই অযোগ্য। আমি শুধু চাই যে আমার জীবন যেন বৃথা না হয়, এবং আমি যে শুধু তোমার ভালবাসার প্রতিদান দিতে পারি তাই নয়, তদুপরি, আমার যা কিছু আছে তা যেন আমি তোমাকে উৎসর্গ করতে পারি। আমি যদি তোমাকে সন্তুষ্ট করতে পারি, তবে এক সৃষ্ট জীব হিসাবে, আমি মানসিক শান্তি পাবো, এবং আর কিছুই চাইব না। যদিও আমি এখন দুর্বল এবং শক্তিহীন, তবে আমি তোমার উপদেশগুলি ভুলব না, এবং আমি তোমার ভালবাসা ভুলব না। এখন আমি তোমার ভালবাসার প্রতিদান দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করছি না। ওহ ঈশ্বর, আমার খুবই খারাপ লাগছে! আমি কীভাবে আমার হৃদয়ের ভালবাসা তোমাকে ফিরিয়ে দেব, আমি যা যা করতে পারি তা আমি কীভাবে করব, কীভাবে তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে সক্ষম হব, এবং আমার যা কিছু আছে তা তোমাকে নিবেদন করতে পারব? তুমি মানুষের দুর্বলতা জানো; আমি কীভাবে তোমার ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য হতে পারব? হে ঈশ্বর! তুমি জানো আমার আত্মিক উচ্চতা ক্ষুদ্র, আমার ভালবাসা খুবই তুচ্ছ। এই ধরনের পরিবেশে আমি কীভাবে আমার সেরাটা করতে পারি? আমি জানি আমার উচিত তোমার ভালবাসার প্রতিদান দেওয়া, আমি জানি যে আমার যা আছে তা তোমাকে অর্পণ করা উচিত, কিন্তু আজ আমার উচ্চতা খুবই কম। তোমার কাছে আমার অনুরোধ যে তুমি আমাকে শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস দাও, যাতে আমি তোমাকে উত্সর্গ করার জন্য একটি বিশুদ্ধ প্রেমের অধিকারী হতে আরও বেশি সক্ষম হই, এবং আমার যা কিছু আছে তা তোমার প্রতি উৎসর্গ করতে আরও অধিক সক্ষম হতে পারি; আমি কেবল তোমার ভালবাসার প্রতিদান দিতেই সক্ষম হব না, আমি তোমার শাস্তি, বিচার ও পরীক্ষা, এবং এমনকি আরও গুরুতর অভিশাপ অনুভব করতেও সক্ষম হব। তুমি আমাকে তোমার ভালবাসা প্রত্যক্ষ করতে দিয়েছ, এবং আমি তোমাকে ভাল না বাসতে অক্ষম, এবং যদিও আমি আজ দুর্বল এবং শক্তিহীন, তবু আমি কীভাবে তোমাকে ভুলতে পারি? তোমার ভালবাসা, শাস্তি এবং বিচারের মধ্যে দিয়ে আমি তোমাকে জানতে পেরেছি, তবুও আমি তোমার ভালবাসা পূরণ করতে অক্ষম বোধ করি, কারণ তুমি এতোই মহান। আমার যা কিছু আছে সে সবই আমি সৃষ্টিকর্তার জন্য কীভাবে উৎসর্গ করব?” এমনই ছিল পিতরের অনুরোধ, তবুও তার আত্মিক উচ্চতা ছিল অত্যন্ত অপর্যাপ্ত। এই মুহুর্তে, তার মনে হয়েছিল যেন একটি ছুরি তার হৃদয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে। সে খুবই যন্ত্রণার মধ্যে ছিল; সে জানত না এই ধরনের পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। তবু সে তখনও প্রার্থনা চালিয়ে গিয়েছিল: “হে ঈশ্বর! মানুষের আত্মিক উচ্চতা শিশুসুলভ, তার বিবেকবোধ দুর্বল, এবং একমাত্র জিনিস যা আমি অর্জন করতে পারি তা হল তোমার ভালবাসার প্রতিদান দেওয়া। আজ, আমি জানি না কীভাবে তোমার আকাঙ্ক্ষাগুলি পূরণ করতে হয়, এবং আমি কেবল আশা করি যে আমার যতটুকু ক্ষমতা তা যেন আমি করতে পারি, আমার যা আছে তা যেন দিতে পারি, এবং আমার যা কিছু আছে তা যেন তোমাকে নিবেদন করতে পারি। তোমার বিচার নির্বিশেষে, তোমার শাস্তি নির্বিশেষে, আমার প্রতি তোমার দান নির্বিশেষে, আমার কাছ থেকে তুমি যা কেড়ে নাও তা নির্বিশেষে, তোমার প্রতি সামান্যতম অভিযোগ করা থেকেও তুমি আমাকে মুক্ত করো। অনেকবার, যখন তুমি আমাকে শাস্তি দিয়েছ এবং আমার বিচার করেছ, আমি নিজের কাছেই অভিযোগ করেছি, এবং বিশুদ্ধতা অর্জন করতে পারিনি বা তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি। আমার দ্বারা তোমার ভালোবাসার যে পরিশোধ তার জন্ম শুধুই বাধ্যতা থেকে, এবং এই মুহুর্তে আমি নিজেকে আরও বেশি করে ঘৃণা করি।” পিতর এইভাবে প্রার্থনা করেছিল কারণ সে ঈশ্বরের প্রতি শুদ্ধতর ভালবাসার অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। সে অন্বেষণ করছিল, এবং অনুনয় করছিল, এবং উপরন্তু, সে নিজেকেই দোষী সাব্যস্ত করছিল, এবং ঈশ্বরের কাছে তার পাপ স্বীকার করছিল। সে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে ঋণী অনুভব করেছিল এবং নিজের প্রতি ঘৃণা অনুভব করেছিল, অথচ সে কিছুটা দুঃখিত এবং নিষ্ক্রিয়ও ছিল। সে সর্বদা অনুভব করত, যেন সে ঈশ্বরের ইচ্ছার জন্য যথেষ্ট ভালো নয়, এবং সে তার সেরাটা করতে অক্ষম। এইরকম পরিস্থিতিতে, পিতর তখনও জোবের বিশ্বাস অনুসরণ করেছিল। জোবের বিশ্বাস কত বড় ছিল তা সে দেখেছিল, কারণ জোব দেখতে পেয়েছিল যে তার যা কিছু ছিল তা ঈশ্বরের দান, এবং ঈশ্বরের পক্ষে তার কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে নেওয়াটা ছিল স্বাভাবিক, ঈশ্বর যাকে ইচ্ছা তাকে দান করবেন—এমনই ছিল ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব। জোবের কোন অভিযোগ ছিল না, এবং সে তারপরেও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারত। পিতরও নিজেকে চিনত, এবং তার অন্তরে সে প্রার্থনা করেছিল, “আজ বিবেকবোধ ব্যবহার করে এবং তোমাকে যত অধিক সম্ভব ভালবাসা ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তোমার ভালবাসার প্রতিদান দিয়ে আমার সন্তুষ্ট হওয়া উচিত নয়, কারণ আমার চিন্তাভাবনাগুলি অত্যন্ত কলুষিত, এবং আমি তোমাকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে দেখতে অক্ষম। যেহেতু আমি এখনও তোমাকে ভালোবাসার পক্ষে অযোগ্য, তাই আমার যা কিছু আছে তা তোমাকে নিবেদন করার ক্ষমতা আমাকে গড়ে তুলতে হবে, যা আমি স্বেচ্ছায় করব। তুমি যা করেছ তা সবই আমাকে জানতে হবে, এবং আমার আর কোন বিকল্প নেই, এবং আমাকে অবশ্যই তোমার ভালবাসা প্রত্যক্ষ করতে হবে, এবং তোমার প্রশংসা করতে ও তোমার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে সক্ষম হতে হবে, যাতে তুমি আমার মাধ্যমে প্রভূত মহিমা অর্জন করতে পারো। আমি তোমার প্রতি এই সাক্ষ্যে অবিচল থাকতে ইচ্ছুক। হে ঈশ্বর! তোমার ভালবাসা এত মূল্যবান ও সুন্দর; আমি দুষ্টের হাতে কীভাবে থাকতে চাইতে পারি? আমি কি তোমার দ্বারা সৃষ্ট নই? আমি কীভাবে শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করতে পারি? আমি চাইব যাতে আমার সমগ্র সত্তা তোমার শাস্তি প্রদানের মধ্যে বেঁচে থাকুক। আমি দুষ্টের আধিপত্যের অধীনে বাস করতে চাই না। যদি আমাকে বিশুদ্ধ করে তোলা যায়, এবং যদি আমি আমার সমস্ত কিছু তোমাকে উৎসর্গ করতে পারি, তাহলে আমি তোমার বিচার ও শাস্তি প্রদানের জন্য আমার শরীর ও মনকে অর্পণ করতে ইচ্ছুক, কারণ আমি শয়তানকে ঘৃণা করি, এবং তার আধিপত্যের অধীনে জীবনযাপন করতে অনিচ্ছুক। আমার বিচারের মাধ্যমে তুমি তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রকাশ করো; আমি খুশি, এবং আমার সামান্যতমও অভিযোগ নেই। আমি যদি একটি সৃষ্ট জীবের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হই, তাহলে আমি চাই যে আমার সমগ্র জীবন যেন তোমার বিচারের সঙ্গ পায়, যার মাধ্যমে আমি তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাবকে জানতে পারব এবং নিজেকে দুষ্টের প্রভাব থেকে মুক্ত করব।” পিটার সর্বদা এইভাবেই প্রার্থনা করত, সে সর্বদা এইভাবে অনুসন্ধান করত, এবং সে, তুলনামূলকভাবে বলতে গেলে, একটি উচ্চতর ক্ষেত্রে পৌঁছেছিল। সে যে শুধুমাত্র ঈশ্বরের ভালবাসা পরিশোধ করতে সক্ষম ছিল তাই নয়, বরং আরও গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, সে একজন সৃষ্ট জীব হিসাবেও তার দায়িত্ব পালন করেছিল। সে যে শুধু তার বিবেকের কাছে অভিযুক্ত হয়নি তাই নয়, সে বিবেকবোধের মানও অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল। তার প্রার্থনা সর্বদাই ঈশ্বরের সম্মুখে আরোহিত হতে থাকে, এতটাই যে তার আকাঙ্খাগুলি সর্বদাই ছিল উচ্চতর, এবং ঈশ্বরের প্রতি তার ভালবাসা সর্বদাই ছিল অধিকতর। যদিও সে মর্মান্তিক যন্ত্রণা ভোগ করেছিল, তবুও সে ঈশ্বরকে ভালোবাসতে ভুলে যায়নি, এবং তবুও সে ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করতে চেয়েছিল। নিজের প্রার্থনায় সে বলেছিল: “আমি তোমার ভালবাসার প্রতিদান দেওয়া ছাড়া আর কিছুই সম্পন্ন করতে পারিনি। আমি শয়তানের সম্মুখে তোমার সাক্ষ্য বহন করিনি, শয়তানের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করিনি, এবং এখনও দেহের মধ্যেই বাস করছি। আমি আমার ভালবাসাকে ব্যবহার করে শয়তানকে পরাজিত করতে চাই, তাকে অপমানিত করতে চাই, এবং এইভাবে তোমার আকাঙ্খা পূর্ণ করতে চাই। আমি আমার সম্পূর্ণতা তোমাকে দিতে চাই, নিজের সামান্যটুকুও শয়তানের হাতে তুলে দিতে চাই না, কারণ শয়তান তোমার শত্রু।” সে এই অভিমুখে যত বেশি অন্বেষণ করেছিল, ততই তার হৃদয় আন্দোলিত হয়েছিল, এবং এই বিষয়ে তার জ্ঞান ততই অধিক হয়েছিল। এই বিষয়টি উপলব্ধি না করেই, সে জানতে পেরেছিল যে তার নিজেকে শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত করা উচিত, এবং নিজেকে সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। এমনই ছিল সেই জগৎ যা সে অর্জন করেছিল। সে শয়তানের প্রভাব অতিক্রম করছিল, এবং নিজেকে দৈহিক আনন্দ ও উপভোগ থেকে মুক্ত করছিল, এবং ঈশ্বরের শাস্তি প্রদান এবং তাঁর বিচার উভয়ই আরও গভীরভাবে অনুভব করতে ইচ্ছুক ছিল। সে বলেছিল, “যদিও আমি তোমার প্রদত্ত শাস্তির মাঝে এবং তোমার বিচারের মাঝে বাস করি, তবু যত কষ্টই আসুক তা নির্বিশেষে, আমি শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করতে অনিচ্ছুক, আমি শয়তানের কৌশল ভোগ করতে অনিচ্ছুক। আমি তোমার অভিশাপের মধ্যে বেঁচে থেকে আনন্দ পাই, এবং শয়তানের আশীর্বাদের মধ্যে বেঁচে থেকে আমি ব্যথিত। আমি তোমার বিচারের মাঝে বসবাস করার মাধ্যমে তোমাকে ভালবাসি, এবং তা আমাকে প্রভূত আনন্দ এনে দেয়। তোমার শাস্তি ও বিচার ন্যায়পরায়ণ ও পবিত্র; তা আমাকে শুদ্ধ করার জন্য, এবং তার চেয়েও বেশি, তা আমাকে উদ্ধার করার জন্য। আমি তোমার বিচারের মধ্যে আমার সমগ্র জীবন কাটাতে পছন্দ করব যাতে আমি তোমার তত্ত্বাবধানে থাকতে পারি। আমি এক মুহুর্তের জন্যও শয়তানের অধীনে থাকতে রাজি নই; আমি তোমার দ্বারা শুদ্ধ হতে চাই; যদি আমাকে কষ্টও ভোগ করতে হয়, তবু আমি শয়তানের দ্বারা শোষিত ও প্রতারিত হতে চাই না। আমার, এই সৃষ্ট জীবের, উচিত তোমার দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া, তোমার দ্বারা অধিকৃত হওয়া, তোমার দ্বারা বিচার প্রাপ্ত হওয়া এবং তোমার দ্বারা শাস্তি প্রাপ্ত হওয়া। আমার এমনকি তোমার দ্বারা অভিশপ্ত হওয়াও উচিত। তুমি আমাকে আশীর্বাদ করতে ইচ্ছুক হলে আমার হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে, কারণ আমি তোমার ভালবাসা দেখেছি। তুমি স্রষ্টা, এবং আমি একজন সৃষ্ট জীব: তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা এবং শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বসবাস করা আমার উচিত নয়, বা শয়তানের দ্বারা শোষিত হওয়াও আমার উচিত নয়। শয়তানের জন্য বাঁচার পরিবর্তে আমার উচিত তোমার অশ্ব বা বৃষ হয়ে থাকা। আমি বরং তোমার শাস্তি প্রদানের মধ্যে বাস করব, শারীরিক সুখ ছাড়াই, এবং এতে আমি আনন্দ লাভ করব, এমনকি যদি তোমার অনুগ্রহ হারাতে হয় তবুও। যদিও তোমার অনুগ্রহ আমার সাথে নেই, তবু আমি তোমার শাস্তি ও বিচার উপভোগ করি; এ তোমার শ্রেষ্ঠ আশীর্বাদ, তোমার সবচেয়ে বড় অনুগ্রহ। যদিও তুমি সর্বদাই মহিমান্বিত এবং আমার প্রতি ক্রোধপূর্ণ, তবুও আমি তোমাকে ত্যাগ করে যেতে অক্ষম, এবং তবুও আমি তোমাকে যথেষ্ট ভালবাসতে পারি না। আমি তোমার গৃহে বাস করতে পছন্দ করব, আমি তোমার দ্বারা অভিশপ্ত হতে, শাস্তি ও আঘাত পেতে পছন্দ করব, এবং আমি শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করতে অনিচ্ছুক, অথবা শুধুমাত্র দেহের জন্য ছুটে বেড়াতে বা নিজেকে ব্যস্ত করতেও আমি চাই না, দেহের জন্য বাঁচতে তো আরোই অনিচ্ছুক”। পিতরের প্রেম ছিল একটি বিশুদ্ধ প্রেম। তা হল নিখুঁত হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা, এবং নিখুঁত হয়ে ওঠার সর্বোচ্চ ক্ষেত্র; এর চেয়ে অর্থপূর্ণ আর কোনো জীবন নেই। সে ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার গ্রহণ করেছিল, সে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবকে মূল্যবান মনে করেছিল, এবং পিতর সম্পর্কে আর কিছুই এর চেয়ে বেশি মূল্যবান ছিল না। সে বলেছিল, “শয়তান আমাকে বস্তুগত আনন্দ দেয়, কিন্তু আমি সেগুলিকে মূল্যবান মনে করি না। ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার আমার উপর নেমে আসে—এতে আমি অনুগৃহীত হই, এতে আমি আনন্দ লাভ করি এবং এতে আমি ধন্য বোধ করি। ঈশ্বরের বিচার না হলে আমি কখনই ঈশ্বরকে ভালবাসতাম না, আমি এখনও শয়তানের আধিপত্যের অধীনেই বাস করতাম, এখনও তার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত ও তার আজ্ঞাবহ হয়ে থাকতাম। যদি তাই হত, আমি কখনোই একজন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারতাম না, কারণ আমি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হতাম, এবং আমার সম্পূর্ণতা ঈশ্বরের জন্য উৎসর্গ করতাম না। যদিও ঈশ্বর আমাকে আশীর্বাদ করেন না, তা আমাকে এমন এক অস্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে রেখে দেয় যেন আমার ভিতরে এক আগুন জ্বলছে, কোনো শান্তি বা আনন্দ নেই, এবং যদিও ঈশ্বরের শাস্তি ও অনুশাসন কখনই আমাকে ত্যাগ করেনি, তা সত্ত্বেও ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের মধ্যে আমি তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম। এতে আমি আনন্দ লাভ করি; জীবনে এর চেয়ে মূল্যবান বা অর্থবহ আর কিছু নেই। যদিও তাঁর সুরক্ষা এবং যত্ন পরিণত হয়েছে নির্মম শাস্তি, বিচার, অভিশাপ এবং আঘাতে, তবুও আমি এই জিনিসগুলি উপভোগ করি, কারণ এগুলি আমাকে আরও ভাল করে পরিশুদ্ধ করতে পারে এবং আমাকে পরিবর্তন করতে পারে, আমাকে ঈশ্বরের আরও কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে, ঈশ্বরকে ভালবাসতে আমাকে আরও সক্ষম করে তুলতে পারে, এবং ঈশ্বরের প্রতি আমার ভালবাসাকে আরও বিশুদ্ধ করে তুলতে পারে। এটি আমাকে একজন সৃষ্ট জীব হিসাবে আমার দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম করে তোলে, এবং আমাকে ঈশ্বরের সম্মুখে ও শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়, যাতে আমি আর শয়তানের সেবা না করি। আমি যখন শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করব না, এবং আমার যা কিছু আছে এবং আমি যা কিছু করতে পারি সেই সবই ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করতে সক্ষম হব, কোন কিছুকে ধরে না রেখে—তখনই আমি সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট হব। ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারই আমাকে রক্ষা করেছে, এবং আমার জীবন ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার থেকে অবিচ্ছেদ্য। পৃথিবীতে আমার জীবন শয়তানের আধিপত্যের অধীন, এবং যদি ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের যত্ন ও সুরক্ষা না থাকত, তাহলে আমি সর্বদাই শয়তানের আধিপত্যের অধীনে থাকতাম, এবং উপরন্তু, অর্থপূর্ণ একটি জীবন যাপনের আমার কোন সুযোগ বা উপায় থাকত না। শুধুমাত্র যদি ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার আমাকে কখনও পরিত্যাগ করে না যায় তাহলে আমি ঈশ্বরের দ্বারা শুদ্ধ হতে সক্ষম হব। শুধুমাত্র ঈশ্বরের কঠোর বাক্য ও ন্যায়পরায়ণ স্বভাব, এবং ঈশ্বরের মহিমান্বিত বিচারের দ্বারাই, আমি সর্বোচ্চ সুরক্ষা লাভ করেছি এবং আলোতে বসবাস করতে পেরেছি, এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদ অর্জন করতে পেরেছি। শুদ্ধ হয়ে উঠতে পারা, এবং নিজেকে শয়তানের হাত থেকে মুক্ত করতে পারা, এবং ঈশ্বরের আধিপত্যের অধীনে থাকতে সক্ষম হতে পারা—এই হল আজ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।” এই হল সেই সর্বোচ্চ ক্ষেত্র যার অভিজ্ঞতা পিতর লাভ করেছিল।

মানুষকে নিখুঁত হয়ে ওঠার পর ঠিক এই অবস্থাই অর্জন করতে হবে। তুমি যদি এতটুকু অর্জন করতে না পারো, তাহলে তুমি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারবে না। মানুষ দেহের মধ্যে বাস করে, যার অর্থ সে মানব নরকে বাস করে, এবং ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তি ছাড়া মানুষও শয়তানের মতোই কলুষিত। মানুষ কীভাবে পবিত্র হতে পারে? পিতর বিশ্বাস করত যে ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার হল মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ সুরক্ষা এবং অনুগ্রহ। শুধুমাত্র ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচারের মাধ্যমেই মানুষ জাগ্রত হতে পারে এবং দৈহিকতাকে ঘৃণা করতে পারে, শয়তানকে ঘৃণা করতে পারে। ঈশ্বরের কঠোর অনুশাসন মানুষকে শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত করে, তাকে তার নিজের ছোট্ট জগৎ থেকে মুক্ত করে এবং তাকে ঈশ্বরের উপস্থিতির আলোকে বাঁচতে দেয়। শাস্তি এবং বিচারের চেয়ে ভাল পরিত্রাণ আর নেই! পিতর প্রার্থনা করেছিল, “হে ঈশ্বর! যতক্ষণ তুমি আমাকে শাস্তি দেবে এবং আমার বিচার করবে, আমি জানব যে তুমি আমাকে ত্যাগ করোনি। এমনকি তুমি যদি আমাকে আনন্দ বা শান্তি না দাও, এবং আমাকে দুঃখের মধ্যে বাস করাও, এবং আমাকে অগণিত শাস্তি প্রদান করো, তা স্বত্বেও যতক্ষণ না তুমি আমাকে ত্যাগ করে যাবে, আমার হৃদয় প্রশান্ত থাকবে। আজ, তোমার শাস্তি এবং বিচার আমার শ্রেষ্ঠ সুরক্ষা এবং আমার সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। তুমি আমাকে যে অনুগ্রহ প্রদান করো তা আমাকে রক্ষা করে। আজ তুমি আমাকে যে অনুগ্রহ প্রদান করো তা যেমন তোমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের প্রকাশ, তোমার শাস্তি ও বিচারও তাই; তদুপরি, এটি একটি পরীক্ষা, এবং তার চেয়েও অধিক হল যে এটি একটি কষ্টের জীবন।” পিতর দৈহিক আনন্দকে একপাশে রেখে গভীর প্রেম এবং বৃহত্তর সুরক্ষা অন্বেষণ করতে সক্ষম হয়েছিল, কারণ সে ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার থেকে প্রচুর অনুগ্রহ লাভ করেছিল। মানুষ যদি তার জীবনে পরিশুদ্ধ হতে চায় এবং তার স্বভাবে পরিবর্তন অর্জন করতে চায়, যদি সে অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করতে চায় এবং একটি জীব হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারকে মেনে নিতে হবে, এবং ঈশ্বরের অনুশাসন ও ঈশ্বরের আঘাতকে তার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে দেওয়া চলবে না, যাতে সে শয়তানের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে, এবং ঈশ্বরের আলোতে বাস করতে পারে। জেনে রাখো যে ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার হল আলো, এবং মানুষের পরিত্রাণের আলো, এবং মানুষের জন্য এর চেয়ে ভালো আশীর্বাদ, অনুগ্রহ বা সুরক্ষা আর কিছু নেই। মানুষ শয়তানের প্রভাবের অধীনে বাস করে, এবং দেহে বিদ্যমান থাকে; যদি সে পরিশুদ্ধ না হয় এবং ঈশ্বরের সুরক্ষা না পায়, তাহলে মানুষ আরও বেশি অধঃপতিত হবে। যদি সে ঈশ্বরকে ভালবাসতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই পরিশোধন ও উদ্ধার প্রাপ্ত হতে হবে। পিতর প্রার্থনা করেছিল, “হে ঈশ্বর, তুমি যখন আমার সঙ্গে সদয় আচরণ করো তখন আমি আনন্দিত হই এবং সান্ত্বনা অনুভব করি; তুমি যখন আমাকে শাস্তি দাও, তখন আমি আরও বেশি সান্ত্বনা এবং আনন্দ অনুভব করি। যদিও আমি দুর্বল, এবং অকথ্য কষ্ট সহ্য করি, যদিও আমার অশ্রু এবং দুঃখ রয়েছে, কিন্তু তুমি জানো যে এই দুঃখের কারণ হল আমার আনুগত্যহীনতা এবং আমার দুর্বলতা। আমি অশ্রুবিসর্জন করি কারণ আমি তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে পারি না, আমি দুঃখ এবং অনুশোচনা অনুভব করি কারণ আমি তোমার প্রয়োজনের পক্ষে অপর্যাপ্ত, কিন্তু আমি এই ক্ষেত্রটি অর্জন করতে চাই, আমি তোমাকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমার যথাসাধ্য করতে চাই। তোমার শাস্তি আমাকে সুরক্ষা দিয়েছে, এবং আমাকে সর্বোত্তম পরিত্রাণ দিয়েছে; তোমার বিচার তোমার সহনশীলতা এবং ধৈর্যকে অতিক্রম করেছে। তোমার শাস্তি এবং বিচার ছাড়া, আমি তোমার করুণা এবং প্রেমময় দয়া উপভোগ করতে পারতাম না। আজ, আমি আরও দেখতে পাচ্ছি যে তোমার ভালবাসা স্বর্গ অতিক্রম করেছে এবং অন্যান্য সমস্ত কিছুর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। তোমার ভালোবাসা শুধু করুণা এবং প্রেমময় দয়াই নয়; তার চেয়েও অধিক, এ হল শাস্তি ও বিচার। তোমার শাস্তি ও বিচার আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। তোমার শাস্তি এবং বিচার ছাড়া, একটি মানুষও পরিশুদ্ধ হতে পারবে না, এবং একটি মানুষও সৃষ্টিকর্তার ভালবাসা অনুভব করতে সক্ষম হবে না। যদিও আমি শত শত পরীক্ষা এবং কঠোর যন্ত্রণা সহ্য করেছি এবং এমনকি মৃত্যুর কাছাকাছি পর্যন্ত এসেছি, তবুও এগুলি আমাকে সত্যই তোমাকে জানতে দিয়েছে এবং সর্বোচ্চ পরিত্রাণ লাভ করিয়েছে। তোমার শাস্তি, বিচার এবং অনুশাসন আমাকে পরিত্যাগ করে গেলে আমি শয়তানের আধিপত্যের অধীনে অন্ধকারের মধ্যে বাস করব। মানুষের নশ্বর শরীরের কী উপকারিতা আছে? যদি তোমার শাস্তি এবং বিচার আমাকে পরিত্যাগ করে যেত, তাহলে এমন হত যেন তোমার আত্মাও আমাকে ত্যাগ করে গেছে, যেন তুমি আর আমার সঙ্গে নেই। যদি তাই হত, তাহলে আমি কীভাবে বেঁচে থাকতে পারতাম? যদি তুমি আমাকে অসুস্থতা প্রদান করো এবং আমার স্বাধীনতা কেড়ে নাও, তারপরেও আমি বেঁচে থাকতে পারি, কিন্তু তোমার শাস্তি ও বিচার যদি কখনো আমাকে পরিত্যাগ করে যায় তাহলে আমার বেঁচে থাকার কোন উপায় থাকবে না। আমি যদি তোমার শাস্তি এবং বিচার ছাড়াই থাকতাম, তাহলে আমি তোমার ভালবাসাও হারিয়ে ফেলতাম, যে ভালবাসা অত্যন্ত গভীর এবং আমার পক্ষে তা কথায় প্রকাশ করা কঠিন। তোমার ভালবাসা না থাকলে আমি শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করতাম, এবং তোমার মহিমান্বিত মুখমণ্ডল আমি দেখতে পেতাম না। আমি কীভাবে বেঁচে থাকতে পারতাম? এমন অন্ধকার, এমন জীবন আমি সহ্য করতে পারতাম না। তোমাকে আমার সঙ্গে পাওয়া মানে তোমাকে দেখতে পাওয়ার মতোই, তাহলে আমি তোমাকে ছেড়ে যেতাম কীভাবে? আমি তোমাকে অনুনয় করছি, আমি তোমাকে অনুরোধ করছি যে তুমি আমার কাছ থেকে আমার সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা নিয়ে নিও না, এমনকি তা আশ্বাসের কয়েকটি বাক্য হলেও। আমি তোমার ভালবাসা উপভোগ করেছি, এবং আজ আমি তোমার থেকে দূরে থাকতে পারি না; আমি কীভাবে তোমাকে ভাল না বেসে থাকতে পারতাম? আমি তোমার ভালবাসার কারণে অনেক দুঃখের অশ্রু বিসর্জন করেছি, তবুও আমি সর্বদা অনুভব করেছি যে এই ধরনের জীবন অধিকতর অর্থবহ, তা আমাকে সমৃদ্ধ করতে অধিকতর সক্ষম, আমাকে পরিবর্তন করতে অধিকতর সক্ষম, এবং আমাকে সেই সত্য অর্জন করার অনুমতি দিতে অধিকতর সক্ষম যা সৃষ্ট সকল জীবের অধিকারে থাকা উচিত।”

মানুষের সমগ্র জীবন শয়তানের আধিপত্যের অধীনে অতিবাহিত হয়, এবং এমন একজনও ব্যক্তি নেই যে শয়তানের প্রভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে। সকলেই একটি কদর্য জগতে বাস করে, কলুষে ও শূন্যতায়, যার সামান্যতম অর্থ বা মূল্য নেই; তারা দেহের জন্য, লালসার জন্য, এবং শয়তানের জন্য এমন নিরুদ্বেগ জীবন যাপন করে। তাদের অস্তিত্বের সামান্যতম মূল্য নেই। মানুষ সেই সত্যের সন্ধান করতে অক্ষম যা তাকে শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত করবে। যদিও মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে এবং বাইবেল পাঠ করে, তবুও সে বুঝতে পারে না যে কীভাবে শয়তানের প্রভাবের নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়। যুগে যুগে, খুব কম মানুষই এই গোপন রহস্যটি আবিষ্কার করতে পেরেছে, খুব কম মানুষই এটি উপলব্ধি করেছে। এমন অবস্থায়, যদিও মানুষ শয়তানকে ঘৃণা করে, এবং দেহকে ঘৃণা করে, কিন্তু সে জানে না কীভাবে শয়তানের প্রভাবের নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়। আজ, তোমরা কি এখনও শয়তানের আধিপত্যের অধীনে নও? তুমি তোমার আনুগত্যবিহীন কাজগুলির জন্য অনুশোচনা করো না, আর নিজেকে কলুষিত ও আনুগত্যহীন বলে তো মনেই করো না। ঈশ্বরের বিরোধিতা করার পরে, তুমি এমনকি মানসিক শান্তি লাভ করো এবং প্রভূত প্রশান্তি অনুভব করো। তোমার প্রশান্তির কারণ কি এই নয় যে তুমি ভ্রষ্ট? তোমার আনুগত্যহীনতার থেকেই কি এই মানসিক শান্তি আসে না? মানুষ মানব-নরকে বাস করে, সে শয়তানের অন্ধকার প্রভাবে বাস করে; সমগ্র পৃথিবী জুড়ে, মানুষের সঙ্গে প্রেত একত্রে বাস করে, মানুষের দেহের অনধিকার দখল নেয়। পৃথিবীতে, তুমি কোনো সুন্দর স্বর্গে বাস করো না। তুমি যেখানে আছ সেটি হল শয়তানের জগৎ, একটি মানব নরক, একটি অধোভুবন। মানুষকে যদি পরিশুদ্ধ না করা হয়, তাহলে সে কলুষিত; যদি সে ঈশ্বরের সুরক্ষা ও যত্ন না পায়, তাহলে সে এখনও শয়তানের বন্দী; যদি তার বিচার ও শাস্তি না হয়, তাহলে শয়তানের অন্ধকার প্রভাবের অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো উপায় তার থাকবে না। যে কলুষিত স্বভাব তুমি প্রকাশ করছ এবং যে আনুগত্যহীন আচরণের মধ্যে তুমি জীবন যাপন করছ, তা এটা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে তুমি এখনও শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করছ। যদি তোমার মন এবং চিন্তা পরিশুদ্ধ করা না হয়ে থাকে, এবং তোমার স্বভাবের বিচার ও শাস্তি প্রদান করা না হয়ে থাকে, তাহলে তোমার সমগ্র সত্তা এখনও শয়তানের আধিপত্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তোমার মন শয়তানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তোমার চিন্তা শয়তান দ্বারা পরিচালিত, এবং তোমার সমগ্র সত্তাই শয়তানের হাতে নিয়ন্ত্রিত। তুমি কি জানো যে তুমি এখন পিতরের মান থেকে ঠিক কতটা দূরে আছ? সেই ক্ষমতা কি তোমার আছে? আজকের শাস্তি ও বিচার সম্পর্কে তুমি কতটুকু জানো? পিতর যা জানতে পেরেছিল তার কতটুকু তোমার অধিকৃত আছে? যদি, আজ, তুমি জানতে অক্ষম হও, তাহলে কি তুমি ভবিষ্যতে এই জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবে? তোমার মতো অলস এবং ভীরু শাস্তি এবং বিচার সম্পর্কে জানতে একেবারেই অক্ষম। তুমি যদি দেহের শান্তি এবং দৈহিক সুখের অন্বেষণ কর, তাহলে তোমার পরিশুদ্ধ হওয়ার কোনো উপায় থাকবে না, এবং পরিশেষে তোমাকে শয়তানের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, কারণ তুমি যে জীবন যাপন করছ তা-ই হল শয়তানস্বরূপ, এবং তা দেহসর্বস্ব। আজকের পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে অনেক মানুষই জীবনের অন্বেষণ করে না, যার অর্থ তারা পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠার বিষয়ে, বা জীবনের গভীরতর অভিজ্ঞতায় প্রবেশ করার বিষয়ে চিন্তা করে না। তাই যদি হয়, তাহলে কীভাবে তাদের নিখুঁত করে তোলা যাবে? যারা জীবনের অন্বেষণ করে না তাদের নিখুঁত হয়ে ওঠার কোন সুযোগ নেই, এবং যারা ঈশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞানের অন্বেষণ করে না, যারা তাদের স্বভাব পরিবর্তনের চেষ্টা করে না, তারা শয়তানের অন্ধকার প্রভাব থেকে বাঁচতে অক্ষম। ঈশ্বর সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের বিষয়ে, এবং স্বভাবের পরিবর্তনে তাদের প্রবেশ করার বিষয়ে তারা আন্তরিক নয়, ঠিক তাদের মতোই, যারা ধর্মে বিশ্বাস করে, যারা কেবল অনুষ্ঠান পালন করে এবং নিয়মিত সেবায় যোগ দেয়। এটা কি সময়ের অপচয় নয়? যদি, ঈশ্বরের প্রতি মানুষের বিশ্বাসে, সে জীবনের বিষয়গুলিতে আন্তরিক না হয়, সত্যে প্রবেশ করার সন্ধান না করে, তার স্বভাব পরিবর্তনের চেষ্টা না করে, ঈশ্বরের কাজের কাজ সম্পর্কে অন্বেষণ না করে, তাহলে তাকে নিখুঁত করে তোলা যায় না। তুমি যদি নিখুঁত হয়ে উঠতে চাও তাহলে তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের কাজ বুঝতে হবে। বিশেষ করে, তোমাকে অবশ্যই বুঝতে হবে তাঁর শাস্তি ও বিচারের তাৎপর্য, এবং কেন এই কাজ মানুষের উপর সম্পাদিত হয়। তুমি কি তা মেনে নিতে সক্ষম? এই ধরনের শাস্তির সময়, তুমি কি পিতরের মতো একই অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম? তুমি যদি ঈশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞান এবং পবিত্র আত্মার কাজের অন্বেষণ করো এবং তুমি যদি নিজের স্বভাব পরিবর্তনের চেষ্টা করো, তাহলে তোমার নিখুঁত হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে।

যাদেরকে নিখুঁত করে তোলা হবে, তাদের জন্য বিজিত হওয়ার কাজের এই ধাপটি অপরিহার্য; মানুষ একবার বিজিত হলে তবেই সে নিখুঁত হয়ে ওঠার কাজটি অনুভব করতে পারে। শুধুমাত্র বিজিতের ভূমিকা পালন করার কোন বৃহৎ মূল্য নেই, তা তোমাকে ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার উপযুক্ত করে তুলবে না। সুসমাচার প্রচারে নিজের ভূমিকা পালন করার কোন উপায় তোমার কাছে থাকবে না, কারণ তুমি জীবনের অন্বেষণ করো না, এবং নিজের পরিবর্তন ও পুনর্নবীকরণের চেষ্টা করো না, এবং তাই তোমার জীবনের কোন প্রকৃত অভিজ্ঞতা নেই। এই ধাপে ধাপে সম্পাদিত কাজের সময়, তুমি একবার একজন সেবা-প্রদানকারী এবং ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করার জন্য এমন এক বস্তু হিসাবে কাজ করেছিলে যার বৈপরীত্যে তাঁর বৈপরিত্যে তাঁর মহিমা উজ্জ্বলরূপে প্রতিভাত হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তুমি পিতরের মতো হওয়ার চেষ্টা না করো, এবং তোমার সাধনা সেই পথ অনুসারে করা না হয় যার দ্বারা পিতরকে নিখুঁত করা হয়েছিল, তাহলে, স্বাভাবিকভাবেই, তুমি নিজের স্বভাব পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা লাভ করবে না। তুমি যদি এমন কেউ হও যে নিখুঁত হওয়ার জন্য সাধনা করে, তাহলে তুমি সাক্ষ্য বহন করবে এবং তুমি বলবে: “ঈশ্বরের এই ধাপে ধাপে সম্পাদিত কাজে, আমি ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের কাজকে গ্রহণ করেছি, এবং যদিও আমি অনেক যন্ত্রণা সহ্য করেছি, তবুও আমি জানতে পেরেছি ঈশ্বর মানুষকে কীভাবে নিখুঁত করে তোলেন, আমি ঈশ্বরের সম্পাদিত কাজ লাভ করেছি, আমি ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতার জ্ঞান লাভ করেছি, এবং তাঁর শাস্তি আমাকে উদ্ধার করেছে। তাঁর ধার্মিক স্বভাব আমার উপরে অর্পিত হয়েছে এবং আমার জন্য আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ নিয়ে এসেছে; তাঁর বিচার ও শাস্তিই আমাকে সুরক্ষা দিয়েছে এবং পরিশুদ্ধ করেছে। আমি যদি ঈশ্বরের দ্বারা শাস্তি ও বিচার প্রাপ্ত না হতাম, এবং যদি ঈশ্বরের কঠোর বাক্য আমার উপর না নেমে আসতো, আমি হয়তো ঈশ্বরকে চিনতে পারতাম না, এবং আমি হয়তো উদ্ধারও হতাম না। আজ আমি দেখতে পাচ্ছি: একজন সৃষ্ট জীব হিসাবে, কেউ শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তার তৈরি সমস্ত বস্তুই উপভোগ করে না, বরং, আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, সমস্ত সৃষ্ট জীবের উচিত ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাব এবং তাঁর ধার্মিক বিচারও উপভোগ করা, কারণ ঈশ্বরের স্বভাব মানুষের উপভোগের যোগ্য। শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট একটি জীব হিসাবে, ঈশ্বরের ধার্মিক স্বভাব উপভোগ করা উচিত। তাঁর ধার্মিক স্বভাবের মধ্যে আছে শাস্তি এবং বিচার, এবং উপরন্তু, তাতে রয়েছে মহান প্রেম। যদিও আমি আজ ঈশ্বরের ভালোবাসা সম্পূর্ণরূপে লাভ করতে অক্ষম, কিন্তু তা প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, এবং এতে আমি আশীর্বাদধন্য হয়েছি।” এ-ই হল সেই পথ যে পথ দিয়ে যারা নিখুঁত হওয়ার অভিজ্ঞতা লাভ করে তারা হেঁটে গিয়েছে, এবং এ-ই হল সেই জ্ঞান যার কথা তারা বলে। এই ধরনের মানুষ পিতরেরই মতো; পিতরের মত তাদেরও একই অভিজ্ঞতা রয়েছে। আবার এই ধরনের মানুষগুলিই হল তারা, যারা জীবন অর্জন করেছে, যারা সত্যের অধিকারী। যখন তারা একেবারে শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতা লাভ করবে, ঈশ্বরের বিচারের সময় তারা নিশ্চিতভাবেই শয়তানের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণরূপে নিজেদেরকে মুক্ত করবে, এবং ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হবে।

মানুষ বিজিত হওয়ার পর, তাদের কাছে কোন সন্দেহাতীত সাক্ষ্য থাকে না। তারা কেবল শয়তানকে লজ্জিত করেছে, কিন্তু ঈশ্বরের বাক্যের বাস্তবিকতাকে জীবনে যাপন করেনি। তুমি দ্বিতীয় পরিত্রাণ লাভ করনি; তুমি অর্জন করেছ নিছক পাপ-উৎসর্গ, তবুও তোমাকে নিখুঁত করে তোলা হয়নি—এটা একটা বিরাট বড় ক্ষতি। তোমাদের বুঝতে হবে তোমাদের কোথায় প্রবেশ করা উচিত, এবং তোমাদের জীবনে কী যাপন করা উচিত, এবং তোমাদের সেগুলির মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। যদি, শেষ পর্যন্ত, তুমি নিখুঁত হয়ে ওঠা সম্পন্ন না করো, তাহলে তুমি একজন প্রকৃত মানুষ হতে পারবে না এবং তুমি অনুশোচনায় পূর্ণ হবে। আদিতে ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্ট আদম এবং ইভ ছিল পবিত্র মানব, অর্থাৎ বলা যায়, এদন উদ্যানে থাকাকালীন তারা ছিল পবিত্র, মালিন্যের কলঙ্ক থেকে মুক্ত। তারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল এবং যিহোবার বিশ্বাসঘাতকতা সম্বন্ধে কিছুই জানত না। এর কারণ হল তারা শয়তানের প্রভাবের উপদ্রব থেকে মুক্ত ছিল, শয়তানের বিষ থেকে মুক্ত ছিল এবং সমস্ত মানবজাতির মধ্যে পবিত্রতম ছিল। তারা এদন উদ্যানে বাস করত, তারা ছিল কলুষতাবিহীন, দেহের দ্বারা অনধিকৃত, এবং যিহোবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। পরে, যখন তারা শয়তানের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়েছিল, তখন তাদের কাছে ছিল স্বর্পের বিষ আর যিহোবার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা, এবং তারা শয়তানের প্রভাবের অধীনে বাস করছিল। শুরুতে, তারা পবিত্র ছিল এবং তারা যিহোবাকে সম্মান করত; শুধুমাত্র এই অবস্থায় তারা মানুষ ছিল। পরবর্তীকালে, শয়তানের দ্বারা প্রলুব্ধ হওয়ার পরে, তারা ভালো ও মন্দের জ্ঞানবৃক্ষের ফল খেয়েছিল এবং শয়তানের প্রভাবে জীবনযাপন করেছিল। তারা ধীরে ধীরে শয়তানের দ্বারা কলুষিত হয়েছিল এবং মানুষের আসল ভাবমূর্তি হারিয়ে ফেলেছিল। শুরুতে, মানুষের কাছে যিহোবার শ্বাস ছিল, সে এতটুকুও অবাধ্য ছিল না, এবং তার হৃদয়ে কোন মন্দ ভাব ছিল না। তখন মানুষ ছিল প্রকৃত মানুষ। শয়তানের দ্বারা কলুষিত হয়ে মানুষ পশুতে পরিণত হয়েছিল। তার চিন্তাভাবনা ছিল মন্দ এবং কলুষে পূর্ণ, তাতে মঙ্গলময়তা বা পবিত্রতা ছিল না। এই কি শয়তান নয়? তুমি ঈশ্বরের অনেক কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, তবুও তুমি পরিবর্তিত হওনি বা শুদ্ধ হওনি। তুমি এখনও শয়তানের আধিপত্যের অধীনে বাস করো, এবং এখনও ঈশ্বরের কাছে সমপর্ণ করো না। এ হল এমন একজন যাকে জয় করা হয়েছে কিন্তু নিখুঁত করে তোলা হয়নি। আর কেন বলা হয় যে এমন ব্যক্তিকে নিখুঁত করে তোলা হয়নি? কারণ সেই ব্যক্তি জীবনের অন্বেষণ করে না অথবা ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কিত জ্ঞানের সাধনা করে না, এবং দৈহিক আনন্দ ও ক্ষণিকের আরাম ছাড়া আর কিছুই ব্যাকুল ভাবে কামনা করে না। ফলস্বরূপ, তাদের জীবনচরিত্রে কোন পরিবর্তন নেই, এবং তারা ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্ট মানুষের আসল চেহারা ফিরে পায়নি। এমন মানুষ হল চলমান শবদেহ, তারা হল সেই মৃত ব্যক্তি যাদের আত্মা নেই! যারা আত্মার মধ্যে বস্তুর জ্ঞানের অন্বেষণ করে না, যারা পবিত্রতার অন্বেষণ করে না, এবং যারা সত্যকে জীবনে যাপন করার চেষ্টা করে না, যারা কেবল নেতিবাচক দিক থেকে বিজিত হওয়াতেই সন্তুষ্ট, এবং যারা ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী জীবন যাপন করে পবিত্র মানুষ হয়ে উঠতে পারে না—তারা সেই মানুষ যাদের উদ্ধার করা হয়নি। কারণ, যদি সে সত্যের অধিকারী না হয়, তাহলে মানুষ ঈশ্বরের পরীক্ষার সময় দৃঢ় অবস্থান নিতে পারে না; যাদের উদ্ধার করা হয়েছে শুধু তারাই ঈশ্বরের পরীক্ষার সময় দৃঢ় অবস্থান নিতে পারে। আমি যা চাই তা হল পিতরের মতো মানুষ, যারা নিখুঁত হয়ে ওঠার চেষ্টা করে। আজকের সত্য তাদের প্রদান করা হয় যারা এর জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা করে এবং তা অন্বেষণ করে। এই পরিত্রাণ তাদের মঞ্জুর করা হয় যারা ঈশ্বরের দ্বারা উদ্ধার পাওয়ার জন্য আকুল হয়, এবং তা শুধুমাত্র তোমাদের দ্বারা অর্জিত হওয়ার জন্য নয়। এর উদ্দেশ্য হল যাতে তোমরা ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হতে পারো; তোমরা ঈশ্বরকে অর্জন করো যাতে ঈশ্বর তোমাদের অর্জন করতে পারেন। আজ আমি তোমাদের এই বাক্যগুলি বলেছি, এবং তোমরা সেগুলি শুনেছ, এবং তোমাদের উচিত এইসকল বাক্য অনুযায়ী অনুশীলন করা। শেষ পর্যন্ত, যখন তোমরা এই বাক্যগুলিকে বাস্তবে অনুশীলন করবে সেটাই হবে সেই মুহূর্ত যখন আমি এই বাক্যগুলির মাধ্যমে তোমাদের অর্জন করেছি; একই সাথে, তোমরাও এই বাক্যগুলি অর্জন করেছ, অর্থাৎ তুমি এই পরম পরিত্রাণ লাভ করেছ। একবার তোমাদের পরিশুদ্ধ করা হয়ে গেলে, তোমরা একজন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠবে। তুমি যদি সত্যকে জীবনে যাপন করতে অক্ষম হও, বা যাকে নিখুঁত করে তোলা হয়েছে তার মতো করে জীবন যাপন করতে অক্ষম হও, তাহলে বলা যেতে পারে যে তুমি মানুষ নও, বরং চলমান একটি মৃতদেহ, একটি পশু, কারণ তুমি সত্যের অধিকারী নও, যার অর্থ হল তুমি যিহোবার শ্বাস বিহীন, এবং তাই তুমি একজন মৃত ব্যক্তি যার কোনো আত্মা নেই! যদিও বিজিত হওয়ার পরে সাক্ষ্য দেওয়া সম্ভব, কিন্তু তাতে তুমি যা লাভ করো তা সামান্য পরিত্রাণ ছাড়া কিছু নয়, এবং তুমি আত্মার অধিকারী জীবে পরিণত হও না। যদিও তুমি শাস্তি ও বিচারের অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, কিন্তু তার ফলে তোমার স্বভাব নতুন হয়ে যায়নি বা পরিবর্তিত হয়নি; তুমি এখনও নিজের সেই পুরানো সত্তাই আছো, তুমি এখনও শয়তানের অধিকারে আছো, এবং পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠোনি। শুধুমাত্র যাদের নিখুঁত করে তোলা হয়েছে তারাই মূল্যবান, এবং শুধুমাত্র এই ধরনের মানুষই প্রকৃত জীবন লাভ করেছে। একদিন, কেউ তোমাকে বলবে, “তুমি ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, তাহলে তাঁর কাজ কেমন তা বলো। দাউদ ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল, এবং যিহোবার কাজগুলি প্রত্যক্ষ করেছিল, মোশিও যিহোবার কাজগুলি দেখেছিল, এবং তারা দুজন যিহোবার কাজগুলি বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছিল এবং যিহোবার বিস্ময়করতার কথা বলতে পেরেছিল। তোমরা অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের অবতারের সম্পাদিত কাজ দেখেছ; তুমি কি তাঁর জ্ঞানের কথা বলতে পারো? তুমি কি তাঁর কাজের বিস্ময়করতার সম্পর্কে বলতে পারো? ঈশ্বর তোমাদের কাছে কী দাবি করেছেন, এবং তোমরা কীভাবে সেগুলির অভিজ্ঞতা লাভ করেছ? তোমরা ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজ অনুভব করেছ—তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ দর্শন কী? তোমরা কি সে বিষয়ে বলতে পারো? তোমরা কি ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব সম্পর্কে বলতে পারো?” এই প্রশ্নগুলির সম্মুখীন হলে তুমি কীভাবে উত্তর দেবে? তুমি যদি বলো, “ঈশ্বর খুবই ন্যায়পরায়ণ, তিনি আমাদের শাস্তি দেন ও বিচার করেন, এবং আমাদের অনাবৃত করা থেকে অব্যাহতি দেন না; ঈশ্বরের স্বভাব সত্যিই মানুষের অপরাধের প্রতি অসহিষ্ণু; ঈশ্বরের কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করার পরে, আমি আমাদের নিজেদের পশুত্ব সম্পর্কে অবগত হয়েছি, এবং আমি সত্যিই ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করেছি,” তখন অপর ব্যক্তি তোমাকে জিজ্ঞাসা করতে থাকবে, “তুমি ঈশ্বর সম্পর্কে আর কী জানো? কেউ কীভাবে জীবনে প্রবেশ করে? তোমার কি কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্খা আছে?” তুমি উত্তর দেবে, “শয়তানের দ্বারা কলুষিত হওয়ার পরে, ঈশ্বরের জীবেরা পশুতে পরিণত হয়েছিল এবং গাধা থেকে তারা কোনো অংশেই আলাদা ছিল না। আজ, আমার বাস ঈশ্বরের হাতে, এবং তাই আমাকে স্রষ্টার ইচ্ছা পূর্ণ করতে হবে এবং তিনি যা শেখান তা মান্য করতে হবে। আমার অন্য কোন উপায় নেই।” তুমি যদি শুধুমাত্র এরকম সাধারণভাবে কথা বলো, তাহলে সেই ব্যক্তি বুঝতে পারবে না যে তুমি কি বলছ। যখন তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে যে ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে তোমার কী জ্ঞান আছে, তারা তখন তোমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাই বলছে। তারা জিজ্ঞাসা করছে, ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের অভিজ্ঞতা লাভের পরে তুমি কী জ্ঞান লাভ করেছ, এবং তারা তোমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাই উল্লেখ করছে, এবং বলছে যে তুমি সত্য সম্পর্কে নিজের জ্ঞানের কথা বলো। তুমি যদি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বলতে অক্ষম হও তাহলে তা থেকে প্রমান হয় আজকে যে কাজ সম্পাদিত হচ্ছে সে বিষয়ে তুমি কিছুই জানো না। তুমি সর্বদা এমন সব কথা বলো যা আপাতদৃষ্টিতে সত্য বলে মনে হলেও আসলে তা নয়, বা যা সকলেই জানে; তোমার কোন নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা নেই, তোমার জ্ঞানে সারসত্যের পরিমাণ খুবই কম, এবং তোমার কোন প্রকৃত সাক্ষ্যও নেই, তাই অন্যেরা তোমার কথায় নিশ্চিত হতে পারে না। ঈশ্বরের একজন নিষ্ক্রিয় অনুগামী হয়ে উঠো না, এবং যা তোমাকে কৌতূহলী করে তার অনুসরণ কোরো না। শীতল বা উষ্ণ কোনোটাই না হওয়ার মাধ্যমে তুমি নিজেকে ধ্বংস করবে এবং নিজের জীবনকে বিলম্বিত করবে। তোমাকে অবশ্যই এই জাতীয় নিষ্ক্রিয়তা ও অকর্মণ্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে, এবং ইতিবাচক বিষয়গুলির সাধনা করতে ও নিজের দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠতে পারদর্শী হতে হবে, যাতে তুমি সত্যকে অর্জন করতে পারো এবং সত্যকে জীবনে যাপন করতে পারো। তোমার দুর্বলতা সম্পর্কে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এবং নিজের ত্রুটিগুলি তোমার সবচেয়ে বড় সমস্যা নয়। তোমার সবচেয়ে বড় সমস্যা, এবং তোমার সবচেয়ে বড় ত্রুটি হল উষ্ণ অথবা শীতল কোনোটাই না হওয়া এবং তোমার সত্য অন্বেষণের ইচ্ছার অভাব। তোমাদের সকলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ভীরু মানসিকতা যার ফলে তুমি কোনোকিছু যেমনটা আছে তেমনটা নিয়েই খুশি থাকো আর শুধু নিষ্ক্রিয়ভাবে অপেক্ষা করতে থাকো। এটাই তোমাদের সবচেয়ে বড় বাধা, এবং তোমাদের সত্যের সাধনার সবচেয়ে বড় শত্রু। আমি যে বাক্যগুলি বলি সেগুলি শুধু এতো গভীর বলেই যদি তুমি মেনে চলো, তাহলে তুমি জ্ঞানের প্রকৃত অধিকারী নও, এবং তুমি সত্যের মূল্যও দাও না। তোমার মতো আনুগত্য সাক্ষ্য নয়, এবং আমি এই ধরনের আনুগত্য অনুমোদন করি না। কেউ তোমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারে, “তোমার ঈশ্বর ঠিক কোথা থেকে এসেছেন? তোমার এই ঈশ্বরের সারসত্য কী?” তুমি উত্তর দেবে, “তাঁর সারসত্য হল শাস্তি এবং বিচার।” তারপর সে বলতে থাকে, “ঈশ্বর কি মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল ও প্রেমময় নন? তুমি কি এটা জানো না?” তুমি বলবে, “তিনি হলেন অন্যদের ঈশ্বর। তিনি সেই ঈশ্বর যাতে ধর্মের অনুগামী লোকেরা বিশ্বাস করে, তিনি আমাদের ঈশ্বর নন।” তোমার মতো মানুষেরা যখন সুসমাচার প্রচার করে, তুমি প্রকৃত পথকে বিকৃত করো, তাহলে কোন কাজে তুমি লাগো? কীভাবে অন্যরা তোমার কাছ থেকে প্রকৃত পথ অর্জন করতে পারে? তোমার অধিকারে সত্য নেই, এবং সত্যের বিষয়ে কিছুই তুমি বলতে পারো না, তাছাড়া, সর্বোপরি, তুমি সত্যকে জীবনে যাপন করতে পারো না। কী তোমাকে ঈশ্বরের সামনে বেঁচে থাকার যোগ্য করে তোলে? যখন তুমি অন্যদের কাছে সুসমাচার প্রচার করো, এবং যখন তুমি সত্যের বিষয়ে আলোচনা করো এবং ঈশ্বরের সাক্ষ্য দাও, তখন তুমি যদি তাদের জয় করতে অক্ষম হও, তারা তোমার বাক্যগুলিকে খণ্ডন করবে। তোমার অস্তিত্বই কি একটা অপচয় নয়? তুমি ঈশ্বরের কাজের প্রচুর অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, তবুও তুমি যখন সত্যের বিষয়ে কথা বলো তখন তোমার কথার কোনো অর্থই থাকে না। তুমি কি সকল কাজেরই অযোগ্য নও? কোনো কাজে কি আদৌ তোমাকে ব্যবহার করা যেতে পারে? ঈশ্বরের কাজের এতো অভিজ্ঞতা লাভ করা সত্ত্বেও কী করে তাঁর সম্পর্কে তোমার ন্যূনতম জ্ঞানও না থাকতে পারে? যখন তারা জিজ্ঞাসা করে যে ঈশ্বর সম্পর্কে তোমার প্রকৃত জ্ঞান কী, তখন তুমি বাক্যহারা হয়ে পড়, অথবা অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলে উত্তর দাও—এই বলে যে ঈশ্বর হলেন পরাক্রমশালী, তুমি যে প্রভূত আশীর্বাদ পেয়েছ তা সত্যই ঈশ্বরের দ্বারা তোমার উন্নতিসাধন, এবং ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করার চেয়ে বড় অনুগ্রহ আর কিছু নেই। এই কথা বলার কী মূল্য আছে? এগুলো অনাবশ্যক, অন্তঃসারশূন্য কথা। ঈশ্বরের কাজের এতো অভিজ্ঞতার পরে, তুমি কি শুধু এটুকুই জানো যে ঈশ্বরের দ্বারা উন্নীত হওয়াই সত্য? তোমাকে ঈশ্বরের কাজের বিষয়ে জানতে হবে, এবং শুধুমাত্র তবেই তুমি ঈশ্বরের প্রকৃত সাক্ষ্য বহন করবে। যারা সত্যকে অর্জন করেনি তারা কীভাবে ঈশ্বরের সাক্ষ্য প্রদান করবে?

যদি এত কাজ, এবং এত বাক্যের তোমার উপর কোন প্রভাব না থাকে, তাহলে যখন ঈশ্বরের কাজ প্রচার করার সময় আসবে তখন তুমি নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না, এবং লজ্জিত ও অপমানিত হবে। সেই সময়ে তুমি অনুভব করবে, ঈশ্বরের কাছে তুমি কতটা ঋণী, ঈশ্বর সম্পর্কে তোমার জ্ঞান কত অগভীর। আজ, যখন তিনি কাজ করছেন, তখন তুমি যদি ঈশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞানের অন্বেষণ না করো, তাহলে পরে অনেক দেরি হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত, তোমার বলার মতো কোনও জ্ঞান থাকবে না—তুমি নিঃস্ব হয়ে রয়ে যাবে, তোমার আর কিছুই থাকবে না। তুমি কীভাবে ঈশ্বরের বর্ণনা দেবে? তোমার কি ঈশ্বরের দিকে চোখ তুলে তাকাবার স্পর্ধা আছে? তোমার এখনই নিজের সাধনায় কঠোর পরিশ্রম করা উচিত, যাতে শেষ পর্যন্ত তুমি পিতরের মতো জানতে পারো যে ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার মানুষের জন্য কতটা উপকারী, এবং তাঁর শাস্তি ও বিচার ছাড়া মানুষ উদ্ধার পেতে পারে না, এবং তারা কেবলই এই কলুষিত ভূমির আরও গভীরে, আরো পঙ্কের মধ্যে ডুবে যেতে পারে। মানুষ শয়তানের দ্বারা কলুষিত হয়েছে, একে অপরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, এবং একে অপরকে সম্পূর্ণরূপে অবজ্ঞা করেছে, ঈশ্বরের প্রতি ভীতি হারিয়েছে। তাদের আনুগত্যহীনতা অত্যন্ত বেশি, তাদের পূর্বধারণা অনেক, এবং তারা সকলেই শয়তানের অধীন। ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার ব্যতীত, মানুষের কলুষিত স্বভাবকে শুদ্ধ করা যাবে না এবং তাকে উদ্ধার করাও যাবে না। দেহরূপে ঈশ্বরের অবতারের কাজের দ্বারা যা প্রকাশ করা হয় তা অবিকল সেটাই যা আত্মার দ্বারা প্রকাশিত হয়, এবং তিনি যে কাজ সম্পাদন করেন তা আত্মার দ্বারা সম্পন্ন কাজ অনুসারেই নির্বাহ করা হয়। আজ যদি তোমার এই কাজের সম্পর্কে কোনো জ্ঞান না থাকে, তাহলে তুমি অত্যন্ত মূর্খ, এবং তুমি বহু কিছু হারিয়েছ! তুমি যদি ঈশ্বরের পরিত্রাণ লাভ না করে থাকো, তাহলে তোমার বিশ্বাস হচ্ছে ধর্মীয় বিশ্বাস, এবং তুমি এমন একজন খ্ৰীষ্টান যে ধর্মের অন্তর্গত। যেহেতু তুমি বিলুপ্ত মতবাদকে আঁকড়ে ধরে রেখেছ, তাই তুমি পবিত্র আত্মার নতুন কাজ হারিয়েছ; অন্যরা, যারা ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের অন্বেষণ করে, তারা সত্য এবং জীবন অর্জন করতে সক্ষম, অথচ তোমার বিশ্বাস ঈশ্বরের অনুমোদন লাভে অক্ষম। তার পরিবর্তে, তুমি একজন অন্যায়কারী হয়ে উঠেছ, এমন একজন যে ধ্বংসাত্মক এবং ঘৃণ্য কাজকর্ম করে; তুমি হয়ে উঠেছ শয়তানের উপহাসের লক্ষ্য, এবং শয়তানের একজন বন্দী। ঈশ্বর মানুষের বিশ্বাস করার জন্য নয়, তার ভালোবাসার জন্য, এবং তার অন্বেষণ ও উপাসনার জন্য। তুমি যদি আজকে অন্বেষণ না করো, তাহলে এমন দিন আসবে যখন তুমি বলবে, “অতীতে আমি কেন ঈশ্বরকে সঠিকভাবে অনুসরণ করিনি, তাঁকে সঠিকভাবে সন্তুষ্ট করিনি, আমার জীবন চরিত্র পরিবর্তনের সাধনা করিনি? সেই সময়ে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করতে না পারার জন্য এবং ঈশ্বরের বাক্যের জ্ঞান অনুসরণ করতে না পারার জন্য আমি খুবই অনুতপ্ত। ঈশ্বর তখন এত বাক্য উচ্চারণ করেছেন; কেন আমি অনুসরণ করতে পারিনি? আমি কত মূর্খ ছিলাম!” তুমি নিজেকে ঘৃণা করবে। আজ, আমি যে বাক্যগুলি বলি তা তোমরা বিশ্বাস করো না, এবং তোমরা সেগুলির প্রতি মনোযোগ দাও না। যখন এই কাজটি ছড়িয়ে পড়ার দিন আসবে এবং তুমি এর সম্পূর্ণতা চাক্ষুষ করবে, তখন তুমি অনুতাপ করবে এবং সেই সময় তুমি হতবাক হয়ে যাবে। আশীর্বাদ আছে, তবুও তুমি সেগুলি উপভোগ করতে জানো না, এবং সত্য আছে, তবুও তুমি তার অন্বেষণ করো না। তুমি কি নিজের প্রতি অবজ্ঞা বয়ে আনছ না? আজ, যদিও ঈশ্বরের কাজের পরবর্তী পর্যায়ের এখনও সূচনা হয়নি, কিন্তু তোমার কাছে যে দাবিগুলি করা হয়েছে এবং তোমাকে যা নিয়ে জীবন যাপন করতে বলা হয়েছে, তা মোটেই অতিরিক্ত কিছু নয়। অনেক কাজ, এবং অনেক সত্য রয়েছে; সেগুলি কি তোমার দ্বারা পরিচিত হওয়ার যোগ্য নয়? ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার কি তোমার আত্মাকে জাগ্রত করতে অক্ষম? ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার কি তোমাকে নিজেকে ঘৃণা করাতে অক্ষম? তুমি কি শান্তি ও আনন্দ এবং যৎসামান্য দৈহিক স্বাচ্ছন্দ্য সহকারে শয়তানের প্রভাবের অধীনে বসবাস করে সন্তুষ্ট? তুমি কি সব মানুষের চেয়ে নীচ নও? যারা পরিত্রাণ চাক্ষুষ করেছে অথচ তা অর্জন করার জন্য সাধনা করে না তাদের চেয়ে অধিক মূর্খ আর কেউ নেই; এরা এমন মানুষ যারা দেহসর্বস্বতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শয়তানকে উপভোগ করে। তুমি আশা করো যে ঈশ্বরের প্রতি তোমার বিশ্বাস কোনো বাধা-বিপত্তি বা যন্ত্রণা বা সামান্যতম কষ্টেরও সম্মুখীন হবে না। তুমি সর্বদাই সেই জিনিসগুলির অন্বেষণ করো যা মূল্যহীন, এবং তুমি জীবনের সাথে কোনো মূল্য সংযোজন করো না, বরং সত্যের সামনে তোমার নিজের অসংযত চিন্তাভাবনাগুলি রেখে দাও। তুমি এতটাই মূল্যহীন! তুমি শূকরের মত বাস করো—তোমার আর শূকর আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য কী? যারা সত্যের সাধনা করে না, এবং তার পরিবর্তে দেহসর্বস্বতাকে ভালবাসে, তারা কি সবাই পশু নয়? আত্মা বিহীন ঐ মৃত ব্যক্তিরা কি সব চলমান শবদেহ নয়? তোমাদের মধ্যে কত বাক্য বলা হয়েছে? তোমাদের মাঝে কি খুব সামান্য কাজ করা হয়েছে? কতকিছুই না আমি তোমাদের মধ্যে প্রদান করেছি? তাহলে তুমি কেন তা অর্জন করনি? তোমার অভিযোগ করার মত কী আছে? এমনটা নয় কি যে দৈহিক সুখকে এতোটাই ভালোবেসেছ বলে তুমি কিছুই অর্জন করোনি? এবং এর কারণ কি এই নয় যে তোমার চিন্তাভাবনা অত্যন্ত অসংযত? এর কারণ কি এই নয় যে তুমি অতীব নির্বোধ? তুমি যদি এইসকল আশীর্বাদ অর্জন করতে অক্ষম হও, তাহলে কি তুমি তোমাকে উদ্ধার না করার জন্য ঈশ্বরকে দোষ দিতে পারো? তুমি যা অন্বেষণ করো সেগুলি হল ঈশ্বরে বিশ্বাস করার পরে শান্তি লাভ করতে সক্ষম হওয়া, অসুস্থতা থেকে তোমার সন্তানাদির মুক্ত থাকা, তোমার স্বামীর একটি ভাল চাকরি হওয়া, তোমার পুত্রের জন্য একটি ভাল স্ত্রী খুঁজে পাওয়া, তোমার কন্যার জন্য একটি উপযুক্ত স্বামী খুঁজে পাওয়া, তোমার বলদ ও ঘোড়াগুলির ভালোভাবে জমি কর্ষণ করতে পারা, তোমার ফসলের জন্য বর্ষব্যাপী ভাল আবহাওয়া। তুমি যা অন্বেষণ করো তা হচ্ছে এইসব। তোমার সাধনা কেবল স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকার জন্য, যাতে তোমার পরিবারের কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, বাতাস তোমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়, তোমার মুখে যাতে এক কণা বালুও স্পর্শ না করে, তোমার পরিবারের ফসল যাতে প্লাবিত না হয়, যাতে তুমি কোনও বিপর্যয় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হও, যেন ঈশ্বরের আলিঙ্গনে জীবন যাপন করতে পারো, একটি আরামদায়ক আশ্রয়ে বসবাস করতে পারো। তোমার মতো কাপুরুষ, যে সর্বদা দেহসর্বস্বতার পিছনে ছুটছে—তোমার কি হৃদয় আছে, তোমার কি আত্মা আছে? তুমি কি একটি পশু নও? বিনিময়ে কিছু না চেয়ে আমি তোমাকে প্রকৃত পথ দিই, তবুও তুমি তা অন্বেষণ করো না। তুমি কি আদৌ ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের একজন? আমি তোমাকে প্রকৃত মানব জীবন দান করি, তবুও তুমি অন্বেষণ করো না। তুমি কি শূকর বা কুকুরের চেয়ে কোনোভাবেই পৃথক নও? শূকররা মানুষের জীবনকে অনুসন্ধান করে না, তারা পরিশুদ্ধ হওয়ার সাধনা করে না, এবং তারা জীবন কী তা বোঝে না। প্রতিদিন, পেট ভরে খাদ্য গ্রহণ করার পরে, তারা কেবলই নিদ্রা যায়। আমি তোমাকে প্রকৃত পথ দিয়েছি, তবুও তুমি তা অর্জন করনি: তুমি শূন্যহস্ত। তুমি কি এই জীবনযাপন চালিয়ে যেতে চাও, একটি শূকরের জীবন? এমন মানুষের বেঁচে থাকার তাৎপর্য কী? তোমার জীবন নিন্দনীয় এবং তুচ্ছ, তোমার জীবনযাপন আবর্জনা ও লাম্পট্যের মাঝে, এবং তুমি কোন লক্ষ্যের অনুসরণ করো না; তোমার জীবন কি সকলের চেয়ে তুচ্ছ নয়? তোমার কি ঈশ্বরের দিকে মুখ তুলে তাকাবার দুঃসাহস আছে? তুমি যদি এইভাবেই অনুভব করতে থাকো, তাহলে কি তুমি কিছু অর্জন করতে পারবে? প্রকৃত পথ তোমাকে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তা অর্জন করতে পারবে কিনা তা নির্ভর করে তোমার নিজের ব্যক্তিগত অন্বেষণের উপর। লোকে বলে যে ঈশ্বর একজন ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর, এবং যতক্ষণ মানুষ একেবারে শেষ পর্যন্ত তাঁকে অনুসরণ করবে, তিনি নিশ্চিতভাবেই মানুষের প্রতি পক্ষপাতশূন্য থাকবেন, কারণ তিনি সর্বাধিক ন্যায়পরায়ণ। মানুষ যদি একেবারে শেষ পর্যন্ত তাঁকে অনুসরণ করে, তাহলে তিনি কি মানুষকে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন? আমি সমস্ত মানুষের প্রতি পক্ষপাতশূন্য, এবং আমি আমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব দিয়েই সমস্ত মানুষকে বিচার করি, তবুও আমি মানুষের কাছে যেসকল দাবি করি তার জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি রয়েছে, এবং আমি যা চাই তা অবশ্যই সকল মানুষকে সম্পন্ন করতে হবে, সে তারা যেই হোক না কেন। তোমার যোগ্যতা কেমন, বা তুমি কতদিন ধরে সেগুলি ধারণ করে রেখেছ আমি তার পরোয়া করি না; আমি শুধু এইটুকুতেই গুরুত্ব দিই যে তুমি আমার পথে হাঁটছ কিনা এবং সত্যের প্রতি তোমার প্রেম ও তৃষ্ণা রয়েছে কিনা। যদি তোমার মধ্যে সত্যের অভাব ঘটে, এবং পরিবর্তে তুমি আমার নামে কলঙ্ক বহন করে আনো, এবং আমার পথ অনুসারে কাজ না করো, কোনরকম যত্ন বা উদ্বেগ ছাড়াই তা কেবল অনুসরণ করো, তাহলে সেই সময়ে আমি তোমাকে আঘাত করব এবং তোমার দুষ্টতার জন্য তোমাকে শাস্তি দেব, এবং তখন তোমার কী বলার থাকবে? তুমি কি বলতে পারবে যে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ নন? আজ, আমার কথিত বাক্যের সাথে যদি তুমি সঙ্গতি রেখে থাকো, তাহলে তুমি সেই ধরণের ব্যক্তি যাকে আমি অনুমোদন করি। তুমি বলো যে তুমি ঈশ্বরকে অনুসরণ করার সময় সর্বদা কষ্ট পেয়েছ, সব রকমের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তুমি তাঁকে অনুসরণ করেছ, এবং তাঁর সঙ্গে ভালো ও খারাপ সময় ভাগ করে নিয়েছ, কিন্তু তুমি ঈশ্বরের কথিত বাক্যগুলি জীবনে যাপন করোনি; তুমি শুধুমাত্র ঈশ্বরের জন্য ব্যস্তভাবে ছুটে চলতে চাও এবং প্রতিদিন ঈশ্বরের জন্য নিজেকে ব্যয় করতে চাও, অথচ তুমি একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করার কথা কখনও চিন্তা করোনি। তুমি আরও বলো, “যাই হোক না কেন, আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ। আমি তাঁর জন্য কষ্ট সহ্য করেছি, তাঁর জন্য অনেক কাজ করেছি, এবং তাঁর জন্য নিজেকে নিবেদন করেছি, এবং কোনো স্বীকৃতি না পাওয়া সত্ত্বেও আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি; তিনি নিশ্চিত আমাকে মনে রাখবেন।” এটা সত্য যে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ, কিন্তু এই ন্যায়পরায়ণতা কোনরকম অশুদ্ধতার দ্বারা কলঙ্কিত নয়: তার মধ্যে মানুষের কোন ইচ্ছা নেই, এবং তা দেহের দ্বারা অথবা মানুষের লেনদেনের দ্বারা কলঙ্কিত নয়। যারা বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন এবং বিরোধীপক্ষে আছে, যারা তাঁর পথের সাথে সঙ্গতি রাখে না, তারা সকলেই শাস্তি পাবে; কাউকেই ক্ষমা করা হবে না এবং কেউই রেহাই পাবে না! কেউ কেউ বলে, “আজ আমি আপনার জন্য ব্যস্তভাবে এতো কাজ করে চলেছি; যখন শেষ সময় আসবে, তখন আপনি কি আমাকে একটু আশীর্বাদ দিতে পারবেন?” তাহলে আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করছি, “তুমি কি আমার বাক্য পালন করেছ?” যে ন্যায়পরায়ণতার কথা তুমি বলো তা নিছক লেনদেনের উপর প্রতিষ্ঠিত। তুমি শুধু মনে করো যে আমি সমস্ত মানুষের প্রতি ন্যায়পরায়ণ ও পক্ষপাতশূন্য, এবং যারা আমাকে একেবারে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করে তারা নিশ্চিতভাবে উদ্ধার পাবে এবং আমার আশীর্বাদ লাভ করবে। আমার বাক্য “যারা একেবারে শেষ পর্যন্ত আমাকে অনুসরণ করে তারা নিশ্চিতভাবে উদ্ধার লাভ করবে” এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে: যারা আমাকে একেবারে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করে তারাই আমার দ্বারা সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হবে, এরাই সেই ব্যক্তি যারা আমার দ্বারা বিজিত হওয়ার পর সত্যের অন্বেষণ করে এবং নিখুঁত হয়ে ওঠে। কোন কোন শর্ত তুমি পূরণ করেছ? তোমার একমাত্র অর্জন হল একেবারে শেষ পর্যন্ত আমাকে অনুসরণ করা, কিন্তু এ ছাড়া আর কী? তুমি কি আমার বাক্য পালন করেছ? তুমি আমার পাঁচটি প্রয়োজনের একটি পূরণ করেছ, অথচ বাকি চারটি পূরণ করার কোন ইচ্ছাই তোমার নেই। তুমি সরলতম, সহজতম পথটি খুঁজে পেয়ে গেছ, এবং শুধু ভাগ্যবান হওয়ার আশা নিয়ে তা অনুসরণ করেছ। শাস্তি ও বিচারই তোমার মতো একজন ব্যক্তির প্রতি আমার ন্যায়পরায়ণ স্বভাব, এটিই ন্যায়সঙ্গত প্রতিশোধ, এবং এটিই সমস্ত অন্যায়কারীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত শাস্তি; যারা আমার পথে চলে না তারা নিশ্চিতভাবেই শাস্তি পাবে, এমনকি তারা একেবারে শেষ পর্যন্ত আমার অনুসরণ করলেও। এই হল ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা। যখন এই ন্যায়পরায়ণ স্বভাব মানুষের শাস্তির মধ্যে প্রকাশিত হয়, তখন মানুষ হতবাক হয়ে যায় এবং অনুশোচনা বোধ করে যে ঈশ্বরকে অনুসরণ করার সময় সে তাঁর পথে হাঁটেনি। “সেই সময় ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে গিয়ে আমি শুধু সামান্য কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু ঈশ্বরের পথে হাঁটিনি। কী অজুহাত আছে এর জন্য? শাস্তি পাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই!” অথচ মনে মনে সে ভাবছে, “যাই হোক, আমি একেবারে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করেছি, তাই আপনি আমাকে শাস্তি দিলেও সেটা খুব কঠিন কোন শাস্তি হতে পারে না, এবং এই শাস্তি প্রদানের পরেও আপনি আমাকে চাইবেন। আমি জানি আপনি ন্যায়পরায়ণ, এবং আপনি চিরকাল আমার সঙ্গে এমন আচরণ করবেন না। সর্বোপরি, আমি তাদের মত নই যারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে; যাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে তারা গুরুতর শাস্তি পাবে, আর আমার শাস্তি হবে লঘু।” তুমি যেমন বলো ন্যায়পরায়ণ স্বভাব মোটেই সেরকম নয়। এটা এমন নয় যে যারা তাদের পাপ স্বীকার করতে দক্ষ তাদের অপেক্ষাকৃত ক্ষমাশীলভাবে দেখা হয়। ন্যায়পরায়ণতা হল পবিত্রতা, এবং এমন একটি স্বভাব যা মানুষের অপরাধ সহ্য করে না, এবং যা কিছু কদর্য এবং যা পরিবর্তিত হয়নি সেসব হল ঈশ্বরের ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু। ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব কোনো বিধান নয়, বরং প্রশাসনিক ফরমান: তা হল রাজ্যের প্রশাসনিক ফরমান, এবং এই প্রশাসনিক ফরমান সেই প্রতিটি ব্যক্তির জন্য ন্যায়সঙ্গত শাস্তি যারা সত্যের অধিকারী নয় এবং পরিবর্তিত হয়নি, এবং পরিত্রাণের জন্য কোনো সীমানা নেই। কারণ যখন প্রতিটি মানুষকে প্রকার অনুযায়ী শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, তখন ভালোকে পুরস্কৃত করা হবে এবং মন্দকে শাস্তি দেওয়া হবে। এই সময়ই মানুষের গন্তব্য সুস্পষ্ট করা হবে; এই সময়ই পরিত্রাণের কাজ সমাপ্তিতে এসে পৌঁছবে, এর পরে, মানুষকে উদ্ধারের কাজ আর নির্বাহ করা হবে না, এবং যারা মন্দ কর্ম করে তাদের প্রত্যেকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল ভোগ করবে। কেউ কেউ বলে, “ঈশ্বর তাদের সকলকে স্মরণ করেন যারা প্রায়শই তাঁর পাশে থাকে। তিনি আমাদের কাউকে ভুলে যাবেন না। আমরা ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে ওঠার নিশ্চয়তা লাভ করেছি। তিনি নিম্নশ্রেণীর কাউকে মনে রাখবেন না, নিম্নশ্রেণীর লোকেদের মধ্যে যাদের নিখুঁত করে তোলা হবে তারা নিশ্চিতভাবে, আমরা যারা প্রায়শই ঈশ্বরের সম্মুখীন হই, তাদের চেয়ে ক্ষুদ্রতর; আমাদের মধ্যে কাউকেই ঈশ্বর বিস্মৃত হননি, আমরা সকলেই ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করেছি, এবং ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হওয়ার নিশ্চয়তা লাভ করেছি।” তোমাদের সকলেরই এরকম ধারণা রয়েছে। এটাই কি ন্যায়পরায়ণতা? তুমি কি সত্যকে বাস্তব অনুশীলনে প্রয়োগ করেছ? তুমি আসলে এরকম গুজব ছড়াও—তোমার কোন লজ্জা নেই!

আজ, কিছু কিছু মানুষ ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার সাধনা করে, কিন্তু বিজিত হওয়ার পরে তাদের সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। ঈশ্বর যখন মানুষকে ব্যবহার করেন, তখনও যদি তুমি আজকের কথিত বাক্যগুলি নিষ্পন্ন করতে অক্ষম হও, তাহলে তোমাকে নিখুঁত করা হয়নি। অন্য কথায়, মানুষকে যখন নিখুঁত করে তোলা হবে সেই সময়কালের সমাপ্তির আগমনই নির্ধারণ করবে মানুষকে বহিষ্কার করা হবে না কি সে ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত হবে। যারা বিজিত হয়েছে তারা শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয়তা এবং নেতিবাচকতার উদাহরণ; তারা নমুনা ও আদর্শ, কিন্তু একটি বৈপরীত্যদ্যোতক সংস্থান ছাড়া আর কিছুই নয়। শুধুমাত্র যখন মানুষের জীবন চরিত্র পরিবর্তিত হয়ে যাবে, এবং সে অন্তরে ও বাহিরে পরিবর্তনগুলি অর্জন করে ফেলবে, তখনই তাকে পুরোপুরিভাবে সম্পূর্ণ করে তোলা হবে। আজ, তুমি কী চাও: বিজিত হতে, নাকি নিখুঁত হয়ে উঠতে? কোনটি তুমি অর্জন করতে চাও? তুমি কি নিখুঁত হয়ে ওঠার শর্তগুলি পূরণ করেছ? কোন শর্তগুলি তোমার এখনও পূরণ করা হয়নি? কীভাবে তোমার নিজেকে প্রস্তুত করা উচিত, এবং কীভাবে তোমার ঘাটতিগুলি পূরণ করা উচিত? নিখুঁত হয়ে ওঠার পথে তোমার কীভাবে প্রবেশ করা উচিত? কীভাবে তুমি সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করবে? তুমি নিখুঁত হয়ে উঠতে চাও, কিন্ত তুমি কি পবিত্রতার সাধনা কর? তুমি কি এমন একজন যে শাস্তি ও বিচারের সম্মুখীন হতে চায় যাতে তুমি পরিশুদ্ধ হতে পারো? তুমি পরিষ্কৃত হওয়ার সাধনা করছ, কিন্তু তুমি কি শাস্তি ও বিচার স্বীকার করতে ইচ্ছুক? তুমি ঈশ্বরকে জানতে চাও, কিন্তু তাঁর শাস্তি ও বিচার সম্পর্কে কি তোমার জ্ঞান আছে? আজ, তোমার উপরে মুখ্যত তিনি শাস্তি ও বিচারের কার্য সম্পাদন করেন; তোমার উপরে সম্পন্ন এই কার্যের বিষয়ে তোমার ধারণা কী? তুমি যে শাস্তি ও বিচারের অভিজ্ঞতা লাভ করেছ তা কি তোমাকে পরিশুদ্ধ করেছে? তা কি তোমাকে পরিবর্তিত করেছে? তা কি তোমার উপর কোনো প্রভাব ফেলেছে? বর্তমানের এই যে এত কাজ—অভিশাপ, বিচার এবং উন্মোচন—এর ফলে তুমি কি পরিশ্রান্ত, নাকি তুমি মনে করো যে এগুলি তোমার জন্য খুবই উপযোগী? তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসো, কিন্তু তুমি তাঁকে কেন ভালবাসো? তুমি কি সামান্য অনুগ্রহ লাভ করেছ বলে ঈশ্বরকে ভালবাসো? নাকি শান্তি ও আনন্দ লাভ করেছ বলে তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসো? নাকি তুমি ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের দ্বারা পরিশুদ্ধ হয়েছ বলে তাঁকে ভালবাসো? ঠিক কোন বিষয়টি তোমায় ঈশ্বরকে ভালবাসতে প্ররোচিত করে? নিখুঁত হয়ে ওঠার জন্য পিতর কোন কোন শর্ত পূরণ করেছিল? তাকে নিখুঁত করে তোলার পর, কোন গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে তা প্রকাশিত হয়েছিল? সে কি প্রভু যীশুকে এই কারণে ভালবাসতো যে সে তাঁর জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতো, নাকি এই কারণে যে সে তাঁকে প্রত্যক্ষ করতে পারেনি, নাকি তাকে তিরস্কার করা হয়েছিল বলে? নাকি সে প্রভু যীশুকে আরও বেশি ভালবেসেছিল কারণ সে কঠোর যন্ত্রণাজনিত কষ্টকে মেনে নিয়েছিল, এবং নিজের কদর্যতা ও আনুগত্যহীনতা সম্পর্কে অবগত হয়েছিল, আর জানতে পেরেছিল প্রভুর পবিত্রতাকে? ঈশ্বরের প্রতি তার ভালবাসা কি ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের কারণেই শুদ্ধতর হয়ে উঠেছিল, নাকি এর অন্য কোনো কারণ ছিল? এর কোনটা? তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসো ঈশ্বরের অনুগ্রহের কারণে, এবং আজ তিনি তোমাকে সামান্য আশীর্বাদ দিয়েছেন বলে। এটাই কি সত্যিকারের ভালবাসা? তোমার কীভাবে ঈশ্বরকে ভালবাসা উচিত? তোমার কি তাঁর শাস্তি ও বিচার গ্রহণ করা উচিত, এবং, তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রত্যক্ষ করার পরে, তাঁকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসতে সক্ষম হওয়া উচিত, যাতে তুমি সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হও এবং তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করো? পিতরের মতো তুমিও কি বলতে পারো যে তুমি ঈশ্বরকে যথেষ্ট ভালবাসতে পারো না? শাস্তি ও বিচারের পর বিজিত হওয়া, নাকি শাস্তি ও বিচারের পর পরিশুদ্ধ, সুরক্ষিত হওয়া ও যত্ন লাভ করা, কীসের সাধনা তুমি করছ? এগুলির মধ্যে তুমি কোনটির অন্বেষণ করো? তোমার জীবন কি অর্থপূর্ণ, নাকি তা অর্থহীন ও মূল্যহীন? তুমি কি দেহের কামনা করো, নাকি তুমি সত্য চাও? তুমি কি বিচার চাও, নাকি স্বাচ্ছন্দ্য চাও? ঈশ্বরের কার্যের এত অভিজ্ঞতা লাভ করার পরে, এবং ঈশ্বরের পবিত্রতা ও ন্যায়পরায়ণতা অবলোকন করার পরে, তোমার কীভাবে অন্বেষণ করা উচিত? কীভাবে তোমার এই পথে চলা উচিত? কীভাবে তুমি তোমার এই ঈশ্বর-প্রেমকে বাস্তব অনুশীলনে পরিণত করবে? ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার কি তোমার মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলতে পেরেছে? ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান আছে কি না তা নির্ভর করে তুমি কীভাবে জীবনকে যাপন করো এবং তুমি ঈশ্বরকে কতটা ভালবাসো তার উপরে! তুমি মুখে বলো যে তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসো, অথচ তুমি জীবনে যা যাপন করো তা হল পুরাতন ও কলুষিত প্রকৃতি; তোমার কোনো ঈশ্বর-ভীতি নেই, এবং বিবেকবোধ আরোই কম। এই ধরনের মানুষেরা কি ঈশ্বরকে ভালোবাসে? এই ধরনের মানুষেরা কি ঈশ্বরের অনুগত? এরা কি সেই সকল মানুষ যারা ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার মেনে নেয়? তুমি বলো যে তুমি ঈশ্বরকে ভালবাসো এবং তাঁকে বিশ্বাস করো, তবুও তুমি তোমার পূর্বধারণাগুলি পরিত্যাগ করো না। তোমার কাজে, প্রবেশে, তোমার কথাবার্তায়, এবং তোমার জীবনে, তোমার ঈশ্বর-প্রেমের কোনো প্রকাশ নেই এবং ঈশ্বরের প্রতি কোনো সম্ভ্রমবোধ নেই। এ কি সেই ব্যক্তির পরিচয় যে শাস্তি ও বিচার লাভ করেছে? এইরকম কোনো মানুষ কি পিতর হতে পারে? যারা পিতরের মতো তাদের কি শুধু সেই জ্ঞান থাকে, কিন্তু সেই যাপন থাকে না? আজ, একটি প্রকৃত জীবন যাপন করার জন্য মানুষকে কী শর্ত পালন করতে হবে? পিতরের প্রার্থনাগুলি কি তার মুখনিঃসৃত কিছু বাক্য ছাড়া আর কিছুই ছিল না? সেগুলি কি তার হৃদয়ের গভীর থেকে নিঃসৃত বাক্য ছিল না? পিতর কি কেবল প্রার্থনাই করেছিল, সত্যকে বাস্তবে অনুশীলন করেনি? কার স্বার্থে তোমার এই সাধনা? ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচারের সময় তুমি সুরক্ষা ও শুদ্ধিকরণ গ্রহণ করার জন্য কীভাবে নিজেকে তৈরী করবে? ঈশ্বরের শাস্তি ও বিচার কি মানুষের কোনো উপকারেই আসে না? সকল বিচারই কি শাস্তি? এমন কি হতে পারে যে শুধুমাত্র শান্তি ও আনন্দ, শুধুমাত্র বস্তুগত আশীর্বাদ ও ক্ষণিকের স্বাচ্ছন্দ্যই মানুষের জীবনের পক্ষে উপযোগী? মানুষ যদি বিচারের জীবনকে বাদ দিয়ে একটি আনন্দদায়ক ও আরামদায়ক পরিবেশে জীবনযাপন করে, তাহলে কি তাকে পরিশুদ্ধ করা যাবে? মানুষ যদি পরিবর্তিত হতে এবং পরিশুদ্ধ হতে চায়, তাহলে নিখুঁত করে তোলাকে তার কেমনভাবে গ্রহণ করা উচিত? তোমার আজ কোন পথ বেছে নেওয়া উচিত?

পূর্ববর্তী: মোয়াবের উত্তরসূরিদের উদ্ধার করার তাৎপর্য

পরবর্তী: তোমরা অবশ্যই কার্যকে উপলব্ধি করবে – বিভ্রান্তির মধ্যে অনুসরণ কোরো না!

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন