অধ্যায় ৪৩

সম্ভবত কেবল আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের কারণেই আমার বাক্যের প্রতি মানুষ এক “বিপুল আগ্রহ” অনুভব করেছে। তারা যদি আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের দ্বারা পরিচালিত না হতো, তাহলে সকলেই সদ্য-উত্যক্ত শার্দুলের মতো গর্জন করে উঠতো। প্রত্যহ, আমি মেঘমালার মাঝে ভ্রমণ করি, বিশ্বজুড়ে ইতস্তত ধাবমান মনুষ্যজাতিকে লক্ষ্য করি, যারা আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের মাধ্যমে আমার বাধানিষেধের অধীন। এইভাবে, মানবজাতিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখা হয়, এবং আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহ আমি অনন্ত স্থায়িত্ব প্রদান করি। এখন থেকে, ধরিত্রীবক্ষে অবস্থানকারীরা আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের দরুন সকল প্রকারের শাস্তি প্রাপ্ত হয়, এবং তাদের উপর যখন এই শাস্তি নেমে আসে, তখন সমস্ত মানুষ তারস্বরে চিৎকার করে দিগ্বিদিকে পলায়ন করে। সেই মুহূর্তে, বিশ্বের রাষ্ট্রগুলি তৎক্ষণাৎ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, রাষ্ট্রসমূহের মধ্যবর্তী সীমারেখাগুলির অস্তিত্ব লোপ পায়, স্থানসমূহ আর পরস্পর বিখণ্ডিত থাকে না, এবং মানুষে মানুষে আর কোনো বিচ্ছেদ থাকে না। মানুষের মধ্যে আমি “ভাবাদর্শগত কার্য”-এর সম্পাদন আরম্ভ করি, মানুষ যাতে আর লড়াই না করে একে অপরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে, এবং মানবমাঝে আমার সেতুনির্মাণ ও সংযোগস্থাপনকালে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে। সর্বোচ্চ স্বর্গকে আমি আমার কার্যাবলীর উদ্ভাসে পূর্ণ করে তুলবো এবং ধরাধামের সমস্তকিছুকে আমার ক্ষমতার নিচে ভূলুণ্ঠিত করবো, এইভাবে আমার “বিশ্বব্যাপী ঐক্য”-এর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত এবং আমার এই ইচ্ছাটি ফলপ্রসূ হবে, যাতে মানুষ আর ধরণীর বুকে “লক্ষ্যহীন ঘুরে বেড়াবে” না, বরং অবিলম্বে এক উপযুক্ত গন্তব্য খুঁজে নেবে। মানুষের জন্য আমি সর্বতোউপায়ে এমনভাবে চিন্তা করি যাতে সমগ্র মানবজাতি সত্ত্বর এক শান্তি ও আনন্দময় ভূমিতে বসবাস করতে পারে, যাতে তাদের জীবনের দিনগুলি আর বিমর্ষ ও নিরানন্দ না হয়, এবং যাতে ধরাধামে আমার পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়। যেহেতু মানুষ ধরণীবক্ষে অবস্থান করে, সেহেতু সেখানেই আমি আমার রাষ্ট্রের নির্মাণ করবো, কারণ আমার মহিমার উদ্ভাসের একটি অংশ পৃথিবীপৃষ্ঠে সংঘটিত হবে। ঊর্ধ্বস্থিত স্বর্গে, আমার নগরকে আমি যথাযথভাবে পুনর্বিন্যস্ত করবো, এবং এইভাবে উপর ও নিচের সমস্তকিছুকে নতুন করে তুলবো। স্বর্গের ঊর্ধ্বে ও নিম্নে অবস্থিত যাবতীয়কিছুকে আমি এক অখণ্ডতা প্রদান করবো, যাতে পৃথিবীর সকল বস্তু স্বর্গের বস্তুসকলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ওঠে। এই হল আমার পরিকল্পনা; অন্তিম যুগে আমি এই কার্যই সম্পন্ন করবো—কেউ যেন আমার কার্যের এই অংশে হস্তক্ষেপ না করে! অইহুদি রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে আমার কার্যের প্রসার হল ধরাধামে আমার কার্যের সর্বশেষ অংশ। যে কার্য আমি সম্পন্ন করবো কেউই তার তল পেতে সক্ষম নয়, এবং সেই কারণেই মানুষ যথেষ্ট বিহ্বল। এবং পৃথিবীর বুকে আমার নিরতিশয় কর্মব্যস্ততার দরুন মানুষ “খেলে বেড়াবার” সুযোগ গ্রহণ করে। তারা যাতে মাত্রাতিরিক্ত রকমের বিশৃঙ্খল হয়ে না পড়ে, তাই অগ্নিহ্রদের অনুশাসন সহনের নিমিত্ত প্রথমেই আমি তাদের স্বীয় শাস্তির অধীনে স্থাপন করেছি। এ হল আমার কার্যের একটি ধাপ, এবং কার্যের এই ধাপটি সম্পন্ন করতে আমি অগ্নিহ্রদের শক্তিকে ব্যবহার করবো; অন্যথায়, আমার কার্যের নিষ্পাদন অসম্ভব হবে। আমি আমার বিচারানুযায়ী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডব্যাপী মানবসত্তাদের বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে, এই শ্রেণীসমূহ অনুসারে তাদের বিন্যস্ত করে, অধিকন্তু তাদের নিজ নিজ পরিবারে বাছাই করে, স্বীয় সিংহাসনের সম্মুখে বশ্যতাস্বীকার করাবো, যাতে সমগ্র মানবজাতি আমায় অমান্য করায় ক্ষান্তি দিয়ে পরিবর্তে বরং আমার দ্বারা নামাঙ্কিত শ্রেণীসমূহ অনুসারে এক পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থায় বিন্যস্ত হবে—কেউ যেন যদৃচ্ছভাবে সঞ্চারিত না হয়! সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে, আমি নব কার্যের রূপায়ণ ঘটিয়েছি; সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডব্যাপী সকল মানুষ আমার আকস্মিক আগমনে স্তম্ভিত ও হতবাক, আমার প্রকাশ্য আবির্ভাবের দ্বারা তাদের দিগন্ত বহুদূর প্রসারিত হয়েছে। বর্তমান সময়টি কি ঠিক এমনই নয়?

সমুদয় রাষ্ট্রে ও সকল মানুষের মাঝে আমি আমার প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করেছি, এবং স্বীয় কার্যের প্রথম অংশটির সূচনা ঘটিয়েছি। নতুন করে আরম্ভ করার যে পরিকল্পনা আমার রয়েছে, তা আমি বিঘ্নিত করবো না: অইহুদি রাষ্ট্রসমূহে কার্যের পর্যায়ক্রম স্বর্গে আমার কার্যপদ্ধতির ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সকল মানবসত্তা যখন আমার প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি ও কার্যকলাপ অবলোকন করতে চক্ষু উত্তোলিত করে, ঠিক তখনই জগতের উপর আমি এক কুহেলিকা নিক্ষেপ করি। মানবচক্ষু নিমেষে স্তিমিত হয়ে যায়, এবং নিষ্ফলা মরুভূমির মাঝে মেষযূথের মতো তারাও কোনো অভিমুখ নিরূপণে অক্ষম হয়ে পড়ে, এবং বাত্যাপ্রবাহ যখন গর্জন করতে শুরু করে, তখন সেই গর্জনশীল বায়ুর নিচে তাদের কান্না চাপা পড়ে যায়। বায়ুতরঙ্গের মাঝে মানব-আকৃতিগুলি আবছা দেখা যায়, যদিও কোনো মানব-কণ্ঠস্বর শ্রুত হয় না, এবং মানুষ তারস্বরে চিৎকার করলেও তাদের প্রচেষ্টা বিফলে যায়। এক্ষণে মানুষ উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন ও বিলাপ করে, আশা করে কোনো রক্ষাকর্তা হঠাৎ আকাশ থেকে নেমে এসে এই সীমাহীন মরুভূমি থেকে পথ দেখিয়ে তাদের নিষ্ক্রান্ত করবে। কিন্তু, তাদের বিশ্বাস যতোই দৃঢ় হোক না কেন, রক্ষাকর্তা অনড় থাকেন, এবং মানুষের আশা ধূলিসাৎ হয়ে যায়: বিশ্বাসের যে বহ্নি প্রজ্বলিত হয়েছে তা মরুবাত্যায় নির্বাপিত হয়, এবং এক ঊষর ও জনশূন্য স্থানে মানুষ ভূলুণ্ঠিত হয়ে থাকে, আর কখনো সে জ্বলন্ত মশাল উত্তোলিত করবে না, এবং সে মূর্ছিত হয়ে পড়ে…। মুহূর্তের এই সুযোগকে সাগ্রহে গ্রহণপূর্বক মানুষের সমক্ষে আমি এক মরূদ্যান দৃষ্টিগোচর করে তুলি। কিন্তু, মানুষের অন্তর আনন্দে উদ্বেলিত হলেও, প্রতিক্রিয়া দেখানোর পক্ষে তাদের শরীর অতিভঙ্গুর, দুর্বল ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অসাড়; এবং মরূদ্যানে মনোহর ফলসমূহ ফলতে দেখলেও সেগুলি চয়নের ক্ষমতা তার নেই, কারণ মানুষের “আভ্যন্তরীন সম্পদসমূহ” সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষিত হয়েছে। মানুষের প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলি নিয়ে আমি তাদের হস্তে অর্পণ করি, কিন্তু তার ওষ্ঠে ক্ষণস্থায়ী এক হাসির আভা ফুটে ওঠে মাত্র, তার অবয়ব সর্বাংশে নিরানন্দময়: মানুষের ক্ষমতার প্রতিটি বিন্দু লেশমাত্র না রেখে অন্তর্হিত হয়েছে, প্রবহমান বায়ুতে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এই কারণে, মানুষের মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ ভাবলেশশূন্য, এবং তার রক্তাভ চক্ষু থেকে কেবল একটিই স্নেহরশ্মি বিকীর্ণ হয়, সন্তানের পরিচর্যারত কোনো মাতার অনুরূপ এক স্নিগ্ধ পরার্থপরতা সহকারে। থেকে থেকে মানুষের বিশুষ্ক, বিদীর্ণ ওষ্ঠদ্বয় প্রকম্পিত হয়, যেন-বা সে কিছু বলতে উদ্যত, কিন্তু তা বলার শক্তি নেই। মানুষকে আমি কিছুটা জল প্রদান করি, কিন্তু সে শুধু মাথা নাড়ে। এইসব অনিশ্চিত ও অনির্দেশ্য ক্রিয়াকলাপ থেকে আমি অবগত হই যে মানুষ ইতিপূর্বেই নিজের উপর সকল আশা হারিয়ে ফেলে নিছকই তার সানুনয় দৃষ্টি আমার উপর নিবদ্ধ রেখেছে, যেন কোনোকিছুর জন্য মিনতি জানাচ্ছে। কিন্তু, মানবজাতির রীতিনীতির বিষয়ে অজ্ঞতার দরুন, মানুষের মুখের অভিব্যক্তি ও কার্যকলাপ দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। ঠিক সেই মুহূর্তেই সহসা আমি আবিষ্কার করি যে মানব-অস্তিত্বের আয়ুষ্কাল দ্রুতগতিতে পরিসমাপ্তির দিকে অগ্রসরমান, এবং তার প্রতি আমি এক সহানুভূতিসম্পন্ন দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। এবং শুধু সেক্ষণেই মানুষ এক আনন্দের হাসি হাসে, আমার উদ্দেশ্যে তার মাথা নাড়ায়, যেন-বা তার সকল ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে। মানুষ আর বিমর্ষ নয়; ধরিত্রীর বুকে, মানুষ আর জীবনের অন্তঃসারশূন্যতার বিষয়ে অনুযোগ করে না, এবং “জীবন”-এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ক্রিয়াকর্মে ক্ষান্তি দেয়। এর পর থেকে, ধরাধামে আর কোনো দীর্ঘশ্বাস থাকে না, এবং মানবজাতির জীবৎকালের দিনগুলি আনন্দময় হয়ে ওঠে …

আমার নিজ কার্য শুরু করার পূর্বে মানুষের বিষয়গুলির আমি যথাযথ মীমাংসা করবো, পাছে আমার কার্যে ক্রমাগত তারা অনধিকারচর্চা করে। আমার কাছে মানুষের ব্যাপারস্যাপারগুলি কোনো কেন্দ্রীয় বিষয় নয়; মানবজাতির ব্যাপারগুলি তাৎপর্যহীন। মানুষ এতো সংকীর্ণমনা বলেই—মনে হয় বুঝি এমনকি কোনো পিঁপড়ের প্রতি করুণা প্রদর্শনেও মানুষ অনিচ্ছুক, কিংবা পিঁপড়েরা যেন মানবজাতির শত্রু—মানুষের মধ্যে নিরন্তর মতানৈক্য রয়েছে। মানুষের বিসম্বাদ কর্ণগোচর করে আমি আরেকবার প্রস্থান করি এবং তাদের আখ্যানের প্রতি আর কোনো কর্ণপাত করি না। মানুষের দৃষ্টিতে, আমি এক “আবাসিক সমিতি”, “বাসিন্দাদের” মধ্যে “পারিবারিক বিবাদ”-এর মীমাংসায় বিশেষজ্ঞ। মানুষ অবধারিতভাবে তাদের নিজস্ব কারণেই আমার সম্মুখে আসে, এবং প্রবল অধীরতার সঙ্গে নিজেদের “অসাধারণ অভিজ্ঞতাগুলি”-র বিবরণ দেয়, বর্ণনকালে তাদের নিজস্ব টীকাটিপ্পনী যোগ করে। মানুষের অনন্যসাধারণ চালচলন আমি লক্ষ্য করে দেখি: তাদের মুখমণ্ডল ধূলায় আচ্ছন্ন—এমন এক ধূলা যা স্বেদপ্রবাহের “জলসিঞ্চন”-এর অধীনে ঘর্মের সাথে তৎক্ষণাৎ মিশে গিয়ে নিজের “স্বাধীনতা” হারায়, এবং মানুষের মুখাবয়ব আরো “সমৃদ্ধ” হয়ে ওঠে, কোনো বেলাভূমির বালুকাময় পৃষ্ঠতলের মতো, ক্বচিৎ যেখানে পদচ্ছাপ পরিলক্ষিত হয়। তাদের কেশদাম মৃতব্যক্তির অপচ্ছায়ার কেশগুচ্ছের অনুরূপ, জেল্লাহীন, খাড়া দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেন কোনো গোলাকের উপর কিছু খড়কুটা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তার মেজাজ এতোই প্রকুপিত যে তার কেশ ক্রোধে খাড়া হয়ে ওঠে, সেহেতু তার মুখমণ্ডল থেকে মাঝে-মাঝে “বাস্প” নির্গত হয়, বুঝি-বা তার ঘর্ম “ফুটছিল”। তাকে ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করে দেখি মানুষের মুখ জাজ্বল সূর্যের মতো “বহ্নিশিখা”-য় ঢাকা পড়েছে, সেকারণে তা থেকে উত্তপ্ত গ্যাসীয় পদার্থ উত্থিত হয়, এবং তার ক্রোধের দরুন তার মুখমণ্ডল দগ্ধীভূত হতে পারে ভেবে আমি প্রকৃতই উদ্বিগ্ন বোধ করি, যদিও সে নিজে এ ব্যাপারে ভ্রূক্ষেপমাত্র করে না। এই সঙ্কটমুহূর্তে, মানুষকে আমি তার মেজাজ কিছুটা অবদমিত করার প্রণোদনা দিই, কারণ এতে কোন উপকার সাধিত হয়? নিজেকে এতো নিপীড়িত করার কী প্রয়োজন? রোষের দরুন, এই “গোলক”-এর উপরিতলের খড়কুটাগুচ্ছ রবি-শিখায় বস্তুত ভস্মীভূত হয়; এহেন এক পরিস্থিতিতে এমনকি “চন্দ্র”-ও রক্তাভ হয়ে ওঠে। মানুষকে আমি তার মেজাজ সংযত করতে বলি—তার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা জরুরি। কিন্তু মানুষ আমার পরামর্শ শোনে না; বরং, আমার বিরুদ্ধে “অভিযোগ দায়ের করা” অব্যাহত রাখে। এর কী কার্যকারিতা আছে? আমার ঐশ্বর্য কি মানুষের উপভোগের পক্ষে অপ্রতুল? নাকি আমার প্রদত্ত সামগ্রী মানুষ প্রত্যাখ্যান করে? আকস্মিক ক্রোধোন্মত্ততায়, আমি টেবিল উল্টে দিই, এবং মানুষ আর তার কাহিনী থেকে রোমাঞ্চকর পর্বসমূহ বিবৃত করার স্পর্ধা করে না; সে আতঙ্কিত যে তাকে কিছুদিনের জন্য অপেক্ষারত রাখার উদ্দেশ্যে হয়তো আমি তাকে কোনো “আটককেন্দ্র”-এ চালান করবো, এবং আমার ক্রোধোন্মত্ত অবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে সে চম্পট দেয়। তা না হলে, মানুষ কখনোই এজাতীয় প্রসঙ্গের ইতি টানতে সম্মত হতো না, বরং তার নিজস্ব ব্যাপারস্যাপারে অনর্গল বকবকানি চালিয়ে যেতো। এর শব্দটুকুও আমায় উত্যক্ত করে তোলে। স্বীয় অন্তরের অন্তঃস্থলে মানুষ এতো জটিল কেন? এমন কি হতে পারে যে মানুষের অভ্যন্তরে আমি অত্যধিক সংখ্যায় “উপাদানসমূহ” সংস্থাপন করেছি? আমার সম্মুখে সে প্রতিনিয়তই কেন অভিনয় করে? নিঃসন্দেহে, এমন তো নয় যে “নাগরিক বিরোধ” নিষ্পত্তির বিষয়ে আমি কোনো “পরামর্শদাতা”? মানুষকে কি আমি আমার দ্বারস্থ হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম? নিশ্চিতরূপেই, আমি তো কোনো জেলাশাসক নই, তাই নয় কি? মানুষের বিষয়সমূহ সর্বদাই আমার সম্মুখে উপস্থাপন করা হয় কেন? আমি আশা রাখি যে মানুষ তার নিজদায়িত্ব নিজেই গ্রহণ করাকে সমীচীন বোধ করবে এবং আমায় বিরক্ত করবে না, কারণ আমার করণীয় প্রভূত কার্য রয়েছে।

মে ১৮, ১৯৯২

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৪২

পরবর্তী: অধ্যায় ৪৪

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন