বাইবেল সম্পর্কিত (৪)

অনেকেই বিশ্বাস করে যে শুধুমাত্র বাইবেল বুঝতে পারা এবং এর ব্যাখ্যা করতে পারাই প্রকৃত পথ প্রাপ্তির সমান—কিন্তু আসলে, বিষয়গুলি কি সত্যিই এত সহজ? বাইবেলের বাস্তবতা কেউই জানে না: যে এটি ঈশ্বরের কাজের একটি ঐতিহাসিক দলিল ছাড়া আর কিছু নয়, এবং ঈশ্বরের কাজের পূর্ববর্তী দুটি পর্যায়ের এক প্রমাণপত্র, আর এটি তোমাকে ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য সম্বন্ধে কোনো জ্ঞানই দেয় না। যারা বাইবেল পড়েছে, তারা প্রত্যেকেই জানে যে এটিতে বিধানের যুগ এবং অনুগ্রহের যুগে ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের দুটি পর্যায় নথিভুক্ত রয়েছে। পুরাতন নিয়মে ইসরায়েলের ইতিহাস এবং সৃষ্টির সময় থেকে বিধানের যুগের শেষ পর্যন্ত যিহোবার কাজ বর্ণিত রয়েছে। নতুন নিয়মে রয়েছে এই পৃথিবীতে যীশুর কর্মকাণ্ডের আলেখ্য, যা রয়েছে চারটি সুসমাচারের বইতে, এবং সেইসাথে আছে পৌলের কাজের কথা—এগুলো কি ঐতিহাসিক দলিল নয়? অতীতের জিনিস বর্তমানে তুলে আনলে তা আসলে শুধুই ইতিহাস এবং তা যতই সত্য বা বাস্তব হোক না কেন, সেটি ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই নয়—ইতিহাস বর্তমানকে প্রতিফলিত করতে পারে না, কারণ ঈশ্বর ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকান না! আর তাই, যদি তুমি কেবল বাইবেলের আক্ষরিক অর্থই বোঝো এবং ঈশ্বরের আকাঙ্ক্ষিত কাজের বিষয়ে তোমার কিছুমাত্র জ্ঞান না থাকে এবং যদি তুমি ঈশ্বরবিশ্বাসী হয়েও পবিত্র আত্মার কাজে অনাগ্রহী থাকো, তাহলে তুমি ঈশ্বরের প্রকৃত সন্ধানের বিষয়ে কিছুই বোঝো না। যদি তুমি ইসরায়েলের ইতিহাস অধ্যয়ন করার জন্য, স্বর্গ-মর্ত্যে ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টির ইতিহাস জানার জন্য বাইবেল পড়, তবে তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী নও। কিন্তু বর্তমানে, যেহেতু তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে জীবনযাপন করছো, কেবল নিষ্প্রাণ অক্ষর, মতবাদ বা ইতিহাসের অনুসরণ না করে যেহেতু তুমি ঈশ্বরের জ্ঞানের অনুসরণ করছো, তাই তোমাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বর্তমানের ইচ্ছার অন্বেষণ করতে হবে এবং অবশ্যই পবিত্র আত্মার কাজের নির্দেশনা পেতে হবে। তুমি যদি কেবল একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ হতে, তবে তোমার বাইবেলের সাধারণ পাঠ করাই স্বাভাবিক ছিল—কিন্তু তুমি তো তা নও, তুমি ঈশ্বর বিশ্বাসীদের একজন এবং তাই তোমার ঈশ্বরের বর্তমান ইচ্ছাকেই সর্বোত্তমভাবে সন্ধান করা সাজে। বাইবেল পড়ে, বড়জোর তুমি ইস্রায়েলের ইতিহাস কিছুটা বুঝতে পারবে, আব্রাহাম, দায়ূদ এবং মোশির জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে, জানতে পারবে কীভাবে তারা যিহোবাকে সম্মান করতো, কীভাবে যিহোবা তাঁর বিরোধিতাকারীদের পুড়িয়ে মারতেন এবং কীভাবে তিনি সেই যুগের লোকেদের সাথে কথা বলতেন। তুমি শুধুমাত্র অতীতে ঈশ্বরের কাজ সম্পর্কে জানতে পারবে। ইস্রায়েলের প্রথম দিকের মানুষেরা কীভাবে ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করত এবং যিহোবার নির্দেশনায় জীবনযাপন করত-বাইবেলের নথিগুলি তার সঙ্গেই সম্পর্কযুক্ত। কারণ ইস্রায়েলীয়রা ছিল ঈশ্বরের মনোনীত মানবজাতি, পুরাতন নিয়মে তুমি দেখতে পাবে যিহোবার প্রতি ইস্রায়েলের সমস্ত লোকের আনুগত্য, কীভাবে যিহোবার অনুগত ব্যক্তিদের যত্ন রাখা হয়েছিল এবং তাদের উপর আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছিল; তুমি জানতে পারবে যে ঈশ্বর যখন ইস্রায়েলে কাজ করেছিলেন তখন তিনি করুণা ও ভালবাসায় পূর্ণ ছিলেন, ছিলেন বিধ্বংসী অগ্নিশিখার অধিকারী এবং ছোট বড় নির্বিশেষে সকল ইস্রায়েলীয়রা যিহোবাকে শ্রদ্ধা করত এবং তাই সমগ্র দেশ ছিল ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য। পুরাতন নিয়মে এমনভাবেই লিপিবদ্ধ ছিল ইস্রায়েলের ইতিহাস।

বাইবেল হল ইস্রায়েলে ঈশ্বরের কাজের একটি ঐতিহাসিক দলিল, এতে প্রাচীন ভাববাদীদের ভবিষ্যদ্বাণীর পাশাপাশি সেই সময়ে যিহোবার কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত বাণীগুলিও নথিভুক্ত রয়েছে। এইভাবেই, সবাই এই বইটিকে পবিত্র বিবেচনা করে (কারণ ঈশ্বর পবিত্র এবং মহান)। এই সবই যিহোবার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা এবং ঈশ্বরের প্রতি তাদের সন্মানপ্রদর্শনের দৃষ্টান্ত। লোকেরা এই বইটিকে এইভাবে উল্লেখ করে, কারণ ঈশ্বরের সৃষ্টিসমূহ তাদের স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ভক্তিপরায়ণ, কিছু মানুষ আবার এই বইটিকে একটি স্বর্গীয় গ্রন্থ বলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এটি নিছকই এক মানব লিখিত দলিল। ব্যক্তিগতভাবে যিহোবা এর নামকরণ করেননি বা যিহোবা ব্যক্তিগতভাবে এর সৃষ্টি পরিচালনা করেননি। অন্য ভাবে বললে, এই বইয়ের লেখক ঈশ্বর নন, মানুষ। পবিত্র বাইবেল শুধুমাত্র মানুষের দেওয়া এক সম্মানজনক উপাধি। এই শিরোনাম যিহোবা এবং যীশু নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করেননি; এটা মানুষের ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ এই বইটি যিহোবার দ্বারা লেখা হয়নি, যীশুর দ্বারা তো নয়ই। বরং, এটি অনেক প্রাচীন ভাববাদী, বাণীপ্রচারক এবং দ্রষ্টাদের প্রদত্ত বিবরণ, যা পরবর্তী প্রজন্মের দ্বারা একটি প্রাচীন লেখার বই রূপে সংকলিত হয়েছিল, যা মানুষের কাছে বিশেষভাবে পবিত্র জ্ঞানে পূজিত, এমন একটি বই যা তাদের মতে অগাধ এবং গভীর রহস্যে পরিপূর্ণ, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দ্বারা উন্মোচনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই হিসাবে, মানুষ এই বইটিকে একটি স্বর্গীয় গ্রন্থ রূপে আরও বেশি বিশ্বাস করে। চারটি সুসমাচার এবং প্রকাশিত বইয়ের সংযোজনের সহিত, এটির প্রতি মানুষের ধারণা অন্যান্য যেকোনো বই-এর থেকে বিশেষভাবে আলাদা এবং এইভাবে কেউই এই “স্বর্গীয় বইটিকে” খুঁটিয়ে বিশ্লেষণের ধৃষ্টতা দেখায় না কারণ এটি অত্যন্ত “পবিত্র”।

বাইবেল পাঠের পরেই কেন মানুষেরা এর সঠিক অনুশীলনের পথ খুঁজে পেতে সক্ষম হয়? কেন তারা তাদের পূর্বের অজ্ঞাত বিষয় উপলব্ধিতে সক্ষম হয়? আজ, আমি এইভাবে বাইবেলের খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করছি তার অর্থ এই নয় যে আমি এটিকে ঘৃণা করি বা আমি এর মূল্য অস্বীকার করি। আমি বাইবেলের অন্তর্নিহিত মূল্য এবং উৎস বিশদভাবে ব্যাখ্যা করছি যাতে তোমার ধারণা স্পষ্ট হয়। কারণ বাইবেল সম্বন্ধে লোকেদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই ভুল; এইভাবে বাইবেল পাঠ যে কেবল তাদের উচিত কার্যসম্পাদনে বাধা দেয় তাই নয়, বরং এটি, আমার কাঙ্ক্ষিত কার্যে বাধা সৃষ্টি করে। এটি ভবিষ্যতের কাজে ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করে এবং সুবিধার পরিবর্তে কেবল অসুবিধাই সৃষ্টি করে। সুতরাং, আমি তোমাকে যা শেখাচ্ছি তা শুধু বাইবেলের নির্যাস ও ভেতরের গল্প। আমি বলছি না যে তুমি বাইবেল পাঠ করো না বা প্রচার করে বেড়াও যে এটি মূল্যহীন, শুধু বলছি বাইবেল সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করতে। খুব পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যেও না। বাইবেল মানুষের লেখা একটি ঐতিহাসিক বই হলেও, এটিতে এমন অনেক নীতিও নথিভুক্ত রয়েছে যার সাহায্যে প্রাচীন সন্ত ও নবীরা ঈশ্বরের সেবা করতো, সেইসাথে রয়েছে ঈশ্বরের সেবার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক প্রেরিত বাণীপ্রচারকদের অভিজ্ঞতাসমূহের সমাহার—যেগুলি সত্যিই এই মানুষেরা দেখেছে ও জেনেছে, এবং এই কারণে, এই সময়ে যারা সত্য পথের সন্ধান করছে, প্রাসঙ্গিক হিসাবে বাইবেল তাদের কাজে লাগতে পারে। এইভাবে, বাইবেল পাঠের মাধ্যমে মানুষেরা জীবনের অনেক প্রকৃত পথের সন্ধান পেতে পারে যা অন্য বইগুলিতে নেই। এই পথ হল পবিত্র আত্মার কাজের মাধ্যমে দেখানো জীবন যাপনের উপায়, অতীত যুগে ভাববাদী এবং বাণীপ্রচারকরা যার অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল এবং এর অনেক বানী যথেষ্ঠ মূল্যবান এবং মানুষের প্রয়োজনীয়তা পূরণে সক্ষম। এইভাবে, সমস্ত মানুষ বাইবেল পড়তে ভালোবাসে। বাইবেলে অনেক অন্তর্নিহিত বিষয় রয়েছে, তাই এর প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, মহান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বদের লেখার থেকে আলাদা। বাইবেল হল সেই সমস্ত মানুষের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের নথি ও সংগ্রহ, যারা পুরানো এবং নতুন যুগে যিহোবা এবং যীশুকে সেবা করেছিল এবং তাই পরবর্তী প্রজন্মরা এর থেকে প্রভূত জ্ঞান, প্রদীপ্তি এবং অনুশীলনের পথ অর্জনে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য মহান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের লেখার চেয়ে বাইবেল উচ্চতর, তার কারণ হল তাদের সমস্ত লেখা বাইবেল থেকে অনুপ্রাণিত, তাদের সমস্ত অভিজ্ঞতা বাইবেল থেকে এসেছে এবং তারা সকলেই বাইবেলের ব্যাখ্যা করেছে। আর তাই, মানুষেরা অন্যান্য মহান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের বই থেকে অনুশাসন লাভ করতে পারলেও, তারা বাইবেলের উপাসনা করে, কারণ এটি তাদের কাছে খুবই উন্নত মানের এবং গভীর অর্থপূর্ণ! যদিও বাইবেল জীবনমূলক বাণী সম্বলিত কিছু বইকে একত্রিত করেছে, যেমন পৌলের পত্র এবং পিতরের পত্র, এই বইগুলি মানুষদের জীবনের সহায়ক হওয়া সত্ত্বেও এই বইগুলি এখন সেকেলে, সেগুলি বহুকাল পুরোনো, সুতরাং, যতই ভাল হোক না কেন, সেগুলি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সময়েরই উপযোগী, চিরস্থায়ী নয়। কারণ ঈশ্বরের কাজ সর্বদা এগিয়ে চলেছে, এবং তা কেবল পৌল ও পিতরের সময়ে থেমে থাকতে পারে না, বা সর্বদা অনুগ্রহের যুগেও থেকে যেতে পারে না যে যুগে যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। এবং তাই, এই বইগুলি শুধুমাত্র অনুগ্রহের যুগের জন্যই উপযুক্ত, অন্তিম সময়ের রাজ্যের যুগের জন্য নয়। এগুলি শুধুমাত্র অনুগ্রহের যুগের বিশ্বাসীদেরই কিছু প্রদান করতে পারে, রাজ্যের যুগের সন্তদের নয়, এবং যত ভালোই হোক না কেন, আসলে এগুলি অচল। এটি যিহোবার সৃষ্টির কাজ বা ইস্রায়েলে তাঁর কাজেরই অনুরূপ: এই কাজটি যতই মহান হোক না কেন, এটি পুরানো হয়ে যাবেই এবং এর সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সময় বয়ে চলবে। ঈশ্বরের কাজও একই রকম: এটি মহান, কিন্তু এটিরও সমাপ্তির সময় আসবে; এটি সর্বদা সৃষ্টির কাজে লিপ্ত থাকতে পারে না, আবার ক্রুশবিদ্ধকরণের মধ্যেও থাকতে পারে না। ক্রুশবিদ্ধ করার কাজটি যতই বিশ্বাসযোগ্য হোক না কেন, শয়তানকে পরাজিত করার জন্য এটি যতই কার্যকর হোক না কেন, কাজ সর্বদা কাজই রয়ে যায় এবং যুগগুলি, আসলে শুধুই যুগ; কাজ সবসময় একই ভিত্তির উপর স্থির থাকতে পারে না এবং সময়ও থেমে থাকতে পারে না, কারণ সৃষ্টি যেমন ছিল, সমাপ্তিকেও থাকতেই হবে। এটি অনিবার্য! এইভাবে, আজ নতুন নিয়মে জীবনমূলক বাণীগুলি বাণীপ্রচারকদের পত্র এবং চারটি সুসমাচার—আসলে ঐতিহাসিক বই হয়ে উঠেছে, সেগুলি পুরানো বর্ষপঞ্জিতে পরিণত হয়েছে, এবং কীভাবে পুরানো বর্ষপঞ্জি মানুষকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? এই বর্ষপঞ্জিগুলি মানুষকে জীবনবোধ প্রদানে যতই সক্ষম হোক না কেন, মানুষকে ঈশ্বরের দিকে নিয়ে যেতে যতই সক্ষম হোক না কেন, সেগুলি কি আসলে সেকেলে নয়? সেগুলি কি মূল্যহীন নয়? তাই, আমি বলছি তোমাদের এই বর্ষপঞ্জিতে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। এগুলি অনেক পুরানো, তারা তোমাকে নতুন কাজের সন্ধান দিতে পারে না, শুধুমাত্র তোমার বোঝা বাড়াতে পারে। এগুলি যে তোমাকে শুধু নতুন কাজ এবং নতুন জীবনবোধ প্রদানে অক্ষম তাই নয়, বরং এগুলি তোমাকে পুরানো ধর্মীয় গির্জা অভিমুখে চালিত করে—এবং যদি তাই হয় তবে তুমি কি তোমার ঈশ্বর বিশ্বাসে পিছিয়ে পড়বে না?

বাইবেল আসলে ইস্রায়েলে ঈশ্বরের কাজ যা ইস্রায়েলের নির্বাচিত লোকদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, সেটিই নথিভুক্ত করে। সেই পরিস্থিতিতে কিছু তথ্য সংযোজিত বা বাদ পড়ে যায়, যা পবিত্র আত্মা অনুমোদন করেননি, কিন্তু তিনি কোনো দোষও দেননি। বাইবেল সম্পূর্ণরূপে ইস্রায়েলের একটি ইতিহাস, যা ঈশ্বরের কাজের ইতিহাসও বটে। এতে যে সমস্ত মানুষ, বিষয় এবং জিনিস লিপিবদ্ধ রয়েছে তা সবই বাস্তব এবং তাদের কোনও কিছুরই প্রতীকী নয়—অবশ্যই, যিশাইয়, দানিয়েল এবং অন্যান্য ভাববাদীদের ভবিষ্যদ্বাণী বা যোহনের দর্শনের বই এর মধ্যে ব্যতিক্রম। ইস্রায়েলের প্রথম যুগের লোকেরা জ্ঞানী এবং সংস্কৃতিবান ছিল, তাদের প্রাচীন জ্ঞান ও সংস্কৃতি উন্নত ছিল এবং তাই তাদের সেই লেখনী বর্তমানের মানুষের লেখনীর থেকে উচ্চমানের। ফলস্বরূপ, তারা যে এই বইগুলি লিখতে পেরেছিল তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ যিহোবা তাদের মধ্যে অনেক কাজ করেছিলেন এবং তারা অনেক কিছু দেখেছিল। দায়ূদ নিজের চোখে যিহোবার কাজগুলি দেখেছিল, ব্যক্তিগতভাবে সেগুলি সে অনুভব করেছিল, অনেক ইঙ্গিত এবং আশ্চর্যজনক বিষয় দেখেছিল এবং সেই কারণেই যিহোবার কাজের প্রশংসা করে সেই সমস্ত গীত রচনা করেছিল। তারা এই বইগুলি কেবলমাত্র নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতেই লিখতে সক্ষম হয়েছিল, শুধু তাদের অনন্য প্রতিভার কারণে নয়। তারা যিহোবার প্রশংসা করেছিল কারণ তারা তাঁকে নিজেরা দেখেছিলো। যদি তোমরা যিহোবার কিছুই না দেখে থাকো এবং তাঁর অস্তিত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ থাকো, তাহলে কীভাবে তোমরা তাঁর প্রশংসা করতে পারবে? যদি তোমরা যিহোবাকে না দেখে থাকো, তবে তোমরা অবশ্যই তাঁর প্রশংসা করতে বা তাঁর উপাসনা করতে জানবে না, তাঁর প্রশংসা করে গান লিখতে সক্ষম হবে না, এমনকি যদি তোমাদের যিহোবার কিছু কাজ কল্পনা করতেও বলা হয়, তোমরা তাও করতে পারবে না। বর্তমানে তোমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারো এবং ঈশ্বরকে ভালবাসতে পারো কারণ তোমরা তাঁকে দেখেছো, তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করেছো—এবং যদি তোমাদের ক্ষমতার উন্নতি হয়, তাহলে কি তোমরা দায়ূদের মতো ঈশ্বরের প্রশংসায় কবিতাও লিখতে পারবে না?

বাইবেল বোঝা যায়, ইতিহাস বোঝা যায়, কিন্তু পবিত্র আত্মার বর্তমান কাজ বোঝা যায় না—এটি ভুল! তুমি হয়ত ইতিহাস ভালো করে পড়েছো, এটা দুর্দান্ত কাজ ঠিকই, কিন্তু পবিত্র আত্মার বর্তমানের কাজের কিছুই তুমি বোঝো নি। এটা কি বোকামি নয়? যখন অন্যান্য লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে: “এখন ঈশ্বর কী করছেন? আজ তোমার কোন পথে চলা উচিত? তোমার জীবনের সাধনা কেমন চলছে? তুমি কি ঈশ্বরের ইচ্ছা বোঝো?” তাদের জিজ্ঞাসার কোনও উত্তর তোমার কাছে থাকবে না—তাহলে তুমি কী জানো? তুমি বলবে: “আমি কেবল জানি আমাকে সচেতনভাবে পার্থিব বিষয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে শুধু নিজেকে জানতে হবে।” এবং যদি তখন তারা জিজ্ঞাসা করে, “তুমি আর কী জানো?” তখন তুমি বলবে যে তুমি ঈশ্বরের সমস্ত ব্যবস্থা মেনে নিতে জানো এবং বাইবেলের ইতিহাসের সামান্য কিছু বোঝো, এবং এটাই সব। এত বছর ধরে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে তুমি কি এতটুকুই অর্জন করেছো? এইটুকুই যদি তুমি বুঝে থাকো, তাহলে তোমার প্রকৃত জ্ঞানের খুবই অভাব। এইভাবেই, তোমাদের বর্তমান অবস্থান আমার আকাঙ্ক্ষিত মর্যাদা অর্জনে অক্ষম, এবং তোমাদের জ্ঞাত সত্য আসলে তোমার পার্থক্য করার ক্ষমতার মতই তুচ্ছ—অর্থাৎ, তোমাদের বিশ্বাস খুবই অগভীর! তোমাদের অবশ্যই আরও সত্যের কাছাকাছি পৌঁছতে হবে, তোমাদের আরও জ্ঞানের প্রয়োজন, তোমাদের আরও দেখতে হবে এবং শুধুমাত্র তখনই তোমরা সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে পারবে, কারণ এটিই তোমাদের অর্জন করা উচিত!

পূর্ববর্তী: বাইবেল সম্পর্কিত (৩)

পরবর্তী: অনুশীলন (১)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন