বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য (২)

তোমরা রাজার মতো রাজত্ব করতে চাইতে, আজও এই ইচ্ছা তোমরা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে পারো নি; তোমরা এখনও রাজার মতো রাজত্ব করতে চাও, স্বর্গকে ধারণ এবং পৃথিবীকে সমর্থন করতে চাও। এখন, এই প্রশ্নটিকে বিবেচনা করে দেখো: তোমার কি সেই যোগ্যতা আছে? তুমি কি সম্পূর্ণ নির্বোধের মতো আচরণ করছ না? তোমরা যা অন্বেষণ করছ, যার প্রতি তোমাদের সমস্ত মনোযোগ নিবেদিত রয়েছে, তা কি বাস্তবসম্মত? তোমাদের তো স্বাভাবিক মানবতাও নেই—এ কি শোচনীয় নয়? সেই জন্য, আজ আমি শুধুমাত্র বিজিত হওয়ার বিষয়ে, সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে, তোমাদের ক্ষমতা উন্নত করার বিষয়ে, এবং নিখুঁত হওয়ার পথে প্রবেশের বিষয়েই বলি; এগুলো ছাড়া আর কোনো বিষয়ে আমি বক্তব্য রাখি না। কিছু মানুষ নিখাদ সত্যের প্রতি ক্লান্তি বোধ করে, এবং এইসব স্বাভাবিক মানবতা এবং ক্ষমতা উন্নত করার বিষয়ে দেখলে তারা অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে। যারা সত্যকে ভালোবাসে না, তাদের নিখুঁত করা সহজ নয়। বর্তমানে, যতক্ষণ তুমি প্রবেশ করো, ধাপে ধাপে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করো, ততক্ষণ তোমাকে কি বহিষ্কার করা সম্ভব? ঈশ্বর চীনের মূল ভূখণ্ডে এতো কাজ করার পরে—এতো বড় মাপের কাজ করার পরে—এত বাক্য উচ্চারণ করার পরে, তিনি কি মাঝপথেই হাল ছেড়ে দিতে পারেন? তিনি কি মানুষদের অতল গহ্বরের অভিমুখে পরিচালিত করতে পারেন? বর্তমানে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই যে, তোমাকে অবশ্যই মানুষের সারসত্য, এবং কিসে প্রবেশ করা উচিত, তা জানতে হবে; তোমাকে অবশ্যই জীবনে প্রবেশ, স্বভাবের পরিবর্তন, কীভাবে কার্যত বিজিত হওয়া যায়, কীভাবে সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরকে মান্য করা যায়, কীভাবে ঈশ্বরের কাছে চূড়ান্ত সাক্ষ্য দেওয়া যায়, এবং কীভাবে আমৃত্যু আনুগত্য অর্জন করা যায়—সেই বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। তোমাকে অবশ্যই এই সমস্ত বিষয়ে লক্ষ্য নিবদ্ধ রাখতে হবে, আর যেসব বিষয় বাস্তবিক অথবা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেগুলিকে প্রথমেই সরিয়ে রেখে উপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে, কীভাবে বিজিত হওয়া যায় এবং বিজিত হওয়ার পরে লোকেরা কীভাবে আচরণ করে, সে বিষয়ে তোমার সচেতন হওয়া উচিত। তুমি বলতেই পারো যে, তোমাকে জয় করা হয়েছ, কিন্তু তুমি কি আমৃত্যু মান্য করতে পারো? যেকোনো সম্ভাবনা নির্বিশেষে, তোমাকে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে সক্ষম হতে হবে, এবং যেকোনো পরিবেশ নির্বিশেষে, তাঁর প্রতি তোমার বিশ্বাস হারালে চলবে না। শেষ পর্যন্ত, তোমাকে অবশ্যই সাক্ষ্যের দুটি দিক অর্জন করতে হবে: ইয়োবের সাক্ষ্য—আমৃত্যু আনুগত্য; এবং পিতরের সাক্ষ্য—ঈশ্বরের প্রতি সর্বোচ্চ প্রেম। এক দিক থেকে, তোমাকে অবশ্যই ইয়োবের মতো হতে হবে: সে সমস্ত বস্তুগত সম্পদ হারিয়েছিল, এবং দৈহিক যন্ত্রণায় আচ্ছন্ন হয়েছিল, তা সত্ত্বেও সে কিন্তু যিহোবার নাম ত্যাগ করে নি। ইয়োবের সাক্ষ্য এমনই ছিল। পিতর আমৃত্যু ঈশ্বরকে ভালোবেসেছিল। তাকে ক্রুশবিদ্ধ করার সময়, যখন সে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিল, তখনও সে ঈশ্বরকে ভালোবেসেছিল; সে নিজের সম্ভাবনা বা সুন্দর আশা অথবা অসংযত চিন্তাভাবনার কথা ভাবে নি, সে শুধুমাত্র ঈশ্বরকে ভালোবাসতে এবং তাঁর সকল আয়োজন মান্য করতে চেয়েছিল। সাক্ষ্যদানকারী হিসাবে বিবেচিত হওয়ার আগে, বিজিত হওয়ার পরে নিখুঁত হয়ে ওঠা একজন আগে একজন হওয়ার আগে, তোমাকে অবশ্যই এই মাপকাঠি অর্জন করতে হবে। আজ, মানুষ সত্যিই যদি তাদের নিজস্ব সারমর্ম এবং মর্যাদা সম্পর্কে অবগত থাকত, তবে কি তারা এখনও সম্ভাবনা এবং আশার অন্বেষণ করত? তোমার এখন যা জানা উচিত, তা হল: ঈশ্বর আমাকে নিখুঁত করুন বা না করুন, আমাকে অবশ্যই ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে হবে; তিনি এখন যা কিছু করছেন, তা ভালো, এবং তা আমার স্বার্থেই করা হচ্ছে, যাতে আমাদের স্বভাব পরিবর্তন হয় এবং আমরা শয়তানের প্রভাব থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পারি, কলুষিত ভূমিতে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও যাতে নিজেদেরকে অপবিত্রতা থেকে মুক্ত করতে পারি, শয়তানের কলুষ এবং প্রভাব ঝেড়ে ফেলতে পারি, তা পিছনে ফেলে আসতে সক্ষম হই। অবশ্যই, তোমার থেকে এমনটাই প্রয়োজন, কিন্তু ঈশ্বরের কাছে, এ হল নিতান্তই বিজয়, এমনটা করা হয় যাতে মানুষের মান্য করার সংকল্প থাকে, এবং তারা ঈশ্বরের সকল সমন্বয়সাধনে নিজেকে সমর্পণ করতে পারে। এইভাবে, বিষয়সকল সম্পন্ন হবে। বর্তমান, বেশিরভাগ লোক ইতিমধ্যেই বিজিত হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে এখনও অনেক কিছু রয়ে গিয়েছে যা বিদ্রোহী এবং আনুগত্যহীন। মানুষের প্রকৃত আত্মিক উচ্চতা এখনও অতিশয় ক্ষুদ্র, এবং কেবলমাত্র আশা ও সম্ভাবনা থাকলে তবেই তারা প্রাণশক্তিময় হয়ে উঠতে পারে; আশা এবং সম্ভাবনার অভাবে তারা নেতিবাচক হয়ে পড়ে, এমনকি ঈশ্বরকে পরিত্যাগের কথাও ভাবে। তদুপরি, মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক মানবতা যাপনের উপায় অন্বেষণের কোনো মহান আকাঙ্ক্ষা থাকে না। এমনটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। সেই জন্যেই, আমাকে অবশ্যই এখনও বিজয়ের বিষয়ে বলতেই হবে। প্রকৃতপক্ষে, বিজয়কালেই নিখুঁতকরণ সম্পন্ন হয়: তোমার বিজিত হওয়ার সাথে সাথে, তোমার নিখুঁত হয়ে ওঠার প্রথম প্রভাবগুলিও অর্জিত হয়। বিজিত হওয়া এবং নিখুঁত হয়ে ওঠার মধ্যে পার্থক্যটি শুধুমাত্র মানুষের মধ্যেকার পরিবর্তনের মাত্রা অনুসারেই হয়। নিখুঁত হয়ে ওঠার প্রথম ধাপই হল বিজিত হওয়া, এবং তা এটা বোঝায় না যে, তাদের সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত করে তোলা হয়েছে, অথবা প্রমাণ করে না যে তারা ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হয়েছে। মানুষ বিজিত হওয়ার পরে, তাদের স্বভাবে কিছু পরিবর্তন আসে, কিন্তু যারা সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হয়েছে, তাদের কাছে এই পরিবর্তন একেবারেই নামমাত্র। বর্তমানে, যা করা হয় তা হল মানুষকে নিখুঁত করে তোলার প্রাথমিক কাজ—তাদের বিজিত করা—এবং তুমি যদি বিজিত হতে না পারো, তাহলে তোমার নিখুঁত হওয়া বা ঈশ্বরের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হওয়ার কোনো উপায় থাকবে না। তুমি নিছক কিছু শাস্তি ও বিচারের বাক্যই অর্জন করতে পারবে, কিন্তু সেগুলি তোমার হৃদয়কে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে অক্ষম হবে। এইভাবে, তুমি বহিষ্কৃতদের একজন হয়ে উঠবে, এটা টেবিলে সাজানো মহাভোজ থাকা সত্ত্বেও, সেগুলি না খেতে পেরে খালি তার দিকে তাকিয়ে থাকার চেয়ে আলাদা কিছুই হবে না। এটা কি তোমার পক্ষে দুঃখজনক দৃশ্য নয়? এবং এই কারণেই, তোমার অবশ্যই পরিবর্তন চাওয়া উচিত: সেটা বিজিত হওয়াই হোক বা নিখুঁতকরণই হোক না কেন, উভয়ই তোমার মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে কিনা, তুমি বাধ্য কিনা—এই সমস্ত বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত, আর তুমি ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হতে পারো কিনা, তা এটা দিয়েই নির্ধারিত হয়। জেনে রাখো, “বিজিত হওয়া” এবং “নিখুঁত হয়ে ওঠা”, দুটোই কিন্তু তোমার মধ্যেকার পরিবর্তন এবং আনুগত্যের মাত্রার পাশাপাশি, ঈশ্বরের প্রতি তোমার ভালোবাসা কতটা বিশুদ্ধ, তার উপরেই নির্ভর করে। বর্তমানে যা প্রয়োজন তা হল এই যে, তোমাকে সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত করা যেতে পারে, তবে শুরুতে অবশ্যই তোমাকে বিজিত হতে হবে—তোমার মধ্যে অবশ্যই ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে, অনুসরণ করার বিশ্বাস থাকতে হবে এবং হয়ে উঠতে হবে এমন একজন, যে পরিবর্তন ও ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞানের অন্বেষণ করতে পারে। তবেই তুমি এমন একজন হতে পারবে, যে নিখুঁত হতে চায়। তোমাদের বোঝা উচিত যে নিখুঁতকরণ চলাকালীনই তোমায় জয় করা হবে, এবং বিজিত হওয়া কালীনই তোমায় নিখুঁত করে তোলা হবে। বর্তমানে, তুমি নিখুঁত হয়ে ওঠার অন্বেষণ করতে পারো অথবা তোমার বাহ্যিক মানবতায় পরিবর্তন এবং যোগ্যতায় উন্নতির অন্বেষণ করতে পারো, তবে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, তুমি উপলব্ধি করতে পারবে যে আজ ঈশ্বর যা যা করেন, সব কিছুরই অর্থ এবং উপকারিতা রয়েছে: এর ফলে কলুষিত দেশে জন্মগ্রহণকারী তুমি এই কলুষ ঝেড়ে ফেলে, তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে সক্ষম হও, এটা তোমাকে শয়তানের প্রভাব অতিক্রম করতে, এবং তার অন্ধকার প্রভাব মুক্ত হতে সক্ষম করে। এই সব বিষয়ের উপর লক্ষ্য নিবিষ্ট করে, তুমি এই কলুষে আবিল ভূমিতে সুরক্ষিত থাকো। শেষ পর্যন্ত, তোমাকে কী সাক্ষ্য দিতে বলা হবে? কলুষিত দেশে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও তুমি পবিত্র হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছ, তুমি আর কখনও কলুষতার দ্বারা কলঙ্কিত হবে না, সক্ষম হয়েছ শয়তানের আধিপত্যের অধীনে থেকেও শয়তানের প্রভাব থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে, শয়তানের অধীনে না থাকতে বা হয়রানির শিকার না হতে, এবং সর্বশক্তিমানের করতলে জীবনযাপন করতে। এ-ই হল সাক্ষ্য, এবং তা শয়তানের সাথে যুদ্ধে বিজয়ের প্রমাণও বটে। তুমি শয়তানকে পরিত্যাগ করতে সক্ষম, তোমার যাপনের মধ্যে আর শয়তানোচিত স্বভাব প্রকাশিত হয় না, বরং পরিবর্তে, মানবসৃষ্টিকালে ঈশ্বরের চাহিদা অনুসারে মানুষের যা অর্জনীয়, করুক চেয়েছিলেন, তা-ই যাপন করো তুমি: স্বাভাবিক মানবতা, স্বাভাবিক বোধ, স্বাভাবিক অন্তর্দৃষ্টি, ঈশ্বরপ্রেমের স্বাভাবিক সংকল্প, এবং তাঁর প্রতি আনুগত্য। ঈশ্বরের সৃষ্ট জীব এইপ্রকার সাক্ষ্যই দেয়। তুমি বলো, “আমরা কলুষিত দেশে জন্মগ্রহণ করেছি, কিন্তু ঈশ্বরের সুরক্ষার কারণে, তাঁর নেতৃত্বের কারণে এবং তিনি আমাদের জয় করেছেন বলেই, আমরা নিজেদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত করেছি। আজ আমরা যে ঈশ্বরকে মান্য করতে পারি, সেটাও ঈশ্বরের দ্বারা বিজিত হওয়ারই এক প্রভাব, এবং তা এই কারণে নয় যে, আমরা ভালো অথবা সহজাতভাবেই ঈশ্বরকে ভালোবেসেছিলাম। তার কারণ হল যে, ঈশ্বর আমাদের নির্বাচিত করেছেন, পূর্বনির্ধারিত করেছেন, আমরা আজ বিজিত হয়েছি, তাঁর প্রতি সাক্ষ্য দিতে সক্ষম, এবং আমরা তাঁর সেবা করতে পারি; একইভাবে, তিনি আমাদের নির্বাচিত এবং সুরক্ষিত করার কারণেই আমরা উদ্ধার পেয়েছি এবং শয়তানের আধিপত্য থেকে পরিত্রাণ পেয়েছি, এবং আমরা কলুষতা পরিহার করে অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশে পরিশুদ্ধ হতে পারি।” উপরন্তু, তোমার বাহ্যিক যাপনে দেখা যাবে যে, তুমি স্বাভাবিক মানবতার অধিকারী, তোমার যা বলো, তা অর্থবাহী, এবং তোমার জীবনযাপনও যেকোনো একজন স্বাভাবিক ব্যক্তিরই অনুরূপ। অন্যরা তোমাকে যখন দেখবে, তখন তুমি এমন কিছু কোরো না, যেন তারা বলে, “এটা কি অতিকায় লাল ড্রাগনের প্রতিমূর্তি নয়?” বোনের আচরণ ভগিনীসূলভ মতো নয়, ভাইয়ের আচরণ ভ্রাতৃবৎ নয়, এবং তোমার সন্তসূলভ শিষ্টাচার বিন্দুমাত্রও নেই। তখন লোকেরা বলবে, “ঈশ্বর যে তাদের মোয়াবের বংশধর বলেছেন এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, তিনি সম্পূর্ণ সঠিক ছিলেন!” লোকেরা যদি তোমাদের দিকে তাকায় এবং বলে, “ঈশ্বর তোমাদের মোয়াবের বংশধর বলে অভিহিত করলেও, তোমাদের জীবনযাপনের ধরনই প্রতিপন্ন করে যে তোমরা শয়তানের প্রভাব মুক্ত হয়ে গিয়েছ; সেই বিষয়গুলি এখনও তোমাদের মধ্যে রয়ে গেলেও, তোমরা সেগুলি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে সক্ষম, এ থেকেই প্রমাণ হয় যে তোমাদের সম্পূর্ণরূপে জয় করা হয়েছে”, তখন বিজিত এবং উদ্ধারপ্রাপ্ত তোমরা বলবে, “আমরা যে মোয়াবের বংশধর, তা সত্যি, কিন্তু আমরা ঈশ্বরের দ্বারা উদ্ধারপ্রাপ্ত, এবং অতীতে মোয়াবের বংশধররা ইসরায়েলের লোকেদের দ্বারা পরিত্যক্ত ও অভিশপ্ত হলেও, অ-ইহুদিদের মধ্যে নির্বাসিত হলেও, আজ ঈশ্বর আমাদের উদ্ধার করেছেন। এ কথা সত্য যে আমরাই সমগ্র মানবজাতির মধ্যে সর্বাধিক কলুষিত—ঈশ্বরই তা ঘোষিত দিয়েছিলেন, তা সত্য, এবং কেউই তা অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু আজ আমরা সেই প্রভাব থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছি। আমরা আমাদের পূর্বপুরুষকে ঘৃণা করি, তাদের সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করার উদ্দেশ্যে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চাই এবং ঈশ্বরের সমস্ত ব্যবস্থা মান্য করতে চাই, তাঁর ইচ্ছা অনুসারে কাজ করতে চাই, আমাদের থেকে তিনি যা চান তা পূরণ করতে চাই, এবং তাঁর ইচ্ছাপূরণ অর্জন করতে চাই। মোয়াব ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করে নি এবং ঈশ্বরের দ্বারা ঘৃণিত হয়েছিল। কিন্তু আমাদের ঈশ্বরের অন্তরের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত, এবং বর্তমানে, যেহেতু আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করি, তাই আমরা ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না, এবং আমাদের অবশ্যই আমাদের পুরাতন পূর্বসূরিদের অস্বীকার করতে হবে!” আগে আমি অতিকায় লাল ড্রাগনকে পরিত্যাগ করার বিষয়ে বলেছিলাম, এবং আজ আমি মূলত মানুষের পুরাতন পূর্বসূরিদের পরিত্যাগ করার বিষয়ে বলি। এ-ই হল মানুষের বিজয়কার্যের একটা সাক্ষ্য, এবং তুমি বর্তমানে কীভাবে প্রবেশ করো তা নির্বিশেষেই, এই বিষয়ে তোমার সাক্ষ্যে যেন কোনোমতেই অভাব না থাকে।

মানুষের যোগ্যতা খুবই কম, তাদের মধ্যে স্বাভাবিক মানবতার খুবই অভাব, তাদের প্রতিক্রিয়া খুবই ধীর, খুবই নিষ্ক্রিয়, শয়তানের দুর্নীতি তাদের অসাড় ও নির্বোধ করে ফেলেছে, এবং, যদিও এক বা দুই বছরের মধ্যে তারা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হতে পারে না, তবু, তাদের মধ্যে অবশ্যই সহযোগিতার সংকল্প থাকতে হবে। এই বিষয়টিকে শয়তানের সামনে এক ধরনের সাক্ষ্য হিসাবেও উল্লেখ করা যেতে পারে। আজকের সাক্ষ্য বর্তমানের বিজয়কার্যের দ্বারা অর্জিত প্রভাব, তার পাশাপাশি ভবিষ্যতের অনুসারীদের জন্য তা এক নমুনা এবং আদর্শমূলক দৃষ্টান্তও বটে। ভবিষ্যতে, তা সমস্ত জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে; চীনে করা কাজ সব দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মোয়াবের বংশধররা পৃথিবীর সমস্ত মানুষের মধ্যে নিম্নতম। কিছু লোক জিজ্ঞাসা করে, “হামের বংশধরেরাই কি নিম্নতম নয়?” অতিকায় লাল ড্রাগনের বংশধর এবং হামের বংশধররা ভিন্ন তাৎপর্য তুলে ধরে, এবং হামের বংশধরদের বিষয়টি ভিন্ন: তারা যেভাবেই অভিশপ্ত হোক না কেন, তারা এখনও নোহেরই বংশধর; অপরদিকে, মোয়াবের উৎস শুদ্ধ ছিল না: ব্যভিচার থেকেই মোয়াবের উৎপত্তি, এবং এখানেই রয়েছে পার্থক্য। যদিও এরা উভয়ই অভিশপ্ত হয়েছিল, তবু তাদের মর্যাদা এক ছিল না, এবং সেহেতু মোয়াবের বংশধরেরাই সমস্ত মানুষের মধ্যে নিম্নতম—এবং অন্য কোনও সত্যই সমস্ত মানুষের মধ্যে নিম্নতম মানুষদের জয় করার সত্যের চেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্য নয়। অন্তিম সময়ের কাজ সব নিয়ম ভঙ্গ করে, এবং তুমি অভিশপ্ত না শাস্তিপ্রাপ্ত তা নির্বিশেষে, যতক্ষণ তুমি আমার কাজে সাহায্য করো এবং বর্তমানের বিজয়কার্যে উপকারী বিবেচিত হও, তুমি মোয়াবের বংশধর অথবা অতিকায় লাল ড্রাগনের বংশধর, যে-ই হও না কেন, যতক্ষণ তুমি কাজের এই পর্যায়ে ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের দায়িত্ব পালন করতে পারবে, এবং তোমার পক্ষে যা করা সম্ভব, তা যথাসাধ্য করবে, ততক্ষণ প্রাপ্য প্রভাব অর্জিত হবে। তুমি অতিকায় লাল ড্রাগনের বংশধর, এবং তুমি মোয়াবের বংশধর; সংক্ষেপে, রক্তমাংসের সকলেই ঈশ্বরের সৃষ্টি, এবং সৃষ্টিকর্তার দ্বারা সৃষ্ট। তুমি ঈশ্বরের এক সৃষ্ট জীবমাত্র, তোমার নির্বিকল্প হওয়া উচিত, এবং এ-ই হল তোমার কর্তব্য। অবশ্যই, বর্তমানে সৃষ্টিকর্তার কাজ সমগ্র বিশ্বের প্রতিই উদ্দিষ্ট হয়। তুমি যার উত্তরসূরিই হও না কেন, সর্বোপরি তুমি হলে ঈশ্বরসৃষ্ট জীব, তোমরা—মোয়াবের বংশধররা—ঈশ্বরসৃষ্ট জীবদের এক অংশমাত্র, একমাত্র পার্থক্য হল এই যে, তোমাদের মূল্য কম। যেহেতু, আজ, ঈশ্বরের কাজ সমগ্র বিশ্বে সমস্ত জীবের মধ্যে সম্পাদিত হয়ে চলেছে এবং তা সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি উদ্দিষ্ট, সেহেতু সৃষ্টিকর্তা তাঁর কাজের জন্য যেকোনো মানুষ, ঘটনাবলী, বা বস্তুসমূহ বেছে নিতে পারেন। তুমি কার বংশধর, তা তিনি পরোয়া করেন না; যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাঁর সৃষ্টির একজন হয়ে রয়েছ, এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাঁর কাজ, তথা বিজয়কার্য ও সাক্ষ্যের কাজের পক্ষে উপকারী বিবেচিত হচ্ছ, ততক্ষণ তিনি নির্দ্বিধায় তোমার মধ্যে তাঁর কাজ সম্পন্ন করবেন। এর ফলে ভেঙে পড়ে মানুষের সেই গতানুগতিক ধারণা, যে, ঈশ্বর কখনোই অ-ইহুদিদের মধ্যে কাজ করবেন না, বিশেষ করে যারা অভিশপ্ত এবং নীচ তাদের মধ্যে তো একদমই নয়; কারণ যারা অভিশপ্ত, তাদের থেকে আগত ভবিষ্যৎ প্রজন্মসকলও চিরকাল অভিশপ্তই থাকবে, তাদের পরিত্রাণের কোনো সুযোগ থাকবে না; ঈশ্বর পবিত্র, তাই তিনি কখনোই অ-ইহুদি দেশে অবতীর্ণ হয়ে কাজ করবেন না, এবং কলুষিত ভূমিতে পা রাখবেন না। এই ধারণাসকল ঈশ্বরের অন্তিম সময়ের কাজের মাধ্যমে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। জেনে রাখো, ঈশ্বর হলেন সকল সৃষ্ট জীবের ঈশ্বর, তিনি আকাশ, পৃথিবী এবং সমস্তকিছুর উপর আধিপত্য করেন, তিনি কেবল ইসরায়েলের লোকদের ঈশ্বর নন। সুতরাং, চীনে এই কাজটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এবং তা কি সকল জাতির মধ্যে প্রসারিত করা হবে না? ভবিষ্যতের মহান সাক্ষ্য কেবল চীনেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; ঈশ্বর যদি শুধুমাত্র তোমাদের জয় করত, তাহলে তাতে কি শয়তানদের বিশ্বাস করানো যেত? তারা বিজিত হওয়া কাকে বলে তা বোঝে না, অথবা ঈশ্বরের মহান শক্তি সম্পর্কে অজ্ঞ, এবং একমাত্র যখন সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে ঈশ্বরের মনোনীত লোকেরা এই কাজের চূড়ান্ত প্রভাবগুলি প্রত্যক্ষ করবে, তখনই সমস্ত জীব বিজিত হবে। মোয়াবের বংশধরদের চেয়ে পশ্চাৎপদ বা কলুষিত আর কেউ নেই। একমাত্র যদি সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত, যারা ঈশ্বরকে স্বীকার করে না বা তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, তাদের জয় করা যায়, তারা নিজমুখে ঈশ্বরকে স্বীকার করে, তাঁর প্রশংসা করে এবং তাঁকে ভালোবাসতে সক্ষম হয়—তাহলে তা-ই হবে বিজয়ের সাক্ষ্য। যদিও তুমি পিতর নও, তবু পিতরের প্রতিমূর্তি হিসাবে জীবনযাপন করো, তুমি পিতর এবং ইয়োবের সাক্ষ্য ধারণে সক্ষম, এবং এ-ই হল সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষ্য। পরিশেষে তুমি বলবে, “আমরা ইসরায়েলী নই, বরং পরিত্যাজ্য মোয়াবের বংশধর, আমরা পিতর নই, যার ক্ষমতার তুলনায় আমরা অক্ষম, আমরা ইয়োবও নয়, এবং ঈশ্বরের জন্য কষ্টভোগ করা এবং তাঁর কাছে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য পৌলের সংকল্পের সাথে নিজেদের তুলনাও করতে পারি না, আমরা এতটাই পশ্চাৎপদ, সেই কারণেই আমরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ উপভোগের অযোগ্য। তবুও ঈশ্বর আজ আমাদের উন্নীত করেছেন; তাই আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে হবে, এবং আমাদের যোগ্যতা বা ক্ষমতা অপর্যাপ্ত হলেও, আমরা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে ইচ্ছুক—আমাদের এই সংকল্প রয়েছে। আমরা মোয়াবের বংশধর, এবং আমরা অভিশপ্ত হয়েছিলাম। এটা ঈশ্বরের ফরমান দ্বারা নির্ধারিত হয়েছিল, এবং আমরা তা পরিবর্তন করতে অক্ষম, কিন্তু আমাদের জীবনযাপন এবং জ্ঞান পরিবর্তিত হতে পারে, এবং আমরা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য দৃঢ়সংকল্প।” যখন তোমার মধ্যে এই সংকল্প থাকবে, তখনই প্রমাণিত হবে যে, তুমি বিজিত হওয়ার সাক্ষ্য প্রদান করেছ।

পূর্ববর্তী: জয় করার কার্যের দ্বিতীয় ধাপের প্রভাবসমূহ কীভাবে অর্জিত হয়

পরবর্তী: বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য (৩)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন