অধ্যায় ৩৪

মানুষকে একদা আমি এক অতিথি হিসাবে আমার গৃহে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, তথাপি আমার আহ্বানের কারণে সে ইতস্তত পলায়ন করেছিল—যেন-বা, এক অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করার পরিবর্তে, তাকে বুঝি আমি কোনো বধ্যভূমিতে নিয়ে এসেছিলাম। আমার গৃহ তাই শূন্য পড়ে ছিল, কারণ মানুষ সর্বদাই আমায় পরিহার করে চলতো, এবং আমার বিষয়ে সততই তারা সতর্ক থাকতো। এর দরুন আমার কার্যের অংশবিশেষ সম্পন্ন করার কোনো উপায় আমার হাতে ছিল না, অর্থাৎ, বিষয়টি এমন যে, মানুষের নিমিত্ত আমার প্রস্তুত খাদ্যসামগ্রী উপভোগে মানুষের অনীহার কারণে আমি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম, এবং সেই কারণেই আমি তাকে আর পীড়াপীড়ি করিনি। তথাপি মানুষ সহসা নিজেকে ক্ষুৎকাতর বোধ করে, সেকারণেই সাহায্যের প্রার্থনায় সে আমার দ্বারে এসে করাঘাত করে—তাকে এমন শোচনীয় পরিস্থিতিতে দেখার পরেও কীভাবে আমি উদ্ধার না করে পারি? সেকারণেই, আরেকবার আমি মানুষের উপভোগের নিমিত্ত এক ভোজসভার আয়োজন করি, শুধুমাত্র তখনই সে আমার শ্লাঘনীয়তার আভাস পায়, এবং আমার উপর নির্ভর করতে শুরু করে। ক্রমশ, তার প্রতি আমার মনোভাবের দরুন, “কোনো ওজরআপত্তি ব্যতিরেকেই” আমায় সে ভালোবেসে ফেলে, এবং সে আর সন্দেহ করে না যে আমি তাকে “শ্মশানভূমি”-তে প্রেরণ করবো, কারণ আমার তা ইচ্ছা নয়। এবং সেকারণেই, কেবল আমার অন্তর পরিদর্শনের পরেই মানুষ প্রকৃত অর্থে আমার উপর নির্ভর করে, এতে বোঝা যায় সে ঠিক কতখানি “সতর্ক”। তথাপি মানুষের প্রতারণার দরুন তাদের প্রতি আমি সাবধান নই, বরং আমার উষ্ণ আলিঙ্গনের দ্বারা মানুষের হৃদয়কে আমি অভিভূত করি। বর্তমানে আমি কি সেই কার্যেই নিরত নই? বর্তমান পর্যায়ে মানুষের মধ্যে এটিই কি প্রতীয়মান হয় না? এমন কার্য সম্পাদনে তারা সমর্থ কেন? কেন তারা এবম্বিধ এক ভাবানুভূতির অধিকারী? তা কি তারা প্রকৃতই আমায় জানে বলে? তা কি তারা প্রকৃতই আমায় ভালোবাসে বলে? তা কি এ কারণেই যে আমার প্রতি বস্তুতই তারা অসীম ভালোবাসা পোষণ করে? আমায় ভালোবাসার জন্য কারোর উপর আমি বলপ্রয়োগ করি না, বরং নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শুধু তাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা প্রদান করি; এতে আমি হস্তক্ষেপ করি না, এবং নিজেদের নিয়তি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের কোনো সহায়তা করি না। আমার সম্মুখে মানুষ তাদের সংকল্প স্থির করেছে, পরীক্ষা করে দেখার জন্য তারা তা আমার সমীপে এনেছে, এবং “মানুষের সংকল্প”-পূর্ণ থলিটি টেনে উন্মোচিত করার সময় আমি লক্ষ্য করেছিলাম, অভ্যন্তরস্থ সামগ্রীগুলি অগোছালো হলেও যথেষ্ট “প্রাচুর্যপূর্ণ”। মানুষ আমার দিকে বিস্ফারিত চক্ষে তাকিয়েছিল, গভীর শঙ্কিত ছিল যে তাদের সংকল্পকে বুঝি আমি উৎপাটিত করে আনবো। কিন্তু মানুষের দুর্বলতার কারণে, শুরুতেই আমি কোনো রায় দিইনি, পরিবর্তে থলিটি বন্ধ করে আমার অবশ্যকরণীয় কার্যের সম্পাদন অব্যাহত রেখেছিলাম। মানুষ অবশ্য আমার কার্যের অনুবর্তী হয়ে আমার পথনির্দেশনায় প্রবেশ করে না, বরং তার সংকল্প আমার দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে কি না, তা নিয়েই উদ্বিগ্ন রয়ে যায়। এতো কার্য আমি সম্পন্ন করেছি এবং এতো বাক্য উচ্চারণ করেছি, কিন্তু আজ অবধি, আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে মানুষ অপারক রয়ে গিয়েছে, এবং তার প্রতিটি হতবুদ্ধিকর ক্রিয়াকর্ম আমার মস্তক বিঘূর্ণিত করে ছাড়ে। সততই সে আমার ইচ্ছা অনুধাবনে অক্ষম কেন, এবং সর্বদাই হঠকারীভাবে খেয়ালখুশি মতো কাজ করে কেন? তার মস্তিষ্ক কি কোনো আঘাত পেয়েছে? এমন কি হতে পারে যে আমার উচ্চারিত বাক্যসমূহ সে উপলব্ধি করে না? আচরণকালে তার দৃষ্টি সর্বদাই সিধা সম্মুখপানে নিবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও অনাগত মানুষদের নিমিত্ত কোনো পথনির্মাণ ও দৃষ্টান্তস্থাপনে সে অক্ষম কেন? পিতরের পূর্বে কেউ কি কোনো দৃষ্টান্তস্থাপন করেছিল? পিতর কি আমার পথনির্দেশনার অধীনেই জীবনধারণ করেনি? তাহলে আজকের মানুষ একাজে অপারগ কেন? অনুসরণযোগ্য এক দৃষ্টান্ত থাকা সত্ত্বেও এখনো আমার ইচ্ছাপূরণে তারা অসমর্থ কেন? এতেই প্রতিপন্ন হয় যে মানুষের এখনো আমার উপর কোনো আস্থা নেই, সেকারণেই তারা আজকের এই শোচনীয় পরিস্থিতির দিকে চালিত হয়েছে।

ক্ষুদ্রকায় বিহঙ্গদের আকাশে উড্ডীন দেখে আমি আনন্দলাভ করি। যদিও আমার সম্মুখে ওরা নিজেদের সংকল্প স্থির করেনি এবং আমায় “প্রদান করা”-র মতো কোনো বাক্য ওদের নেই, তথাপি আমার প্রদত্ত বিশ্বে ওরা আনন্দ খুঁজে পায়। মানুষ কিন্তু আনন্দ পেতে অক্ষম, এবং তার মুখমণ্ডল বিষন্নতায় পরিপূর্ণ—এমন কি হতে পারে যে তার কাছে আমি অপরিশোধ্য কোনো ঋণে ঋণগ্রস্ত? তার মুখমণ্ডলে সর্বদাই অশ্রুরেখা অঙ্কিত কেন? শৈলগিরিতে প্রস্ফুটিত লিলিফুলদের দেখে আমি বিস্ময়বিমুগ্ধ হই; পুষ্পসকল ও তৃণশষ্পাদি নতি বরাবর প্রসারিত হয়, কিন্তু বসন্তঋতুর অভ্যাগমের পূর্বে লিলিফুলগুলি ধরিত্রীবক্ষে আমার মহিমায় গৌরবপ্রভা যুক্ত করে—মানুষ কি এবম্প্রকার কিছু অর্জনে সক্ষম? আমার প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই সে কি ধরাধামে আমার প্রতি সাক্ষ্যদানে সমর্থ? অতিকায় লাল ড্রাগনের দেশে আমার সুনামের স্বার্থে সে কি আত্মোৎসর্গ করতে সক্ষম? মনে হয় আমার উচ্চারণসমূহ বুঝি মানুষের প্রতি চাহিদায় পরিপ্লুত—এই চাহিদাগুলির কারণে সে আমায় ঘৃণা করে; তার শরীর অতি দুর্বল বলে আমার বাক্যগুলির সম্পর্কে সে শঙ্কিত, এবং আমার দাবিগুলি পূরণ করতে মূলগতভাবে সে অপারগ। ওষ্ঠ উন্মুক্ত করা মাত্র মানুষকে আমি দিগ্বিদিকে পলায়ন করতে দেখি, যেন-বা দুর্ভিক্ষ এড়িয়ে নিরাপদ দূরত্বে পলায়নে সচেষ্ট। মুখমণ্ডল আবৃত করে আমি যখন উল্টোদিকে ফিরি, মানুষ অচিরাৎ আতঙ্কতাড়িত হয়ে পড়ে। আমার প্রস্থান-আশঙ্কায় তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়; তাদের পূর্বধারণামতে, আমার বিদায়গ্রহণের দিনেই স্বর্গ থেকে বিপর্যয় নেমে আসবে, সেই দিন থেকেই তাদের দণ্ডভোগের সূত্রপাত হবে। তথাপি আমি মানুষের পূর্বধারণার ঠিক বিপরীত কার্য করি; আমি কখনোই মানুষের পূর্বধারণা অনুসারে আচরণ করিনি, এবং তাদের পূর্বধারণাকে কখনোই আমার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার সুযোগ দিইনি। আমি কার্যরত হওয়া মাত্র মানুষ অনাবৃত হয়ে পড়ে। অন্য কথায়, আমার কার্যাবলী মানুষের পূর্বধারণাসমূহের দ্বারা পরিমাপযোগ্য নয়। সৃষ্টির সময় থেকে আজ পর্যন্ত, আমার কার্যমধ্যে কেউ কখনো কোনো “নতুন মহাদেশ” আবিষ্কার করেনি; আমার কার্যের বিধানসমূহ কেউ কখনো উপলব্ধি করেনি, এবং কেউ কখনো সমাধানের নতুন কোনো পন্থাও উন্মোচিত করতে পারেনি। সেকারণেই, আজকের মানুষ সঠিক পথে প্রবেশে অসমর্থ রয়ে যায়—তাদের ঠিক এখানেই ঘাটতি, এবং এখানেই তাদের প্রবেশ করা উচিত। সৃষ্টির সময় থেকে আজ অবধি, পূর্বে কদাপি আমি এহেন কোনো কর্মোদ্যোগে প্রবৃত্ত হইনি। আমার অন্তিম সময়কালীন কার্যে আমি নিছকই বেশ কিছু নতুন খণ্ডাংশ যুক্ত করেছি। তথাপি, এমন প্রত্যক্ষগোচর এক পরিস্থিতিতেও, মানুষ এখনো আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করতে অক্ষম—সম্যক অর্থে এটিই কি তাদের ঘাটতি নয়?

নতুন কার্যে প্রবেশের পর, মানুষের কাছে আমার নতুন চাহিদা রয়েছে। মনে হয় অতীতের চাহিদাগুলি বুঝি মানুষের উপর কোনোই প্রভাব ফেলেনি, সেকারণেই সে তা বিস্মৃত হয়। আমার কার্য সম্পাদনের নতুন পদ্ধতিগুলি কী? মানুষের নিকট আমি কী চাহিদা পোষণ করি? তাদের অতীত কৃতকর্মগুলি আমার ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কি না, এবং তাদের ক্রিয়াকলাপগুলি আমার প্রার্থিত সীমার অভ্যন্তরে ছিল কি না, মানুষ নিজেরাই তা পরিমাপ করতে সক্ষম। সমস্তকিছু আমার ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করার কোনো প্রয়োজন নেই; নিজেদের আত্মিক উচ্চতা বিষয়ে তাদের একটি উপলব্ধি রয়েছে, এবং সেকারণেই স্বীয় অন্তরে সুস্পষ্টভাবে জানে কতদূর তারা করতে সক্ষম; এবং তাদেরকে আমার বিশদে জানানো অনাবশ্যক। আমার বাক্যোচ্চারণকালে কিছু মানুষ হয়তো পদস্খলিত হবে; পরিণামে মানুষ যাতে দুর্বল না হয়ে পড়ে তাই বাক্যাবলীর এই অংশটির কথন আমি পরিহার করে চলি। মানুষের অন্বেষণের ক্ষেত্রে তা কি আরো হিতকর নয়? মানুষের অগ্রগতির পক্ষে তা কি অধিকতর সহায়ক নয়? অতীতকে ভুলে সম্মুখবর্তী হওয়ার প্রয়াসে অনীহ, এমন কে-ই বা আছে? আমার কথন-প্রণালী যে ইতিমধ্যেই এক নতুন পরিসরে প্রবেশ করেছে, মানুষ তা উপলব্ধি করে কি না, আমার “বিবেচনাহীনতা”-র দরুন সে বিষয়ে আমি অবিদিত। তদুপরি, আমার কার্য আমায় এতখানি “ব্যাপৃত” রাখে বলে, আমার উচ্চারণের স্বরভঙ্গি মানুষ উপলব্ধি করে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার অবসর আমার ছিল না। সেকারণেই, আমি শুধু চাই যে মানুষ আমার প্রতি আরো বেশি সহানুভূতিশীল হোক। আমার কার্যে এতখানি “ব্যাপৃত” থাকার দরুন, মানুষকে পরিচালনার নিমিত্ত আমার কার্যের ঘাঁটিসমূহ স্বয়ং পরিদর্শন করতে আমি অপারগ, সুতরাং তাদের সম্বন্ধে আমার “যৎসামান্যই উপলব্ধি” রয়েছে। সংক্ষেপে, বাকি সমস্তকিছু নির্বিশেষে, অধুনা মানুষকে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে এক নব সূচনা ও নব পদ্ধতির ভিতর প্রবেশের দিকে চালিত করতে শুরু করেছি। আমার সকল উচ্চারণে, আমার বক্তব্যের মধ্যে মানুষ কৌতুক, হাস্যরস, এবং বিশেষত বিদ্রূপের এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর লক্ষ্য করেছে। এর ফলে, আমার ও মানুষের মধ্যের সঙ্গতিটি অজান্তেই বিঘ্নিত হয়, এবং মানুষের মুখমণ্ডলে ঘন মেঘের আচ্ছাদন নেমে আসে। আমি অবশ্য এর দ্বারা দমিত না হয়ে নিজ কার্য অব্যাহত রাখি, কারণ আমার যাবতীয় বাক্য ও কার্য হল আমার পরিকল্পনার এক অপরিহার্য অঙ্গ; আমার মুখনিঃসৃত সকল উক্তি মানুষের সহায়তা করে, এবং আমি যা সম্পন্ন করি তা-র কোনোকিছুই তুচ্ছ নয়; আমার সকল কার্য সমুদয় মানুষের উন্নতিসাধন করে। মানুষ ঘাটতিযুক্ত বলেই তাদের আমি স্বাধীনতা দিই ও কথন অব্যাহত রাখি। কিছু মানুষ হয়তো তাদের কাছে আমার নতুন চাহিদাস্থাপনের নিমিত্ত মরিয়া হয়ে অপেক্ষারত। তা-ই যদি হয়, তবে আমি তাদের প্রয়োজন পূরণ করি। কিন্তু একটি বিষয় তোমাদের অবশ্যই আমায় স্মরণ করাতে হবে: কথনকালে আমি আশা পোষণ করি যে মানুষ অধিকতর অন্তর্দৃষ্টি লাভ করবে। প্রত্যাশা করি যে তারা অধিকতর বোধশক্তিসম্পন্ন হয়ে উঠবে, যাতে তারা আমার বাক্য থেকে আরো বেশি মাত্রায় অর্জন করতে এবং এইভাবে আমার চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়। পূর্ববর্তীকালে, গির্জাগুলিতে মানুষের প্রচেষ্টা কেন্দ্রীভূত ছিল মোকাবিলা ও ভঙ্গ হওয়ার দিকে। আমার বাক্যসমূহ ভোজন ও পান করা হতো সেগুলির লক্ষ্য ও উৎসের বিষয়ে উপলব্ধির উপর ভিত্তি করে—কিন্তু বর্তমান সময় অতীতের মতো নয়, অধুনা মানুষ আমার উচ্চারণসমূহের উৎস অনুধাবন করতে নিতান্তই অপারগ, সেহেতু আমার দ্বারা মোকাবিলা ও ভঙ্গ হওয়ার কোনো সুযোগ তাদের নেই, কারণ শুধুমাত্র আমার বাক্যসমূহ ভোজন ও পান করতেই তারা তাদের সকল শক্তি ব্যয় করে ফেলেছে। কিন্তু এমনকি এই পরিস্থিতিতেও, আমার চাহিদাগুলি পূরণ করতে তারা অসমর্থই রয়ে যায়, সুতরাং তাদের উপর আমি নতুন চাহিদা স্থাপন করি: আমার সঙ্গে একত্রে তাদের বিচারের মধ্যে প্রবেশ করতে বলি, শাস্তির মধ্যে প্রবেশ করতে বলি। তথাপি একটি বিষয় তোমাদের স্মরণ করানো যাক: এর উদ্দেশ্য মানুষের প্রাণহরণ করা নয়, বরং এ হল আমার কার্যের প্রয়োজন, কারণ, চলতি পর্যায়ে, আমার বাক্যাবলী মানুষের কাছে নিতান্তই দুর্বোধ্য, এবং আমার সঙ্গে সহযোগিতা করতে মানুষ অক্ষম—কিছুই করণীয় নেই! মানুষকে আমি আমার সঙ্গে একত্রে নতুন পদ্ধতির মধ্যে প্রবেশ করাতে পারি। এছাড়া কী-ই বা করার রয়েছে? মানুষের ঘাটতিসমূহের দরুন, মানুষ যে স্রোতে প্রবেশ করে আমাকেও অবশ্যই তাতে প্রবেশ করতে হবে—আমিই কি সে-ই তিনি নন যিনি মানুষকে নিখুঁত করে তুলবেন? আমিই কি এই পরিকল্পনার প্রণেতা নই? অন্য চাহিদাটি দুরূহ না হলেও, প্রথমটির তুলনায় মোটেই তা গৌণ নয়। অন্তিম সময়ের মানবগোষ্ঠীর মাঝে আমার কার্যটি এক নজিরবিহীন উদ্যোগ, এবং সেকারণেই, সকল মানুষকে অবশ্যই আমার খাতিরে সর্বশেষ যন্ত্রণাটি ভোগ করতে হবে, আমার মহিমা যাতে মহাকাশকে পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে। তোমরা কি আমার ইচ্ছা উপলব্ধি করো? মানুষের কাছে এটিই আমার অন্তিম চাহিদা, অর্থাৎ, আমি আশা রাখি যে অতিকায় লাল ড্রাগনের সম্মুখে সকল মানুষ আমার বলিষ্ঠ ও আলোড়ন-সৃষ্টিকারী সাক্ষ্য বহন করতে পারবে, চূড়ান্তবারের জন্য আমার নিমিত্ত আত্মবলিদান দিতে, এবং সর্বশেষবার আমার চাহিদা পূরণ করতে সমর্থ হবে। তোমরা সত্যিই কি তা করতে সক্ষম? অতীতে আমার হৃদয়কে সন্তুষ্ট করতে তোমরা অপারগ ছিলে—অন্তিম দৃষ্টান্তে তোমরা কি সেই ছক ভাঙার ক্ষমতা রাখো? মানুষকে আমি চিন্তাভাবনা করার সুযোগদান করি; আমায় চূড়ান্ত কোনো জবাব দেওয়ার আগে তাদের সতর্কভাবে বিচারবিবেচনা করতে দিই—এমন করা কি অন্যায়? আমি মানুষের উত্তরের অপেক্ষায় থাকি, আমি তার “জবাবপত্র”-র জন্য প্রতীক্ষারত—তোমাদের কি আমার চাহিদা পূরণ করার মতো প্রত্যয় রয়েছে?

এপ্রিল ২০, ১৯৯২

পূর্ববর্তী: অধ্যায় ৩৩

পরবর্তী: অধ্যায় ৩৫

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন