অবতাররূপের রহস্য (২)

সেই সময়ে যখন যীশু যিহূদিয়াতে কাজ করেছিলেন, তিনি তা প্রকাশ্যেই করেছিলেন, কিন্তু এখন, আমি তোমাদের মধ্যে গোপনে কাজ করি এবং কথা বলি। অবিশ্বাসীরা এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত। তোমাদের মধ্যে আমার কাজ বাইরের লোকদের কাছে গোপন। এই বাক্য, এই শাস্তি এবং বিচার, শুধুমাত্র তোমরাই জানো এবং অন্য সবার তা অজানা। এই সমস্ত কাজ কেবল তোমাদের মাঝেই সম্পাদিত হয় এবং শুধুমাত্র তোমাদের কাছেই উন্মোচিত হয়; অবিশ্বাসীরা কেউ এটা জানে না, কারণ সেই সময় এখনও আসেনি। এখানের এই মানুষেরা শাস্তি করার পরে সম্পূর্ণ হয়ে ওঠার কাছাকাছি চলে এসেছে, কিন্তু বাইরের লোকেরা এ সম্পর্কে একেবারেই অবগত নয়। এই কাজ অত্যন্ত গোপন! তাদের কাছে, ঈশ্বরের দেহরূপ গোপন আছে, কিন্তু যারা এই স্রোতের মধ্যে রয়েছে, বলা যেতে পারে যে তাদের জন্য তিনি প্রকাশ্যেই আছেন। যদিও ঈশ্বরের সবই উন্মুক্ত, সবই প্রকাশিত, এবং সবকিছুই মুক্ত, তবে এটা শুধুমাত্র তাদের জন্যই সত্য যারা তাঁকে বিশ্বাস করে; বাকিদের ক্ষেত্রে, যারা অবিশ্বাসী, তাদের কিছুই জানানো হয় না। তোমাদের মধ্যে, এবং চীনে বর্তমানে যে কাজটি করা হচ্ছে তা কঠোরভাবে গোপনীয়, যাতে সেগুলি অজ্ঞাত রাখা যায়। তারা যদি এই কাজ সম্পর্কে সচেতন হয়, তবে তারা যা করবে তা হল এর তিরস্কার এবং নিপীড়ন। তারা এটা বিশ্বাস করবে না। বিশাল লাল ড্রাগনের দেশে কাজ করা, যা সকল স্থানের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা অঞ্চল, কোনও সহজ কাজ নয়। যদি এই কাজটি প্রকাশ্যে আনা হয় তবে এটি চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে। কাজের এই পর্যায় কোনোভাবেই এই জায়গায় সম্পাদিত করা যাবে না। যদি এই কাজটি প্রকাশ্যে করা হতো, তাহলে তারা কী আদৌ এটিকে এগিয়ে যেতে দিতো? তাতে কি কাজটি আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেত না? যদি এই কাজটি গোপন না থাকত, বরং যীশুর সময়ের মতো প্রকাশ্যে নির্বাহ করা হত, যেমন তিনি বিস্ময়কর ভাবে অসুস্থদের নিরাময় করেছিলেন এবং অপদেবতা বিতাড়ন করেছিলেন, তাহলে এটি কি অনেক আগেই শয়তানদের দ্বারা “কবলিত” হতো না? তারা কি ঈশ্বরের অস্তিত্বকে সহ্য করতে পারতো? আমি যদি এখন প্রচারের জন্য উপাসনালয়ে প্রবেশ করতাম এবং মানুষকে বক্তৃতা দিতাম, তাহলে কি আমি অনেক আগেই টুকরো টুকরো হয়ে মারা পড়তাম না? এবং যদি তা হতো, তবে কীভাবে আমি আমার কাজ চালিয়ে যেতে পারতাম? গোপনীয়তা রক্ষার জন্যসংকেত ও বিস্ময়কর ঘটনা সর্বসমক্ষে প্রকাশিত করা হয় না। সুতরাং, অবিশ্বাসীদের কাছে, আমার কাজ দেখা, জানা, বা আবিষ্কার করার সুযোগ নেই। কাজের এই পর্যায়টি যদি অনুগ্রহের যুগে যীশুর মতো একই পদ্ধতিতে করা হত, তবে এটি এখনকার মতো দৃঢ় থাকতে পারতো না। তাই, এইভাবে গোপনে কাজ করা তোমাদের জন্য এবং সামগ্রিকভাবে কাজের জন্যও উপকারী। যখন পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজ শেষ হবে, অর্থাৎ যখন এই গোপন কাজ শেষ হবে, তখন কাজের এই পর্যায়টি আচম্বিতে প্রকাশ্যে আসবে। সকলেই জানবে যে চীনে একদল জয়ী ব্যক্তি আছে; সকলেই জানবে যে ঈশ্বরের দেহরূপ চীনদেশে আছেন এবং তাঁর কাজ শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র তখনই মানুষ সর্বপ্রথমবার উপলব্ধি করবে: কেন চীনদেশে এখনও অধঃপতন বা ধ্বস দেখা যায় নি? কারণ ঈশ্বর ব্যক্তিগতভাবে চীনে তাঁর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং একদল মানুষকে নিখুঁত করে তুলে তাদের জয়ীব্যক্তিতে পরিণত করেছেন।

ঈশ্বরের দেহরূপ সকল প্রাণীর কাছে নিজেকে প্রকাশিত করেন না, বরং শুধুমাত্র এক অংশের মানুষের কাছেই নিজেকে প্রকাশিত করেন যারা সেই সময় তাঁর অনুসরণ করে যখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কাজ নির্বাহ করেন। তিনি দেহ ধারণ করেছিলেন শুধুমাত্র তাঁর কাজের একটি পর্যায় সম্পূর্ণ করার জন্য, মানুষকে তাঁর প্রতিমূর্তি দেখানোর জন্য নয়। যাইহোক, তাঁর কাজ তাঁকে নিজেকেই সম্পন্ন করতে হবে, তাই দেহরূপে তা করা তাঁর জন্য আবশ্যক। এই কাজ শেষ হলে তিনি মানব জগৎ থেকে বিদায় নেবেন; ভবিষ্যতের কাজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর ভয়ে তিনি মানবজাতির মধ্যে দীর্ঘকাল থাকতে পারেন না। তিনি মানুষের কাছে যা প্রকাশ করেন তা কেবলমাত্র তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব এবং তাঁর সমগ্র কাজ, তাঁর দ্বিতীয়বারের দেহরূপের প্রতিমূর্তি নয়, কারণ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি কেবল তাঁর মনোভাবের মাধ্যমেই দেখানো যেতে পারে, এবং তাঁর অবতার দেহরূপের প্রতিমূর্তি দ্বারা তা প্রতিস্থাপিত হতে পারে না। তাঁর দেহরূপের প্রতিমূর্তি শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক মানুষকেই দেখানো হয়, শুধুমাত্র তাদের কাছে যারা দেহরূপে তাঁর কাজের সময় তাঁকে অনুসরণ করে। এই কারণে এখন যে কাজ চলছে তা গোপনে করা হচ্ছে। একইভাবে, যীশু তাঁর কাজের সময় শুধুমাত্র ইহুদিদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন, এবং কখনো প্রকাশ্যে অন্য কোনও জাতির কাছে নিজেকে দেখাননি। সুতরাং, একবার তাঁর কাজ শেষ করার পরে, তিনি অবিলম্বে মানব জগৎ থেকে বিদায় নেন এবং আর থাকেন নি; পরবর্তীকালে, যিনি মানুষের কাছে নিজেকে প্রকাশিত করেছিলেন তিনি মানুষের এই প্রতিমূর্তি নন, বরং তিনি হলেন পবিত্র আত্মা স্বয়ং যিনি প্রত্যক্ষভাবে কাজ নির্বাহ করেছিলেন। ঈশ্বরের দেহরূপের কাজ একবার সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেলে, তিনি নশ্বর জগৎ থেকে বিদায় নেবেন এবং দেহ রূপে থাকাকালীন তিনি যা করেছিলেন তার অনুরূপ কাজ তিনি আর কখনও করবেন না। এর পরে, কাজের সমস্তটাই পবিত্র আত্মা প্রত্যক্ষভাবে করে থাকেন। এই সময়কালে, মানুষ তাঁর দেহরূপের প্রতিমূর্তি প্রায় দেখতেই পায় না; তিনি নিজেকে মানুষের কাছে একেবারেই প্রকাশ করেন না, চিরকাল প্রচ্ছন্ন থাকেন। দেহরূপে ঈশ্বরের কাজ করার সময়কাল সীমিত। সেই কাজ একটি নির্দিষ্ট যুগ, সময়, জাতি এবং কিছু নির্দিষ্ট মানুষের মাঝে সম্পাদিত হয়। এই কাজটি শুধুমাত্র ঈশ্বরের অবতারের সময়ে সম্পাদিত কাজকে উপস্থাপিত করে; এই কাজ একটি যুগের প্রতিনিধি, এবং তা একটি নির্দিষ্ট যুগে ঈশ্বরের আত্মার কাজের প্রতিনিধিত্ব করে, তাঁর কাজের সম্পূর্ণতার নয়। তাই, ঈশ্বরের দেহরূপ সকল মানুষকে দেখানো হবে না। জনগণের কাছে যা দেখানো হয়, তা হল ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণতা এবং তাঁর সমগ্র স্বভাব, তাঁর দ্বিতীয়বারের দেহরূপের প্রতিমূর্তি নয়। মানুষকে যা দেখানো হয় সেই একক প্রতিমূর্তি এটা নয়, বা দুটি প্রতিমূর্তির সম্মিলিত রূপও নয়। অতএব, অপরিহার্যভাবেই ঈশ্বরের দেহরূপ অবতার তাঁর প্রয়োজনীয় কাজ সম্পূর্ণ করার পরে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন, কারণ তিনি কেবল সেই কাজটি করতে আসেন যা তাঁর করা উচিত, মানুষকে তাঁর প্রতিমূর্তি দেখাতে নয়। যদিও অবতারের তাৎপর্য ইতিমধ্যেই ঈশ্বরের দুইবার দেহরূপ ধারণ করার দ্বারা পূর্ণ হয়েছে, তবুও তিনি প্রকাশ্যে এমন কোনও জাতির কাছে নিজেকে প্রকাশ করবেন না যারা তাকে আগে কখনও দেখেনি। যীশু কখনোই নিজেকে ইহুদিদের কাছে ন্যায়পরায়ণতার সূর্য হিসাবে প্রকাশ করবেন না, বা তিনি অলিভ পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে সমস্ত লোকের কাছে আবির্ভূত হবেন না; সমস্ত ইহুদীরা যীশুর সময় যিহূদিয়ায় তাঁর প্রতিকৃতি দেখেছে। এর কারণ হল অবতাররূপে যীশুর কাজ দুই হাজার বছর আগে শেষ হয়ে গিয়েছিল; তিনি ইহুদির প্রতিমূর্তিতে যিহূদিয়াতে ফিরে আসবেন না, অইহুদিদের কাছে নিজেকে একজন ইহুদির প্রতিমূর্তি হিসেবে তো দেখাবেনই না, কারণ যীশুর দেহরূপ কেবলমাত্র একজন ইহুদির প্রতিমূর্তি, যোহন যে মনুষ্যপুত্রকে দেখেছিল তার প্রতিমূর্তি নয়। যদিও যীশু তাঁর অনুসারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আবার আসবেন, কিন্তু তিনি সকল অইহুদি জাতির কাছে নিজেকে শুধুমাত্র একজন ইহুদির প্রতিমূর্তি হিসাবে প্রদর্শন করবেন না। তোমাদের জানা উচিত যে ঈশ্বরের অবতাররূপের কাজ হচ্ছে একটি যুগের সূচনা করা। এই কাজটি কয়েক বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং তার মধ্যে তিনি ঈশ্বরের আত্মার সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন না, ঠিক যেমন যিহূদিয়ায় তাঁর কাজের সময় একজন ইহুদি হিসাবে যীশুর প্রতিমূর্তি কেবলমাত্র ঈশ্বরের প্রতিমূর্তির দ্যোতক হতে পারতো এবং তিনি কেবল ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার কাজই করতে পারতেন। যীশু যখন দেহরূপে ছিলেন সেই সময়কালে, তিনি যুগের অবসান ঘটানো বা মানবজাতিকে ধ্বংস করার কাজটি করতে পারেননি। অতএব, তিনি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর এবং তাঁর কাজের উপসংহার টানার পর, তিনি সর্বোচ্চ উচ্চতায় আরোহণ করেন এবং চিরকালের জন্য নিজেকে মানুষের কাছ থেকে আড়াল করেন। তারপর থেকে, অইহুদি জাতির সেই বিশ্বস্ত বিশ্বাসীরা আর প্রভু যীশুর প্রকাশ দেখতে পায়নি, বরং তাদের কাছে কেবলমাত্র তাঁর প্রতিকৃতিই ছিল যা তারা দেওয়ালে আটকে রেখেছিল। এই প্রতিকৃতিটি মানুষের আঁকা একটি ছবি মাত্র, ঈশ্বর যেভাবে নিজেকে মানুষের কাছে প্রদর্শন করেন, সেই প্রতিমূর্তি নয়। ঈশ্বর তাঁর দ্বিতীয়বারের দেহরূপের প্রতিমূর্তিতে জনতার কাছে প্রকাশ্যে নিজেকে দেখাবেন না। তিনি মানবজাতির মধ্যে যে কাজ করেন তা হল মানবজাতিকে তাঁর স্বভাব উপলব্ধি করতে দেওয়া। এই সবই মানুষকে দেখানো হয় বিভিন্ন যুগের কাজের মাধ্যমে; তা যীশুর প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয় না, বরং তিনি যে স্বভাব প্রকাশ করেছেন এবং তিনি যে কাজ করেছেন তার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ, ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি মানুষের কাছে পরিচিত করানো হয় অবতার প্রতিমূর্তির মাধ্যমে নয়, বরং অবতাররূপ ঈশ্বরের দ্বারা সম্পাদিত কাজের মাধ্যমে, যার মূর্তি এবং রূপ উভয়ই রয়েছে; এবং তাঁর কাজের মাধ্যমে, তাঁর প্রতিমূর্তি দেখানো হয় এবং তাঁর স্বভাব প্রকাশিত হয়। তিনি যে কাজটি দেহরূপে করতে চান, তার তাৎপর্য এটাই।

একবার ঈশ্বরের দুটি অবতারের কাজ শেষ হলে, তিনি অবিশ্বাসীদের সকল দেশ জুড়ে তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাব প্রদর্শন করতে শুরু করবেন, যাতে জনসাধারণ তাঁর প্রতিমূর্তি দেখতে পায়। তিনি তাঁর স্বভাব প্রকাশ করবেন, এবং এই উপায়ে মানুষের বিভিন্ন শ্রেণীর সমাপ্তি স্পষ্ট করবেন, যার ফলে পুরানো যুগের সম্পূর্ণরূপে সমাপ্তি হবে। দেহরূপে তাঁর কাজ যে কারণে বিশাল বিস্তৃতি জুড়ে প্রসারিত নয় (ঠিক যেমন যীশু শুধুমাত্র যিহুদিয়াতে কাজ করেছিলেন, আর আজ আমি কেবল তোমাদের মধ্যেই কাজ করি) তা হলো, অবতাররূপে তাঁর কাজের সীমানা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তিনি এক সাধারণ ও স্বাভাবিক দেহের প্রতিমূর্তি রূপে শুধুমাত্র একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের কাজ নির্বাহ করছেন; তিনি অনন্তকালের কাজ বা অবিশ্বাসী দেশের লোকেদের সামনে আবির্ভাবের কাজ করার জন্য এই অবতার রূপ ব্যবহার করছেন না। দেহরূপের কাজ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরিধিতেই সীমিত (যেমন শুধুমাত্র যিহুদিয়াতে কাজ করা বা শুধুমাত্র তোমাদের মধ্যে কাজ করা), এবং তারপরে, এই সীমানার মধ্যে সম্পাদিত কাজের দ্বারা, এর পরিধি বাড়ানো যেতে পারে। অবশ্যই, সম্প্রসারণের কাজটি সরাসরি তাঁর আত্মার দ্বারা সম্পাদিত হবে এবং তখন সেটি আর তাঁর অবতার দেহরূপের কাজ থাকবে না। যেহেতু দেহরূপে কাজের সীমানা রয়েছে এবং এটি মহাবিশ্বের সমস্ত কোণে প্রসারিত নয়—তাই এটি সম্পন্ন করা যাবে না। দেহরূপের কাজের মাধ্যমে, তাঁর আত্মা পরবর্তী কাজগুলি সম্পন্ন করেন। তাই দেহরূপে সম্পাদিত কাজটি উদ্বোধনী প্রকৃতির, যা নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যেই নির্বাহ করা হয়; এর পরে, তাঁর আত্মাই এই কাজটি এগিয়ে নিয়ে চলেন, এবং তিনি এটি একটি বিস্তৃত পরিসরেও করে থাকেন।

ঈশ্বর পৃথিবীতে কাজ করতে আসেন শুধুমাত্র যুগের পথপ্রদর্শনের জন্য; তিনি চান শুধুমাত্র একটি নতুন যুগের উদ্বোধন করতে এবং পুরানো যুগকে সমাপ্তিতে নিয়ে আসতে। তিনি পৃথিবীতে একজন মানুষ হিসাবে জীবন যাপন করতে আসেননি, মানব জগতের জীবনের সুখ-দুঃখ নিজে অনুভব করতে আসেননি, অথবা একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর হাতে নিখুঁত করতে বা ব্যক্তিগতভাবে একজন ব্যক্তির বড় হয়ে ওঠা দেখতে আসেননি। এটা তাঁর কাজ নয়; তাঁর কাজ কেবল নতুন যুগের সূচনা এবং পুরাতনের অবসান ঘটানো। অর্থাৎ, তিনি ব্যক্তিগতভাবে একটি যুগ শুরু করবেন, ব্যক্তিগতভাবে অন্যটিকে শেষ করবেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কাজ সম্পাদন করার মাধ্যমে শয়তানকে পরাজিত করবেন। প্রতিবার যখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কাজ সম্পাদন করেন, তা যেন তাঁর যুদ্ধক্ষেত্রে পা রাখার সমান। প্রথমে, তিনি জগৎকে পরাজিত করেন এবং দেহরূপে থাকা অবস্থায় শয়তানের উপর প্রভাব বিস্তার হন; তিনি সমস্ত গৌরব অধিকার করেন এবং দুই হাজার বছরের কাজের সমগ্রতার পর্দা উন্মোচন করেন, যাতে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ চলার জন্য সঠিক পথ পায় এবং শান্তি ও আনন্দপূর্ণ একটি জীবনের অধিকারী হয়। তবে, ঈশ্বর পৃথিবীতে মানুষের সাথে বেশি দিন বসবাস করতে পারেন না, কারণ ঈশ্বর হলেন ঈশ্বর, এবং তিনি কখনোই মানুষের মতো নন। তিনি একজন সাধারণ ব্যক্তিজীবন কাটাতে পারেন না, অর্থাৎ, তিনি পৃথিবীতে এমন একজন ব্যক্তি হিসাবে বসবাস করতে পারেন না যিনি সাধারণের অতিরিক্ত কিছুই নন, কারণ তাঁর মানবজীবন বজায় রাখার জন্য একজন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক মানবতার ন্যূনতম অংশই তাঁর কাছে রয়েছে। অন্য ভাবে বলতে গেলে, ঈশ্বর কীভাবে পরিবার শুরু করতে পারেন, কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন, এবং পৃথিবীতে সন্তানদের বড় করতে পারেন? এটা কি তাঁর পক্ষে অপমানজনক হবে না? কেবলমাত্র স্বাভাবিক পদ্ধতিতে কাজ করার উদ্দেশ্যেই তিনি স্বাভাবিক মানবতার অধিকারী হয়েছেন, একজন সাধারণ ব্যক্তির মতো পারিবারিক এবং কর্মজীবন লাভের জন্য নয়। তাঁর স্বাভাবিক বোধ, স্বাভাবিক মন এবং তাঁর দেহরূপের স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস ও পোশাকই প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে তাঁর স্বাভাবিক মানবতা রয়েছে; তাঁর স্বাভাবিক মানবতা রয়েছে তা প্রমাণ করার জন্য তাঁর পরিবার বা পেশা থাকার প্রয়োজন নেই। এটি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়! পৃথিবীতে ঈশ্বরের আগমন হল বাক্যের দেহ রূপে আবির্ভূত হওয়া; তিনি কেবল মানুষকে তাঁর বাক্য বোঝার এবং তাঁর বাক্য দেখার অনুমতি দিচ্ছেন, অর্থাৎ মানুষকে দেহরূপের সম্পাদিত কাজ দেখার অনুমতি দিচ্ছেন। কোনো এক নির্দিষ্ট উপায়ে মানুষ তাঁর দেহরূপের সাথে আচরণ করুক এরকম উদ্দেশ্য তাঁর নয়, তিনি কেবলমাত্র চান মানুষ শেষ সময় পর্যন্ত অনুগত থাক, অর্থাৎ, তাঁর মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্য মেনে চলুক এবং তিনি যে সমস্ত কাজ করেন সেগুলিতে সমর্পিত থাকুক। তিনি নিছক দৈহিক রূপে কাজ করছেন; তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানুষের কাছে তাঁর দেহরূপের মহিমা ও পবিত্রতাকে উচ্চতর করার আকাঙ্ক্ষা করছেন না, বরং তিনি মানুষকে তাঁর কাজের প্রজ্ঞা এবং তাঁর সকল কর্তৃত্বের প্রয়োগ দেখাচ্ছেন। অতএব, যদিও তিনি অসামান্য মানবতার অধিকারী, কিন্তু তিনি কোনও ঘোষণা করেন না, এবং শুধুমাত্র যে কাজ তাঁর করা উচিত তার উপরেই মনোনিবেশ করেন। তোমাদের জানা উচিত কেন ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করেছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর স্বাভাবিক মানবতার প্রচার করেন নি বা সাক্ষ্য দেন নি, বরং তার পরিবর্তে তিনি যে কাজটি করতে চেয়েছেন তা সম্পাদন করেছেন। সুতরাং, তোমরা ঈশ্বরের অবতার রূপ থেকে যা দেখতে পাচ্ছো তা হল ঐশ্বরিক ভাবে তিনি যা; কারণ তিনি কখনই ঘোষণা করেন না যে তিনি মানবিকভাবে যা, তা মানুষের অনুকরণের জন্য। শুধু মানুষ যখন জনগণকে নেতৃত্ব দেয় তখনই সে তার নিজের মানবিকতার বিষয়ে কথা বলে, তাদের প্রশংসা ও প্রত্যয় লাভ করার জন্য এবং এর মাধ্যমে অন্যদের উপর নেতৃত্ব অর্জন করার জন্য। এর বিপরীতে, ঈশ্বর মানুষকে জয় করেন একমাত্র তাঁর কাজের মাধ্যমে (অর্থাৎ, যে কাজ মানুষের অর্জনক্ষমতার বাইরে); তিনি মানুষের দ্বারা প্রশংসিত বা মানুষের কাছে উপাস্য হন কিনা তা অমূলক বিষয়। তিনি যা করেন তা হল মানুষের মধ্যে তাঁর প্রতি সম্মানের অনুভূতি বপন করতে বা তাদের মধ্যে তাঁর রহস্যময়তার বোধ জাগাতে। মানুষকে মুগ্ধ করার কোনও প্রয়োজন ঈশ্বরের নেই; তিনি শুধু চান তাঁর স্বভাব প্রত্যক্ষ করার পর তুমি তাঁকে সম্মান করো। ঈশ্বর যে কাজ করেন তা তাঁর নিজের; তাঁর পরিবর্তে মানুষ তা করতে পারবে না, বা মানুষ তা অর্জন করতেও পারবে না। একমাত্র ঈশ্বর স্বয়ং নিজের কাজ করতে পারেন এবং মানুষকে নতুন জীবনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারেন। তিনি যে কাজটি করেন তা হল মানুষকে একটি নতুন জীবনের অধিকারী হতে এবং একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে সক্ষম করা। বাকি কাজ তাদের হাতে অর্পণ করা হয় যাদের স্বাভাবিক মানবতা রয়েছে এবং যারা অন্যদের দ্বারা প্রশংসিত। অতএব, অনুগ্রহের যুগে, তিনি দেহরূপে তাঁর তেত্রিশ বছরের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দুই হাজার বছরের কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। ঈশ্বর যখন তাঁর কাজ সম্পাদন করার জন্য পৃথিবীতে আসেন, তিনি সর্বদা দুই হাজার বছরের কাজ বা একটি সম্পূর্ণ যুগের কাজ অল্প কয়েক বছরের এক সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই শেষ করেন। তিনি দীর্ঘসূত্রতা করেন না, বিলম্ব করেন না; তিনি কেবল বহু বছরের কাজকে ঘনীভূত করেন যাতে এটি মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সম্পন্ন হয়। এর কারণ হল তিনি ব্যক্তিগতভাবে যে কাজটি করেন তা সম্পূর্ণরূপে একটি নতুন পথ উন্মুক্ত করার এবং একটি নতুন যুগের নেতৃত্ব দেওয়ার স্বার্থে।

পূর্ববর্তী: অবতাররূপের রহস্য (১)

পরবর্তী: অবতাররূপের রহস্য (৩)

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন