তোমরা সকলে চরিত্রের দিক থেকে অত্যন্ত অভব্য!

তোমরা সকলেই আভিজাত্যের আসনে বসে তোমাদেরই সমগোত্রীয় তরুণ প্রজন্মের মানুষদের শিক্ষা দিচ্ছ, এবং তাদের সবাইকে তোমাদের সাথে বসিয়েছ। তোমরা প্রায় জানই না যে তোমাদের “উত্তরপুরুষরা” অনেক আগেই শ্বাস হারিয়েছে এবং আমার কাজ হারিয়েছে। আমার মহিমা প্রাচ্যভূমি থেকে প্রতীচ্যভূমিতে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে, তবুও যখন তা পৃথিবীর শেষতম প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমুখপানে উদীয়মান এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করে, তখন আমি প্রাচ্যের মহিমা প্রতীচ্যে নিয়ে আসব, যার ফলে, যে অন্ধকারের মানুষেরাপ্রাচ্যে আমাকে পরিত্যাগ করেছিল, তারা তখন থেকে প্রদীপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে। যখন তা ঘটবে, তখন তোমরা ছায়াময় উপত্যকায় বাস করবে। যদিও আজকাল মানুষ আগের চেয়ে একশ' গুণ ভালো, তবুও তারা আমার প্রয়োজন পূরণ করতে পারে না, এবং তারা এখনও আমার মহিমার সাক্ষ্য নয়। তোমরা যে আগের চেয়ে শতগুণ ভালো হয়ে উঠতে সক্ষম এটা সম্পূর্ণরূপে আমার কাজের পরিণতি; এটা পৃথিবীতে আমার কাজের ফল স্বরূপ। তবে, আমি এখনও তোমাদের কথা ও কাজ, এবং সেইসাথে তোমাদের চরিত্র সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ, এবং তোমরা আমার সামনে যেরকম আচরণ কর তাতে আমি অসম্ভব বিরক্তি বোধ করি, কারণ আমার সম্পর্কে তোমাদের কোন উপলব্ধিই নেই। তাহলে, তোমরা কীভাবে আমার মহিমায় জীবন যাপন করতে পারবে, আর আমার ভবিষ্যতের কাজের প্রতি অনুগত থাকবে? তোমাদের বিশ্বাস খুবই চমৎকার; তোমরা বলো যে আমার কাজের জন্য তোমরা তোমাদের সারাটা জীবন ব্যয় করতে ইচ্ছুক, আর তোমরা তার জন্য জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করতে চাও, কিন্তু তোমাদের স্বভাবের তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি। তোমাদের প্রকৃত আচরণ অত্যন্ত জঘন্য হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের কথায় অহংকার প্রকাশ পায়। যেন মানুষের জিহ্বা ও ঠোঁট স্বর্গে থাকলেও, তাদের পা রয়েছে পৃথিবীর মাটিতেই, আর তার ফলে তাদের কথা, কাজ এবং তাদের সুনাম এখনও ক্ষুন্ন হয়। তোমাদের সুনাম নষ্ট হয়েছে, তোমাদের আচার-আচরণ খারাপ, তোমাদের কথা বলার ভঙ্গি নিম্নমানের এবং তোমাদের জীবন ঘৃণ্য; এমনকি তোমাদের সমগ্র মানবতাও নিকৃষ্ট নিম্নতায় নিমজ্জিত হয়েছে। তোমরা অন্যদের প্রতি সংকীর্ণ মনোভাব পোষণ কর, এবং ছোটখাটো প্রতিটি বিষয় নিয়ে কলহ কর। তোমরা নিজেদের খ্যাতি এবং মর্যাদা নিয়ে বিবাদ কর, এমনকি তোমরা এর জন্য নরকে এবং আগুনের হ্রদে পর্যন্ত নেমে যেতে ইচ্ছুক। তোমরা যে পাপপূর্ণ তা স্থির করতে তোমাদের বর্তমান কথা এবং কাজই আমার পক্ষে যথেষ্ট। তোমরা যে ন্যায়পরায়ণ নও তা স্থির করতে আমার কাজের প্রতি তোমাদের মনোভাবই আমার পক্ষে যথেষ্ট, এবং তোমাদের সমস্ত স্বভাবই এই ইঙ্গিত করার জন্য যথেষ্ট যে তোমরা হলে কলুষিত আত্মা যা কদর্যতায় পূর্ণ। তোমরা যা যা প্রতিভাত কর এবং প্রকাশ কর তা একথা বলার জন্য যথেষ্ট যে তোমরা এমন মানুষ যারা অশুচি আত্মার রক্ত পান করেছে। যখন রাজ্যে প্রবেশের কথা উল্লেখ করা হয়, তখন তোমরা নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ কর না। তোমরা কি বিশ্বাস কর যে তোমরা এখন যেভাবে আছ তা তোমাদের পক্ষে আমার স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট? তোমরা কি বিশ্বাস কর যে তোমাদের নিজেদের কথা এবং কাজ আমার দ্বারা পরীক্ষিত হওয়ার আগেই তোমরা আমার কর্ম ও বাক্যের পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করতে পারবে? কে আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারে? তোমাদের ঘৃণ্য, নীচ আচরণ এবং কথাবার্তা কীভাবে আমার দৃষ্টি এড়াতে পারে? সেইসব অশুচি আত্মার রক্ত পান করা আর তাদের মাংস ভক্ষণ করার জন্য তোমার জীবন আমার দ্বারা নির্ধারিত, কারণ তোমরা প্রতিদিন আমার সামনে তাদেরই অনুকরণ কর। আমার সামনে, তোমাদের আচরণ বিশেষভাবে খারাপ, তাহলে আমি কেন তোমাদের জঘন্য বলে মনে করব না? তোমাদের কথায় রয়েছে কলুষিত আত্মাদের অশুচিতা: যারা যাদুবিদ্যায় লিপ্ত এবং যারা বিশ্বাসঘাতক এবং যারা পাপিষ্ঠদের রক্ত পান করে সেই তাদের মতোই তোমরাও প্রতারণা কর, লুকিয়ে থাক এবং চাটুকারিতা কর। মানুষের সমস্ত অভিব্যক্তিই অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণতাহীন, তাহলে ন্যায়পরায়ণরা যে পবিত্র ভূমিতে রয়েছে সেখানে সকল মানুষকে কীভাবে স্থাপন করা যায়? তুমি কি মনে কর যে তোমার সেই ঘৃণ্য আচরণ তোমাকে সেই ন্যায়পরায়ণতাহীনদের তুলনায় পবিত্র বলে পৃথক করতে পারে? তোমার সর্পের ন্যয় জিহ্বাই অবশেষে তোমার এই সর্বনাশা আর ঘৃণ্য কাজ সম্পন্নকারী শরীরকে ধ্বংস করবে, এবং অশুচি আত্মার রক্ত মাখা তোমার সেই হাতগুলি শেষ পর্যন্ত তোমার আত্মাকে নরকে টেনে নিয়ে যাবে। তাহলে, তোমার নোংরা হাত পরিষ্কার করার এই সুযোগ পাওয়ায় তুমি উৎফুল্ল হয়ে ওঠ না কেন? আর তোমার যে জিহবা ন্যায়পরায়ণতাহীন বাক্য উচ্চারণ করে, তাকে কেটে ফেলার এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করো না কেন? এমনটা কি হতে পারে যে তুমি তোমার হাত, জিহ্বা এবং ঠোঁটের খাতিরে নরকের আগুনে কষ্ট সহ্য করতে চাও? আমি উভয় চোখ দিয়ে সকলের হৃদয়ের উপর নজর রাখি, কারণ মানবজাতিকে সৃষ্টি করার অনেক আগে, আমি আমার হাতে তাদের হৃদয়গুলিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলাম। আমি অনেক আগেই মানুষের হৃদয়ের স্বরূপ দেখেছিলাম, তাহলে তাদের চিন্তাভাবনা কীভাবে আমার চোখ এড়িয়ে যাবে? আমার আত্মা দ্বারা দগ্ধ হওয়া থেকে বাঁচার জন্য তাদের কি যথেষ্ট দেরি হয়ে যায়নি?

তোমার ওষ্ঠ কপোতের চেয়েও স্নেহময়, কিন্তু তোমার হৃদয় সেই পুরাতন সর্পের চেয়েও অশুভ। তোমার ওষ্ঠ লেবাননের নারীদের মতই সুন্দর, তবুও তোমার হৃদয় তাদের চেয়ে অধিক স্নেহপূর্ণ নয়, এবং তা অবশ্যই কনানীয়দের সৌন্দর্যের সাথে তুলনীয় নয়। তোমার হৃদয় এতটাই বিশ্বাসঘাতক! আমি ঘৃণা করি কেবলমাত্র ন্যায়পরায়ণহীনদের ওষ্ঠ এবং হৃদয়কে, এবং মানুষের কাছ থেকে আমার প্রয়োজন সন্তদের কাছ থেকে আমার প্রত্যাশার চেয়ে কখনই বেশি নয়; এটা ঠিক যে আমি অধার্মিকদের কুকর্মের জন্য ঘৃণা অনুভব করি, এবং আমি আশা করি যে তারা তাদের আবিলতা দূর করতে এবং তাদের বর্তমান দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ পেতে সক্ষম হবে যাতে তারা সেই সব অধার্মিকদের থেকে দূরে সরে যেতে পারে এবং ধার্মিকদের সঙ্গে জীবন কাটাতে ও পবিত্র হয়ে উঠতে পারে। তোমরাও আমার মতো একই পরিস্থিতিতে আছ, তবুও তোমরা কলুষে আচ্ছন্ন; আদিতে সৃষ্ট মানবের সাথে ক্ষুদ্রতম সাদৃশ্যও তোমরা বহন কর না। উপরন্তু, তোমরা যেহেতু প্রতিদিন সেই অশুচি আত্মাদের অনুকরণ কর, তারা যা করে তাই কর এবং তারা যা বলে তাই বল, তাই তোমাদের সমস্ত অঙ্গ – এমনকি তোমাদের জিহ্বা এবং ওষ্ঠ পর্যন্ত – তাদের অপবিত্র জলে ভিজে গিয়েছে, এতটাই, যে তোমরা এই ধরণের কলঙ্ক দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ঢেকে গিয়েছ, আর তোমাদের একটি অংশও আমার কর্মে ব্যবহার করা যাবে না। এ অত্যন্ত হৃদয়বিদারক! তোমরা অশ্ব এবং গবাদি পশুদের এমনই এক জগতে বসবাস কর, তবুও তোমরা আদপেই অস্বস্তি বোধ কর না; তোমরা আনন্দে পূর্ণ এবং অবাধে আর স্বচ্ছন্দ্যে বাস কর। তোমরা সেই অপবিত্র জলে সাঁতার কাটছ, অথচ আসলে অনুভবই করতে পার না যে তোমরা এমন এক দুর্দশার মধ্যে পড়েছ। প্রতিদিন, তোমরা অশুচি আত্মার সংস্পর্শে আসো এবং “বিষ্ঠা” সহযোগে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগরক্ষা কর। তোমাদের জীবন অত্যন্তই কুরুচিপূর্ণ, তবুও তুমি আসলে সচেতন নও যে মানব জগতে তোমার একেবারেই অস্তিত্ব নেই এবং তুমি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। তুমি কি জানো না যে সেইসব অশুচি আত্মা অনেক আগেই তোমার জীবনকে পদদলিত করেছিল, কিংবা তোমার চরিত্র অনেক আগেই অপবিত্র জল দ্বারা কলঙ্কিত হয়ে গিয়েছিল? তুমি কি মনে কর যে তুমি একটি পার্থিব স্বর্গদেশে বসবাস করছ এবং সুখের মাঝে রয়েছ? তুমি কি জান না যে তুমি অশুচি আত্মাদের সঙ্গে জীবনযাপন করেছ এবং তাদের তোমার জন্য প্রস্তুত করা সব কিছুর সঙ্গে সহাবস্থান করে এসেছ? কিভাবে তোমার জীবনযাপনের কোনও অর্থ থাকতে পারে? কিভাবেই বা তোমার জীবনের কোন মূল্য থাকতে পারে? তুমি আজ অবধি তোমার পিতা-মাতার জন্য ছুটে বেড়াতে ব্যস্ত, অশুচি আত্মার পিতা-মাতা, কিন্তু তোমার আদপেই কোন ধারণা নেই যে, যে অশুচি আত্মার পিতা-মাতা তোমাকে জন্ম দিয়েছে এবং বড় করেছে তারাই তোমাকে ফাঁদে ফেলছে। তাছাড়া, তুমি জান না যে তোমার যাবতীয় কলুষ আসলে তারাই তোমাকে দিয়েছিল; তুমি শুধু জান যে তারা তোমাকে “আনন্দ” এনে দিতে পারে, তারা তোমাকে শাস্তি দেয় না বা তারা তোমাকে বিচার করে না এবং বিশেষ করে তারা তোমাকে অভিশাপ দেয় না। তারা কখনই তোমার উপর প্রবল ভাবে রুষ্ট হয়নি, বরং তোমাকে স্নেহ এবং দয়ার চোখে দেখেছে। তাদের কথাগুলি তোমার হৃদয়কে লালন করে এবং তোমাকে মোহিত করে রাখে যাতে তুমি বিভ্রান্ত হও এবং, এটি উপলব্ধি না করেই, তুমি তাদের নিষ্ক্রমণপথ এবং সেবকে পরিণত হয়ে তাদের দ্বারা প্রতারিত হও আর তাদের সেবায় আগ্রহী হয়ে ওঠ। তোমার কোনোই অভিযোগ নেই, বরং তুমি তাদের জন্য কুকুরের মতো, অশ্বের মতো কাজ করতে চাও; তুমি তাদের দ্বারা প্রতারিত হও। এই কারণে, আমি যে কর্ম করি তার প্রতি তোমার একেবারেই কোন প্রতিক্রিয়া নেই। আশ্চর্যের কিছু নেই যে তুমি সর্বদাই গোপনে আমার আঙ্গুলের মধ্য দিয়ে পিছলে যেতে চাও, আর এতেও আশ্চর্যের কিছু নেই যে তুমি সর্বদাই মিষ্ট শব্দ ব্যবহার করে শঠতার দ্বারা আমার কাছ থেকে অনুগ্রহ পেতে চাও। দেখা যাচ্ছে, তোমার আগে থেকেই অন্য কোনো পরিকল্পনা, অন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল। তুমি সর্বশক্তিমান হিসাবে আমার কর্মের সামান্যই দেখতে পাও, কিন্তু আমার বিচারের এবং শাস্তি প্রদানের বিষয়ে তোমার ন্যূনতম জ্ঞানও নেই। আমার শাস্তিপ্রদান কখন শুরু হয়েছিল সে বিষয়ে তোমাদের কোন ধারণাই নেই; তুমি শুধু আমাকে ঠকাতে জানো – তবে তুমি জানো না যে আমি মানুষের কোনোরকম লঙ্ঘনই সহ্য করব না। যেহেতু তুমি ইতিমধ্যেই আমার সেবা করার সংকল্প করেছ, তাই আমি তোমাকে যেতে দেব না। আমি একজন ঈর্ষান্বিত ঈশ্বর, এবং আমি এমন একজন ঈশ্বর যে মানবতার প্রতি ঈর্ষান্বিত। যেহেতু তুমি ইতিমধ্যেই বেদীর উপর নিজের প্রতিশ্রুতি রেখেছ, তাই আমি আমার চোখের সামনে দিয়ে তোমার পলায়ন সহ্য করব না এবং তোমার দ্বারা দুই প্রভুর সেবা আমি সহ্য করব না। তুমি কি ভেবেছিলে যে আমার বেদীতে এবং আমার চোখের সামনে তোমার প্রতিশ্রুতি রাখার পরেও তুমি অপর কাউকে ভালোবাসতে পারো? আমি কীভাবে মানুষকে এমনভাবে আমাকে বোকা বানাবার অনুমতি দিতে পারি? তুমি কি ভেবেছিলে যে তুমি তোমার জিহ্বা দ্বারা উদ্দেশ্যহীন ভাবে আমার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও অঙ্গীকারবদ্ধ হতে পারো? তুমি কীভাবে আমার সিংহাসনের নামে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও, যে সিংহাসন হলো আমার, যে কিনা সর্বোচ্চ? তুমি কি ভেবেছিলে যে তোমার শপথের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই বিলীন হয়ে গিয়েছে? আমি তোমাদের বলি: তোমাদের দেহ বিলীন হয়ে গেলেও, তোমাদের করা শপথগুলি বিলীন হবে না। সব শেষে, আমি তোমাদের শপথের ভিত্তিতে তোমাদের তিরস্কার করব। তবে, তোমরা বিশ্বাস কর যে তোমরা আমার সামনে তোমাদের কথা রাখার মাধ্যমে আমার সাথে মোকাবিলা করতে পারবে, এবং তোমাদের হৃদয় অশুচি এবং অশুভ আত্মাদের সেবা করতে পারে। আমার ক্রোধ কীভাবে সেইসব কুকুরের মতো, শূকরের মতো মানুষকে সহ্য করবে যারা আমাকে প্রতারণা করে? আমাকে অবশ্যই আমার পরিচালনামূলক আজ্ঞাসমূহ পালন করতে হবে, এবং অশুচি আত্মাদের হাত থেকে আমাকে ফিরিয়ে আনতে হবে সেই সমস্ত সাধারণ, “ন্যায়পরায়ণ” ব্যক্তিদের যারা আমার উপর বিশ্বাস রাখে, যাতে তারা সুশৃঙ্খলভাবে আমার জন্য “অপেক্ষা” করতে পারে, আমার বলদে, আমার অশ্বে পরিণত হতে পারে, এবং আমার হাতে সংহার হওয়ার দয়ায় থাকে। আমি তোমাকে দিয়ে তোমার পূর্বের সংকল্প গ্রহণ করাব এবং পুনরায় আমার সেবা করাব। আমাকে প্রতারণা করে এমন কোনো সৃষ্টিকে আমি বরদাস্ত করব না। তুমি কি ভেবেছিলে যে আমার সামনে তুমি উদ্দেশ্যপ্রসূত ভাবে অনুরোধ করতে এবং মিথ্যা বলতে পার? তুমি কি মনে কর যে আমি তোমার কথা ও কাজ শুনিনি বা দেখিনি? তোমার কথা আর কাজ আমার দৃষ্টিতে ধরা পড়ত না ভেবেছ? আমি কীভাবে মানুষকে এইভাবে আমাকে প্রতারণা করার অনুমতি দিতে পারি?

আমি তোমাদের মাঝে থেকেছি, এতোগুলি মরশুম যাবৎ তোমাদের সাথে যুক্ত রয়েছি; আমি দীর্ঘকাল তোমাদের মাঝে বাস করেছি, তোমাদের সাথেই জীবনযাপন করেছি। তোমাদের ঘৃণ্য আচরণের কতটা আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছে? তোমাদের সেই হৃদয়গ্রাহী কথাগুলো প্রতিনিয়ত আমার কানে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে; তোমাদের লক্ষ লক্ষ আকাঙ্খা আমার বেদীর উপরে রেখে দেওয়া হয়েছে – যা গুনে শেষ করা যায় না। তবে, তোমাদের উৎসর্গ আর তোমাদের ব্যয় করার ক্ষেত্রে, তোমরা এক বিন্দুও দাও না। আমার বেদীতে তোমরা এক ফোঁটা আন্তরিকতাও অর্পণ কর না। আমার প্রতি তোমাদের বিশ্বাসের ফল কোথায়? তোমরা আমার কাছ থেকে অফুরন্ত কৃপা লাভ করেছ, এবং তোমরা স্বর্গ থেকে অন্তহীন রহস্য দেখেছ; আমি এমনকি তোমাদের স্বর্গের শিখাও দর্শন করিয়েছি, কিন্তু তোমাদের জ্বালানোর মত হৃদয় আমার ছিল না। তবুও, বিনিময়ে তোমরা আমাকে কতটা দিয়েছ? তোমরা আমাকে কতটা দিতে ইচ্ছুক? আমি তোমাদের হাতে যে খাদ্য তুলে দিয়েছি, তুমি আবার আমাকেই তা অর্পণ কর, এমনকি এতদূরও বল যে এটা তোমার নিজের কঠোর পরিশ্রমে, ঘাম ঝরাবার বিনিময়ে পাওয়া এবং যা কিছু তোমার তা তুমি আমাকে অর্পণ করছ। এটা তোমার অজ্ঞাত থাকে কী করে যে আমার কাছে তোমার “অবদানগুলি” সবই আমারই বেদী থেকে চুরি করা জিনিস? তাছাড়া এখন যে তুমি এগুলি আমাকে অর্পণ করছ, এতে কি আমাকে ঠকানো হচ্ছে না? তোমার কী করে অজানা থাকতে পারে যে আজ আমি যা কিছু উপভোগ করছি তা সবই আমার বেদীতে অর্পিত নৈবেদ্য, সেগুলি যে তুমি তোমার কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা অর্জন করে তারপর আমাকে উৎসর্গ করেছ তা নয়? তোমরা কার্যত এইভাবে আমাকে ঠকাবার সাহস কর, তাহলে আমি তোমাদের কীভাবে ক্ষমা করব? তোমরা কীভাবে আশা করতে পারো যে আমি আর এটা সহ্য করব? আমি তোমাদের সবকিছু দিয়েছি। আমি তোমাদের জন্য সবকিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি, তোমাদের চাহিদা পূরণ করেছি এবং তোমাদের চোখ খুলে দিয়েছি, তবুও তোমরা নিজেদের বিবেককে উপেক্ষা করে এভাবে আমার সঙ্গে প্রতারণা করছ। আমি নিঃস্বার্থভাবে তোমাদের সবকিছু দিয়েছি, যাতে তোমরা কষ্ট পেলেও, স্বর্গ থেকে আমার নিয়ে আসা সবকিছুই তোমরা আমার কাছ থেকে অর্জন করেছ। তা স্বত্বেও, তোমাদের কোন নিবেদন নেই, এবং তোমরা যদি খুব ক্ষুদ্র কোন অবদানও রাখ, তোমরা পরে আবার আমার সাথে “হিসাব মিলিয়ে নেওয়ার” চেষ্টা কর। তোমার অবদানের মূল্য কি শূন্য হয়ে যাবে না? তুমি আমাকে যা দিয়েছ তা এক কণা বালি মাত্র, অথচ আমার কাছে তুমি এক তাল সোনা চেয়েছ। তোমার এই আচরণ কি একেবারেই অন্যায্য নয়? আমি তোমাদের মাঝে কাজ করি। আমাকে তোমাদের যে এক দশমাংশ অর্পণ করা উচিত তার কোনও চিহ্নই নেই, কোনও অতিরিক্ত ত্যাগ স্বীকার করার কথা তো ছেড়েই দাও। অধিকন্তু, নিষ্ঠাবানদের এক দশমাংশ অবদানও পাপিষ্ঠরা ছিনিয়ে নেয়। তোমরা কি সকলেই আমার থেকে দূরে সরে যাওনি? তোমরা কি আমার প্রতি বিদ্বেষী নও? তোমরা সবাই কি আমার বেদী ধ্বংস করছ না? আমার চোখে এই ধরনের মানুষ কীভাবে সম্পদ হিসাবে লক্ষিত হতে পারে? তারা কি সেইসব শূকর ও কুকুর নয় যাদের আমি ঘৃণা করি? তোমাদের অন্যায়কে আমি কীভাবে সম্পদ হিসাবে উল্লেখ করতে পারি? আমার কর্ম আসলে কার জন্য সম্পন্ন হয়? এমনটা কি হতে পারে যে এর উদ্দেশ্য হল শুধুমাত্র আমার কর্তৃত্ব প্রকাশ করার লক্ষ্যে তোমাদের সবাইকে চরম আঘাত করা? তোমাদের জীবন কি আমার কাছ থেকে আগত একটিমাত্র শব্দের উপর নির্ভর করে না? কেন আমি তোমাদের শুধু নির্দেশ দেওয়ার জন্য শব্দ ব্যবহার করছি, এবং এর আগেই তোমাদের চরম আঘাত করার জন্য শব্দগুলিকে সত্যে পরিণত করিনি? আমার কথা ও কাজের উদ্দেশ্য কি শুধুই মানবজাতিকে চরম আঘাত করা? আমি কি এমন একজন ঈশ্বর যে নির্বিচারে নিরপরাধীকে হত্যা করে? এই মুহুর্তে, তোমাদের মধ্যে কতজন মানব জীবনের সঠিক পথের সন্ধানে নিজের সমস্ত সত্তাটুকু নিয়ে আমার সামনে আসছ? আমার সামনে রয়েছে শুধুই তোমাদের দেহ; তোমাদের হৃদয় এখনও অনেকাংশেই, এবং আমার থেকে অনেক, অনেকটাই দূরে রয়েছে। যেহেতু তোমরা জান না যে আমার কর্ম আসলে কী, তাই তোমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষই রয়েছে যারা আমার কাছ থেকে চলে যেতে চায় এবং নিজেকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়, তার বদলে এমন একটি স্বর্গে বাস করার আশা করে যেখানে কোনও শাস্তি প্রদান করা হয় না বা যেখানে কোনো বিচার নেই। মানুষ কি মনে মনে এটাই চায় না? আমি অবশ্যই তোমাকে বাধ্য করার চেষ্টা করছি না। তুমি যে পথটি গ্রহণ কর তা তোমার নিজের পছন্দ। আজকের পথটির সঙ্গে রয়েছে বিচার এবং অভিশাপ, তবে তোমাদের সকলের জানা উচিত যে আমি তোমাদের যা যা দিয়েছি – তা সে বিচারই হোক বা শাস্তি – সেগুলিই হল সর্বোত্তম উপহার যা আমি তোমাদের দিতে পারি এবং সেগুলি সবই তোমাদের জরুরী প্রয়োজন।

পূর্ববর্তী: সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি মানুষকে মুক্ত করারও কাজ

পরবর্তী: বিধানের যুগের কার্য

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন