ঈশ্বরের কাজের দর্শন (২)
অনুগ্রহের যুগে অনুশোচনার সুসমাচার প্রচারিত হয়েছিল এবং তা জানিয়েছিল যে মানুষ যদি বিশ্বাসী হয় তবেই তাকে উদ্ধার করা হবে। বর্তমানে পরিত্রাণের পরিবর্তে শুধুমাত্র জয়লাভ এবং নিখুঁতকরণের কথা বলা হয়। কখনো এটা বলা হয়নি, যদি একজন ব্যক্তি বিশ্বাস করে তবে তার সমগ্র পরিবার আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়, অথবা যাকে একবার উদ্ধার করা হয় সে সর্বদাই উদ্ধার পায়। বর্তমানে কেউই এই কথাগুলি বলে না এবং এই জিনিসগুলি সেকেলে হয়ে গেছে। যীশু যে সময়ে কাজ করতেন, তাঁর কাজ ছিল সমগ্র মানবজাতির মুক্তি দান। তাঁর ওপর যারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের সকলের পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল; যতক্ষণ তুমি তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখেছো, তিনি তোমায় মুক্তি দিয়েছেন; তুমি যদি তাঁকে বিশ্বাস করে থাকো, তাহলে তুমি আর পাপী ছিলে না, পাপের থেকে তুমি অব্যাহতি পেয়েছিলে। উদ্ধার পাওয়া এবং বিশ্বাসের দ্বারা সমর্থিত হওয়া বলতে এটাই বোঝায়। তবুও, যারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু বিদ্রোহী এবং ঈশ্বরবিরোধী থেকে গিয়েছিল, যাদের তখনও ধীরে ধীরে অপসারণ করা বাকি ছিল। পরিত্রানের অর্থ এই ছিল না যে মানুষ সম্পূর্ণরূপে যীশুর দ্বারা অর্জিত হয়েছিল, এর অর্থ ছিল, মানুষ আর পাপী ছিল না, তাকে তার পাপের জন্য ক্ষমা করা হয়েছিল। তুমি বিশ্বাসী হলে তোমার আর কোনো পাপ ছিল না। এই সময়ে যীশু এমন অনেক কাজ করেছিলেন যেগুলি তাঁর শিষ্যদের বোধগম্য হয় নি, এমন অনেক কথা বলেছিলেন যা মানুষেরা উপলব্ধি করতে পারে নি। এর কারণ হল, সেই সময়ে তিনি নিজের কথার কোনো ব্যাখ্যা দেন নি। তাই তাঁর প্রস্থানের অনেক বছর পর মথি যীশুর জন্য একটি বংশতালিকা নির্মাণ করেছিল এবং অন্যান্যরাও অনেক কাজ করেছিল যেগুলি মানুষের ইচ্ছাতেই হয়েছিলো। যীশু মানুষদের নিখুঁত করতে বা অর্জন করতে আসেন নি, বরং একটি পর্যায়ের কাজ করতে এসেছিলেন: স্বর্গরাজ্যের সুসমাচারের প্রচার এবং ক্রুশবিদ্ধকরণের কাজ সম্পূর্ণ করা। এবং তাই, একবার যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার পরেই, তাঁর কাজ সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমান পর্যায়ে—বিজয়ের কাজে—আরও বাক্য অবশ্যই বলতে হবে, আরও কাজ অবশ্যই করতে হবে এবং এতে অবশ্যই অনেক প্রক্রিয়া থাকতে হবে। তাই যীশু এবং যিহোবার কাজের রহস্যও প্রকাশ করা উচিত, যাতে সমস্ত মানুষ নিজেদের বিশ্বাসে বোধগম্যতা এবং স্পষ্টতা লাভ করে, কারণ এটি অন্তিম সময়ের কাজ, এবং অন্তিম সময় হল ঈশ্বরের কাজের শেষ, কাজ সমাপ্তির সময়। কাজের এই পর্যায়টি তোমাকে যিহোবার আইন এবং যীশুর মুক্তির বিষয়টি ব্যাখ্যা করবে যাতে তুমি ঈশ্বরের ছয়-হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনার সম্পূর্ণ কাজটি উপলব্ধি করতে পারো এবং এর সমস্ত তাৎপর্য এবং সারসত্য উপলব্ধি করতে পারো, এবং এই ছয়-হাজার বছরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা, যীশুর সমস্ত কাজের উদ্দেশ্য, তাঁর বলা বাক্যের উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারো, এমনকি বাইবেলের প্রতি তোমার অন্ধ বিশ্বাস এবং ভক্তিও উপলব্ধি করতে পারো। এর সাহায্যে এই সমস্ত কিছুই তুমি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে। তুমি যীশুর কাজ এবং বর্তমানে ঈশ্বরের কাজ উভয়ই বুঝতে পারবে; সম্পূর্ণ সত্য, জীবন ও পথ দেখতে পাবে ও উপলব্ধি করবে। যীশুর কাজের পর্যায়ে, যীশু সমাপ্তির কাজ সম্পন্ন না করেই কেন প্রস্থান করেছিলেন? কারণ যীশুর কাজের পর্যায়টি সমাপ্তির কাজ ছিল না। ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার সময়, তাঁর বাক্যেরও পরিসমাপ্তি হয়েছিল; তাঁর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর, তাঁর কাজ সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত হয়। বর্তমান পর্যায়টি ভিন্ন: তাঁর বাক্য শেষ পর্যন্ত বলা হয়ে যাওয়ার পর এবং ঈশ্বরের সমস্ত কাজ শেষ হওয়ার পরেই কেবলমাত্র তাঁর কাজ শেষ হবে। যীশুর কাজের পর্যায়ে, এমন অনেক বাক্য ছিল যা অব্যক্ত রয়ে গিয়েছিল, বা সম্পূর্ণরূপে বলা হয়নি। তবুও যীশু কী বলেছিলেন বা কী বলেন নি, তা নিয়ে তিনি মাথা ঘামান নি, কারণ তাঁর সেবাব্রত বাক্যের সেবাব্রত ছিল না, এবং তাই ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর তিনি প্রস্থান করেছিলেন। কাজের সেই পর্যায়টি ছিল মূলত ক্রুশবিদ্ধকরণের জন্য এবং তা বর্তমান পর্যায়ের থেকে ভিন্ন। কাজের এই বর্তমান পর্যায়টি মূলত সমাপ্তির জন্য, পরিষ্কার করার জন্য এবং সমস্ত কাজকে উপসংহারে নিয়ে আসার জন্য। যদি বাক্যগুলি একেবারে শেষ পর্যন্ত না বলা হয় তবে এই কাজটি শেষ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে, কারণ কাজের এই পর্যায়ে সমস্ত কাজের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং তা বাক্য ব্যবহার করেই সম্পন্ন করা হয়। সেই সময়ে, যীশু এমন অনেক কাজ করেছিলেন যা মানুষের কাছে বোধগম্য ছিল না। তিনি নিঃশব্দে প্রস্থান করেছিলেন, এবং আজও অনেকে আছে যারা তাঁর বাক্য বোঝেন না, যাদের উপলব্ধি ভ্রান্তিতে ভরা, তবুও তারা এটিকে সঠিক বলেই বিশ্বাস করে, জানে না যে তারা ভুল। চূড়ান্ত পর্যায়টি ঈশ্বরের কাজকে সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত করবে এবং এর উপসংহার প্রদান করবে। সকলেই ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনা বুঝতে এবং জানতে পারবে। মানুষের মধ্যেকার ধারণা, উদ্দেশ্য, ভুল এবং অযৌক্তিক উপলব্ধি, যিহোবা এবং যীশুর কাজ সম্পর্কিত ভ্রান্ত ধারণা, অ-ইহুদিদের সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং অন্যান্য ত্রুটি বিচ্যুতিগুলি সংশোধন করা হবে। এবং মানুষ জীবনের সমস্ত সঠিক পথ, ঈশ্বরের করা সমস্ত কাজ এবং সম্পূর্ণ সত্য বুঝতে পারবে। যখন এটি ঘটবে, তখন এই পর্যায়ের কাজ সমাপ্ত হবে। যিহোবার কাজ ছিল বিশ্ব সৃষ্টি করা, এটি ছিল শুরু; আর এই পর্যায়টি হল কাজের শেষ, এবং এটাই পরিসমাপ্তি। শুরুর দিকে, ইসরায়েলের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যেই ঈশ্বরের কাজ সম্পাদিত হয়েছিল, এবং সমস্ত স্থানের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র স্থানে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। কাজের শেষ পর্যায়টি বিশ্বের বিচার এবং যুগের পরিসমাপ্তির জন্য বিশ্বের সব দেশের মধ্যে সবচেয়ে অশুদ্ধ দেশে সঞ্চালিত হয়। প্রথম পর্যায়ে, ঈশ্বরের কাজটি সমস্ত স্থানের মধ্যে উজ্জ্বলতম স্থানে নির্বাহিত হয়েছিল, এবং শেষ পর্যায়টি সমস্ত স্থানের মধ্যে সবচেয়ে অন্ধকার স্থানে সম্পাদিত হয়। এই অন্ধকার সরিয়ে আলোর উদ্ভব হবে এবং সমস্ত মানুষদের জয় করা হবে। যখন এই সবচেয়ে অপবিত্র ও অন্ধকারতম স্থানের মানুষদের জয় করা সম্পন্ন হবে এবং সমগ্র মানুষেরা স্বীকার করবে যে একজন ঈশ্বর আছেন, তিনিই সত্য ঈশ্বর, এবং প্রত্যেকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসী হয়ে যাবে, তখন এই ঘটনাটি সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে জয়লাভের কাজ নির্বাহ করতে ব্যবহৃত হবে। কাজের এই পর্যায়টি প্রতীকী: এই যুগের কাজ শেষ হলে, ছয় হাজার বছরের ব্যবস্থাপনার কাজের সম্পূর্ণ পরিসমাপ্তি ঘটবে। অন্ধকারতম স্থানের মানুষদের একবার জয় করা হয়ে গেলে, অন্যান্য সব জায়গায়ও তাই হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যেমন, শুধুমাত্র চীনদেশে জয়ের কাজই অর্থবহ প্রতীকতা বহন করে। চীন সব রকমের অন্ধকারের শক্তির প্রতিমূর্তি এবং চীনের মানুষেরা তাদের সকলের প্রতিনিধি, যারা দেহসর্বস্ব, শয়তান অধিকৃত, এবং রক্তমাংসের। চীনের জনগণই অতিকায় লাল ড্রাগন দ্বারা সবচেয়ে বেশি ভ্রষ্ট হয়েছে, তাদের মধ্যে ঈশ্বরের সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধ রয়েছে, তাদের মানবতা সবচেয়ে হীন ও অপবিত্র, আর তাই তারাই সমস্ত ভ্রষ্ট মানবজাতির আদর্শ। এমনটা নয় যে অন্যান্য দেশে কোনও সমস্যা নেই; মানুষের সব ধারণাই এক, এবং এই দেশের মানুষদের ভালো যোগ্যতা থাকলেও, তারা যদি ঈশ্বরকে না জানে, তবে অবশ্যই তাঁর বিরোধিতা করবে। কেন ইহুদীরাও ঈশ্বরের বিরোধিতা ও তাঁকে অস্বীকার করেছিল? কেন ফরীশীরাও তাঁর বিরোধিতা করেছিল? কেন যিহূদা যীশুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল? সেই সময়, শিষ্যদের অনেকেই যীশুকে চিনতো না। যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার পরে এবং পুনরুত্থিত হওয়ার পরেও কেন মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করেনি? মানুষের সকল আনুগত্যহীনতা কি একই নয়? চীনের জনগণকে শুধুমাত্র একটি উদাহরণ হিসাবে দেখানো হয়েছে, এবং যখন তাদের জয় করা হবে তখন তারা আদর্শ এবং নমুনা হয়ে উঠবে এবং অন্যদের জন্য উদাহরণ হিসাবে কাজ করবে। কেন আমি সর্বদা বলেছি যে তোমরা আমার পরিচালনামূলক পরিকল্পনার একটি সহায়ক? চীনের জনগণের মধ্যেই দুর্নীতি, অপবিত্রতা, অধার্মিকতা, বিরোধিতা এবং বিদ্রোহ সবচেয়ে পূর্ণরূপে রূপায়িত হয়েছে এবং সমস্ত বৈচিত্র্য সমেত প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে তারা অযোগ্য, অন্যদিকে তাদের জীবন ও মানসিকতা পশ্চাৎপদ, এবং তাদের অভ্যাস, সামাজিক পরিবেশ, জন্ম পরিবার—সবই হীন এবং সবচেয়ে পশ্চাৎপদ। সেইসাথে তারা হীন মর্যাদাসম্পন্ন। এই স্থানের কাজটি প্রতীকী, এবং এই পরীক্ষামূলক কাজ সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হওয়ার পরে ঈশ্বরের পরবর্তী কাজ আরও সহজতর হয়ে উঠবে। কাজের এই ধাপটি সম্পন্ন করতে পারলে পরবর্তী কাজও নিঃসন্দেহে চলতে থাকবে। কাজের এই ধাপটি সম্পন্ন হলে, বৃহৎ সাফল্য সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হবে এবং সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে জয়ের কাজ সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত হবে। সত্যি বলতে, তোমাদের মধ্যে কাজটি সফল হয়ে গেলে, এটি সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে সাফল্যের সমতুল্য হয়ে উঠবে। আমি যে কারণে তোমাদের একটি আদর্শ এবং নমুনা হিসাবে বেছে নিয়েছি তার তাৎপর্য এটাই। বিদ্রোহ, বিরোধিতা, অশুদ্ধতা, অধার্মিকতা—সবই এই মানুষদের মধ্যেই বর্তমান, এবং তাদের মধ্যেই মানবজাতির সমস্ত বিদ্রোহের লক্ষণ প্রতীয়মান। তারা সত্যিই অন্যরকম। এই কারণে, তাদের জয়ের প্রতীক হিসাবে তুলে ধরা হয়, এবং একবার তাদের জয় করা হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তারা অন্যদের জন্য নমুনা এবং আদর্শ হয়ে উঠবে। ইসরায়েলে প্রথম ধাপ সম্পাদনের চেয়ে বেশি প্রতীকী আর কিছুই ছিল না: ইসরায়েলীরা ছিল সমস্ত জাতির মধ্যে সর্বাপেক্ষা পবিত্র এবং ন্যূনতম ভ্রষ্ট, এবং তাই এই দেশে নতুন যুগের সূচনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটা বলা যেতে পারে যে মানবজাতির পূর্বপুরুষরা ইসরায়েল থেকে এসেছিল এবং ইসরায়েল ছিল ঈশ্বরের কাজের আঁতুড়ঘর। শুরুর দিকে এই মানুষেরাই ছিল সবচেয়ে পবিত্র, তারা যিহোবার উপাসনা করত, এবং তাদের মধ্যে ঈশ্বরের কাজ প্রভূত ফলাফল এনে দিতে সক্ষম হয়েছিল। সম্পূর্ণ বাইবেলে দুটি যুগের কাজ লিপিবদ্ধ আছে: একটি ছিল বিধানের যুগের কাজ এবং অপরটি ছিল অনুগ্রহের যুগের কাজ। ইসরায়েলীদের প্রতি যিহোবার বাক্য এবং ইসরায়েলে তাঁর করা কাজ পুরাতন নিয়মে লিপিবদ্ধ রয়েছে; নূতন নিয়মে লিপিবদ্ধ রয়েছে যিহুদিয়াতে করা যীশুর কাজ। কিন্তু বাইবেলে কোনো চৈনিক নামের উপস্থিতি নেই কেন? কারণ ঈশ্বরের কাজের প্রথম দুটি অংশ ইসরায়েলে নির্বাহিত হয়েছিল—কারণ তারাই ছিল মনোনীত জনগণ—অর্থাৎ তারাই যিহোবার কাজ প্রথম গ্রহণ করেছিল। তারাই ছিল মানবজাতির মধ্যে ন্যূনতম ভ্রষ্ট, এবং সূচনাকালে তারাই ঈশ্বরের প্রতি মনোযোগ ও সম্মান প্রদর্শন করেছিল। তারা যিহোবার বাক্য মান্য করত, তারা সবসময় মন্দিরে সেবাপ্রদান করতো এবং যাজকদের মতো পোশাক বা মুকুট পরিধান করত। তারাই ছিল ঈশ্বরের উপাসনাকারী প্রথম মানুষ এবং তাঁর কাজের প্রাথমিক লক্ষ্য। তারাই সমগ্র মানবজাতির কাছে নমুনা ও আদর্শ ছিল। পবিত্রতার, ধার্মিক মানুষের নমুনা এবং আদর্শও ছিল তারাই। ইয়োব, অব্রাহাম, লোট, অথবা পিতর এবং তিমথি—এরা সকলেই ছিল ইসরায়েলী, এবং নমুনা ও আদর্শস্থানীয় মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র। মানবজাতির মধ্যে ইসরায়েলই সর্বপ্রথম ঈশ্বরের উপাসনা শুরু করেছিল এবং অন্যান্য স্থানের তুলনায় এই স্থান থেকেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ধার্মিক মানুষেরা উঠে এসেছিল। ঈশ্বর তাদের মধ্যে কাজ করেছিলেন যাতে তিনি ভবিষ্যতে এই সমস্ত স্থান জুড়ে মানবজাতিকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেন। যিহোবার উপাসনায় তাদের সাফল্য ও ধার্মিক কাজগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল, যাতে তারা অনুগ্রহের যুগে ইসরায়েলের বাইরের লোকেদের কাছে নমুনা এবং আদর্শ হিসাবে কাজ করতে পারে; এবং তাদের কাজগুলি আজ পর্যন্ত, কয়েক হাজার বছরের কাজকে সমুন্নত রেখেছে।
জগৎ প্রতিষ্ঠার পর, ঈশ্বরের কাজের প্রথম পর্যায়টি ইসরায়েলে নির্বাহিত হয়েছিল, এবং ইসরায়েলই ছিল পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজের আঁতুড়ঘর, পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজের ভিত্তিভূমি। যীশুর কাজের পরিধি সমগ্র যিহূদিয়া জুড়ে প্রসারিত ছিল। তাঁর কাজের সময়, যিহূদিয়ার বাইরের মাত্র কয়েকজনই এই বিষয়ে জানত, কারণ তিনি যিহূদিয়ার বাইরে কোনো কাজ করেন নি। বর্তমানে, ঈশ্বরের কাজটি চীনে আনীত হয়েছে এবং তা সম্পূর্ণভাবে এর পরিধির মধ্যেই নির্বাহিত হয়। এই পর্যায়ে চীনের বাইরে কোনো কাজের সূচনা হয় নি, চীনের বাইরে এর প্রসার আরও পরের কাজ। এই পর্যায়ের কাজ যীশুর কাজের পর্যায় থেকে শুরু হয়। যীশু মুক্তির কাজ করেছিলেন এবং বর্তমানের পর্যায়টি সেই কাজের পর থেকেই শুরু হয়েছে; মুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এবং বর্তমান পর্যায়ে পবিত্র আত্মার ধারণার কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ কাজের এই পর্যায়টি গত পর্যায়ের মতো নয়, তদুপরি চীনও ইসরায়েলের মতো নয়। যীশু মুক্তির কাজের একটি পর্যায় সম্পন্ন করেছিলেন। মানুষ যীশুকে দেখেছিল, এবং কিছু সময় পরেই, তাঁর কাজ অ-ইহুদিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। বর্তমানে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়ায় ঈশ্বর বিশ্বাসী অনেকেই আছেন, তাহলে চীনে বিশ্বাসী লোকের সংখ্যা কম কেন? কারণ চীন সবচেয়ে আবদ্ধ দেশ। সেই অর্থে, চীন ছিল ঈশ্বরের পথ গ্রহণকারী সর্বশেষ দেশ, এমনকি এখনও তার একশো বছরও অতিবাহিত হয়নি—আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্যের চেয়েও অনেক পরে। ঈশ্বরের কাজের শেষ পর্যায়টি নির্বাহ করার জন্য চীন ভূখণ্ডকে বেছে নেওয়া হয়েছে যাতে তাঁর কাজের পরিসমাপ্তি ঘটানো যায়, এবং তাঁর সমস্ত কাজ সুসম্পন্ন হয়। ইসরায়েলের সব মানুষ যিহোবাকে তাদের প্রভু বলে ডাকত। সেই সময়, তারা তাঁকে তাদের পরিবারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করেছিল এবং সমগ্র ইসরায়েল প্রভু যিহোবার উপাসনাকারী একটি বৃহৎ পরিবারে পরিণত হয়েছিল। যিহোবার আত্মা প্রায়শই তাদের কাছে আবির্ভূত হতেন, তিনি তাদের সাথে কথা বলতেন, তাঁর কণ্ঠস্বর তাদের কাছে উচ্চারণ করতেন এবং তাদের জীবন পরিচালনার জন্য মেঘ ও ধ্বনির একটি স্তম্ভ ব্যবহার করতেন। সেই সময়ে, আত্মা ইসরায়েলে সরাসরি তাঁর উপদেশ প্রদান করেছিলেন কথা বলে এবং মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর কণ্ঠস্বর উচ্চারণ করে, আর তারা মেঘ দেখেছিল, বজ্রপাতের নির্ঘোষ শুনেছিল এবং এইভাবে তিনি কয়েক হাজার বছর ধরে তাদের জীবনকে পথনির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই, শুধুমাত্র ইসরায়েলের লোকেরাই সবসময় যিহোবার উপাসনা করেছে। তারা বিশ্বাস করে যে যিহোবা তাদের ঈশ্বর, অ-ইহুদিদের ঈশ্বর নন। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই: কারণ যিহোবা তাদের মধ্যে প্রায় চার হাজার বছর ধরে কাজ করেছিলেন। হাজার হাজার বছরের আলস্যপূর্ণ ঘুমের পর, চীনে সবেমাত্র এতদিনে অধঃপতিতরা জানতে পেরেছে যে আকাশ ও পৃথিবী এবং সমস্ত কিছু প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়নি, বরং তা সৃষ্টিকর্তার তৈরী। এই সুসমাচারটি বিদেশ থেকে আসার কারণে, এই সামন্তবাদী, প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিরা বিশ্বাস করে যে এই সুসমাচার গ্রহণকারী সকলেই বিশ্বাসঘাতক, তারাই সেইসব ইতর যারা তাদের পূর্বপুরুষ বুদ্ধের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তদুপরি, এই সামন্ততান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন অনেকেরই প্রশ্ন, “চীনের মানুষেরা কীভাবে বিদেশীদের ঈশ্বরে বিশ্বাস করবে? তারা কি তাদের পূর্বপুরুষদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে না? তারা কি অন্যায় করছে না?” বর্তমানে, মানুষ অনেক আগেই ভুলে গেছে যে যিহোবা তাদের ঈশ্বর। তারা অনেক আগেই স্রষ্টাকে তাদের মন থেকে পিছনে সরিয়ে দিয়েছে, এবং পরিবর্তে তারা বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করে, অর্থাৎ বিশ্বাস করে মানুষ বানর থেকে বিবর্তিত হয়েছে এবং প্রাকৃতিক জগত এক নির্দিষ্ট ধারায় এসেছে। মানবজাতির উপভোগ্য সর্বপ্রকারের ভালো খাবার প্রকৃতি সরবরাহ করে, মানুষের জীবন ও মৃত্যুর নির্দিষ্ট ক্রম রয়েছে, এবং এই সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রক কোনও ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই। উপরন্তু অনেক নাস্তিক আছে যারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর সবকিছুর নিয়ন্ত্রক—এটা নিছকই কুসংস্কার এবং অবৈজ্ঞানিক। কিন্তু বিজ্ঞান কি ঈশ্বরের কাজকে প্রতিস্থাপন করতে পারে? বিজ্ঞান কি মানবজাতিকে শাসন করতে পারে? নাস্তিকতা শাসিত একটি দেশে সুসমাচার প্রচার করা সহজ কাজ নয়, এতে বড় বড় বাধা রয়েছে। বর্তমানে অনেকেই কি এইভাবে ঈশ্বরের বিরোধিতা করে না?
যীশু যখন কাজ করতে এসেছিলেন, তখন অনেকেই তাঁর কাজকে যিহোবার কাজের সাথে তুলনা করেছিল এবং সেগুলি অসঙ্গত দেখে তারা যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল। কেন তারা তাঁদের কাজের মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য খুঁজে পায়নি? এটির আংশিক কারণ ছিল যীশু নতুন কাজ করেছিলেন, এবং এছাড়াও, যীশু তাঁর কাজ শুরু করার আগে, কেউ তাঁর বংশতালিকা লিখে রাখে নি। যদি কেউ রাখতো তাহলে ভালো হতো, তাহলে কে যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করত? মথি যদি কয়েক দশক আগে যীশুর বংশতালিকা লিখে রাখত, তাহলে যীশু এত বড় অত্যাচারের শিকার হতেন না। তাই নয় কি? যখনই মানুষেরা যীশুর বংশতালিকা পড়ত, জানত যে তিনি ছিলেন অব্রাহামের পুত্র এবং দায়ূদের বংশধর—তখনই তারা তাঁর প্রতি অত্যাচার বন্ধ করে দিত। এটা কি দুঃখজনক নয় যে তাঁর বংশতালিকা অনেক দেরিতে লেখা হয়েছিল? এবং দুঃখের বিষয় হল বাইবেল ঈশ্বরের কাজের দুটি পর্যায়কে লিপিবদ্ধ করে: একটি পর্যায় ছিল আইনের যুগের কাজ, এবং অপরটি ছিল অনুগ্রহের যুগের কাজ; একটি পর্যায় ছিল যিহোবার কাজ, অপরটি ছিল যীশুর কাজ। যদি কোনো মহান নবী আজকের কাজের ভবিষ্যদ্বাণী করতেন তাহলে কতই না ভালো হতো। বাইবেলে “অন্তিম সময়ের কাজ” শিরোনামে একটি অতিরিক্ত বিভাগ থাকত—এটা আরও ভালো হতো না? কেন আজ মানুষকে এত কষ্ট করতে হবে? তোমরা কতই না কঠিন সময় কাটিয়েছ! যদি কাউকে ঘৃণা করতেই হয়, তবে অন্তিম সময়ের কাজের ভবিষ্যদ্বাণী না করার জন্য যিশাইয় এবং দানিয়েলকে করতে হবে, এবং যদি কেউ দোষী হয়, তবে তারা হল নূতন নিয়মের বাণীপ্রচারকগণ, যারা ঈশ্বরের দ্বিতীয় অবতারের বংশতালিকা পূর্বে তালিকাভুক্ত করেনি। এটা খুবই লজ্জাজনক! তোমাদের প্রমাণের জন্য সর্বত্র অনুসন্ধান করতে হবে, এবং ছোট ছোট শব্দের কিছু অংশ খুঁজে পাওয়ার পরেও কিন্তু তোমরা বলতে পারবে না যে সেগুলি সত্যিই প্রমাণ। কি লজ্জাজনক! কেন ঈশ্বর তাঁর কাজে এত গোপনীয়তা রাখেন? বর্তমানে, অনেক মানুষ এখনও অকাট্য প্রমাণ খুঁজে পায়নি, তবুও তারা এটি অস্বীকার করতেও অক্ষম। তাহলে তাদের কি করা উচিত? তারা দৃঢ়ভাবে ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে পারে না, আবার এমন সন্দেহ সহকারে অগ্রসর হতেও অক্ষম। আর তাই, অনেক “চতুর ও প্রতিভাধর পণ্ডিত” ঈশ্বরকে অনুসরণ করার সময় “পরীক্ষা করে দেখা যাক”—এই মনোভাব পোষণ করে। এটা খুবই সমস্যাপূর্ণ! মথি, মার্ক, লূক এবং যোহন যদি আগে থেকে ভবিষ্যতের কথা বলতে পারত তবে বিষয়গুলো কি অনেক সহজ হত না? যদি যোহন রাজ্যের জীবনের আভ্যন্তরীণ সত্য দেখতে পেত তাহলে ভালো হতো—কিন্তু দুঃখের বিষয় যে সে কেবল দর্শনই দেখেছিল এবং পৃথিবীতে বাস্তবিক, বস্তুগত কাজ দেখতে পায় নি। এটা কতই না লজ্জার! ঈশ্বর কেন এমন ভুল কাজ করছেন? ইসরায়েলে তাঁর কাজ এত ভালোভাবে চলার পরে, তিনি বর্তমানে চীনে কেন এসেছেন, কেন তাঁকে দেহধারণ করতে হলো এবং মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করতে ও বসবাস করতে হলো? ঈশ্বর মানুষের প্রতি খুবই অমনোযোগী! তিনি শুধু মানুষকে আগে থেকে বলেননি তা নয়, বরং হঠাৎ করেই তিনি তাঁর শাস্তি ও বিচার নিয়ে এসেছেন। এটার সত্যিই কোনো অর্থ হয় না! ঈশ্বরের প্রথম দেহধারণকালে, মানুষকে সমগ্র আভ্যন্তরীণ সত্য আগে না বলার কারণে তিনি অনেক কষ্ট সহ্য করেছিলেন। তিনি নিশ্চয়ই তা ভোলেন নি? আর তাহলে তিনি এই বারেও কেন মানুষকে বলেন নি? বর্তমানে, খুবই দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যে বাইবেলে মাত্র ছেষট্টিটি বই আছে। আর একটিমাত্র বই থাকা দরকার যা অন্তিম সময়ের কাজের ভবিষ্যদ্বাণী করে! তোমার কি মনে হয় না? এমনকি যিহোবা, যিশাইয় এবং দায়ূদও বর্তমানের কাজের কোনো উল্লেখ করেননি। তাঁরা বর্তমান থেকে আরোই দূরে ছিলেন, চার হাজার বছরেরও বেশি সময়ের ব্যবধানে বিচ্ছিন্ন। যীশুও বর্তমানের কাজের বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে ভবিষ্যদ্বাণী করেননি, এর সামান্যই উল্লেখ করেছেন এবং এখনও মানুষ এটির অপর্যাপ্ত প্রমাণ পেয়েছে। যদি তুমি বর্তমানের কাজকে পূর্বের সাথে তুলনা করো, তাহলে কীভাবে দুটি একে অপরের সাথে মিলবে? যিহোবার কাজের পর্যায়টি ইসরায়েলের দিকে পরিচালিত হয়েছিল, তাই তুমি যদি বর্তমানের কাজটিকে এর সাথে তুলনা করো তবে আরও বড় অসঙ্গতি দেখা যাবে; এই দুটিকে কোনোভাবেই তুলনা করা যায় না। না তুমি ইসরায়েলের, না তুমি একজন ইহুদি; তোমার ক্ষমতা এবং সমস্তকিছুর অভাব রয়েছে—তুমি কীভাবে তাদের সাথে নিজেকে তুলনা করতে পারো? এটা কি সম্ভব? জেনে রাখো যে বর্তমানকাল হল রাজ্যের যুগ, এবং এটি বিধানের যুগ ও অনুগ্রহের যুগ থেকে আলাদা। যাই হোক না কেন, কোনো সূত্র প্রয়োগের চেষ্টা কোরো না; ঈশ্বরকে এমন কোনো সূত্র প্রয়োগ করে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
জন্মের পরের ২৯ বছর সময়কালে যীশু কীভাবে জীবনযাপন করেছিলেন? বাইবেলে তাঁর শৈশব এবং যৌবনের কিছুই লিপিবদ্ধ নেই; তুমি কি জানো তা কেমন ছিল? এমনটা কি হতে পারে যে তাঁর কোনো শৈশব বা যৌবন ছিল না, এবং যখন তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখনই তাঁর বয়স ৩০ বছর? তোমার জ্ঞান খুবই সামান্য, তাই নিজের মতামত দেওয়ার বিষয়ে এতটা অসাবধান হয়ো না। এটা তোমার পক্ষে ভালো নয়! বাইবেলে শুধুমাত্র লিপিবদ্ধ রয়েছে যে যীশুর ৩০তম জন্মদিনের আগে, তাঁকে বাপ্তিস্ম করা হয়েছিল এবং তিনি শয়তানের প্রলোভন সহ্য করার জন্য পবিত্র আত্মার দ্বারা জনহীন স্থানে চালিত হয়েছিলেন। এবং চারটি সুসমাচার তাঁর সাড়ে তিন বছরের কাজ লিপিবদ্ধ করে। তাঁর শৈশব ও যৌবনের কোনো নথি নেই, তবে এতে প্রমাণ হয় না যে তাঁর শৈশব ও যৌবন ছিল না; বিষয়টা এই যে, প্রথম দিকে তিনি কোনো কাজ করেননি এবং একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন। তাহলে তুমি কি বলতে পারো, যে যীশু যৌবন বা শৈশব ছাড়াই ৩৩ বছর বেঁচে ছিলেন? তিনি কি হঠাৎ সাড়ে ৩৩ বছর বয়সে উপনীত হতে পারতেন? মানুষ তাঁর সম্পর্কে যা কিছু ভাবে তা অতিপ্রাকৃতিক এবং অবাস্তব। নিঃসন্দেহে ঈশ্বরের অবতার সাধারণ এবং স্বাভাবিক অধিকারী, কিন্তু তাঁর কাজ সম্পাদনকালে তা প্রত্যক্ষভাবে তাঁর অসম্পূর্ণ মানবতা এবং সম্পূর্ণ দেবত্ব সহকারে থাকে। এই কারণেই বর্তমানের কাজ, এমনকি যীশুর কাজ সম্পর্কেও মানুষের মনে সন্দেহ রয়েছে। দুই বারের দেহধারণকালে ঈশ্বরের কাজের পার্থক্য থাকলেও তাঁর সারসত্য কিন্তু একই। অবশ্য তুমি যদি চারটি সুসমাচারে লিপিবদ্ধ নথি পড়ো তাহলে অনেক পার্থক্যই দেখতে পাবে। যীশুর শৈশব ও যৌবনকালের জীবনে তুমি কীভাবে ফিরতে পারো? তুমি কীভাবে যীশুর স্বাভাবিক মানবতা হৃদয়ঙ্গম করতে পার? হয়তো তোমার বর্তমানের ঈশ্বরের মানবতা সম্পর্কে দৃঢ় উপলব্ধি আছে, তবুও তোমার কিন্তু যীশুর মানবতা সম্পর্কে কোনো উপলব্ধিই নেই, আর তুমি বোঝো আরোই কম। মথি দ্বারা লিপিবদ্ধ না করা থাকলে, যীশুর মানবতা সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণাই থাকত না। যখন হয়ত আমি তোমাকে যীশুর জীবনের গল্প এবং যীশুর শৈশব ও যৌবনের অন্তর্নিহিত সত্য বলব, তখন তুমি মাথা নেড়ে বলবে, “না! তিনি এরকম হতেই পারেন না। তাঁর কোনো দুর্বলতা থাকতে পারে না, আর মনুষ্যোচিত বৈশিষ্ট তো তাঁর থাকতেই পারে না!” এমনকি তুমি চিৎকার এবং আর্তনাদ করবে। যেহেতু তুমি যীশুকে উপলব্ধি করতে পারোনি, সে কারণেই আমার সম্পর্কেও তোমার বিভিন্নরকম ধারণা রয়েছে। তুমি বিশ্বাস করো যীশু অত্যন্তরকম ঐশ্বরিক, তাঁর মধ্যে দৈহিক কোনো ব্যাপারই নেই। কিন্তু সত্য এখনও সত্যই। তথ্যের সত্যতার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চায় না, কারণ আমি যখন কথা বলি তা সত্যের সাথে সম্পর্কিত; তা জল্পনা নয়, ভবিষ্যদ্বাণীও নয়। জেনে রেখো ঈশ্বর বিশাল উচ্চতায় উত্থিত হতে পারেন, আবার তিনি বিশাল গভীরতায় প্রচ্ছন্ন থাকতে পারেন। তিনি তোমার মনের কল্পনাপ্রসূত কিছু নন—তিনি সমস্ত সৃষ্টির ঈশ্বর, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির দ্বারা কল্পিত কোনো ব্যক্তিগত ঈশ্বর নন।