জয় করার কার্যের দ্বিতীয় ধাপের প্রভাবসমূহ কীভাবে অর্জিত হয়

সেবা-প্রদানকারীদের কাজ ছিল জয় করার কার্যের প্রথম ধাপ। আজ জয় করার কার্যের দ্বিতীয় ধাপ। জয় করার কার্যে নিখুঁত হওয়ার কথাও উল্লেখ করা আছে কেন? এর কারণ হ’ল ভবিষ্যতের জন্য একটি ভিত্তি তৈরি করা। আজ হ’ল জয় করার কার্যের চূড়ান্ত ধাপ; এর পরে আসবে কঠোর যন্ত্রণার সম্মুখীন হওয়ার সময়, যা মানবজাতিকে নিখুঁত করার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবে। এখন মূল বিষয় হ’ল বিজয়, কিন্তু এখন নিখুঁত করে তোলার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপেরও সময়। এই প্রথম পদক্ষেপটি মানুষের জ্ঞান এবং আনুগত্যকে নিখুঁত করে তোলে, যা সেই সাথে জয় করার কার্যের ভিত্তি তৈরি করে। যদি তোমাকে নিখুঁত হয়ে উঠতে হয়, তাহলে তোমাকে ভবিষ্যতের কঠিন যন্ত্রণার মধ্যেও দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে এবং কার্যের পরবর্তী ধাপ প্রসারিত করতে তোমার সমস্ত কিছু দিয়ে দিতে সক্ষম হতে হবে; নিখুঁত হওয়ার অর্থ এটাই, এবং এটি এমন একটি সময়ও যখন মানুষ সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হয়। আজ আমরা বিজিত হওয়ার বিষয়ে কথা বলছি, যা নিখুঁত হয়ে ওঠার বিষয়ে কথা বলার মতোই। কিন্তু আজ যে কার্য করা হয় তা হ’ল ভবিষ্যতে নিখুঁত হওয়ার ভিত্তি; নিখুঁত হওয়ার জন্য, মানুষকে অবশ্যই প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হবে, এবং প্রতিকূলতার এই অভিজ্ঞতার ভিত হতে হবে অবশ্যই বিজিত হওয়ার মধ্যে। মানুষের যদি আজকের ভিত না থাকে—যদি তারা পুরোপুরি বিজিত না হয়—তাহলে কাজের পরবর্তী ধাপ চলাকালীন তাদের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া কঠিন হবে। শুধু বিজিত হওয়াই চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। এটি শয়তানের সামনে ঈশ্বরের জন্য সাক্ষ্যপ্রদানের একটা ধাপ মাত্র। নিখুঁত হয়ে ওঠাই চূড়ান্ত লক্ষ্য, এবং যদি তোমাকে নিখুঁত না করে তোলা হয়, তাহলে তোমাকেও বাতিল করা হতে পারে। ভবিষ্যতে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলেই তোমার প্রকৃত আধ্যাত্মিক উচ্চতা দেখা যাবে; আরো স্পষ্ট করে বলা যায়, শুধুমাত্র তখনই ঈশ্বরের প্রতি তোমার ভালোবাসার বিশুদ্ধতার মাত্রা প্রতীয়মান হবে। আজকে মানুষ যা বলে তা হল: “আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরকে মান্য করতে হবে সে তিনি যাই করুন না কেন। তাই আমরা তুলনীয় হতে ইচ্ছুক, যাতে আমাদের তুলনায় ঈশ্বরের মহান শক্তি এবং ঈশ্বরের স্বভাব প্রদর্শিত হতে পারে। ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় থাকুন বা আমাদের অভিশাপ দিন, কিংবা তিনি আমাদের বিচারই করুন না কেন, আমরা তবুও ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।” তুমি যে এই কথাটি বলছ তা থেকে কেবল এটাই দেখা যায় যে তোমার সামান্য পরিমাণ জ্ঞান রয়েছে, তবে এই জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করা যেতে পারে কিনা তা নির্ভর করে এই জ্ঞান বাস্তব কিনা তার উপর। মানুষের যে আজ এমন অন্তর্দৃষ্টি ও জ্ঞান তা হ’ল জয় করার কাজের প্রভাব। তোমাকে নিখুঁত করে তোলা যায় কি না তা কেবল দেখা যায় প্রতিকূলতার মুখেই, এবং সেই সময়েই দেখা যাবে যে তুমি মন থেকে সত্যিই ঈশ্বরকে ভালোবাস কিনা। যদি তোমার ভালবাসা সত্যিই খাঁটি হয়, তাহলে তুমি বলবে: “আমাদের তুলনায় ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করাই আমাদের কাজ, আমরা ঈশ্বরের হাতে নিয়ন্ত্রিত প্রাণী।” তুমি যখন অইহুদি জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করবে, তখন তুমি বলবে, “আমি শুধুমাত্র সেবা করছি। আমাদের ভিতরের কলুষিত স্বভাব ব্যবহার করে, ঈশ্বর তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব আমাদের দেখানোর জন্য এই সব কথা বলেছেন; তিনি যদি এই ধরনের কথা না বলতেন, তাহলে আমরা ঈশ্বরকে দেখতে পেতাম না, বা তাঁর প্রজ্ঞা উপলব্ধি করতে পারতাম না, বা এই মহান পরিত্রাণ এবং এত বড় আশীর্বাদও লাভ করতাম না।” যদি তোমার সত্যিকারের এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থাকে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। যাইহোক, তুমি আজ যা বলছ তার বেশিরভাগই কোনও জ্ঞান ধারণ করে না এবং সবই ফাঁপা বুলি মাত্র: “আমরা আমাদের তুলনায় ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করি, এবং আমরা সেবা-প্রদানকারী; আমরা বিজিত হতে চাই, এবং ঈশ্বরের জোরালো সাক্ষ্য বহন করতে চাই...” শুধু চিৎকার করার অর্থ এই নয় যে তোমার বাস্তবতা আছে, বা এটি প্রমাণ করে না যে তুমি আধ্যাত্মিক উচ্চতার অধিকারী; তোমার অবশ্যই প্রকৃত জ্ঞান থাকতে হবে এবং তোমার জ্ঞান অবশ্যই পরীক্ষিত হবে।

এই সময়ের মধ্যে ঈশ্বর যে কথনসমূহ প্রকাশ করেছেন তা তোমার আরও বেশি করে পাঠ করা উচিত, এবং তার তুলনায় নিজের কাজগুলি দেখা উচিত: এটা অবশ্যই সত্য যে তুমি ভাল এবং ঈশ্বর সত্যই তোমার বিপরীতে মহিমান্বিত হন! আজ তোমার জ্ঞানের ব্যাপ্তি কতটা? তোমার ধারণা, তোমার চিন্তা, তোমার আচরণ, তোমার কথা এবং কাজ—এই সমস্ত অভিব্যক্তি কি ঈশ্বরের ন্যয়পরায়ণতা এবং পবিত্রতার তুলনায় নিতান্তই তুচ্ছ নয়? তোমাদের অভিব্যক্তিগুলি কি ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা প্রকাশিত কলুষিত স্বভাবেরই প্রকাশ নয়? তোমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণা, তোমার প্রেরণা, এবং তোমার মধ্যে প্রকাশিত ভ্রষ্টতা ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব এবং সেইসাথে তাঁর পবিত্রতাকে দর্শায়। ঈশ্বরও মলিনতাপূর্ণ ভূমিতে জন্ম নিয়েছিলেন, তবুও তিনি মালিন্যের থেকে শুদ্ধ থাকেন। তিনি তোমার মতো ঐ একই মলিনতাপূর্ণ জগতে বাস করেন, কিন্তু তিনি যুক্তি ও উপলব্ধির অধিকারী এবং তিনি মালিন্যকে ঘৃণা করেন। তুমি এমনকি নিজের কথা এবং কাজে ঘৃণ্য কিছু সনাক্ত করতেও সক্ষম হবে না, কিন্তু তিনি পারেন, এবং তিনি সেগুলি তোমাকে দেখিয়ে দেন। তোমার পুরানো জিনিসগুলি—তোমার উন্নতিসাধন, অন্তর্দৃষ্টি, এবং বোধের অভাব এবং তোমার জীবনযাত্রার পশ্চাদগামী উপায়গুলি—এখন আজকের প্রকাশ দ্বারা আলোতে নিয়ে আসা হয়েছে; শুধুমাত্র ঈশ্বরের পৃথিবীতে এসে এইভাবে কর্ম সম্পাদন করার মাধ্যমে মানুষ তাঁর পবিত্রতা ও ন্যয়পরায়ণ স্বভাব দেখতে পায়। তিনি তোমার বিচার করেন এবং তোমাকে শাস্তি দেন, যার ফলে তুমি বোধশক্তি অর্জন কর; কখনও কখনও, তোমার পৈশাচিক প্রকৃতি প্রকাশিত হয়, এবং তিনি তা তোমাকে দেখিয়ে দেন। তিনি মানুষের সারসত্যকে তাঁর হাতের তালুর মতো জানেন। তিনি তোমাদের মধ্যে থাকেন, তিনি তোমার মতো একই খাদ্য গ্রহণ করেন এবং তিনি একই পরিবেশে বসবাস করেন—কিন্তু তা স্বত্বেও, তিনি আরও বেশি জানেন; তিনি তোমাকে অনাবৃত করতে পারেন এবং মানবতার কলুষিত সারসত্যের স্বরূপ অনুধাবন করতে পারেন। তিনি সর্বাধিক ঘৃণা করেন জীবনধারণের জন্য মানুষের দর্শন, আর কুটিলতা এবং প্রতারণাকে। তিনি বিশেষ করে ঘৃণা করেন মানুষের দৈহিক আদানপ্রদানকে। তিনি মানুষের জীবনযাপনের দর্শনের সঙ্গে পরিচিত নাও হতে পারেন, কিন্তু মানুষ যে কলুষিত স্বভাব প্রকাশ করে তা তিনি স্পষ্টভাবে দেখতে এবং সেটি অনাবৃত করতে পারেন। তিনি এই জিনিসগুলির মাধ্যমে কথা বলার এবং মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কর্ম করেন, তিনি এই জিনিসগুলি ব্যবহার করেন মানুষের বিচার করতে এবং তাঁর নিজের ন্যয়পরায়ণ ও পবিত্র স্বভাব প্রকাশ করতে। এইভাবে মানুষ তাঁর কাজের সাথে তুলনীয় এক বস্তু হয়ে ওঠে যা তাঁর কাজকে মহিমান্বিত করে। একমাত্র ঈশ্বরের অবতারই মানুষের কলুষিত স্বভাব এবং শয়তানের সমস্ত কুৎসিত চেহারাকে স্পষ্ট করে দেখাতে পারেন। যদিও তিনি তোমাকে শাস্তি দেন না, এবং কেবলমাত্র তাঁর ন্যয়পরায়ণতা এবং পবিত্রতাকে তুলনা করার জন্যই তোমাকে ব্যবহার করেন, কিন্তু তুমি লজ্জিত বোধ কর এবং নিজেকে লুকানোর কোনও জায়গা খুঁজে পাও না, কারণ তুমি অত্যন্ত ঘৃণ্য। তিনি সেই জিনিসগুলি ব্যবহার করে কথা বলেন যা মানুষের মধ্যে থেকে অনাবৃত হয়েছে, এবং যখন এই জিনিসগুলি প্রকাশিত হয় তখনই মানুষ সচেতন হয় যে ঈশ্বর কত পবিত্র। তিনি মানুষের মধ্যে সামান্যতম অশুদ্ধতাকেও উপেক্ষা করেন না, এমনকি তাদের অন্তরের ঘৃণ্য চিন্তাগুলিকেও না; যদি মানুষের কথা ও কাজ তাঁর ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, তাহলে তিনি তাদের ক্ষমা করেন না। তাঁর বাক্যে মানুষের বা অন্য যেকোনো কিছুর মালিন্যের কোনও জায়গা নেই—এই সবকিছুকে অবশ্যই প্রকাশ্যে আনতে হবে। শুধুমাত্র তাহলেই তুমি দেখতে পাবে যে তিনি সত্যিই মানুষের চেয়ে ভিন্ন। মানুষের মধ্যে সামান্যতম মালিন্য থাকলেও তিনি তাদের নিতান্তই ঘৃণা করেন। এমনকি এমনও কিছু কিছু সময় আছে যখন মানুষ বুঝতে অক্ষম হয়, এবং বলে, “হে ঈশ্বর, আপনি এত ক্রুদ্ধ কেন? আপনি কেন মানুষের দুর্বলতার প্রতি মনোযোগী নন? কেন আপনি মানুষের প্রতি একটু ক্ষমাশীল হতে পারেন না? আপনি মানুষের প্রতি এত সহানুভূতিহীন কেন? আপনি স্পষ্টতই জানেন যে মানুষ কতটা পরিমানে ভ্রষ্ট হয়েছে, তারপরও আপনি কেন তাদের সাথে এমন আচরণ করছেন?” তিনি পাপকে ঘৃণা করেন, তিনি এর দ্বারা বিতৃষ্ণ বোধ করেন এবং যদি তোমার মধ্যে আনুগত্যহীনতার কোনো চিহ্ন থাকে তবে তিনি বিশেষভাবে বিরক্ত হন। যখন তুমি কোনো বিদ্রোহী স্বভাব প্রকাশ কর, তিনি তা দেখেন এবং গভীরভাবে বিরক্ত হন—অস্বাভাবিক রকমের বিরক্ত। এসবের মাধ্যমেই তাঁর স্বভাব এবং ঈশ্বর কী তা প্রকাশিত হয়। যখন তুমি নিজের সঙ্গে তুলনা কর, তুমি দেখতে পাও যে যদিও তিনি মানুষের মতো একই খাদ্য গ্রহণ করেন, একই পোশাক পরিধান করেন, একই জিনিস উপভোগ করেন, এবং তাদের সাথে বসবাস ও জীবনযাপন করেন, তবুও তিনি মানুষের মতো নন। তোমার একজন তুলনীয় মানুষ হওয়ার তাৎপর্য কি এটাই নয়? এইসব মানুষের মাধ্যমেই ঈশ্বরের শক্তি প্রদর্শিত করা হয়; এ হ’ল সেই অন্ধকার যা আলোকের মূল্যবান অস্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে।

অবশ্যই, ঈশ্বর তোমাদের শুধুমাত্র এর জন্যই একজন তুলনীয় মানুষ বানান না। বরং, তা তিনি শুধুমাত্র তখনই করেন, যখন কাজটি এই ফল দেয় যে মানুষের বিদ্রোহী মনোভাব ঈশ্বরের ন্যয়পরায়ণ স্বভাবকে তুলনায় আরো স্পষ্ট করে প্রতীয়মান করে, এবং শুধুমাত্র তোমরা ঈশ্বরের বিপরীতে নগন্য বলেই তোমরা তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের স্বাভাবিক অভিব্যক্তি জানার সুযোগ পাও। তোমাদের বিদ্রোহী মনোভাবের কারণেই তোমাদের বিচার এবং শাস্তি হয়, আবার তোমাদের এই বিদ্রোহী মনোভাবের জন্যেই তোমরা এমন মানুষ হয়ে উঠতে পারো যাতে তোমাদের বিপরীতে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাওয়া যায়, এবং তোমাদের এই বিদ্রোহী মনোভাবের কারণেই তোমরা তোমাদের উপর ঈশ্বরের প্রদত্ত মহান অনুগ্রহ লাভ কর। তোমাদের বিদ্রোহী মনোভাব হ’ল ঈশ্বরের সর্বশক্তিমানতা ও প্রজ্ঞার বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য যা সেগুলিকে মহিমান্বিত করে, এবং তোমাদের বিদ্রোহী মনোভাবের ফলেই তুমি এত বড় পরিত্রাণ এবং আশীর্বাদ লাভ করেছ। যদিও বারবার আমি তোমাদের বিচার করেছি, তা স্বত্বেও তোমরা যে অসাধারণ পরিত্রাণ পেয়েছ তা মানুষ আগে কখনও পায়নি। এই কাজটি তোমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। “তুলনীয়” হওয়াটাও তোমার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান: তুমি রক্ষা পেয়েছো এবং পরিত্রাণের অনুগ্রহ লাভ করেছ কারণ তোমরা হলে সেই তুলনীয় যাদের সাথে তুলনায় ঈশ্বরের মহিমা বৃদ্ধি পায়, তাই এই জাতীয় তুলনীয় হতে পারা কি পরম মূল্যবান নয়? এটা কি পরম তাৎপর্যপূর্ণ নয়? যেহেতু তোমরা ঐ একই জগতে বসবাস কর, একই কলুষিত ভূমিতে, ঈশ্বরের মতোই, সে কারণেই তোমরা তুলনীয় এবং তোমরা বৃহত্তম পরিত্রাণ লাভ করতে পারো। ঈশ্বর যদি দেহে পরিণত না হতেন, তাহলে তোমাদের মতো নিকৃষ্ট মানুষদের প্রতি কে করুণা প্রদর্শন করতো আর কেই বা দেখাশোনা করতো? কে তোমাদের যত্ন নিতো? যদি ঈশ্বর তোমাদের মধ্যে কাজ করার জন্য দেহে পরিণত না হতেন, তাহলে তোমরা কবে এই পরিত্রাণ পেতে, যা তোমার আগে মানুষ কখনও পায়নি? আমি যদি তোমাদের যত্ন নেওয়ার জন্য, তোমাদের পাপের বিচার করার জন্য যদি দেহে পরিণত না হতাম, তাহলে তোমরা কি অনেকদিন আগেই মৃতস্থানে পতিত হতে না? আমি যদি দেহে পরিণত না হতাম এবং তোমাদের মধ্যে নিজেকে বিনীত না করতাম, তাহলে তোমরা কীভাবে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের কাছে তুলনীয় হওয়ার যোগ্য হতে পারতে? আমি মানব রূপ ধারণ করেছি এবং তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ পরিত্রাণ পেতে সক্ষম করার জন্য তোমাদের মধ্যে এসেছি বলেই কি তোমরা আমার সাথে তুলনীয় হওয়ার যোগ্য হও নি? আমি দেহে পরিণত হয়েছি বলেই কি তোমরা এই পরিত্রাণ লাভ কর না? আমি দেহে পরিণত হয়েছি বলেই কি তোমরা এই পরিত্রাণ লাভ কর না? ঈশ্বর যদি তোমাদের সঙ্গে বসবাস করার জন্য দেহে পরিণত না হতেন, তাহলে কি তোমরা এখনও আবিষ্কার করতে পারতে যে তোমরা একটি মানব-নরকে কুকুর এবং শূকরের চেয়েও নিকৃষ্টতর জীবন যাপন করছ? দেহরূপে আমার কাজের সাথে তুলনীয় বলেই কি তোমরা শাস্তি ও বিচারের সম্মুখীন হও নি? আমার মহিমা বৃদ্ধি করার জন্য তুলনীয় হিসাবে কাজ করার চেয়ে উপযুক্ত কাজ তোমাদের জন্য আর কিছু নেই, কারণ আমার তুলনীয় বলেই বিচারে তোমাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তোমাদের কি মনে হয় না যে আমার তুলনীয় হিসাবে কাজ করার যোগ্য হওয়াটাই তোমাদের জীবনে আশীর্বাদ? তোমরা শুধু আমার বিপরীতে এক তুলনীয়ের কাজ করো, তবুও তোমরা এমন পরিত্রাণ লাভ করো যা তোমাদের আগে কখনো ছিল না বা কখনো কল্পনাও করোনি। আজ আমাকে মহিমান্বিত করার জন্য এক তুলনীয় বস্তু হওয়া তোমাদের কর্তব্য, এবং তোমাদের প্রাপ্য পুরষ্কার হলো ভবিষ্যতে চিরন্তন আশীর্বাদ উপভোগ করা। যে পরিত্রাণ তোমরা লাভ করো, তা কোনো ক্ষণস্থায়ী অন্তর্দৃষ্টি নয় বা একদিনের জন্য বৈধ কোনো এক টুকরো জ্ঞান নয়, বরং তা এক বৃহত্তর আশীর্বাদ: জীবনের এক অনন্ত ধারাবাহিকতা। যদিও আমি এই “তুলনীয়তা”-র প্রয়োগ ঘটিয়ে তোমাদের জয় করেছি, তোমাদের জানা উচিত যে এই পরিত্রাণ এবং আশীর্বাদ তোমাদেরকে অর্জন করার উদ্দেশ্যেই প্রদান করা হয়েছে; এটা করা হয়েছে বিজয়ের স্বার্থে, কিন্তু তাছাড়াও এর উদ্দেশ্য হল যাতে আমি তোমাদের আরো ভালোভাবে উদ্ধার করতে পারি। এই “তুলনীয়তা” বাস্তব, কিন্তু তোমরা যে এই তুলনীয়তার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পদার্থ, তার কারণ হল তোমাদেরই বিদ্রোহী মনোভাব, এবং এর কারণেই তোমরা এমন আশীর্বাদ লাভ করেছো যা কেউ কখনও পায়নি। আজ, তোমাদের দেখার ও শোনার জন্য তৈরি করা হয়েছে; আগামীকাল তোমরা গ্রহণ করবে, এবং তার চেয়েও বেশি, তোমরা প্রভূত আশীর্বাদ লাভ করবে। সুতরাং, তুলনীয়রা কি সর্বাধিক মূল্যবান নয়? তোমাদের বিদ্রোহী মনোভাব আমার তুলনীয় হিসাবে কাজ করে বলেই আজকের বিজয়কার্যের ফলাফল অর্জিত হয়। অর্থাৎ, শাস্তি ও বিচারের দ্বিতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত পরিণতি হলো, ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবকে তোমাদের প্রত্যক্ষ করতে দেওয়ার মাধ্যমে, তোমাদের অপবিত্র ও বিদ্রোহী মনোভাবকে আমাকে মহিমান্বিত করার উদ্দেশ্যে আমার বিপরীতে ব্যবহার করা। বিচার এবং শাস্তির দ্বিতীয় দৃষ্টান্তের সময় তোমরা যখন নিজেদের আরও একবার অনুগত করে তোলো, তখন ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব তার সম্পূর্ণতা নিয়ে তোমাদের সামনে প্রদর্শিত হয়। অর্থাৎ, বিজয়কার্যকে তোমাদের গ্রহণ করা যখন সমাপ্তিতে পৌঁছয়, ঠিক তখনই তোমরা একটি তুলনীয় বস্তু হিসাবে কাজ করার দায়িত্ব সম্পাদনও শেষ করো। তোমাদের কোনো নির্দিষ্ট আখ্যা দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং, ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ এবং অপ্রতিরোধ্য স্বভাব প্রদর্শন ক'রে জয়ের কার্যের প্রথম ঘটনাটি সম্পাদন করার জন্য আমি সেবা-প্রদানকারী হিসাবে তোমাদের ভূমিকা ব্যবহার করছি। তোমাদের বৈপরীত্যের মাধ্যমে, তোমাদের বিদ্রোহী মনোভাবকে আমার তুলনীয় হিসাবে কাজ করানোর মাধ্যমে, জয়ের কার্যের দ্বিতীয় ঘটনার প্রভাবগুলি অর্জিত হয়, তা তোমাদের কাছে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে যা প্রথম ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়নি, এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব দেখায়, অর্থাৎ তিনি যা সে সব কিছু, যাতে রয়েছে তাঁর প্রজ্ঞা, বিস্ময়করতা এবং তাঁর কার্যের অকৃত্রিম পবিত্রতা। এই ধরনের কাজের প্রভাব বিভিন্ন সময়কালে সম্পন্ন বিজয়ের মাধ্যমে এবং বিচারের বিভিন্ন মাত্রার মাধ্যমে অর্জন করা হয়। বিচার যত তার সর্বোচ্চ শিখরের কাছে পৌঁছায়, তত বেশি করে তা মানুষের বিদ্রোহী স্বভাবকে প্রকাশ করে, এবং বিজয়ও তত বেশি কার্যকর হয়। এই বিজয়কার্যের সময়কালে ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট করে তোলা হয়। জয় করার কার্য দুটি ধাপে বিভক্ত, এবং এর বিভিন্ন পর্যায় এবং মাত্রা রয়েছে, এবং তাই অবশ্যই, এর মাধ্যমে অর্জিত প্রভাবগুলিও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এটা বলা যায় যে মানুষের সমর্পনের ব্যাপ্তি আরও গভীর হয়। শুধুমাত্র এর পরেই মানুষকে নিখুঁত করে তোলার সঠিক পথে সম্পূর্ণরূপে নিয়ে আসা যাবে; জয়ের সকল কার্য শেষ হওয়ার পরেই (যখন বিচারের দ্বিতীয় দৃষ্টান্তটি চূড়ান্ত প্রভাব অর্জন করেছে) মানুষকে আর বিচার করা হয় না বরং তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা লাভের সঠিক পথে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কারণ বিচার হল জয়ের একটি উপস্থাপন, এবং জয় বিচার ও শাস্তির রূপ ধারণ করে।

ঈশ্বর সর্বাপেক্ষা পশ্চাদবর্তী এবং অপরিচ্ছন্ন স্থানে দেহরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন, এবং শুধুমাত্র এইভাবেই ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ও ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের সম্পূর্ণতা স্পষ্টভাবে দেখাতে সক্ষম। এবং তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব কীসের মাধ্যমে দেখানো হয়? তা এর মাধ্যমেই দেখানো হয় যখন তিনি মানুষের পাপের বিচার করেন, যখন তিনি শয়তানের বিচার করেন, যখন তিনি পাপকে ঘৃণা করেন এবং যখন তিনি সেই শত্রুদের ঘৃণা করেন যারা তাঁর বিরোধিতা করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। আজ আমি যে বাক্যগুলি বলি তা মানুষের পাপের বিচার করতে, মানুষের অধার্মিকতার বিচার করতে, মানুষের আনুগত্যহীনতাকে অভিশাপ দিতে। মানুষের কুটিলতা এবং প্রতারণা, মানুষের কথা এবং কাজ—যা কিছু ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যহীন তা অবশ্যই বিচারের অধীন হতে হবে এবং মানুষের সমস্ত অবাধ্যতাকে পাপ হিসাবে ভর্ৎসনা করা হবে। তাঁর বাক্যগুলি বিচারের নীতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়; তিনি মানুষের অধার্মিকতার বিচার, মানুষের বিদ্রোহী মনোভাবকে তাঁর অভিশাপ, এবং মানুষের কুৎসিত মুখগুলিকে অনাবৃত করাকে তাঁর নিজের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করেন। পবিত্রতা হল তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের একটি প্রতিনিধি স্বরূপ, এবং প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের পবিত্রতাই আসলে তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব। তোমাদের কলুষিত স্বভাবগুলিই আজকের বাক্যসমূহের প্রেক্ষাপট—আমি এগুলিকে কথা বলতে ও বিচার করতে, এবং জয়ের কার্য নির্বাহ করতে ব্যবহার করি। একমাত্র এটিই প্রকৃত কার্য, এবং একমাত্র এটিই সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের পবিত্রতাকে দীপ্ত করে তোলে। যদি তোমার মধ্যে একটিও কলুষিত স্বভাবের কোন চিহ্ন না থাকে, তাহলে ঈশ্বর তোমাকে বিচার করবেন না, আর তিনি তোমাকে তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবও দেখাবেন না। যেহেতু তোমার স্বভাব কলুষিত, তাই ঈশ্বর তোমাকে যেতে দেবেন না, এবং এর মাধ্যমেই তাঁর পবিত্রতা প্রদর্শিত হয়। যদি ঈশ্বর দেখতে পেতেন যে মানুষের জঘন্যতা এবং বিদ্রোহী মনোভাব অত্যন্ত বেশি অথচ তিনি যদি কথা না বলতেন বা তোমার বিচার না করতেন, বা তোমার অ-ন্যায়পরায়ণতার জন্য তোমাকে শাস্তি না দিতেন, তাহলে তা প্রমাণ করতো যে তিনি ঈশ্বর নন, কারণ তাঁর পাপের প্রতি কোন ঘৃণা থাকতো না; তিনি হতেন মানুষের মতই জঘন্য। আজ, তোমার জঘন্যতার কারণেই আমি তোমার বিচার করি, এবং তোমার ভ্রষ্ট আচরণ ও বিদ্রোহী মনোভাবের কারণেই আমি তোমাকে শাস্তি দিই। আমি তোমাদের কাছে আমার ক্ষমতার দম্ভপূর্ণ প্রদর্শন করছি না বা ইচ্ছাকৃতভাবে তোমাদের নিপীড়ন করছি না; আমি এই কাজগুলি করছি তোমাদের কারণে, যারা এই জঞ্জালপূর্ণ ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছ, যারা গুরুতরভাবে জঞ্জাল দ্বারা দূষিত হয়েছ। তোমরা নিজেদের সততা এবং মনুষ্যত্ব একেবারেই হারিয়ে ফেলেছ এবং বিশ্বের সবচেয়ে আবর্জনাময় কোণে জন্মানো শূকরের মতো হয়ে গেছ, এবং তাই এর জন্যই তোমাদের বিচার হয় এবং আমি তোমাদের উপর আমার ক্রোধ প্রকাশ করি। নির্দিষ্টভাবে এই বিচারের কারণেই তোমরা দেখতে পেয়েছ যে ঈশ্বর হলেন ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর, এবং ঈশ্বর হলেন পবিত্র ঈশ্বর; নির্দিষ্টভাবে তাঁর পবিত্রতা এবং তাঁর ন্যায়পরায়ণতার কারণেই তিনি তোমাদের বিচার করেন এবং তোমাদের উপর তাঁর ক্রোধের প্রকাশ ঘটান। যেহেতু তিনি মানুষের বিদ্রোহী মনোভাব দেখলে তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রকাশ করতে পারেন, এবং যেহেতু তিনি মানুষের মালিন্য দেখলে তাঁর পবিত্রতা প্রকাশ করতে পারেন, এটিই দেখানোর জন্য যথেষ্ট যে তিনি স্বয়ং ঈশ্বর, যিনি পবিত্র এবং আদিম, এবং তা স্বত্বেও তিনি অপবিত্র ভূমিতে বাস করেন। যদি কোন এক ব্যক্তি অন্যদের সঙ্গে পাঁকে ডুবে যায়, এবং তার সম্পর্কে যদি পবিত্র কিছুই না থাকে এবং তার যদি কোন ন্যায়পরায়ণ স্বভাব না থাকে, তাহলে সে মানুষের অন্যায়ের বিচার করার যোগ্য নয়, আর মানুষের বিচার নির্বাহ করারও সে যোগ্য নয়। যারা একে অপরের মতোই সমান মলিনতাপূর্ণ তারা কীভাবে যারা তাদের অনুরূপ তাদের বিচার করার যোগ্য হতে পারে? শুধুমাত্র পবিত্র ঈশ্বর স্বয়ং সমগ্র আবর্জনাময় মানবজাতির বিচার করতে সক্ষম। মানুষ কীভাবে মানুষের পাপের বিচার করতে পারে? মানুষ কীভাবে মানুষের পাপ দেখতে পারে, এবং কীভাবে মানুষ এই সকল পাপের নিন্দা করার যোগ্য হতে পারে? ঈশ্বর যদি মানুষের পাপের বিচার করার যোগ্য না হতেন, তাহলে তিনি স্বয়ং কীভাবে ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর হতে পারতেন? যখন মানুষের ভ্রষ্ট স্বভাবগুলি প্রকাশিত হয়, তখন ঈশ্বর মানুষের বিচার করার জন্য কথা বলেন, এবং শুধুমাত্র তখনই মানুষ দেখতে পায় যে তিনি পবিত্র। তিনি যখন মানুষের পাপের জন্য বিচার করেন এবং তাকে শাস্তি দেন, মানুষের পাপকে অনাবৃত করার সময়, কোন ব্যক্তি বা বস্তুই এই বিচার এড়িয়ে যেতে পারে না; যা কিছু অপবিত্র তাঁর দ্বারা তার বিচার হয়, এবং শুধুমাত্র এইভাবেই তাঁর স্বভাবকে ন্যায়পরায়ণ বলা যেতে পারে। যদি তা না হয় তাহলে কীভাবে বলা যেত যে তোমরা নামে এবং বাস্তবে উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর সাথে তুলনীয়?

ইস্রায়েলে সম্পন্নকার্য এবং আজকের কার্যের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। যিহোবা ইস্রায়েলীদের জীবনের পথনির্দেশ দিয়েছিলেন, এবং সেখানে এত বেশি শাস্তিপ্রদান ও বিচার ছিল না, কারণ সেই সময়ে, মানুষ জগতের খুব সামান্যই বুঝতো এবং তাদের স্বভাব ছিল স্বল্প কলুষিত। সেই সময়ে, ইস্রায়েলীরা যিহোবাকে অন্তর্নিহিতভাবে মান্য করতো। যখন তিনি তাদের বেদী তৈরি করতে বললেন, তখন তারা দ্রুত বেদী তৈরি করল; যখন তিনি তাদের যাজকদের পোশাক পরতে বললেন, তখন তারা তা মান্য করল। সেই দিনগুলিতে, যিহোবা ছিলেন মেষপালের রক্ষণাবেক্ষণকারী মেষপালকের মতো, যেখানে মেষপাল মেষপালকের নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং চারণভূমিতে ঘাস খায়; যিহোবা তাদের জীবনের পথ প্রদর্শন করেছিলেন, তারা কীভাবে আহার করত, পোশাক পরিধান করত, বসবাস করত এবং ভ্রমণ করত সেইসব পরিচালনা করেছিলেন। সেটা ঈশ্বরের স্বভাব সুস্পষ্ট করার সময় ছিল না, কারণ সেই সময়ের মানবজাতি ছিল নবজাতক; কিছু কিছু মানুষ ছিল যারা বিদ্রোহী এবং শত্রুভাবাপন্ন, মানবজাতির মধ্যে খুব বেশি মালিন্য ছিল না, এবং তাই মানুষ ঈশ্বরের স্বভাবের তুলনীয় হিসাবে কাজ করতে পারেনি। কলুষ ভূমি থেকে আগত মানুষের মাধ্যমেই ঈশ্বরের পবিত্রতা দর্শানো হয়; আজ, তিনি অশুচি ভূমির এই মানুষগুলির মধ্যে প্রদর্শিত মালিন্যকে ব্যবহার করেন, এবং তিনি বিচার করেন, এবং এইভাবেই, তিনি যা, বিচারের মধ্যে তা প্রকাশিত হয়। কেন তিনি বিচার করেন? তিনি বিচারের বাক্যসমূহ বলতে সক্ষম কারণ তিনি পাপকে ঘৃণা করেন; মানবজাতির বিদ্রোহকে ঘৃণা না করলে কীভাবে তিনি এত ক্রুদ্ধ হতে পারেন? যদি তাঁর মধ্যে কোনো বিরক্তি না থাকতো, কোনো বিতৃষ্ণা না থাকতো, যদি তিনি মানুষের বিদ্রোহী মনোভাবের প্রতি মনোযোগ না দিতেন, তবে এটি তাঁকে মানুষের মতোই কলুষিত বলে প্রমাণ করতো। তিনি মানুষের বিচার করতে পারেন এবং শাস্তি দিতে পারেন কারণ তিনি মালিন্যকে ঘৃণা করেন, এবং তিনি যা ঘৃণা করেন তা তাঁর মধ্যে অনুপস্থিত। যদি তাঁর মধ্যেও বিরোধিতা এবং বিদ্রোহী মনোভাবও থাকত, তাহলে যারা বিরোধী ও বিদ্রোহী তাদের তিনি ঘৃণা করতেন না। অন্তিম সময়ের কার্য যদি ইস্রায়েলে সম্পন্ন করা হতো, তাহলে এর কোন অর্থ থাকতো না। সমস্ত স্থানের মধ্যে সবথেকে অন্ধকার ও পশ্চাদবর্তী স্থান চীনে কেন অন্তিম সময়ের কাজ করা হচ্ছে? তা তাঁর পবিত্রতা এবং ন্যায়পরায়ণতা প্রদর্শন করার জন্য। সংক্ষেপে, স্থানটি যত বেশি অন্ধকার হবে, ঈশ্বরের পবিত্রতাও ততটাই স্পষ্টভাবে দেখানো যাবে। আসলে, এর সমস্তটাই ঈশ্বরের কার্যের স্বার্থে। শুধুমাত্র আজই তোমরা বুঝতে পারছ যে ঈশ্বর স্বর্গ থেকে অবতীর্ণ হয়েছেন তোমাদের মাঝে দাঁড়াবার জন্য, প্রদর্শিত হয়েছেন তোমাদের মালিন্য ও বিদ্রোহী মনোভাবের দ্বারা, এবং শুধুমাত্র এখনই তোমরা ঈশ্বরকে জানতে পেরেছো। এটাই কি সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয় নয়? আসলে, তোমরা হলে চীনের এমন একদল মানুষ যাদের নির্বাচিত করা হয়েছিল। এবং যেহেতু তোমাকে নির্বাচন করা হয়েছিল এবং তুমি ঈশ্বরের অনুগ্রহ উপভোগ করেছ, এবং যেহেতু তুমি এত বড় অনুগ্রহ উপভোগ করার উপযুক্ত নও, এতেই প্রমাণ হয় যে এই সমস্তই তোমাদের চরম উন্নতিসাধন। ঈশ্বর তোমাদের কাছে আবির্ভূত হয়েছেন, এবং তাঁর পবিত্র স্বভাব তোমাদের সম্পূর্ণরূপে দেখিয়েছেন, এবং তিনি সেগুলির সবটুকু তোমাদের দিয়েছেন, এবং তোমাদের সে সমস্ত আশীর্বাদ উপভোগ করিয়েছেন যা হয়ত তুমি উপভোগ করতে পার। তুমি যে শুধু ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবই আস্বাদন করেছ তা নয়, উপরন্তু, তুমি ঈশ্বরের পরিত্রাণ, ঈশ্বরের মুক্তি এবং ঈশ্বরের অসীম, অনন্ত প্রেমের স্বাদ পেয়েছ। তোমরা, সকলের মধ্যে ঘৃণ্যতম, তারা এত বড় অনুগ্রহ উপভোগ করেছ—তোমরা কি ধন্য নও? এটা কি ঈশ্বরের তোমাদের উত্তোলন করা নয়? তোমাদের মর্যাদা সকলের মধ্যে সর্বনিম্ন; তুমি সহজাতভাবেই এত বড় আশীর্বাদ উপভোগ করার অযোগ্য, তবুও ঈশ্বর তোমাকে উন্নীত করে একটি ব্যতিক্রম স্থাপন করেছেন। তোমার লজ্জা বোধ হয় না? যদি তুমি তোমার কর্তব্য সম্পাদনে অক্ষম হও, তাহলে তুমি শেষ পর্যন্ত নিজের জন্য লজ্জিত হবে, এবং তুমি নিজেকে শাস্তি দেবে। আজ, তুমি অনুশাসিত নও, শাস্তিপ্রাপ্তও নও; তোমার দেহ নিরাপদ এবং অক্ষত—কিন্তু শেষ পর্যন্ত, এই বাক্যগুলি তোমাকে লজ্জিত করবে। আজ পর্যন্ত, আমি প্রকাশ্যে কাউকে শাস্তি দিইনি; আমার বাক্যগুলি কঠিন হতে পারে, কিন্তু মানুষের প্রতি আমি কীভাবে আচরণ করি? আমি তাদের সান্ত্বনা দিই, তাদের উপদেশ দিই, এবং তাদের স্মরণ করিয়ে দিই। তোমাদের বাঁচানোর উদ্দেশ্য ছাড়া আর অন্য কোন কারণে আমি এটি করি না। তোমরা কি সত্যিই আমার ইচ্ছা উপলব্ধি কর না? আমি যা বলি তা তোমাদের বোঝা উচিত এবং সেগুলির দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। এখন বহু মানুষ আছে যারা বোঝে। এটা কি তুলনীয় হওয়ার আশীর্বাদ নয়? তুলনীয় হওয়া কি সর্বাধিক আশীর্বাদধন্য বিষয় নয়? পরিশেষে, যখন সুসমাচার প্রচার করতে যাবে, তখন তোমরা এটি বলবে: “আমরা তুলনীয় বস্তুর আদর্শ প্রতিরূপ।” তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, “তুমি যে তুলনীয় বস্তুর আদর্শ প্রতিরূপ, এর অর্থ কী?” এবং তুমি বলবে: “আমরা ঈশ্বরের কার্যের, এবং তাঁর মহান শক্তির কাছে তাঁর শক্তির মহিমা বৃদ্ধিকারী এক তুলনীয় বস্তু। ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের সমগ্রতা আমাদের বিদ্রোহী মনোভাব দ্বারা সুস্পষ্ট করা হয়; আমরা অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কার্যের সেবাকারী বস্তু, আমরা হলাম তাঁর কাজের পরিশিষ্ট এবং সেইসাথে এর সরঞ্জামও।” এ কথা শুনলে তারা কৌতূহলী হয়ে উঠবে। এরপরে, তুমি বলবে: “আমরা হলাম ঈশ্বরের সমগ্র ব্রহ্মান্ডের কার্য সম্পূর্ণ করার এবং সমস্ত মানবজাতির উপর তাঁর বিজয়ের নমুনা এবং উদাহরণ বিশেষ। আমরা পবিত্র বা ঘৃণ্য যাই হই না কেন, সব মিলিয়ে, আমরা এখনও তোমাদের চেয়ে অধিক আশির্বাদপ্রাপ্ত, কারণ আমরা ঈশ্বরকে দেখেছি, এবং তাঁর আমাদের উপর জয় লাভের সুযোগের মাধ্যমে, ঈশ্বরের মহান ক্ষমতা প্রদর্শিত হয়; শুধুমাত্র আমরা অপবিত্র এবং ভ্রষ্ট বলেই তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের সূচনা ঘটেছে। তোমরা কি এইভাবে অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কার্যের সাক্ষ্য দিতে সক্ষম? তোমরা যোগ্য নও! এটা ঈশ্বরের আমাদের উন্নীত করা ছাড়া আর কিছুই নয়! যদিও আমরা হয়তো অহংকারী নয়, কিন্তু আমরা গর্বিতভাবে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারি, কারণ এমন মহান প্রতিশ্রুতির উত্তরাধিকারী কেউ হতে পারে না, এবং এত বড় আশীর্বাদ কেউ উপভোগ করতে পারে না। আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ বোধ করি যে আমরা, যারা এত মলিনতাপূর্ণ, তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থাপনার সময় তাঁর মহিমা বৃদ্ধির জন্য তাঁর সাথে তুলনীয় বস্তু হিসাবে কাজ করতে পারি।” এবং যখন তারা জিজ্ঞাসা করে, “নমুনা এবং উদাহরণগুলি কী?” তুমি বোলো, “আমরা মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে বিদ্রোহী এবং মলিনতাপূর্ণ; আমরা শয়তানের দ্বারা সবচেয়ে গভীরভাবে ভ্রষ্ট হয়েছি, এবং দেহের দিক থেকে আমরা হলাম সবচেয়ে পশ্চাদবর্তী এবং হীন। আমরা হলাম শয়তান দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার আদর্শ উদাহরণ। আজ, আমরা বিজিত হওয়ার জন্য মানবজাতির মধ্যে প্রথম হিসাবে ঈশ্বরের দ্বারা মনোনীত হয়েছি, এবং আমরা ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব দেখেছি এবং তাঁর অঙ্গীকারের উত্তরাধিকারী হয়েছি; আমরা আরও মানুষকে জয় করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছি, এইভাবে আমরা হলাম মানবজাতির মধ্যে যারা বিজিত তাদের কাছে নমুনা এবং উদাহরণ।” এই কথাগুলির চেয়ে ভাল সাক্ষ্য আর হয় না, এবং এটিই তোমার সর্বশ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা।

পূর্ববর্তী: তুমি একজন “ফয়েল”[*] হতে চাও না কেন?

পরবর্তী: বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য (২)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন