বাইবেল সম্পর্কিত (৩)

বাইবেলের সবকিছুই ঈশ্বরের ব্যক্তিগতভাবে বলা বাক্যের দলিল নয়। বাইবেল কেবলমাত্র ঈশ্বরের কাজের পূর্ববর্তী দুটি পর্যায়কে নথিভুক্ত করে, যার একটি অংশ হল নবীদের ভবিষ্যদ্বাণীর নথি, এবং একটি অংশ হল যুগে যুগে ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত মানুষের লিখিত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান। মানুষের অভিজ্ঞতা তাদের মতামত ও জ্ঞান দ্বারা কলঙ্কিত, এবং একে এড়ানো সম্ভব নয়। বাইবেলের অনেক বইতে মানুষের পূর্বধারণা, পক্ষপাত এবং অযৌক্তিক উপলব্ধি রয়েছে। অবশ্যই এর অধিকাংশ বাক্যই পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি ও প্রদীপ্তির ফলাফল, এবং এগুলি সঠিক উপলব্ধি - তবে তা সত্ত্বেও এটা বলা যায় না যে এগুলি সত্যের সম্পূর্ণ সঠিক অভিব্যক্তি। কিছু কিছু বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত জ্ঞান অথবা পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। নবীদের ভবিষ্যদ্বাণী ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের দ্বারাই নির্দেশিত হয়েছিল: যিশাইয়, দানিয়েল, ইষ্রা, যিরমিয় এবং যিহিষ্কেলের মতো ভবিষ্যদ্বাণীগুলি পবিত্র আত্মার সরাসরি নির্দেশে এসেছে; এরা সকলেই দ্রষ্টা ছিল, এরা ভবিষ্যদ্বাণীর আত্মাকে গ্রহণ করেছিল, এবং সকলেই পুরাতন নিয়মের ভাববাদী ছিল। বিধানের যুগে, এই মানুষেরা, যারা যিহোবার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল, তারা অনেক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, যেগুলো সরাসরি যিহোবার দ্বারা নির্দেশিত। এবং যিহোবা কেন তাদের মধ্যে কাজ করেছিলেন? কারণ ইস্রায়েলের মানুষেরা ছিল ঈশ্বরের নির্বাচিত এবং তাদের মধ্যে ভাববাদীদের কাজ হওয়া জরুরী ছিল; এই কারণেই ভাববাদীরা এই ধরনের প্রকাশ পেতে সক্ষম হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, তারা নিজেরাই তাদের প্রতি ঈশ্বরের প্রকাশ বুঝতে পারেনি। পবিত্র আত্মা তাদের মুখ দিয়ে এই বাক্যগুলি বলিয়েছিল যাতে ভবিষ্যতের মানুষেরা সেই বিষয়গুলি বুঝতে পারে এবং দেখতে পারে যে সেগুলি মানুষের থেকে আসে নি, তা সত্যিই ঈশ্বরের আত্মা, পবিত্র আত্মারই কাজ এবং তাদের নিশ্চিতভাবে পবিত্র আত্মার কাজ হিসাবে বিবেচনা করা যায়। করুণার যুগে, যীশু নিজেই তাদের পরিবর্তে এই সমস্ত কাজ করেছিলেন এবং তাই মানুষেরা আর ভবিষ্যদ্বাণী করে নি। তাহলে কি যীশু একজন ভাববাদী ছিলেন? যীশু অবশ্যই একজন ভাববাদী ছিলেন, কিন্তু তিনি বাণীপ্রচারকদের কাজ করতেও সক্ষম ছিলেন-তিনি সারা দেশে লোকেদের ভবিষ্যদ্বাণী জানাতে, প্রচার করতে এবং লোকেদের শিক্ষা দিতে পারতেন। তবুও তাঁর করা কাজ এবং উপস্থাপিত পরিচয় এক ছিল না। তিনি এসেছিলেন সমস্ত মানবজাতিকে মুক্তি দিতে, মানুষকে তাদের পাপ থেকে মুক্তি দিতে; তিনি একজন ভাববাদী এবং একজন বাণীপ্রচারক ছিলেন, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হল তিনি ছিলেন খ্রীষ্ট। একজন ভাববাদী ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে, কিন্তু এটা বলা যাবে না যে এই ধরনের যেকোনো ভাববাদীই খ্রীষ্ট। সেই সময়ে, যীশু অনেক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এবং তাই বলা যেতে পারে যে তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন, কিন্তু এটা বলা যাবে না যে ভাববাদী হওয়ার কারণে তিনি খ্রীষ্ট নন। এর কারণ হল তিনি কাজের একটি পর্যায় পরিচালনা করার জন্য স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং তাঁর পরিচয় যিশাইয়র থেকে আলাদা ছিল: তিনি মুক্তির কাজ সম্পূর্ণ করতে এসেছিলেন, এবং তিনি মানুষের প্রাণসঞ্চারের ব্যবস্থাও করেছিলেন এবং ঈশ্বরের আত্মা সরাসরি তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁর করা কাজে, ঈশ্বরের আত্মার অনুপ্রেরণা বা যিহোবার নির্দেশ ছিল না। পরিবর্তে, আত্মা সরাসরি কাজ করেছিল-যা যথাযথভাবে প্রমাণ করে যে যীশুর সাথে ভাববাদীর তুলনা করা যায় না। তিনি যে কাজটি করেছিলেন তা ছিল মুক্তির কাজ, যার দ্বিতীয়টি ছিল ভবিষ্যদ্বাণীর কথা। তিনি একজন ভাববাদী, একজন বাণীপ্রচারক ছিলেন, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, তিনি ছিলেন মুক্তিদাতা। ভবিষ্যৎবক্তাগণ এই সময়ে কেবল ভবিষ্যদ্বাণীই করতে পারতো, অন্য কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের আত্মার প্রতিনিধিত্ব করতে তারা অক্ষম ছিল। যেহেতু যীশু এমন অনেক কাজ করেছিলেন যা আগে কখনও মানুষ করেনি এবং তিনি মানবজাতির মুক্তির জন্য এই কাজ করেছিলেন, তাই তিনি যিশাইয়র ধরনের কাজের থেকে আলাদা ছিলেন। কিছু মানুষ বর্তমান স্রোতের অভিমুখে চলে না কারণ এটি তাদের কাজে বাধা দেয়। তারা বলে: “পুরাতন নিয়মে অনেক ভাববাদীও অনেক বাক্য বলেছিলেন – তাহলে কেন তারা ঈশ্বরের পার্থিব রূপে পরিণত হয়নি? বর্তমানের ঈশ্বর কথা বলেন – এটাই কি যথেষ্ট প্রমাণ যে তিনি ঈশ্বরের অবতার? তুমি বাইবেলের প্রশংসা করো না বা এর অধ্যয়নও করো না-তাহলে কোন ভিত্তিতে তুমি বলছ যে তিনি ঈশ্বরের অবতার? তুমি বলছো যে তারা পবিত্র আত্মার দ্বারা নির্দেশিত এবং তুমি বিশ্বাস করো যে কাজের এই স্তরটি ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের দ্বারা করা কাজ – কিন্তু তোমার এই ধারণার ভিত্তি কী? তুমি বর্তমানে ঈশ্বরের বাক্যগুলির প্রতি মনোনিবেশ করছো, কিন্তু মনে হচ্ছে তুমি বাইবেলকে অস্বীকার করছো এবং এটিকে একপাশে সরিয়ে রেখে দিয়েছো।” এবং তাই তারা বলে যে তুমি ধর্মদ্রোহিতা এবং ভিন্নধর্মীতায় বিশ্বাস করছো।

যদি তুমি অন্তিম সময়ে ঈশ্বরের কাজের সাক্ষ্য দিতে চাও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই বাইবেলের অন্তর্নিহিত গল্প, বাইবেলের গঠন এবং বাইবেলের সারমর্ম বুঝতে হবে। বর্তমানে, মানুষ বিশ্বাস করে যে বাইবেল হলো ঈশ্বর এবং ঈশ্বরই হলো বাইবেল। তাই, তারা এও বিশ্বাস করে যে বাইবেলের বাক্যগুলোই ঈশ্বরের বলা একমাত্র বাক্য, এবং সেগুলি সমস্তই ঈশ্বরই বলেছিলেন। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তারা এমনকি এও মনে করে যে, পুরাতন এবং নূতন নিয়মের ছেষট্টিটি বইয়ের সবকটি মানুষের লেখা হলেও, সেগুলি সবই ছিল ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং পবিত্র আত্মার উচ্চারণের নথিবদ্ধকরণ। এটি মানুষের ভ্রান্ত উপলব্ধি এবং এটি সত্যের সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভবিষ্যদ্বাণীর বইগুলি ছাড়া, পুরাতন নিয়মের বেশিরভাগই হচ্ছে ঐতিহাসিক নথি। নূতন নিয়মের কিছু পত্র এসেছে মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে, আর কিছু এসেছে পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি থেকে; উদাহরণস্বরূপ, পৌলের পত্রগুলি একজন মানুষের কাজের থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, এগুলি সমস্তই ছিল পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তির ফলাফল, এবং তা গির্জাগুলির জন্যই লেখা হয়েছিল, এবং গির্জার ভাই ও বোনদের কাছে উপদেশমূলক এবং উৎসাহব্যঞ্জক বাক্য ছিল। এগুলি পবিত্র আত্মার দ্বারা উচ্চারিত বাক্য ছিল না-পৌল পবিত্র আত্মার হয়ে কথা বলতে পারতো না, এবং সে একজন নবীও ছিল না, যোহন যে দর্শনগুলি দেখেছিল, সে তার থেকেও কম দেখেছিল। তাঁর পত্রগুলি ইফিসাস, ফিলাডেলফিয়া, গালাতীয়া এবং অন্যান্য গির্জাগুলির জন্য লেখা হয়েছিল। এবং এইভাবে, নূতন নিয়মে পৌলের পত্রগুলি হল সেই পত্র যা পৌল গির্জাগুলির জন্য লিখেছিল, তা পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় আসে নি অথবা সেগুলি পবিত্র আত্মার সরাসরি কথনও নয়। এগুলি কেবল উপদেশ, সান্ত্বনা এবং উৎসাহ প্রদায়ক বাক্য যা সে তার কাজের সময় গির্জার জন্য লিখেছিল। তাই, এগুলিও সেই সময়ে পৌলের অনেক কাজের নথিবদ্ধকরণ। প্রভুর ভাই ও বোনেদের জন্য এগুলি লেখা হয়েছিল, যাতে সেই সময়ের গির্জার ভাই ও বোনেরা তাঁর পরামর্শ অনুসরণ করে এবং প্রভু যীশুর অনুতাপের পথ মেনে চলে। পৌল কখনই বলেনি যে, সেই সময়ের বা ভবিষ্যতের গির্জা নির্বিশেষে, সকলকে তার বাক্য ভোজন ও পান করতে হবে, অথবা সে এও বলেনি যে সমস্ত বাক্যই ঈশ্বর প্রদত্ত। তৎকালীন গির্জার পরিস্থিতি অনুসারে, সে কেবল ভাই ও বোনদের সাথে যোগাযোগ রেখেছিল, তাদের উপদেশ দিতো, তাদের বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত করতো এবং শুধুমাত্র প্রচার করতো বা লোকদের স্মরণ করিয়ে দিতো এবং উপদেশ দিতো। তাঁর বাক্যগুলি তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই ছিল এবং সে এই বাক্যগুলির মাধ্যমে জনগণকে সমর্থন করেছিল। সে সেই সময়ের গির্জার একজন বাণীপ্রচারকের ভূমিকায় কাজ করেছিল, সে একজন কর্মী ছিল যাকে প্রভু যীশু ব্যবহার করেছিলেন, এবং তাই তাকে অবশ্যই গির্জার দায়িত্ব নিতে হবে এবং গির্জার কাজ গ্রহণ করতে হবে, তাকে অবশ্যই ভাই ও বোনদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে-এবং সেই কারণে, সে প্রভুর সমস্ত ভাই ও বোনদের জন্য পত্র লিখেছিল। সে যা বলেছিল তা মানুষের জন্য প্রগতিশীল এবং ইতিবাচক ছিল তা ঠিকই, কিন্তু এটি পবিত্র আত্মার কথনকে প্রতিফলিত করে না এবং এটি ঈশ্বরেরও প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। কোনও মানুষের অভিজ্ঞতার নথি এবং পত্রকে পবিত্র আত্মার দ্বারা গির্জায় বলা বাক্য হিসাবে গণ্য করা মানুষের পক্ষে একটি শোচনীয় উপলব্ধি এবং ঈশ্বর নিন্দার সামিল। গির্জাগুলির জন্য পৌল যে পত্রগুলি লিখেছিল তার ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে সত্য, কারণ তার পত্র সেই সময়ের প্রতিটি গির্জার অবস্থা এবং পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে ভাই ও বোনেদের জন্য লেখা হয়েছিল এবং প্রভুর ভাই ও বোনদের উৎসাহিত করার জন্যই হয়ে ছিল। যাতে তারা প্রভু যীশুর অনুগ্রহ লাভ করতে পারে। তার পত্রগুলি সেই সময়ের ভাই ও বোনদের উদ্দীপিত করার জন্য ছিল। তার পত্রগুলি সেই সময়ের ভাই ও বোনদের উদ্বুদ্ধ করে তোলার জন্য লেখা হয়ে ছিল। এটা বলা যেতে পারে যে এটি তার নিজের দায়িত্ব ছিল এবং এটি পবিত্র আত্মা প্রদত্ত দায়িত্ব ছিল; সর্বোপরি, সে ছিল একজন বাণীপ্রচারক যে সেই সময়ের গির্জার নেতৃত্ব দিয়েছিল, যে গির্জাগুলির জন্য পত্র লিখেছিল এবং তাদের পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছিল-এটিই ছিল তার দায়িত্ব। তার পরিচয় ছিল একজন কর্মরত বাণীপ্রচারক হিসাবে এবং ছিল সে ছিল একজন ঈশ্বরের প্রেরণ করা বাণীপ্রচারক; সে একজন ভাববাদী বা ভবিষ্যদ্বক্তা ছিল না। তার কাছে তার নিজের কাজ এবং ভাই-বোনদের জীবন ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে, সে পবিত্র আত্মার পক্ষে কথা বলতে পারেনি। তার কথাগুলি পবিত্র আত্মার বাক্য ছিল না, সেগুলি ঈশ্বরের বাক্য হিসাবে তো কমই ধরা যেতে পারে, কারণ পৌল ঈশ্বরের সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই ছিল না এবং ঈশ্বরের অবতার তো অবশ্যই ছিল না। তার মর্যাদা যীশুর মতো ছিল না। যীশুর বাক্যগুলি ছিল পবিত্র আত্মার বাক্য, সেগুলি ছিল ঈশ্বরের বাক্য, কারণ তাঁর পরিচয় ছিল খ্রীষ্টের-ঈশ্বরের পুত্র। কিভাবে পৌল তাঁর সমকক্ষ হতে পারে? যদি মানুষেরা পৌলের পত্র বা বাক্যগুলিকে পবিত্র আত্মার উচ্চারণ হিসাবে দেখে এবং সেগুলিকে ঈশ্বর হিসাবে উপাসনা করে, তবে কেবল এটিই বলা যেতে পারে যে খুবই বাছবিচারহীন। আরও কঠিন ভাবে বলতে গেলে, এটা কি নিছক ঈশ্বর নিন্দা নয়? কীভাবে একজন মানুষ ঈশ্বরের হয়ে কথা বলতে পারে?এবং তার পত্র ও বাক্যের নথির সামনে কীভাবে মানুষ নত হতে পারে, যেন সেগুলো এক পবিত্র গ্রন্থ, বা স্বর্গীয় গ্রন্থ? ঈশ্বরের বাক্য কি একজন মানুষের মুখে আকস্মিকভাবে উচ্চারিত হতে পারে? একজন মানুষ কীভাবে ঈশ্বরের হয়ে কথা বলতে পারে? এবং তাই, তোমার কী মনে হয় না যে – গির্জার জন্য লেখা পত্র কি তার নিজস্ব ধারণার দ্বারা কলঙ্কিত হতে পারে না? কীভাবে এগুলি মানুষের ধারণা দ্বারা কলঙ্কিত না হয়ে থাকতে পারে? সে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং নিজস্ব জ্ঞানের ভিত্তিতে গির্জার জন্য পত্র লিখেছিল। উদাহরণস্বরূপ, পৌল গালাতিয়ান গির্জাগুলিতে একটি পত্র লিখেছিল যাতে একটি নির্দিষ্ট মতামত ছিল এবং পিতর অপর একটি পত্র লিখেছিল, যার মধ্যে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। এদের মধ্যে কোনটি পবিত্র আত্মা প্রদত্ত? কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারে না। সুতরাং, কেবলমাত্র বলা যেতে পারে যে তারা উভয়ই গির্জার দায়িত্ব বহন করেছে, তবু তাদের পত্রগুলি তাদের মর্যাদার পরিচয় দেয়, ভাই ও বোনদের জন্য তাদের সংস্থান এবং সমর্থনের এবং গির্জার প্রতি তাদের দায়িত্বের পরিচয় দেয় এবং এগুলি শুধুমাত্রই মানুষের কাজই বোঝায় – এগুলি সম্পূর্ণরূপে পবিত্র আত্মার কাজ ছিল না। তুমি যদি বলো যে তার পত্রগুলি পবিত্র আত্মার বাক্য, তাহলে তুমি অযৌক্তিক কথাই বলছ এবং ঈশ্বর নিন্দা করছো! পৌলের পত্র এবং নূতন নিয়মের অন্যান্য পত্রগুলি সাম্প্রতিকতম আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বদের স্মৃতিকথার সমতুল্য: এগুলি ওয়াচম্যান নী অথবা লরেন্সের অভিজ্ঞতা এবং এই ধরণের বইয়ের সমতুল্য। এটা সহজেই বোঝা যায় যে সাম্প্রতিক আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের বইগুলি নূতন নিয়মে সংকলিত হয়নি, তবুও এই মানুষদের অভিজ্ঞতার সারমর্ম একই ছিল: তারা একটি নির্দিষ্ট সময়কালে পবিত্র আত্মা দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছিল এবং তারা সরাসরি ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি।

নূতন নিয়মে মথির সুসমাচারে যীশুর বংশতালিকা নথিভুক্ত রয়েছে। শুরুর দিকে, এটিতে বলা রয়েছে যীশু ছিলেন অব্রাহাম এবং দায়ূদের বংশধর এবং যোষেফের পুত্র; এর পরে বলা হয়েছে যে যীশু পবিত্র আত্মার দ্বারা গর্ভে এসেছিলেন এবং একজন কুমারীর গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন – যার অর্থ তিনি যোষেফের পুত্র নন বা অব্রাহাম এবং দায়ূদের বংশধর নন। যদিও বংশতালিকা যোষেফের সাথে যীশুকে যুক্ত করার দিকে জোর দিয়েছে। এরপরে, বংশতালিকা সেই প্রক্রিয়াটি নথিভুক্ত করতে শুরু করে যার মাধ্যমে যীশুর জন্ম হয়েছিল। এটিতে বলা হয় যে যীশু পবিত্র আত্মার দ্বারা গর্ভে এসেছিলেন, তিনি একজন কুমারীর থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তিনি যোষেফের পুত্র নন। তবুও বংশতালিকায় স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে যীশু ছিলেন যোষেফের পুত্র, এবং যেহেতু বংশতালিকাটি যীশুর জন্য লেখা, এতে বিয়াল্লিশটি প্রজন্মের কথা বলা হয়েছে। এটি যোষেফের প্রজন্মের উল্লেখ করার সময় তড়িঘড়ি করে বলে যে যোষেফ ছিলেন মরিয়মের স্বামী, যীশু অব্রাহামের বংশধর ছিলেন সেটি প্রমাণ করার জন্য এই বাক্যগুলি উল্লিখিত হয়েছে। এটা কি স্ববিরোধীতা নয়? বংশতালিকাটি স্পষ্টভাবে যোষেফের বংশের নথি প্রদান করে, এটি স্পষ্টতই যোষেফের বংশ, কিন্তু মথি জোর দিয়েছিলেন যে এটিই যীশুর বংশ। এটা কি পবিত্র আত্মার দ্বারা যীশুর গর্ভে আসার সত্যতাকে অস্বীকার করে না? তাহলে, মথি প্রদত্ত বংশতালিকা কি মানুষের ধারণা নয়? এটা হাস্যকর! এইভাবে তুমি জানতে পারো যে এই বইটি সম্পূর্ণরূপে পবিত্র আত্মা থেকে আসেনি। হয়তো, কিছু মানুষ মনে করে যে পৃথিবীতে ঈশ্বরের একটি বংশতালিকা থাকতেই হবে, যার ফলস্বরূপ তারা যীশুকে অব্রাহামের বিয়াল্লিশতম প্রজন্ম হিসাবে উল্লেখ করে। এটা সত্যিই হাস্যকর! পৃথিবীতে আবির্ভাবের পরে ঈশ্বরের বংশতালিকা কীভাবে আসতে পারে? যদি তুমি বলো যে ঈশ্বরের একটি বংশতালিকা আছে, সেক্ষেত্রে তুমি কি তাঁকে ঈশ্বরের সৃষ্টির মধ্যেই পরিগণিত করছো না? কারণ ঈশ্বর পৃথিবীর নন, তিনি সৃষ্টির প্রভু এবং পার্থিব দেহ থাকা সত্ত্বেও, তিনি মানুষের মতো একই পদার্থের তৈরি নন। কিভাবে তুমি ঈশ্বর এবং ঈশ্বর সৃষ্ট প্রাণীদের একই শ্রেণীতে পরিগণিত করতে পারো? অব্রাহাম ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না; সে শুধু সেই সময়ে যিহোবার কাজের উদ্দেশ্য ছিল, সে কেবলমাত্র যিহোবার দ্বারা অনুমোদিত একজন বিশ্বস্ত দাস ছিল যে ইস্রায়েলের লোকদের একজন ছিল। সে কীভাবে যীশুর পূর্বপুরুষ হতে পারে?

যীশুর বংশতালিকা কে লিখেছেন? যীশু কি নিজেই এটা লিখেছিলেন? যীশু কি ব্যক্তিগতভাবে তাদের বলেছিলেন, “আমার বংশতালিকা লেখো”? যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার পরে মথি এটি নথিভুক্ত করেছিলেন। সেই সময়ে, যীশু এমন অনেক কাজ করেছিলেন যা তাঁর শিষ্যদের বোধগম্য হয় নি এবং এর কোনও ব্যাখ্যাও প্রদান করা হয় নি। তাঁর প্রস্থানের পরে, শিষ্যরা সর্বত্র প্রচার এবং কাজ শুরু করেছিল এবং কাজের সেই পর্যায়ের জন্য, তারা পত্র এবং সুসমাচারের বইগুলি লিখতে শুরু করেছিলো। যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার কুড়ি থেকে ত্রিশ বছর পর নূতন নিয়মের সুসমাচারের বইগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। এর আগে, ইস্রায়েলের লোকেরা শুধুমাত্র পুরাতন নিয়ম পড়তো। অর্থাৎ করুণার যুগের শুরুতে মানুষ পুরাতন নিয়ম পড়েছে। নূতন নিয়ম কেবল করুণার যুগ চলাকালীন আবির্ভূত হয়েছিল। যীশুর কাজের সময় নূতন নিয়মের অস্তিত্ব ছিল না; তাঁর পুনরুত্থান এবং স্বর্গে আরোহণের পরে মানুষেরা তাঁর কাজ লিপিবদ্ধ করেছিল। তখন সেখানে চারটি সুসমাচার ছিল, যার সাথে পৌল এবং পিতরের পত্রও ছিল, সেইসাথে প্রকাশের বইও ছিল। যীশুর স্বর্গে আরোহণের তিনশত বছরেরও বেশি সময় পরে, পরবর্তী প্রজন্মরা এই নথিগুলিকে বেছে বেছে একত্রিত করেছিল এবং কেবল তখনই বাইবেলের নূতন নিয়মের আবির্ভাব হয়েছিল। এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরেই নূতন নিয়ম এসেছিল; এটা আগে বিদ্যমান ছিল না। ঈশ্বর সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন এবং পৌল এবং অন্যান্য বাণীপ্রচারকরা বিভিন্ন স্থানে গির্জায় অনেক পত্র লিখেছিলেন। তাদের পরবর্তী লোকেরা সেই পত্রগুলিকে একত্রিত করেছিল এবং পাট্ম দ্বীপে যোহনের সর্বশ্রেষ্ঠ দর্শন নথিবদ্ধকরণের সাথে সংযোজিত করেছিল, যেখানে অন্তিম সময়ের ঈশ্বরের কাজের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। মানুষেরা এই ক্রম তৈরি করেছে, যা আজকের বাক্যর থেকে আলাদা। আজ ঈশ্বরের কাজের ধাপ অনুসারে সবকিছু লিপিবদ্ধ করা হয়েছে; আজ মানুষ যা নিয়ে ব্যস্ত তা হল ঈশ্বরের ব্যক্তিগতভাবে করা কাজ এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁর উচ্চারিত বাক্য। তুমি – মানবজাতি – তোমার হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই; সরাসরি আত্মার থেকে আসা বাক্য, ধাপে ধাপে সাজানো হয়েছে এবং তা মানুষের নথিবদ্ধ বিন্যাস থেকে আলাদা। বলা যেতে পারে যে, তাদের নথিবদ্ধকরণ, তাদের শিক্ষার স্তর এবং মানবিক যোগ্যতা অনুযায়ী ছিল। তারা যা নথিবদ্ধকরণ করেছিল তা ছিল মনুষ্য অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এবং প্রত্যেকের নথিবদ্ধ করার এবং জানার নিজস্ব উপায় ছিল, তাই প্রতিটি নথি ছিল আলাদা। সুতরাং, যদি তুমি বাইবেলকে ঈশ্বর হিসাবে উপাসনা করো, তবে তুমি অত্যন্ত অজ্ঞ এবং মূর্খ! তুমি কেন আজ ঈশ্বরের কাজ সন্ধান করো না? একমাত্র ঈশ্বরের কাজই মানুষকে বাঁচাতে পারে। বাইবেল মানুষকে বাঁচাতে পারে না, লোকেরা কয়েক হাজার বছর ধরে এটি পড়তে পারে এবং তারপরও তাদের মধ্যে সামান্যতম পরিবর্তন হবে না এবং যদি তুমি বাইবেলের উপাসনা করো তবে তুমি কখনোই পবিত্র আত্মার কাজ অর্জন করতে পারবে না। ইস্রায়েলে ঈশ্বরের কাজের দুটি পর্যায়ই বাইবেলে লিপিবদ্ধ আছে, তাই এতে সমস্ত নাম ইস্রায়েলের, সমস্ত ঘটনা ইস্রায়েলের; এমনকি “যীশু” নামটিও একটি ইস্রায়েলীয় নাম। যদি তুমি আজকে বাইবেল পড়তে থাকো, তাহলে তুমি কি নিয়ম মেনে চলছ না? বাইবেলের নূতন নিয়মে যা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তা হল যিহূদিয়ার বিষয়। মূল পাঠ্যটি গ্রীক এবং হিব্রু উভয় ভাষায়ই ছিল, এবং যে নামে তাঁকে ডাকা হতো এবং সেই সময়ে যীশুর বাক্যগুলি – সবই ছিল মানুষের ভাষা। যখন যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন: “এলী এলী লামা শবক্তানী?” এটা কি হিব্রু নয়? এটির শুধুমাত্র কারণ ছিল যে যিশু যিহূদিয়াতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন, কিন্তু এটি প্রমাণ করে না যে ঈশ্বর ইহুদি ছিলেন। আজ, ঈশ্বর চীনে পার্থিব দেহ ধারণ করে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং তাই তিনি যা বলেন তা নিঃসন্দেহে চীনা ভাষা। তবুও এটিকে বাইবেল থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদের সাথে তুলনা করা যায় না, কারণ এই শব্দগুলির উৎস ভিন্ন: একটি এসেছে মানুষের দ্বারা লিপিবদ্ধ হিব্রু ভাষা থেকে এবং একটি এসেছে আত্মার সরাসরি কথন থেকে। কীভাবে কোনও পার্থক্য না থেকে থাকতে পারে?

পূর্ববর্তী: বাইবেল সম্পর্কিত (২)

পরবর্তী: বাইবেল সম্পর্কিত (৪)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন