অনুশীলন (৪)
আমি আজ যে শান্তি এবং আনন্দের কথা বলছি তা তুমি যা বিশ্বাস করো এবং বোঝো তার মতো নয়। তুমি মনে করতে যে শান্তি ও আনন্দ মানে সারাদিন আনন্দে থাকা, তোমার পরিবারে রোগ বা দুর্ভাগ্য না থাকা, দুঃখের সামান্যতম অনুভূতি ছাড়াই অন্তরে সর্বদা সন্তুষ্ট থাকা এবং তোমার জীবন যে পরিসরেই বিকশিত হোক না কেন সে সমস্ত নির্বিশেষে মনের মধ্যে আনন্দের অবর্ণনীয় অনুভূতি থাকা। এছাড়াও আছে বেতন বৃদ্ধি এবং তোমার পুত্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে, তুমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলে এবং, ঈশ্বরের এই বিরাট অনুগ্রহ দেখে তুমি উৎফুল্ল হয়েছিলে, আনন্দ ধরে রাখতে পারছিলে না এবং ঈশ্বরকে অবিরাম ধন্যবাদ জানাচ্ছিলে। এই ধরনের শান্তি এবং আনন্দ সেই প্রকৃত শান্তি এবং আনন্দ নয় যা পবিত্র আত্মার উপস্থিতির সঙ্গে লাভ করা যায়। বরং, এ হ’ল সেই শান্তি ও আনন্দ যা দৈহিক তৃপ্তির ফলে পাওয়া যায়। তোমাকে বুঝতে হবে যে এটি কোন যুগ; এটি অনুগ্রহের যুগ নয়, এবং এটি আর সেই সময় নয় যখন তুমি রুটি দিয়ে নিজের উদরপূর্তি করতে চাও। তুমি উল্লসিত হতে পার কারণ তোমার পরিবারে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, কিন্তু তোমার জীবন ক্রমশ সমাপ্তির দিকে এগোচ্ছে – এবং এইভাবে, তোমার আনন্দ যতই বড় হোক না কেন, পবিত্র আত্মা তোমার সঙ্গে নেই। পবিত্র আত্মার উপস্থিতি অর্জন করা সহজ: তোমার যা করণীয় তা সঠিকভাবে করো, একজন মানুষের দায়িত্ব ও কাজ ভালভাবে সম্পাদন করো এবং নিজের ত্রুটিগুলি সংশোধন করার জন্য যা প্রয়োজনীয় তা অর্জন করো। তোমার নিজের জীবনই যদি তোমার কাছে সবসময় একটি বোঝা হয়ে থাকে এবং তুমি যদি একটি সত্য উপলব্ধি করে থাকো অথবা ঈশ্বরের বর্তমান কার্য বুঝতে পেরেছ বলে খুশি থাকো, তাহলে এটি সত্যিই পবিত্র আত্মার উপস্থিতি। অথবা, তুমি যদি কখনও কখনও উদ্বেগে জর্জরিত হয়ে ওঠ কারণ তুমি হয়ত এমন কোন সমস্যার সম্মুখীন যেটি কীভাবে সহ্য করা যায় তা তুমি জানো না, বা তুমি হয়ত কোন সহচরিত সত্যকে বুঝতে পার না, তাহলে তা এটি প্রমাণ করে যে পবিত্র আত্মা তোমার সঙ্গে রয়েছেন। এগুলি হ’ল জীবনের অভিজ্ঞতার সাধারণ অবস্থা। তোমাকে অবশ্যই পবিত্র আত্মার উপস্থিতি থাকা এবং তার অভাবের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে এবং এটি সম্পর্কে তোমার দৃষ্টিভঙ্গি যেন অত্যধিক সরল না হয়।
পূর্বে বলা হয়েছিল যে পবিত্র আত্মার উপস্থিতি লাভ করা এবং পবিত্র আত্মার কার্য লাভ করা আলাদা। পবিত্র আত্মার উপস্থিতি লাভ করার স্বাভাবিক অবস্থা প্রকাশিত হয় স্বাভাবিক চিন্তা, স্বাভাবিক কারণ এবং স্বাভাবিক মনুষ্যত্ব থাকার মধ্যে। একজন ব্যক্তির চরিত্র আগের মতোই থাকবে, তবে তাদের মধ্যে বিরাজ করবে শান্তি এবং বাহ্যিকভাবে তারা একজন সাধুর সমীচীনতা লাভ করবে। পবিত্র আত্মা তাদের সঙ্গে থাকলে তারা এমনই হবে৷ যখন কেউ পবিত্র আত্মার উপস্থিতি লাভ করে, তখন তাদের চিন্তাভাবনা স্বাভাবিক হয়। তারা ক্ষুধিত বোধ করলে আহার করতে চায়, তৃষ্ণার্তহলে জল পান করতে চায়। … স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের এই ধরনের প্রকাশ পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি নয়; এগুলি হল মানুষের স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা এবং পবিত্র আত্মার উপস্থিতি থাকার স্বাভাবিক অবস্থা৷ কিছু মানুষ ভুলভাবে বিশ্বাস করে যে যাদের কাছে পবিত্র আত্মার উপস্থিতি রয়েছে তাদের ক্ষুধা বোধ থাকে না, তারা কোনরকম ক্লান্তি অনুভব করে না, এবং পরিবার সম্পর্কে কোনরকম চিন্তা ভাবনাই করে না, যেন তারা প্রায় সম্পূর্ণরূপে দেহ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন ক'রে ফেলেছে। প্রকৃতপক্ষে, পবিত্র আত্মা মানুষের সঙ্গে যত বেশি করে থাকে, তারা ততই বেশি স্বাভাবিক। তারা কষ্ট পেতে এবং ঈশ্বরের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে জানে, ঈশ্বরের জন্য নিজেদেরকে ব্যয় করতে এবং ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকতে জানে; উপরোন্তু, তারা খাদ্য ও পোশাকের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে। অন্য কথায়, তারা স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের কিছুই হারায়নি যেগুলি মানুষের মধ্যে থাকা উচিত এবং তার বদলে, তারা বিশেষত যুক্তির অধিকারী। কখনও কখনও, তারা ঈশ্বরের বাক্যগুলি পাঠ করে এবং ঈশ্বরের কার্যের বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করে; তাদের অন্তরে বিশ্বাস আছে এবং তারা সত্যের অনুসরণ করতে ইচ্ছুক। স্বভাবতই, এই ভিতটিই হ'ল পবিত্র আত্মার কার্যের ভিত্তি। মানুষ যদি স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা না করে, তাহলে তাদের কাছে কোনো যুক্তি নেই – এটি একটি স্বাভাবিক অবস্থা নয়। যখন মানুষের স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা থাকে এবং পবিত্র আত্মা তাদের সঙ্গে থাকে, তখন তারা অবশ্যই একজন সাধারণ ব্যক্তির মতোই যুক্তির অধিকারী হয় এবং এইভাবেই তাদের একটি স্বাভাবিক অবস্থা থাকে। ঈশ্বরের কার্য অনুভব করার সময়, পবিত্র আত্মার কার্য কদাচিৎ ঘটে থাকে, কিন্তু পবিত্র আত্মার উপস্থিতি হয় প্রায় অটল। যতদিন মানুষের যুক্তি ও চিন্তা স্বাভাবিক থাকে, এবং যতদিন তাদের অবস্থা স্বাভাবিক থাকে, ততদিন পবিত্র আত্মা তাদের সঙ্গে আছেন। যখন মানুষের যুক্তি ও চিন্তা স্বাভাবিক থাকে না, তখন তাদের মনুষ্যত্ব স্বাভাবিক থাকে না। যদি, এই মুহুর্তে, পবিত্র আত্মার কার্য তোমার মধ্যে থাকে, তাহলে পবিত্র আত্মা অবশ্যই তোমার সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু যদি পবিত্র আত্মা তোমার সঙ্গে থাকে, তাহলে এর মানে এই নয় যে পবিত্র আত্মা অবশ্যই তোমার মধ্যে কার্য করছেন, কারণ পবিত্র আত্মা বিশেষ বিশেষ সময়ে কাজ করেন। পবিত্র আত্মার উপস্থিতি শুধুমাত্র মানুষের স্বাভাবিক অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে, কিন্তু পবিত্র আত্মা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়েই কার্য করেন। উদাহরণ স্বরূপ, তুমি যদি একজন নেতা বা কর্মী হও, তাহলে যখন তুমি চার্চকে জল সিঞ্চম কর ও ভরণ-পোষণ সরবরাহ কর, তখন পবিত্র আত্মা তোমাকে এমন কিছু বাক্য দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত করবেন যা অন্যদের জন্য উপদেশমূলক এবং যা তোমার ভ্রাতা ও ভগিনীদের কিছু কিছু ব্যবহারিক সমস্যার সমাধানও করতে পারে – এই রকম সময়ে, পবিত্র আত্মা কার্য করছেন। কখনও কখনও, যখন তুমি ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করছ, তখন পবিত্র আত্মা তোমাকে এমন কিছু বাক্য দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত করেন যা তোমার নিজের অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক, যা তোমাকে নিজ প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে বৃহত্তর জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ দেয়; এও পবিত্র আত্মার কার্য। কখনও কখনও, আমি যখন কথা বলি, তখন তোমরা শ্রবণ কর এবং আমার বাক্যের নিরিখে তোমাদের নিজেদের অবস্থা পরিমাপ করতে সক্ষম হও, এবং কখনও কখনও তুমি আবেগতাড়িত বা অনুপ্রাণিত হও; এই সব হ'ল পবিত্র আত্মার কার্য। কিছু কিছু মানুষ বলে যে পবিত্র আত্মা সর্বদা তাদের মধ্যে কাজ করছেন। এটা অসম্ভব। যদি তারা এটা বলত যে পবিত্র আত্মা সর্বদা তাদের সঙ্গে আছেন, তাহলে সেটা হবে বাস্তবসম্মত। যদি তারা বলে যে তাদের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি সর্বদাই স্বাভাবিক, তাও বাস্তবসম্মত হবে এবং পবিত্র আত্মা যে তাদের সঙ্গে আছেন সেটা দেখাবে। যদি তারা বলে যে পবিত্র আত্মা সর্বদা তাদের মধ্যে কাজ করছে, যে তারা ঈশ্বর দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত এবং প্রতি মুহূর্তে তারা পবিত্র আত্মার স্পর্শ লাভ করেছে, এবং সর্বদাই নতুন জ্ঞান অর্জন করছে, তাহলে এটি কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়! এটা সম্পূর্ণ অতিপ্রাকৃত! নিঃসন্দেহে, এই ধরনের মানুষেরা হ'ল অশুভ আত্মা! এমনকি যখন ঈশ্বরের আত্মা দেহরূপ ধারণ করেন, তখন তাকেও কোনো কোনো সময়ে আহার করতে এবং বিশ্রাম নিতে হবে-সেখানে মানুষের কথা তো ছেড়েই দেওয়া যাক। যারা অশুভ আত্মা দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে তাদের মনে হয় দৈহিক দুর্বলতা থাকে না। তারা সবকিছু ছেড়ে দিতে এবং ত্যাগ করতে সক্ষম, তারা আবেগ থেকে মুক্ত, যন্ত্রণা সহ্য করতে সক্ষম এবং সামান্যতম ক্লান্তিও অনুভব করে না, যেন তারা দেহকে অতিক্রম করে ফেলেছে। এটা কি অতিপ্রাকৃত নয়? অশুভ আত্মার কাজ অতিপ্রাকৃত – কোনো মানুষই এই ধরনের জিনিস অর্জন করতে পারে না! যাদের মধ্যে বিচক্ষণতার অভাব রয়েছে তারা এই ধরনের মানুষদের দেখলে ঈর্ষান্বিত হয়: তারা বলে যে তাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে এত জোর আছে, অত্যন্ত আস্থা রয়েছে এবং তাদের মধ্যে দুর্বলতার সামান্যতম চিহ্নটুকুও দেখা যায় না! প্রকৃতপক্ষে, এই সবই হ'ল কোন এক অশুভ আত্মার কাজের প্রকাশ। কারণ, স্বাভাবিক মানুষের মধ্যে অনিবার্যভাবে মানবসলুভ কিছু দুর্বলতা থাকে; যাদের মধ্যে পবিত্র আত্মার উপস্থিতি আছে তাদের পক্ষে এটাই হ'ল স্বাভাবিক অবস্থা।
কোনো একজনের সাক্ষ্যে অটল থাকার অর্থ কী? কিছু মানুষ বলে যে তারা এখনকার মতই অনুসরণ করে এবং তারা জীবন লাভ করতে সক্ষম কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয় না; তারা জীবন অন্বেষণ করে না, অথচ তারা প্রত্যাহারও করে না। তারা শুধুমাত্র স্বীকার করে যে কাজের এই ধাপটি ঈশ্বর দ্বারা সম্পন্ন হয়। এতে কি তাদের সাক্ষ্য বহন ব্যর্থ হচ্ছে না? এই ধরনের মানুষেরা বিজিত হওয়ার সাক্ষ্যও বহন করে না। যারা বিজিত হয়েছে তারা সব কিছুর পরোয়া না করেই অনুসরণ করে এবং জীবনকে অন্বেষণ করতে সক্ষম হয়। তারা কেবল ব্যবহারিক ঈশ্বরেই বিশ্বাস করে না, তারা ঈশ্বরের সমস্ত ব্যবস্থা অনুসরণ করতেও জানে। তারাই সাক্ষ্য বহন করে। যারা সাক্ষ্য বহন করে না তারা কখনই জীবনের অন্বেষণ করেনি এবং এখনও বিভ্রান্ত হয়েই অনুসরণ করে চলেছে। তুমি অনুসরণ করতে পারো, তবে এর অর্থ এই নয় যে তুমি বিজিত হয়েছ, কারণ আজকে ঈশ্বরের কার্য সম্পর্কে তোমার কোনো উপলব্ধি নেই। বিজিত হতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যারা অনুসরণ করে তারা সকলেই বিজিত হয় নি, কারণ অন্তর থেকে তুমি কিছুই বোঝ না যে কেন তোমাকে আজকের ঈশ্বরকে অনুসরণ করতে হবে, এবং তুমি জানো না যে তুমি এই আজকের দিনটা পর্যন্ত পৌঁছালে কীভাবে, কারা তোমাকে আজ অবধি সমর্থন করে এসেছে। কিছু কিছু মানুষের ঈশ্বরে বিশ্বাসের অনুশীলন সর্বদা তালগোল পাকানো এবং বিভ্রান্ত হয়; সুতরাং, অনুসরণ করার অর্থ এই নয় যে তোমার কাছে তার সাক্ষ্য রয়েছে। সত্য সাক্ষ্য আসলে ঠিক কী? এখানে বলা সাক্ষ্যের দু'টি অংশ রয়েছে: একটি হ'ল বিজিত হওয়ার সাক্ষ্য, এবং অন্যটি হ'ল নিখুঁত হয়ে ওঠার সাক্ষ্য (যা, স্বাভাবিকভাবেই, ভবিষ্যতের বৃহত্তর পরীক্ষা এবং কঠোর যন্ত্রণার পরে সাক্ষ্য হয়ে উঠবে)। অন্য কথায়, যদি তুমি কঠোর যন্ত্রণা এবং পরীক্ষার সময় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম হও, তাহলে তুমি সাক্ষ্যের দ্বিতীয় ধাপটি বহন করবে। আজ যা গুরুত্বপূর্ণ তা হ'ল সাক্ষ্যের প্রথম ধাপ: শাস্তি ও বিচারের পরীক্ষার প্রতিটি ঘটনার সময় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম হওয়া। এটা বিজিত হওয়ার সাক্ষ্য। কারণ এখনই হ'ল জয়ের সময়। (তোমার জানা উচিত যে এখন হ'ল পৃথিবীতে ঈশ্বরের কার্যের সময়; পৃথিবীতে অবতার ঈশ্বরের প্রধান কাজ হ'ল পৃথিবীর এই মানুষদের উপর জয় লাভ করা যারা বিচার এবং শাস্তির মাধ্যমে তাঁকে অনুসরণ করে।) তুমি বিজিত হওয়ার সাক্ষ্য বহন করতে সক্ষম কিনা তা কেবলমাত্র তুমি একেবারে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করতে সক্ষম কিনা তার উপর নির্ভর করে না, বরং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটা নির্ভর করে তুমি ঈশ্বরের কার্যের প্রতিটি পদক্ষেপের অভিজ্ঞতা লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বরের শাস্তি এবং বিচার সম্পর্কেও সঠিক উপলব্ধি করতে সক্ষম কিনা, এবং তুমি সত্যিই এই সমস্ত কাজ উপলব্ধি করতে পার কিনা তার উপরে। শুধুমাত্র শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করেই তুমি একেবারে শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করে পার পেয়ে যেতে পার না। শাস্তি এবং বিচারের প্রতিটি ঘটনার সময় তোমাকে অবশ্যই স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে সক্ষম হতে হবে, তোমার অভিজ্ঞতার প্রতিটি পদক্ষেপকে সত্যই উপলব্ধি করতে, এবং ঈশ্বরের স্বভাব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং আনুগত্য পালন করতে সক্ষম হতে হবে। এটিই হ'ল বিজিত হওয়ার চূড়ান্ত সাক্ষ্য, যা তোমাকে বহন করতে হবে। বিজিত হওয়ার সাক্ষ্য প্রাথমিকভাবে ঈশ্বরের অবতার সম্পর্কে তোমার জ্ঞানকে বোঝায়। গুরুত্বপূর্ণভাবে, সাক্ষ্যের এই পদক্ষেপটি হ'ল ঈশ্বরের অবতারের প্রতি। পৃথিবীর মানুষের সামনে বা যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের সামনে তুমি কী কর বা বল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়; সর্বোপরি যা গুরুত্বপূর্ণ তা হ’ল যে তুমি ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্য এবং তাঁর সমস্ত কাজ মানতে সক্ষম কিনা। অতএব, সাক্ষ্যের এই পদক্ষেপটি নির্দেশিত হয় শয়তানের দিকে এবং ঈশ্বরের সমস্ত শত্রুদের দিকে – দানব এবং শত্রুদের দিকে যারা বিশ্বাস করে না যে ঈশ্বর দ্বিতীয়বার দেহে পরিণত হবেন এবং আরও বৃহৎ কার্য সম্পন্ন করতে আসবেন, এবং উপরন্তু, যারা ঈশ্বরের দেহে ফিরে আসার সত্যকে বিশ্বাস করে না তাদের দিকে। অন্য কথায়, এটি নির্দেশিত হয় সমস্ত খ্রিস্টবিরোধীদের দিকে-সমস্ত শত্রুদের দিকে যারা ঈশ্বরের অবতারে বিশ্বাস করে না।
ঈশ্বরের কথা চিন্তা করা এবং ঈশ্বরের জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা প্রমাণ করে না যে তুমি ঈশ্বর দ্বারা বিজিত হয়েছেন; এটি নির্ভর করে তুমি বিশ্বাস কর কিনা যে তিনি হলেন বাক্য যা দেহরূপ ধারণ করেছে, এবং তুমি বিশ্বাস কর কিনা যে বাক্য দেহে পরিণত হয়েছে এবং তুমি বিশ্বাস কর কিনা যে আত্মা বাক্য হয়ে উঠেছে এবং বাক্য দেহে আবির্ভূত হয়েছে তার উপরে। এই হ'ল মূল সাক্ষ্য। তুমি কীভাবে অনুসরণ কর, বা তুমি কীভাবে নিজেকে ব্যয় কর তা গুরুত্বপূর্ণ নয়; গুরুত্বপূর্ণ হ'ল তুমি এই স্বাভাবিক মনুষ্যত্ব থেকে এটি আবিষ্কার করতে সক্ষম কিনা যে বাক্য দেহে পরিণত হয়েছে এবং সত্যের আত্মাকে দেহের মধ্যে রূপায়িত করা হয়েছে – যে সমস্ত সত্য, পথ এবং জীবন দেহে উপনীত হয়েছে, ঈশ্বরের আত্মা সত্যিই আগত হয়েছে এবং আত্মা এসেছে দেহে। যদিও, আপাতভাবে, এটি পবিত্র আত্মার ধারণা থেকে ভিন্ন বলে মনে হলেও, এই কাজে তুমি আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছ যে আত্মাকে ইতিমধ্যেই দেহে রূপায়িত করা হয়েছে, এবং সর্বোপরি, বাক্য দেহে পরিণত হয়েছে এবং বাক্য আবির্ভূত হয়েছে দেহে। তুমি শব্দগুলির প্রকৃত অর্থ বুঝতে সক্ষম: “শুরুতে ছিল বাক্য, এবং বাক্য ছিল ঈশ্বরের সঙ্গে, এবং ঈশ্বর ছিলেন বাক্য।” এছাড়াও, তোমাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে আজকের বাক্য হলেন ঈশ্বর, এবং দেখ বাক্য দেহে পরিণত হয়েছে। সবসেরা এই সাক্ষ্যই তুমি বহন করতে পার। এটি প্রমাণ করে যে তুমি ঈশ্বরের প্রকৃত জ্ঞানের অধিকারী হয়ে উঠেছ – তুমি শুধু কেবল তাঁকে জানতেই সক্ষম নও, বরং এই বিষয়েও সচেতন যে তুমি আজ যে পথে হাঁটছ তা হ'ল জীবনের পথ, এবং সত্যের পথ। যীশু যে কাজটি করেছিলেন তা কেবলমাত্র “বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিল” এর সারসত্যকে সিদ্ধ করেছিল: ঈশ্বরের সত্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিল, এবং ঈশ্বরের আত্মা দেহের সঙ্গে ছিল এবং সেই তা দেহ থেকে অবিচ্ছেদ্য ছিল। অর্থাৎ, ঈশ্বরের অবতাররূপ দেহ ঈশ্বরের আত্মার সঙ্গে ছিল, যা আরও বেশি করে প্রমাণ করে যে যীশু অবতার ছিলেন ঈশ্বরের প্রথম অবতার। কাজের এই ধাপটি সুনির্দিষ্টভাবে “বাক্য দেহে পরিণত হয়”-এর অভ্যন্তরীণ অর্থ সিদ্ধ করে, “বাক্য ছিল ঈশ্বরের সঙ্গে, এবং ঈশ্বর ছিলেন বাক্য”-কে গভীরতর অর্থ প্রদান করে এবং তোমাকে “শুরুতে ছিল বাক্য”-এই বাক্যগুলিকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার অনুমতি দেয়। যার অর্থ হল, সৃষ্টির সময় ঈশ্বর বাক্যসমূহের অধিকারী ছিলেন, তাঁর বাক্যসমূহ তাঁর সঙ্গে ছিল এবং তাঁর থেকে অবিচ্ছেদ্য ছিল, এবং সর্বশেষ যুগে, তিনি তাঁর বাক্যসমূহের শক্তি ও কর্তৃত্বকে আরও স্পষ্ট করে তোলেন এবং মানুষকে তাঁর পথের সবকিছু দেখার – তাঁর সমস্ত কথা শোনার অনুমতি দেন। এটাই হ'ল সর্বশেষ যুগের কাজ। তোমাকে অবশ্যই এই জিনিসগুলিকে সম্পূর্ণরূপে বুঝতে হবে। এটি দেহকে জানার প্রশ্ন নয়, বরং প্রশ্নটি হ’ল এই যে তুমি কীভাবে দেহ এবং বাক্য উপলব্ধি কর। এই সাক্ষ্য যা তোমাকে অবশ্যই বহন করতে হবে, যা সকলকে জানতে হবে। কারণ এটি হ'ল দ্বিতীয় অবতারের কাজ – এবং শেষবার যখন ঈশ্বর দেহে পরিণত হন – এটি অবতারের তাৎপর্যকে পুরোপুরি সম্পূর্ণ করে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সম্পন্ন করে এবং ঈশ্বরের সমস্ত কার্যকে দেহে প্রকাশ করে, এবং ঈশ্বরের দেহে অস্তিত্বের যুগের অবসান ঘটায়। সুতরাং, তোমাকে অবশ্যই অবতারের অর্থ জানতে হবে। তুমি কতটা দৌড়ে বেড়াচ্ছ বা তুমি অন্যান্য বাহ্যিক বিষয়গুলি কতটা ভালভাবে পরিচালনা করছ তা গুরুত্বপূর্ণ নয়; যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হ'ল যে তুমি প্রকৃত অর্থে ঈশ্বরের সামনে আত্মসমর্পণ করতে এবং তোমার সম্পূর্ণ সত্তাকে ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করতে এবং তাঁর মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্য মান্য করতে সক্ষম কিনা। এটিই তোমার করা উচিত এবং তোমার মেনে চলা উচিত৷
সাক্ষ্যের শেষ ধাপ হল তুমি নিজেকে ত্রুটিমুক্ত হতে দিতে সক্ষম কিনা তার সাক্ষ্য – যার অর্থ হল, ঈশ্বর অবতারের মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্য বুঝতে পেরে তুমি ঈশ্বরের জ্ঞানের অধিকারী হয়েছ এবং তাঁর সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে উঠেছ, তুমি ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত সমস্ত বাক্য পালন কর এবং ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে যে শর্তগুলি চান তা অর্জন কর – পিতরের শৈলী এবং ইয়োবের বিশ্বাস – যা তুমি আমৃত্যু পালন করতে পারো, তাঁর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পন করতে পারো, এবং শেষ পর্যন্ত এমন একজন ব্যক্তির প্রতিমূর্তি অর্জন কর যে হবে মানসম্মত, যার অর্থ এমন একজনের প্রতিমূর্তি যাকে জয় করা হয়েছে এবং ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার পর নিখুঁত করে তোলা হয়েছে। এটিই হ'ল চূড়ান্ত সাক্ষ্য – এটি এমন সাক্ষ্য যা তার দ্বারা বাহিত হওয়া উচিত যে শেষ পর্যন্ত নিখুঁত হয়ে উঠেছে। এগুলি হ'ল সাক্ষ্যের দুটি ধাপ যা তোমাকে বহন করতে হবে, এবং এগুলি পরস্পর সম্পর্কিত, যার প্রতিটি অপরিহার্য। তবে একটি জিনিস তোমার অবশ্যই জানা উচিত: আজ আমি তোমার কাছে যে সাক্ষ্য চাই তা পৃথিবীর মানুষদের বা কোন একক ব্যক্তির প্রতি নির্দেশিত নয়, বরং আমি তোমার কাছে যা চাইছি তার জন্য। এর পরিমাপ করা হয় তুমি আমাকে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম কিনা এবং তুমি তোমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আমার প্রয়োজনীয়তার মানগুলি সম্পূর্ণরূপে পূরণ করতে সক্ষম কিনা তা দিয়ে। এটি তোমাদের বোঝা উচিত।