অধ্যায় ৪৪ ও ৪৫

যবে থেকে ঈশ্বর মানুষকে “ঈশ্বরপ্রেম”-এর বিষয়ে অবগত করেছিলেন—সকল পাঠের মধ্যে যা নিগূঢ়তম—তবে থেকে তিনি “সপ্তআত্মার উচ্চারণসমূহ”-এর মাধ্যমে এই প্রসঙ্গে কথনের উপর মনোনিবেশ করেছেন, যার ফলে সকল মানুষ মনুষ্যজীবনের শূন্যগর্ভতাকে জানার চেষ্টা করেছে, এবং এইভাবে নিজেদের অভ্যন্তর থেকে প্রকৃত প্রেমকে তারা উৎখনিত করেছে। বর্তমান পর্যায়ে অবস্থানকারীদের মধ্যে কতখানি ঈশ্বর-প্রেম রয়েছে? তোমরা কি তা জানো? “ঈশ্বরকে ভালোবাসা”-র পাঠে কোনো সীমাপরিসীমা নেই। মনুষ্যজীবন সম্পর্কে সকল মানুষের কী প্রকারের উপলব্ধি রয়েছে? ঈশ্বরপ্রেমের প্রতি তাদের মনোভঙ্গি কেমন? তারা কি ইচ্ছুক, নাকি অনিচ্ছুক? তারা কি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণের অনুসরণ করে, নাকি দেহকে ঘৃণা করে? এই সকল বিষয়ে তোমাদের স্বচ্ছ ধারণা ও উপলব্ধি থাকা উচিত। মানুষের মধ্যে সত্যিই কি কিছুই নেই? “আমি চাই মানুষ প্রকৃত অর্থে আমায় ভালোবাসুক; যদিও এখনো মানুষ কালবিলম্ব করে, আমায় তাদের প্রকৃত ভালোবাসা প্রদানে অপারগ হয়। তাদের কল্পনায়, তারা বিশ্বাস করে যে আমায় প্রকৃত ভালোবাসা দিয়ে দিলে তাদের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।” এই বাক্যসমূহে, “প্রকৃত ভালোবাসা” বলতে সঠিক কী বোঝায়? এই যুগে, যখন “সকল মানুষ ঈশ্বরকে ভালোবাসে”, তখন ঈশ্বর এখনো মানুষের প্রকৃত প্রেমের যাচ্ঞা করেন কেন? এইভাবে, ঈশ্বরের অভিপ্রায় হল মানুষকে এক উত্তরপত্রের উপর প্রকৃত প্রেমের অর্থটি লিখতে বলা, সুতরাং সম্যক অর্থে এ হল ঈশ্বরের মানুষকে দেওয়া ঘরের কাজ। চলতি কার্যপর্যায়ে, ঈশ্বর যদিও মানুষের কাছে খুব বড়ো কোনো দাবি রাখেন না, তবু মানুষ এখনও তাদের কাছে ঈশ্বরের আদি চাহিদাগুলি অর্জন করে উঠতে পারেনি; অন্যভাবে বললে, এখনও তারা ঈশ্বর-প্রেমে তাদের সর্বশক্তি বিনিয়োগ করেনি। সেকারণেই, তাদের অনীহার মাঝে, ঈশ্বর এখনো মানুষের কাছে তাঁর চাহিদাগুলি জ্ঞাপন করেন, যতদিন না এই কার্য এক পরিণতি লাভ করে এবং এই কার্যের মাধ্যমে তিনি মহিমা অর্জন করেন। বস্তুত, ধরাধামের কার্যটি ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের দ্বারা নিষ্পন্ন হয়। এইভাবে, শুধুমাত্র তাঁর কার্য সমাপনের পরেই ঈশ্বর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্যটির প্রতি মানুষকে অঙ্গুলিনির্দেশ করেন। তাঁর কার্য সমাপনকালে মানুষকে যদি তিনি মৃত্যুদণ্ড দেন, তাহলে মানুষের কী হবে, ঈশ্বরের কী হবে, এবং শয়তানেরই বা কী হবে? ধরাধামের মানুষের প্রেম যখন প্রকাশলাভ করে, শুধুমাত্র তখনই বলা যায় যে “ঈশ্বর মানুষকে জয় করেছেন”। অন্যথায়, মানুষ বলতো যে ঈশ্বর তাদের নিগৃহিত করেন, এবং ঈশ্বর এভাবে কলঙ্কিত হতেন। ঈশ্বর এতোটা নির্বোধ হবেন না যে ন্যূনতম বাক্যব্যয় ব্যতিরেকেই তিনি তাঁর কার্যের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। সেকারণেই, কার্যটি যখন সমাপ্তিলগ্নে উপনীত হয়, তখন ঈশ্বরপ্রেমের এক আবেগতরঙ্গ জাগ্রত হয়, এবং ঈশ্বরপ্রেম এক সমসাময়িক উদ্দীপনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সন্দেহাতীতভাবে, এই ঈশ্বরপ্রেম মানুষের দ্বারা কলুষিত নয়; এ হল এক অবিমিশ্র ভালোবাসা, পতির প্রতি বিশ্বস্ত পত্নীর প্রেমের মতন, কিংবা পিতরের ভালোবাসার ন্যায়। ঈশ্বর ইয়োব বা পৌলের ভালোবাসা চান না, তিনি চান যিহোবার প্রতি যীশুর প্রেম, পিতা ও পুত্রের মধ্যে ভালোবাসা: “ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র পিতার অনুধ্যান, একমাত্র পিতাকে ভালোবাসা, আর কাউকে নয়, এবং অন্য কোনোকিছুর কামনা না করা”। মানুষ কি এমনতরো ভালোবাসায় সক্ষম?

তোমাদের যদি আমরা যীশুর কার্যের সাথে তুলনা করি, যে যীশু পূর্ণত মানবতার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না, তাহলে তোমাদের কী মনে হয়? যীশু যা করেছিলেন তোমরা কি তা-র এক-দশমাংশও অর্জন করতে সক্ষম? তোমরা কি ঈশ্বরের নিমিত্ত ক্রুশে যাওয়ার যোগ্য? তোমাদের ঈশ্বর-প্রেম কি শয়তানকে লজ্জিত করতে সক্ষম? এবং তোমাদের মানব-প্রেম কতখানি বিতাড়িত হয়েছে? তা কি ঈশ্বর-প্রেমের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে? ঈশ্বর-প্রেমের নিমিত্ত তোমরা কি প্রকৃতই সমস্তকিছু সহ্য করো? এক মুহূর্তের জন্য গতায়ুকালের পিতরের কথা চিন্তা করো, অতঃপর সাম্প্রতিককালের নিজেদের দিকে তাকাও—যথার্থই এক দুস্তর পার্থক্য রয়েছে; তোমরা ঈশ্বরের সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়ার অনুপযুক্ত। তোমাদের মধ্যে কি ঈশ্বরের প্রতি অধিক প্রেম রয়েছে, নাকি শয়তানের প্রতি? এদের কোনটি গরিষ্ঠ—তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের প্রতি ঠিক কতখানি প্রেম রয়েছে—তা জানার জন্য এদুটিকে পর্যায়ক্রমে তুলাযন্ত্রের বাম ও ডানদিকের পাত্রে স্থাপন করা উচিত। তোমরা কি ঈশ্বরের সম্মুখে মৃত্যুবরণ করার যোগ্য? ধরিত্রীবক্ষে তাঁর অভিজ্ঞতা শয়তানকে কলঙ্কিত করার পক্ষে পর্যাপ্ত ছিল বলেই যীশু ক্রুশকাষ্ঠে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, এবং একমাত্র এই কারণেই পিতা ঈশ্বর তাঁকে নির্ভীকচিত্তে সেই পর্যায়ের কার্যটি সম্পূর্ণ করার অনুমতি দিয়েছিলেন; তাঁর যন্ত্রণাভোগ ও ঈশ্বরপ্রেমই ছিল সেই কারণ। কিন্তু তোমরা ততখানি যোগ্যতাসম্পন্ন নও। সেকারণেই, তোমাদের অভিজ্ঞতালাভ অব্যাহত রাখতে হবে, ঈশ্বরকে নিজ হৃদয়ে ধারণের ক্ষমতা অর্জন করতে হবে, এতদ্ভিন্ন আর কিছুই নয়—তোমরা কি তা সম্পন্ন করতে সক্ষম? এই থেকেই প্রতিপন্ন হবে যে ঈশ্বরকে তুমি কতখানি ঘৃণা করো, এবং কতখানি ভালোবাসো। এমন নয় যে ঈশ্বর মানুষের প্রতি খুব বেশি চাহিদাসম্পন্ন, মানুষই বরং কঠোর পরিশ্রমে বিমুখ। এ-ই কি পরিস্থিতির বাস্তবিকতা নয়? নচেৎ, ঈশ্বরের মধ্যে কতখানি প্রীতিপ্রদ বস্তু তুমি আবিষ্কার করতে, এবং নিজের মাঝেই বা কতখানি ঘৃণার্হ বস্তু খুঁজে পেতে? এই বিষয়গুলির উপর তোমাদের গভীর বিবেচনা প্রয়োগ করা উচিত। এমন উক্তি ন্যায্য হবে যে অন্তরীক্ষের নিচে অতি অল্প মানুষই ঈশ্বরকে ভালোবাসে—কিন্তু তুমি কি বিশ্বরেকর্ড ভেঙে ও ঈশ্বরকে ভালোবেসে এক পথিকৃৎ হয়ে উঠতে পারো না? ঈশ্বর মানুষের থেকে কিছুই চান না। এর দরুন মানুষ কি তাঁকে কিছুটা সম্মান দিতে পারে না? তোমরা কি এটুকুও অর্জনে অক্ষম? তাহলে আর কী-ই বা বলার থাকতে পারে?

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৪২

পরবর্তী: অধ্যায় ৪৬

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন