সকলের নিজেদের কর্ম পালনের প্রসঙ্গে
বর্তমান সময়ে যারা সত্যিই ঈশ্বরকে ভালোবাসে শুধুমাত্র তারাই তাঁর দ্বারা পূর্ণতাপ্রাপ্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। তারা তরুণ কিংবা বয়স্ক যাই হোক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য রাখে এবং তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণতা পেতে পারে। ঈশ্বর মানুষের বিভিন্ন কর্ম অনুযায়ী তাদেরকে পূর্ণতা দিয়ে থাকেন। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তোমার সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করবে এবং ঈশ্বরের কাজে নিজেকে সমর্পণ করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাঁর দ্বারা পূর্ণতা পাবে। বর্তমানে তোমরা কেউই পূর্ণ নও। কখনো তুমি এক ধরনের কাজ করতে পারো, এবং অন্য সময় করতে পারো দুই ধরনের। কেবল যতক্ষণ তুমি তোমার সর্বস্ব দিয়ে নিজেকে ঈশ্বরের কাজে উৎসর্গ করবে, পরিণামে তুমি তাঁর দ্বারাই পূর্ণতা পাবে।
জীবন ধারণের জন্য তরুণদের কিছু দর্শন রয়েছে; এবং তাদের রয়েছে জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টির অভাব। মানুষের জ্ঞান এবং অন্তর্দৃষ্টিকে পূর্ণতা দানের জন্য ঈশ্বর এখানে রয়েছেন। তাঁর কথা তাদের সকল ঘাটতি মেটাতে পারে। যাইহোক, তরুণদের স্বভাব অস্থির প্রকৃতির, এবং ঈশ্বরের দ্বারাই তা রূপান্তরিত হওয়া উচিৎ। জীবন ধারণের জন্য তরুণদের কম সংখ্যক ধর্মীয় দর্শন ও ধারণা রয়েছে; তারা সবকিছুই খুব সহজভাবে চিন্তা করে থাকে এবং তাদের ভাবনা গভীর নয়। এটা তাদের জীবনের সেই অংশ যা কিনা এখনো কোন আকৃতি ধারণ করেনি, এবং এটা একটা প্রশংসনীয় অংশ; যদিও তরুণরা অজ্ঞ ও তাদের রয়েছে জ্ঞানের অভাব। এটা এমন একটা জিনিস যা কিনা ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণতা পাওয়া প্রয়োজন। ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণতাপ্রাপ্তি তোমাদের সূক্ষ্ম বিচারশক্তি গঠনে সক্ষম করে তুলবে। তোমরা অনেক আধ্যাত্মিক বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝতে সক্ষম হবে এবং ধীরে ধীরে এমন মানুষে পরিণত হবে যে কিনা ঈশ্বরের কাজের উপযোগী। বয়স্ক ভাই-বোনদেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে এবং তারা ঈশ্বরের দ্বারা বর্জিত নয়। বয়স্ক ভাই-বোনদেরও কিছু কাঙ্ক্ষিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত দিক রয়েছে। জীবন ধারণের জন্য তাদের অধিকতর দর্শন এবং ধর্মীয় বিশ্বাস রয়েছে। তাদের কাজে কর্মে তারা বেশ কিছু কঠোর রীতিনীতি মেনে চলে, বিধি নিষেধের প্রতি অনুরাগ থাকার ফলে যান্ত্রিকভাবে কোন প্রকার নমনীয়তা ছাড়াই তারা এসব মেনে চলে। এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত দিক। যাইহোক, এসব বয়স্ক ভাই-বোনেরা শান্ত ও অবিচল থাকে যা-ই ঘটুক না কেন; তাদের স্বভাব খুবই সুস্থির এবং তাদের উগ্র মেজাজ নেই। কোন কিছু গ্রহণ করতে তারা ধীর হতে পারে কিন্তু এটা কোন বড় ভুল নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সমর্পণ করতে পারো; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের প্রচলিত বাক্যগুলো মেনে নিতে পারো এবং সেগুলো সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ না করো; যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা শুধুমাত্র নত ও অনুগামী হওয়ার চিন্তা করো এবং ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি অভিমত ব্যক্ত না করো অথবা সেগুলো সম্পর্কে কোনো খারাপ ধারণা পোষণ না করো; যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাঁর বাক্য মানো এবং সেই অনুযায়ী কাজ করো—তাহলে, এসব শর্ত পূরণ হলে, তবে বলা যায় যে তখন তোমরা পূর্ণতা পেতে পারো।
তুমি তরুণ কিংবা বয়স্ক ভাই অথবা বোন যা-ই হওনা কেন তুমি জানো যে কোন দায়িত্ব পালন করতে তুমি বাধ্য। যারা তরুণ তারা উগ্র নয়; আবার যারা বৃদ্ধ তারা অসাড় নয় কিংবা তারা প্রত্যাবর্তনও করেনা। বরং, তারা একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারে, এবং কোন প্রকার পক্ষপাত ছাড়াই তারা একে অপরের সেবা করতে পারে। তরুণ এবং বয়স্ক ভাই ও বোনদের মধ্যে বন্ধুত্বের একটা সেতু গড়ে ওঠে এবং ঈশ্বরের ভালোবাসার জন্যই তোমরা একে অপরকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারো। তরুণ ভাই এবং বোনেরা বয়স্ক ভাই ও বোনদের ছোট করে দেখে না, আবার বয়স্ক ভাই ও বোনেরাও অহংকারী নয়: এটা কি সমন্বয়পূর্ণ অংশীদারিত্ব নয়? যদি তোমাদের সকলেরই এরকম দৃঢ় সংকল্প থাকে তবে ঈশ্বরের ইচ্ছা অবশ্যই তোমাদের প্রজন্মেই পূরণ করা সম্ভব হবে।
ভবিষ্যতে তুমি সৌভাগ্যবান হবে নাকি অভিশপ্ত হবে তা নির্ভর করে তোমার বর্তমানের কাজ এবং আচরণের উপর। যদি তুমি ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণতা পেতে চাও তবে সেটা এখনই, এই যুগেই হতে হবে; ভবিষ্যতে অন্য কোন সুযোগ আসবে না। ঈশ্বর সত্যিই তোমাদেরকে পূর্ণতা দিতে চান বর্তমানে, এবং এটা শুধু কথার কথা নয়। ভবিষ্যতে তোমাদের সামনে যে পরীক্ষাই আসুক না কেন, যা কিছুই ঘটুক না কেন, কিংবা তোমরা যেকোনো দুর্যোগের সম্মুখীন হও না কেন, ঈশ্বর তোমাদেরকে পূর্ণতা দিতে চান; এটা একটা নির্দিষ্ট এবং অনস্বীকার্য সত্য। এটা কোথায় দেখা যায়? এটা এর দ্বারাই দেখা যায় যে ঈশ্বরের বাক্য, যুগের পর যুগ এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে, কখনই এত উচ্চ স্থান অর্জন করতে পারেনি, যা বর্তমানে অর্জন করেছে। এটা সর্বোচ্চ ক্ষেত্র অর্জন করেছে, এবং বর্তমানে সমগ্র মানবজাতির উপর পবিত্র আত্মার কাজ নজিরবিহীন। অতীত প্রজন্মে হয়তো কারোরই এরকম অভিজ্ঞতা ছিল না; এমনকি যিশুর যুগেও এরকম বিস্ময়কর প্রকাশ উপস্থিত ছিল না। যে কথাগুলো তোমাদেরকে বলা হয়েছে, তোমরা যা বুঝেছো, এবং তোমাদের যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তা সবই একটা নতুন শিখরে পৌঁছেছে। বিভিন্ন পরীক্ষা এবং শাস্তির মধ্যে থেকেও তোমরা দূরে সরে যাওনি, এবং এটাই প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট যে ঈশ্বরের কাজ নজিরবিহীন সমারোহ অর্জন করেছে। এটা এমন কিছু নয় যা মানুষ করতে পারবে অথবা বজায় রাখতে পারবে; বরং, এটা ঈশ্বরের নিজেরই কাজ। এইভাবেই, ঈশ্বরের বিভিন্ন কাজের বাস্তবতা থেকে এটাই দেখা যায় যে ঈশ্বর মানুষকে পূর্ণতা দিতে চান, এবং তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে পূর্ণতা দিতে পারেন। এই অন্তর্দৃষ্টি যদি তোমাদের থেকে থাকে, এবং যদি এটা নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারো, তবে তোমাদেরকে যীশুর প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকতে হবে না; বরং তোমরা ঈশ্বরকে সুযোগ দেবে এই বর্তমান যুগেই তোমাদেরকে পূর্ণতা দিতে। অতএব, তোমাদের সকলেরই সর্বাধিক চেষ্টা করা উচিৎ, কোন প্রয়াস বাদ না রেখে, যেন তোমরা ঈশ্বরের দ্বারা পূর্ণতা পাও।
এখন, নেতিবাচক বিষয়ের প্রতি তোমার মনোনিবেশ করা উচিৎ নয়। প্রথমত, যা কিছুই তোমাকে নেতিবাচক অনুভব করায় সেগুলোকে দূরে সরিয়ে রাখো এবং উপেক্ষা করো। যখন তুমি কোন বিষয় সামলাচ্ছ তখন এমন একটা মন নিয়ে কাজটা করো যা কিনা অনুসন্ধান করে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যায়, এমন একটা মন যা কিনা ঈশ্বরের নিকট সমর্পণ করে। যখনই তোমরা নিজেদের মধ্যে কোন দুর্বলতা খুজে পাও কিন্তু সেটাকে তোমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে দাও না, এবং সেটাকে ঘৃণা করো, নিজেদের করণীয় কাজগুলো করো, তোমরা একটা ইতিবাচক ধাপ সামনে এগিয়ে থাকো। উদাহরণস্বরূপ, তোমাদের বয়স্ক ভাই ও বোনেদের ধর্মীয় ধারণা রয়েছে, তারপরেও তুমি প্রার্থনা করতে পারো, সমর্পণ করতে পারো, ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করতে পারো এবং তাঁর বন্দনা গাইতে পারো…। এটা বলা যায় যে, তোমার যতটা শক্তি জড় করা সম্ভব তার সবটুকু দিয়ে নিজেকে নিবেদিত করতে হবে এবং যে কাজের দ্বারা করা সম্ভব তা করতে হবে। নিষ্ক্রিয় হয়ে অপেক্ষা করো না। তোমার কর্তব্য পালনের মাধ্যমে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারাটাই প্রথম ধাপ। তারপর, তুমি যখন সত্যটাকে বুঝতে শুরু করবে এবং ঈশ্বরের বাক্যের প্রকৃত অস্তিত্বে প্রবেশ করতে পারবে, তখন তুমি তাঁর দ্বারা পূর্ণতা পাবে।