অধ্যায় ৩৫

মানবজাতির মাঝে আমি আমার কার্য সম্পন্ন করতে আরম্ভ করেছি, মানুষকে আমি আমার সাথেই অভিন্ন স্রোতে জীবনধারণের সুযোগ দান করেছি। যখন আমি আমার কার্য সম্পন্ন করবো, তখনো আমি মানবজাতির মাঝেই রইবো, কারণ আমার সমগ্র পরিচালনামূলক পরিকল্পনা জুড়ে শুধু তারাই পরিচালিত হয়, এবং আমার ইচ্ছা হল যে, তারা যাবতীয় কিছুর প্রভু হয়ে উঠুক। এই কারণে, আমি মানবজাতির মাঝে পথচলা অব্যাহত রাখি। মানবজাতি ও আমি যখন বর্তমান যুগে প্রবেশ করি, তখন আমি বেশ নিরুদ্বিগ্ন বোধ করি, কারণ আমার কার্যের গতি ত্বরান্বিত হয়েছে। মানুষ কেমন করে সমতালে চলতে পারে? অসাড় ও স্বল্পধী মানুষের উপর আমি প্রভূত কার্য সম্পন্ন করেছি, তবু তারা প্রায় কিছুই অর্জন করেনি কারণ তারা আমায় লালন করে না। সকল মানুষের মাঝে আমি বসবাস করেছি, এবং মৃত্তিকার ঊর্ধ্বে বা নিম্নদেশে যেখানেই তারা থাকুক না কেন, তাদের প্রতিটি চালচলন লক্ষ্য করেছি। “মনুষ্য” শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত সকলেই আমায় প্রতিরোধ করেছে, যেন-বা “আমাকে প্রতিরোধ করা”-ই মানুষের কাজ, যেন এই কাজ না করলে তারা ছিন্নমূল অনাথ শিশুতে পরিণত হবে, কেউ যাদের পোষ্যগ্রহণ করেনি। কিন্তু, তাদের আচার-ব্যবহারের ভিত্তিতে মানুষকে আমি যদৃচ্ছ দণ্ডিত করি না। বরং, তাদের আত্মিক উচ্চতা অনুযায়ী আমি তাদের অবলম্বন দিই ও রসদ সরবরাহ করি। যেহেতু আমার সমগ্র পরিচালনামূলক পরিকল্পনার কেন্দ্রীয় চরিত্র হল মানুষ, সেহেতু “মনুষ্যের” ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য যারা মনোনীত হয়েছে তাদের আমি অধিক নির্দেশনা প্রদান করি, যাতে তারা ঐকান্তিকভাবে ও তাদের সর্বসামর্থ্য দিয়ে চরিত্রটি পরিবেশন করতে পারে, এবং যাতে আমার নির্দেশিত এই নাট্যাভিনয়টি অভাবিত সাফল্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে। মানবজাতির কাছে এ-ই হল আমার সনির্বন্ধ অনুনয়। আমি যদি মানবজাতির নিমিত্ত প্রার্থনা না করতাম, তাহলে কি তারা তাদের ভূমিকায় অভিনয় করতে অক্ষম হতো? তখন কি বিষয়টি এমন দাঁড়াতো যে, আমার কাছে মানুষ যা চায় তা আমি সম্পন্ন করতে পারি, কিন্তু তাদের কাছে আমি যা চাই তা নিষ্পাদন করতে তারা অপারগ? এমন বলা যায় যে, মানবজাতিকে দমন করার উদ্দেশ্যে আমি আমার শক্তিকে ব্যবহার করি না। পরিবর্তে, এ হল আমার সর্বশেষ অনুরোধ, পূর্ণ ঐকান্তিকতা ও আন্তরিকতা সহকারে তাদের কাছে আমি এই মিনতি জানাই। আমি যা চাই তার সম্পাদনে তারা কি যথার্থই অক্ষম? বহু বৎসর যাবৎ আমি মানুষকে প্রদান করে চলেছি, অথচ বিনিময়ে কিছুই পাই নি। কবেই-বা কে আমায় কিছু প্রদান করেছে? আমার শোনিত, স্বেদ, ও অশ্রু কি পার্বত্য কুয়াশাসন্নিভ? বহুবার আমি মানুষের “টীকাকরণ” করেছি, এবং জানিয়েছি যে তাদের কাছে আমার চাহিদাগুলি কঠোর কিছু নয়। তাহলে, মানুষ কেন ক্রমাগত আমায় এড়িয়ে চলে? তা কি এই কারণে যে তাদেরকে আমি কুক্কুটশাবক গণ্য করে আচরণ করবো, ধরামাত্র হত্যা করবো? আমি কি সত্যিই এতই পাশবিক ও অমানবিক? মানুষ সর্বদাই তাদের নিজস্ব পূর্বধারণা দিয়ে আমায় পরিমাপ করে। তাদের পূর্বধারণা অনুযায়ী আমি যেমন, তা কি স্বর্গে আমি যেমন, ঠিক তেমনই? মানুষের পূর্বধারণাসমূহকে আমি আমার উপভোগের সামগ্রী হিসাবে বিবেচনা করি না। বরং, তাদের হৃদয়কে আমি সমাদরের বস্তু বলে গণ্য করি। কিন্তু, তাদের বিবেকের বিষয়ে সত্যিই অত্যন্ত কুপিত বোধ করি, কারণ, তাদের মতে, আমার নিজেরই কোনো বিবেক নেই। সুতরাং তাদের বিবেকের ব্যাপারে আমার আরো অনেক বেশি মতামত রয়েছে। কিন্তু, সরাসরি তাদের বিবেকের সমালোচনা করতে আমি অস্বীকার করি; বরং, আমি ধৈর্যসহকারে ও নিয়মানুগভাবে তাদের পথপ্রদর্শনা দান অব্যাহত রাখি। যতোই হোক, মানুষ দুর্বল, কোনো কর্মসাধনে অক্ষম।

আজ, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে সীমাহীন শাস্তির ক্ষেত্রে পদার্পণ করি, এবং মানুষের পাশাপাশি আমিও তা উপভোগ করি। একই সঙ্গে, স্বীয় হস্ত দ্বারা আমি আদেশও জারি করি, এবং আমার আদেশের অধীনে, মানবজাতি অত্যন্ত সুশীল; কেউ আমার বিরোধিতা করার স্পর্ধা করে না। আমার নির্দেশনার অধীনে, সকলেই আমার দ্বারা নির্ধারিত কর্ম সম্পন্ন করে, কারণ এটাই তাদের “কাজ”। আকাশের মধ্যস্থ এবং আকাশের নিম্নস্থ সকল বস্তুর মধ্যে, কেই-বা আমার পরিকল্পনার কাছে সমর্পণ করে না? কোনজন আমার করায়ত্ত নয়? কেই-বা আমার কার্য ও আমার বাক্যের দরুন স্তুতি ও প্রশংসাবাক্য উচ্চারণ করে না? মানুষ আমার ক্রিয়াকর্মাদির তারিফ করে, এবং সেহেতু, আমার প্রতিটি পদক্ষেপের দরুন, তারা আমার কার্যের স্রোতে নিজেদের প্রবাহিত করে দেয়। কে নিজেকে মুক্ত করতে পারে? আমার আয়োজিত কার্যকে কে-ই বা এড়াতে পারে? মানুষ আমার প্রশাসনিক ফরমান অনুযায়ী থাকতে বাধ্য; এই ফরমান না থাকলে, তারা সকলেই “অগ্রণী বাহিনী” থেকে চুপিসারে পালিয়ে গিয়ে “পলাতক সৈন্য”-এ পরিণত হতো। মৃত্যুভয়ে কে ভীত নয়? মানুষ কি প্রকৃতই নিজেদের জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে? আমি কারোর উপর কিছু চাপিয়ে দিই না, কারণ বহু পূর্বেই আমি মানবীয় প্রকৃতি সম্বন্ধে এক আনুপুঙ্খিক উপলব্ধি লাভ করেছি। সেকারণেই, আমি সর্বদাই এমন প্রকল্প গ্রহণ করেছি যা মানুষ পূর্বে কখনো সম্পাদন করেনি। আমার কার্য নিষ্পন্ন করতে কেউই সক্ষম হতো না বলে, শয়তানের সাথে জীবন-মৃত্যু সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে আমি স্বয়ং রণক্ষেত্রে পদার্পণ করেছি। ইদানিংকালে, শয়তান চরম মাত্রায় উদ্দাম হয়ে উঠেছে। আমার কার্যের কেন্দ্রবিন্দুটি প্রদর্শন করতে ও আমার শক্তি প্রকাশ করতে এই সুযোগটি আমি গ্রহণ করি না কেন? পূর্বেও যেমন আমি বলেছিলাম, শয়তানের শঠতাকে আমি আমার প্রতিতুলনার উপমেয় হিসাবে ব্যবহার করি; এটিই কি সর্বোত্তম সুযোগ নয়? এতক্ষণে শুধু আমি এক চরিতার্থতার স্মিতহাস্য প্রকাশ করি, কারণ আমি আমার লক্ষ্য অর্জন করেছি। আমি আর ইতস্তত ধাবিত হয়ে মানুষের কাছে “সাহায্য” প্রার্থনা করবো না। অতিব্যস্ত ছোটাছুটি আমি বন্ধ করেছি, এবং আমি আর ছিন্নমূল মানুষের জীবন যাপন করি না। এখন থেকে আমি শান্তিময় জীবন যাপন করবো। একইভাবে মানুষও নিরাপদ ও বিপন্মুক্ত থাকবে, কারণ আমার দিবস সমাগত হয়েছে। পৃথিবীবক্ষে আমি মানুষের সদাব্যস্ত জীবন যাপন করেছি, এমন এক জীবন যেখানে অনেক অন্যায় সংঘটিত হয়েছে বলে মনে হয়। মানুষের দৃষ্টিতে, আমি তাদের সুখ-দুঃখ, এবং তাদের দুর্ভোগ-দুর্দশাও, ভাগ করে নিয়েছি। মানুষের মতন, আমিও পৃথিবী বুকে ও আকাশের নিচে বসবাস করেছি। সেকারণেই তারা সর্বদাই আমায় এক সৃজিত সত্তা হিসাবে দেখেছে। স্বর্গে আমি যেমন সেভাবে মানুষ আমায় দেখেনি বলে, আমার নিমিত্ত মানুষ কখনো খুব বেশি প্রচেষ্টা ব্যয় করেনি। যাই হোক, আজকের এই পরিস্থিতিতে, আমিই যে তাদের নিয়তির প্রভু এবং মেঘরাজি থেকে বিঘোষিত বক্তৃতার কথক, তা স্বীকার করা ভিন্ন মানুষের আর কোনো বিকল্প নেই। তাই মানুষ আমার সম্মুখে এসে অর্চনামানসে তাদের মস্তক নমিত করে ভূমিস্পর্শ করেছে। এ-ই কি আমার বিজয়দৃপ্ত প্রত্যাবর্তনের প্রমাণ নয়? সকল বৈরিভাবাপন্ন শক্তির উপর আমার জয়লাভের এ-ই কি এক প্রাণময় বর্ণনা নয়? সকল মানুষের মনে পূর্বাশঙ্কা ছিল যে বসুন্ধরা তার সমাপ্তিলগ্নে এসে উপনীত হচ্ছে, তারা ভেবেছিল যে মনুষ্যজাতি এক বৃহদায়তন পরিশোধনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে। কিন্তু, সচেতনভাবে তাদের আমি যা নির্দেশ দিয়েছি, বস্তুত তারা তা করে উঠতে পারেনি, তাই আমার শাস্তির অধীনে ক্রন্দন করা ভিন্ন তাদের কোনো গত্যন্তর নেই। কী-ই বা করার আছে? মানুষকে কে বলেছিল আনুগত্যহীন হতে? চূড়ান্ত যুগে প্রবেশ করতে কে তাদের উপরোধ করেছিল? অন্তিম সময়ে তারা মনুষ্যজগতে জন্ম নিল কেন? প্রত্যেকটি বিষয় ব্যক্তিগতভাবে আমার দ্বারা আয়োজিত ও পরিকল্পিত হয়। কোনো অভিযোগ উচ্চারণের স্পর্ধা কে রাখে?

বিশ্বসৃষ্টির পর থেকে, আমি মানবজাতির মাঝে বিচরণ করেছি, তাদের পার্থিব অস্তিত্বে তাদের সঙ্গদান করেছি। পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলিতে, অবশ্য, একজন মানুষও কখনো আমার দ্বারা মনোনীত হয়নি; সকলেই আমার নীরব পত্রের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। এর কারণ, অতীতদিনে মানুষ এককভাবে শুধুমাত্র আমারই সেবা করেনি, তাই আমিও, প্রতিদানে, একান্তভাবে কেবল তাদেরই ভালোবাসিনি। তারা শয়তানের “উপঢৌকন” গ্রহণ করেছিল এবং তারপর ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই উপহারই তারা আমাকে উৎসর্গ করেছিল। একাজ কি আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া নয়? এবং আমায় যখন তারা তাদের উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন আমি আমার বিতৃষ্ণা প্রকাশ করিনি; বরং, এই “উপঢৌকনগুলি”-কে আমার ব্যবস্থাপনার সামগ্রীর সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে তাদের অভিসন্ধিকে আমি আমার নিজস্ব কার্যসিদ্ধির উপকরণে রূপান্তরিত করেছিলাম। পরবর্তীকালে, একবার তারা যন্ত্রের দ্বারা প্রক্রিয়াজাত হয়ে গেলে, অভ্যন্তরীন ধাতুমল আমি ভস্মীভূত করবো। বর্তমান যুগে, মানুষ আমায় খুব বেশি “উপঢৌকন” উৎসর্গ করেনি, তবু একারণে আমি তাদের ভর্ৎসনা করি না। এই মানুষগুলি সর্বদাই নিঃস্ব ও সহায়সম্বলহীন ছিল; তাই, তাদের পরিস্থিতির বাস্তবতা লক্ষ্য করে, মানবজগতে আসার পর থেকে তাদের কাছে আমি কখনো কোনো অসঙ্গত দাবি রাখিনি। বরং, তাদের “কাঁচামালসমূহ” প্রদান করার পর, আমি আমার কাঙ্ক্ষিত “তৈরি পণ্যটি” চেয়েছি, কারণ মনুষ্যেরা এই মাত্রা পর্যন্তই অর্জন করতে পারে। উপযুক্ত চাহিদা জ্ঞাপনের পূর্বে, বহু বৎসর আমি দুঃখকষ্টের মধ্যে অতিবাহিত করেছি, একজন মানুষ হিসাবে জীবনযাপন করার অর্থ কী, সেই বিষয়ে শিক্ষালাভ করেছি। আমি যদি মনুষ্যজীবনের অভিজ্ঞতা লাভ না করতাম, তাহলে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা মানুষের পক্ষে দুরূহ ঠেকে, সেগুলি কীভাবে আমি উপলব্ধি করতে পারতাম? তথাপি, মানুষ বিষয়টি এভাবে দেখে না; তারা বলে যে আমি স্বয়ং সর্বশক্তিমান, অলৌকিক ঈশ্বর। এ-ই কি যথাযথভাবে সেই পূর্বধারণাটি নয় যা মানুষ সমগ্র ইতিহাস ব্যাপী পোষণ করে এসেছে, এমনকি আজও তারা যে ধারণার বশবর্তী? আমি বলেছিলাম যে, ধরাধামে এমন কেউই নেই যে সম্যক ও সম্পূর্ণভাবে আমাকে জানতে পারে। এই মন্তব্যটির নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে; এ নিছক শূন্যগর্ভ বাগাড়ম্বর নয়। আমি স্বয়ং এর অভিজ্ঞতা লাভ করেছি ও একে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, তাই এর অনুপুঙ্খের বিষয়ে আমার এক উপলব্ধি রয়েছে। আমি যদি মনুষ্যজগতে অবতরণ না করতাম, তাহলে কে-ই বা আমার বিষয়ে অবহিত হওয়ার কোনো সুযোগ পেতো? কে-ই বা সশরীরে আমার বাক্য শ্রবণ করতে পারতো? তাদের মাঝে আমার মূর্তিকে কে প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হতো? যুগযুগান্ত ব্যাপী সর্বদাই আমি মেঘের অন্তরালে লুক্কায়িত ছিলাম। ইতিপূর্বে, আমি এক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম: “অন্তিম সময়ে আমি মানবজগতে অবতরণ করবো তাদের জন্য এক আদর্শ দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালনের নিমিত্ত।” এই কারণেই কেবল আজকের মানুষেরাই তাদের দিক্‌চক্রবালকে প্রশস্ত করতে সক্ষম হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছে। তা কি তাদের উপর আমার অর্পিত এক সদাশয়তা নয়? তারা কি সত্যিই আমার অনুগ্রহ আদৌ উপলব্ধিই করতে পারে না? মানুষ কেন এত নিঃসাড় ও স্থূলবুদ্ধি? তারা এত দূর অগ্রসর হয়েছে; তবু কেন তারা এখনো জাগ্রত হয়নি? বহু বছর হল আমি এই বিশ্বে রয়েছি, কিন্তু কে-ই বা আমায় জানে? আমি যে মানুষকে শাস্তি দিই, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। মনে হয় তারাই যেন আমার কর্তৃত্ব প্রয়োগের লক্ষ্যবস্তু; মনে হয় তারা বুঝি আমার বন্দুকের গুলি, যে বন্দুক নিক্ষিপ্ত হলে সকলেই “নিস্তারলাভ করবে”। মানুষ এমনই কল্পনা করে। মানুষকে আমি সর্বদাই সম্মান করেছি; কখনোই তাদের স্বৈরাচারীর মতো শোষণ করিনি বা ক্রীতদাস গণ্য করে কেনাবেচা করিনি। এর কারণ আমি তাদের পরিত্যাগ করতে পারি না, এবং তারাও আমাকে পরিত্যাগ করতে পারে না। এইভাবে, আমাদের মধ্যে এক জীবন-মরণের বন্ধন গড়ে উঠেছে। মানবজাতিকে সবসময় আমি লালন করেছি। মানবজাতি কখনো আমায় লালন না করলেও, তারা সর্বদাই আমার উপর নির্ভর করেছে, সেকারণেই আমি তাদের উপর প্রচেষ্টাপ্রয়োগ অব্যাহত রাখি। আমার নিজস্ব ধনরত্নের মতোই আমি মানুষকে ভালোবাসি, কারণ তারাই ধরিত্রীবক্ষে আমার ব্যবস্থাপনার “মূলধন”; সুতরাং নিশ্চিতরূপেই আমি তাদের পরিহার করবো না। মানুষের প্রতি আমার সদিচ্ছার কখনো কোনো পরিবর্তন হবে না। তারা কি আমার অঙ্গীকারে প্রকৃতই আস্থা রাখতে পারে? আমার নিমিত্ত কীভাবে তারা আমায় সন্তুষ্ট করতে পারে? এই কর্মভারই সমগ্র মনুষ্যজাতির উপর ধার্যকৃত হয়েছে, তাদের জন্য আমি এই “বাড়ির কাজ” বরাদ্দ করেছি। আশা করি তা সম্পূর্ণ করতে তারা সকলেই কঠোর পরিশ্রম করবে।

এপ্রিল ২৩, ১৯৯২

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৩৪

পরবর্তী: অধ্যায় ৩৬

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন