অধ্যায় ২৪ এবং ২৫
পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পাঠ না করলে, এই দুই দিনের উচ্চারণসমূহ থেকে কিছুই নিরূপণ করা অসম্ভব; বস্তুত, এগুলি একদিনেই আলোচনা করা উচিত ছিল, কিন্তু ঈশ্বর তা দুটি দিনে বণ্টিত করেছিলেন। অর্থাৎ, বলা যায় যে, এই দুই দিনের উচ্চারণ মিলে এক অখণ্ড সমগ্র নির্মিত হয়, কিন্তু মানুষের পক্ষে গ্রহণের সুবিধার জন্য, ঈশ্বর এগুলি দুটি দিনে বিভক্ত করেছেন, যাতে মানুষ নিঃশ্বাস ফেলার একটা সুযোগ পায়। মানুষের জন্য ঈশ্বরের এমনই সুবিবেচনা। ঈশ্বরের সকল কার্যে, সকল মানুষ তাদের নিজ নিজ স্থানে তাদের কাজকর্ম ও তাদের দায়িত্ব নির্বাহ করে। শুধু যে দেবদূতসুলভ আত্মার অধিকারী মানুষই সহযোগিতা করে তা নয়, যারা দানবসুলভ আত্মার অধিকারী তারাও “সহযোগিতা করে”, সকল শয়তানের আত্মাও তা-ই করে। ঈশ্বরের উচ্চারণগুলির মধ্যে ঈশ্বরের ইচ্ছা ও মানুষের কাছে তাঁর চাহিদা ব্যক্ত হয়। “আমার শাস্তি এসে সকল মানুষের উপর আপতিত হয়, তবু সকল মানুষের থেকে তা দূরবর্তী রয়ে যায়। প্রতিটি মানুষের সমগ্র জীবন আমার প্রতি প্রেম ও ঘৃণায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে” বাক্যগুলি প্রতিপন্ন করে যে, সকল মানুষকে ভীতিপ্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ঈশ্বর শাস্তি ব্যবহার করেন, এর ফলে মানুষ তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। শয়তানের কলুষতা ও দেবদূতদের ভঙ্গুরতার কারণে, মানুষকে শাস্তিদানের উদ্দেশ্যে ঈশ্বর শুধু তাঁর বাক্যগুলিকেই কাজে লাগান, প্রশাসনিক ফরমানসমূহকে নয়। সৃষ্টির সময় থেকে আজ অবধি, দেবদূতগণ ও সকল মানুষ সংক্রান্ত বিষয়ে ঈশ্বরের কার্যের নীতি এই-ই হয়ে এসেছে। দেবদূতগণ ঐশ্বরিক বলে, নিশ্চিতভাবেই একদিন তারা ঈশ্বরের রাজ্যের লোক হয়ে উঠবে, এবং ঈশ্বর তাদের যত্ন নেবেন ও সুরক্ষা যোগাবেন। অন্যদিকে, বাকিরাও প্রকারভেদ অনুযায়ী শ্রেণীবিভক্ত হবে। শয়তানের সকল বিবিধ প্রকারের অশুভ আত্মা শাস্তিপ্রাপ্ত হবে, এবং যারা আত্মা-বিরহিত তারা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান ও লোকজনের দ্বারা শাসিত হবে। ঈশ্বরের এমনই পরিকল্পনা। তাই, একদা ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমার দিবসের আবির্ভাব কি সত্যিই মানুষের মৃত্যুর ক্ষণ? যে সময় আমার রাজ্য আকার পরিগ্রহ করবে, তখন কি সত্যিই আমি মানুষকে ধ্বংস করতে পারি?” এগুলি যদিও দুটি সহজসরল প্রশ্ন, এগুলি হল সমগ্র মানবজাতির গন্তব্যের ঈশ্বর-নির্ধারিত বন্দোবস্ত। ঈশ্বর যখন আবির্ভূত হন, ঠিক সেই সময়েই “বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে মানুষকে উল্টো করে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়।” সকল মানুষের সম্মুখে ঈশ্বরের আবির্ভূত হওয়ার এটাই উদ্দেশ্য, শাস্তির সাহায্যে তাদের ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিষয়ে অবহিত করা। যেহেতু যে সময় ঈশ্বর পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন তা অন্তিম কাল, যে সময় পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলি অশান্তিতে সবচেয়ে উত্তাল, তাই ঈশ্বর বলেন, “যখন আমি পৃথিবীতে অবতরণ করি, পৃথিবী তখন অন্ধকারের আচ্ছাদনে আবৃত, এবং মানুষ ‘গভীর নিদ্রায় মগ্ন।’” বস্তুত, ঈশ্বরের অবতারকে জানতে সক্ষম, এমন মানুষ আজ কেবল মুষ্টিমেয় কয়েকজনই রয়েছে, কেউ নেই বললেই চলে। যেহেতু এখনই সেই অন্তিম যুগ, তাই কেউই কখনো প্রকৃত অর্থে বাস্তববাদী ঈশ্বরকে জানেনি, এবং ঈশ্বর সম্বন্ধে মানুষের শুধু এক উপরিগত জ্ঞানই রয়েছে। এই কারণেই মানুষ যন্ত্রণাদায়ক পরিমার্জনের মাঝে জীবন যাপন করে। মানুষ যখন পরিমার্জন থেকে নির্গত হয়, অর্থাৎ যখন তাদের শাস্তিদান শুরু হয়, সেই সময়েই ঈশ্বর সকল মানুষের সম্মুখে আবির্ভূত হন, যাতে স্বচক্ষে তারা তাঁকে দর্শন করতে পারে। ঈশ্বরের অবতারের কারণে, মানুষ দুর্বিপাকে পতিত হয় এবং সেখান থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে না—এ-ই হল অতিকায় লাল ড্রাগনের ঈশ্বর-প্রদত্ত শাস্তি, এবং এ-ই হল তাঁর প্রশাসনিক ফরমান। যখন বসন্তের উত্তাপের আগমন ঘটবে এবং পুষ্পসকল প্রস্ফুটিত হবে, যখন স্বর্গসমূহের নিচে সমস্তকিছু শ্যামলিমায় ঢাকা পড়বে এবং পৃথিবীবক্ষে সকলকিছু যথাবিহিত অবস্থানে স্থিত হবে, তখন সকল মানুষ ও বস্তু ক্রমশ ঈশ্বরের শাস্তির মধ্যে প্রবেশ করবে, এবং সেই ক্ষণেই পৃথিবীতে ঈশ্বরের সমুদয় কার্য সমাপ্ত হবে। ঈশ্বর আর পৃথিবীতে কার্য সম্পাদন বা বসবাস করবেন না, কারণ তখন ঈশ্বরের মহান কার্য নিষ্পন্ন হয়ে যাবে। এই সামান্য ক্ষণের জন্য মানুষ কি তাদের দৈহিক ইচ্ছাকে একপাশে সরিয়ে রাখতে অক্ষম? কোন বস্তু মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে ভালোবাসাকে বিদীর্ণ করতে পারে? মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে প্রেমকে বিখণ্ডিত করার ক্ষমতা কার আছে? পিতামাতা, স্বামী, ভগিনী, স্ত্রী, নাকি বেদনাদায়ক পরিমার্জন—সে ক্ষমতা কার আছে? বিবেকবোধের অনুভূতিগুলি কি মানুষের অভ্যন্তর থেকে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিকে মুছে ফেলতে পারে? মানুষের পারস্পরিক ঋণবদ্ধতা ও ক্রিয়াকলাপ কি তাদের নিজেদের নির্ধারিত কর্মফল? মানুষ কি এগুলির প্রতিকার করতে পারে? কে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম? মানুষ কি নিজেদের সংস্থান জোগাড় করে নিতে সক্ষম? জীবনে শক্তিমান কারা? আমায় পরিত্যাগ করে কে নিজে নিজে জীবনধারণে সক্ষম? কেন বারংবার ঈশ্বর সকল মানুষকে আত্ম-নিরীক্ষণের কাজ সম্পন্ন করতে বলেন? কেন ঈশ্বর বলেন, “কার-ই বা কষ্টভোগ তার স্বহস্তে আয়োজিত হয়েছে?”
বর্তমানে, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত্রি, এবং মানুষ সাড়শূন্য ও মূঢ়মতি, কিন্তু ঘড়ির কাঁটা সর্বদা সামনের দিকে এগিয়ে যায়, পল-অনুপলগুলি স্থগিত হয় না, এবং পৃথিবী, সূর্য ও চন্দ্রের পরিক্রমণ দ্রুততর হয়। তাদের অনুভবে, মানুষ বিশ্বাস করে যে সেই দিনটি বেশি দূরে নয়; মনে হয় বুঝি তাদের অন্তিম দিবস তাদের সমক্ষেই রয়েছে। অবিরাম মানুষ নিজেদের মৃত্যুকালের জন্য সকলকিছু প্রস্তুত করে, যাতে তাদের মৃত্যুতে তা কোনো উদ্দেশ্যসাধন করতে পারে; নচেৎ তারা বৃথাই জীবনধারণ করেছে। তা কি অনুতাপের বিষয় হবে না? ঈশ্বর যখন পৃথিবীকে বিধ্বস্ত করেন, তখন তিনি রাষ্ট্রসমূহের অভ্যন্তরীন বিষয়াদির পরিবর্তন দিয়ে শুরু করেন, যা থেকে সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়; এইভাবে, ঈশ্বর সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে মানুষের সেবাকর্মের সমাবেশ ঘটান। যে ভূখণ্ডে অতিকায় লাল ড্রাগন কুণ্ডলিত হয়ে শায়িত থাকে, সেটিই হল প্রদর্শন এলাকা। কারণ, আভ্যন্তরীনভাবে, তা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, এর ঘরোয়া বিষয়সমূহ বিশৃঙ্খলায় পর্যবসিত হয়েছে, প্রত্যেকেই আত্মরক্ষার কাজে নিয়োজিত হয়, চাঁদে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়—কিন্তু ঈশ্বরের রাজত্বের অধীন অঞ্চল থেকে তারা কীভাবে পালাতে পারতো? ঈশ্বর ঠিক যেমন বলেছিলেন যে, মানুষ “তাদের নিজস্ব তিক্ত পেয়ালা থেকে পান করবে”। সম্যকভাবে এই আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের সময়েই ঈশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন; অতিকার লাল ড্রাগনের দেশে ঈশ্বর আর থাকবেন না, এবং অবিলম্বে পৃথিবীর বুকে তাঁর কার্য সমাপ্ত করবেন। বলা যেতে পারে, সময় দ্রুত অতিবাহিত হয়, এবং খুব বেশি সময় আর অবশিষ্ট নেই। ঈশ্বরের বাক্যের স্বরভঙ্গি থেকে বোঝা যায়, ঈশ্বর ইতিমধ্যেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে সকলের গন্তব্য ব্যক্ত করেছেন, এবং বাদবাকি সময়টুকুর জন্য তাঁর আর কিছু বলার নেই। মানুষের কাছে ঈশ্বর এটিই প্রকাশ করেন। তাঁর মানব সৃজনের লক্ষ্যের কারণেই ঈশ্বর বলেন, “আমার দৃষ্টিতে, মানুষ সকল কিছুর শাসনকর্তা। তাকে নেহাৎ স্বল্প কর্তৃত্ব আমি দিইনি, তাকে আমি ধরাতলের সকল কিছুকে—পর্বতোপরি তৃণগুল্মাদি, অরণ্যমাঝে প্রাণীসকল, এবং বারিমাঝে মৎস্যকুলকে—পরিচালনা করার অনুমোদন দিয়েছি।” ঈশ্বর যখন মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন, তখনই তিনি পূর্বনির্ধারিত করেছিলেন যে মানুষ সকল কিছুর উপর প্রভুত্ব করবে—তবু মানুষ শয়তানের দ্বারা কলুষিত হয়েছিল, আর তাই সে তার আকাঙ্ক্ষা মতো জীবন যাপন করতে পারে না। এর ফলে পৃথিবী আজকের দশায় এসে উপনীত হয়েছে, যেখানে মানুষ জন্তুর থেকে স্বতন্ত্র কিছু নয়, এবং পর্বত এসে নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে, পরিণতি হিসাবে, “মানুষের সমগ্র জীবন নিদারুণ যন্ত্রণাক্লীষ্ট ও অনির্দিষ্ট ধাবমানতায় পরিকীর্ণ, রিক্ততা-সহ সংযোজিত কৌতুকে পূর্ণ।” যেহেতু মানবজীবন অর্থহীন, এবং যেহেতু তা ঈশ্বরের মানবসৃজনের লক্ষ্য ছিল না, সেহেতু সমগ্র জগৎ অশান্ত হয়ে উঠেছে। ঈশ্বর যখন সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে শৃঙ্খলায় স্থাপন করবেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তখন থেকে সকল মানুষের মানবীয় জীবনের অভিজ্ঞতালাভের সূচনা ঘটবে, এবং কেবল তখনই তাদের জীবন অর্থময় হয়ে উঠতে শুরু করবে। ঈশ্বর তাদের যে কর্তৃত্ব দিয়েছেন মানুষ তা ব্যবহার করতে শুরু করবে, এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তারা সকল বস্তুর সামনে সেগুলির প্রভু হয়ে দেখা দেবে; পৃথিবীবক্ষে ঈশ্বরের নির্দেশনা তারা স্বীকার করে নেবে, এবং আর কখনো ঈশ্বরকে অমান্য করবে না, বরং মান্য করবে। কিন্তু, আজকের মানুষ এই অবস্থার থেকে অনেক দূরে রয়েছে। ঈশ্বরের মাধ্যমে “পকেট ভরানো” ভিন্ন অন্য কিছু তারা করে না, আর তাই ঈশ্বর তাদের উদ্দেশ্যে এক প্রশ্নমালা নিক্ষেপ করেছেন, যেমন “মানুষের উপর যে কার্য আমি সম্পন্ন করি, তা কি তার জন্য কল্যাণকর নয়?” ঈশ্বর এই প্রশ্নগুলি জিজ্ঞেস না করলে কিছুই হতো না, কিন্তু যখন তিনি এধরনের প্রশ্ন করেন, তখন কিছু মানুষ তাদের অবস্থানে অটল থাকতে পারে না, কারণ বিবেকের দিক দিয়ে তারা ঋণগ্রস্ত, এবং তারা বিশুদ্ধরূপে ঈশ্বরের নিমিত্ত নয়, বরং আত্মস্বার্থে নিয়োজিত। সকলকিছুই পূর্ণত সারবস্তুবিবর্জিত; তাই, এই মানুষগুলি এবং “প্রত্যেক ধর্মের, সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রের, প্রত্যেক রাষ্ট্রের, এবং প্রত্যেক গোষ্ঠীর সকল মানুষ পৃথিবীবক্ষের রিক্ততা বিষয়ে অবহিত, এবং তারা সকলেই আমার সন্ধান করে ও আমার প্রত্যাবর্তনের জন্য অপেক্ষা করে।” সকল মানুষ ব্যাকুল হয়ে ঈশ্বরের প্রত্যাবর্তন কামনা করে, যাতে তিনি শূন্যগর্ভ পুরাতন যুগের অবসান ঘটান, কিন্তু দুর্যোগের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় তারা ভীতও বটে। সমগ্র ধর্মীয় জগৎ তৎক্ষণাৎ জনশূন্য ও সকলের অবহেলার সামগ্রী হয়ে পড়বে; তাদের বাস্তবতাবোধ নেই, এবং তারা উপলব্ধি করবে যে তাদের ঈশ্বর-বিশ্বাস অস্পষ্ট ও বিমূর্ত। সমাজের প্রত্যেক পরিমণ্ডলের মানুষও ছত্রভঙ্গ হয়ে যাবে, এবং প্রতিটি রাষ্ট্র ও গোষ্ঠীর মধ্যে উথালপাথাল শুরু হবে। এক কথায়, সবকিছুর নিয়মানুবর্তিতা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে, সকলেই তাদের স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলবে, আর তাই, মানুষও তাদের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ করবে। সেকারণেই, ঈশ্বর বলেন, “বহুবার উচ্চৈঃস্বরে আমি মানুষের উদ্দেশ্যে চিৎকার করেছি, তবু কেউ কি কখনো করুণা অনুভব করেছে? কেউ কি কখনো মানবতার মাঝে জীবন যাপন করেছে? মানুষ দেহের মধ্যে বাস করতে পারে, কিন্তু তার মানবতা নেই। তার কি প্রাণীজগতে জন্ম হয়েছিল?” মানুষের মধ্যেও পরিবর্তন ঘটছে, এবং এই পরিবর্তনের কারণে, প্রত্যেকে তার প্রকার অনুসারে শ্রেণীবিভক্ত হয়। এ হল অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কার্য, এবং এ হল অন্তিম সময়ের কার্যের অর্জিতব্য ফলাফল। মানুষের উপাদান বিষয়ে ঈশ্বর সুস্পষ্টতররূপে আলোচনা করেন, এবং এতে প্রমাণিত হয় যে, তাঁর কার্যের অন্তিমলগ্ন ঘনিয়ে আসছে, উপরন্তু প্রমাণিত হয় যে ঈশ্বর মানুষের কাছে প্রচ্ছন্নতর, যে উপলব্ধির ফলে তারা আরো বিহ্বল বোধ করে। ঈশ্বরের ইচ্ছাকে মানুষ যত কম লক্ষ্য করে, ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কার্যের প্রতি তারা তত কম মনোযোগ দেয়; এর ফলে, তারা আর বিঘ্নসৃষ্টি করে না, এবং ফলত, যখন কেউ মনোযোগ দিচ্ছে না, তখন ঈশ্বর তাঁর অভিপ্রায় অনুযায়ী কার্য সম্পন্ন করেন। এ হল যুগযুগান্ত ধরে ঈশ্বরের কার্যের এক নীতি। মানুষের দুর্বলতাগুলির প্রতি তিনি যত কম সহানুভূতি প্রদর্শন করেন, তাতে ঈশ্বরের দেবত্ব আরো দৃষ্টিগ্রাহ্যভাবে প্রতীয়মান হয়ে ওঠে, এবং সেহেতু, ঈশ্বরের দিবস ক্রমে ঘনিয়ে আসে।