তেরোটি পত্রের সাপেক্ষে তোমার অবস্থান কীরূপ?

বাইবেলের নতুন নিয়মে পৌলের তেরোটি পত্র সন্নিবিষ্ট রয়েছে। তার কাজ করা কালীন, পৌল যীশু খ্রীষ্টের ওপর আস্থাস্থাপন করেছিল এমন গির্জাগুলির উদ্দেশ্যে তেরোখানি পত্র লিখেছিল। অর্থাৎ, পৌলকে উন্নীত করা হয়েছিল এবং যীশুর স্বর্গারোহণের পর সে এই পত্রগুলি লিখেছিল। তার পত্রগুলি প্রভু যীশুর মৃত্যুর পর তাঁর পুনরুত্থান এবং স্বর্গারোহণের সাক্ষ্য, এবং এগুলি অনুতাপ এবং ক্রুশ বহনের পথও প্রসারিত করেছিল। অবশ্যই, এই বার্তা এবং সাক্ষ্যসকলের লক্ষ্য ছিল তৎকালে যিহুদীয়ার আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী ভাই ও বোনেদের শিক্ষাদান করা, কারণ সেই সময়ে পৌল ছিল প্রভু যীশুর পরিচারক এবং তাঁর সাক্ষ্য বহনের জন্যই তাঁকে উন্নীত করা হয়েছিল। পবিত্র আত্মার কার্যের প্রতিটি পর্যায়ে, প্রভুর বিভিন্ন কার্য সম্পাদনের জন্য, অর্থাৎ, ঈশ্বর নিজে যে কার্যটি সম্পূর্ণ করেছেন তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রেরিত শিষ্যদের ভূমিকা পালনের জন্য বিভিন্ন মানুষকে উন্নীত করা হয়। যদি পবিত্র আত্মা প্রত্যক্ষভাবে সে কার্য করতেন, এবং কাউকে উন্নীত না করা হত, তাহলে কার্য সম্পন্ন করা খুবই কঠিন হয়ে যেত। এই কারণেই, পৌলকে দামাস্কাস যাওয়ার পথে আঘাত হয়েছিল, এবং তারপরে প্রভু যীশুর সাক্ষী হওয়ার জন্য তাকে উন্নীত করা হয়েছিল। যীশুর বারোজন শিষ্য ছাড়াও সে ছিল এক প্রেরিত শিষ্য। সুসমাচারের প্রচার ছাড়াও, সে বিভিন্ন স্থানে গির্জার নেতৃত্বদানের কাজও সম্পাদন করেছিল, যার মধ্যে গির্জার ভাই ও বোনেদের দেখাশোনার কাজও অন্তর্ভুক্ত ছিল—অন্যভাবে বললে, ভাই ও বোনেদের প্রভুর অভিমুখে চালিত করার দায়িত্ব নির্বাহ করেছিল। পৌলের সাক্ষ্য ছিল প্রভু যীশুর পুনরুত্থান এবং স্বর্গারোহণের ঘটনা সম্পর্কে সকলকে অবহিত করার জন্য, সেইসাথে লোকেদের অনুতপ্ত হওয়ার, স্বীকারোক্তি প্রদান করার এবং ক্রুশের পথে চলার বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য। সে ছিল সেই সময়ে যীশু খ্রীষ্টের অন্যতম সাক্ষী।

পৌলের তেরোটি পত্র বাইবেলে ব্যবহারের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। এই তেরোখানি পত্রের সবগুলিই সে লিখেছিল বিভিন্ন স্থানে মানুষের বিভিন্ন পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করার উদ্দেশ্যে। পবিত্র আত্মা তাকে এগুলি লেখার দিকে চালিত করেছিলেন এবং এক প্রেরিত শিষ্যের অবস্থান থেকে (প্রভু যীশুর এক পরিচারকের দৃষ্টিকোণ থেকে) সে সকল স্থানের ভাই ও বোনেদের শিক্ষাদান করেছিল। তাই, পৌলের পত্রগুলি কোনো ভবিষ্যদ্বাণী থেকে অথবা প্রত্যক্ষ কোনো দর্শন থেকে উদ্ভূত হয় নি, বরং সেগুলি তার গৃহীত কাজের থেকেই উৎপন্ন হয়েছিল। এই পত্রগুলি আশ্চর্য কিছু নয়, আবার ভবিষ্যদ্বাণীর মতো এগুলি বুঝে ওঠা দুরূহও কিছু নয়। এগুলি সাধারণ পত্রের আকারেই লিখিত, এবং এগুলিতে ভবিষ্যদ্বাণী বা রহস্য কোনোটাই নেই; শুধু রয়েছে কিছু সাধারণ নির্দেশনামূলক বাক্য। এগুলির বেশ কিছু বাক্য মানুষের পক্ষে ধারণায় আনা বা উপলব্ধি করা কঠিন বলে মনে হলেও, সেগুলি কেবল পবিত্র আত্মার আলোকপ্রদান এবং পৌলের নিজস্ব ব্যাখ্যা থেকেই উৎপন্ন হয়েছিল। পৌল কোনো নবী ছিল না, বরং সে ছিল এক প্রেরিত শিষ্যমাত্র; প্রভু যীশুর দ্বারা ব্যবহৃত এক সেবকবিশেষ। বিভিন্ন স্থানের মধ্যে দিয়ে পরিভ্রমণকালে, গির্জার ভাই-বোনেদের উদ্দেশ্যে সে পত্র লিখেছিল অথবা অসুস্থ থাকাকালীন যে সমস্ত গির্জায় যাওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সে যেতে পারে নি, সেই সমস্ত গির্জার উদ্দেশ্যেও পত্র লিখেছিল। সেই মতো, তার পত্রগুলি লোকেরা সংরক্ষিত রেখে দিয়েছিল এবং পরবর্তীকালে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষ সেগুলিকে সংগ্রহ ও সংগঠিত করে বাইবেলের চারটি সুসমাচারের পরে বিন্যস্ত করেছিল। নিশ্চিতভাবে, তারা তার লেখা সকল সেরা পত্রগুলি বেছে নিয়ে একটি সংকলন তৈরি করেছিল। এই পত্রগুলি গির্জার ভাই ও বোনেদের জীবনযাত্রার পক্ষে উপযোগী ছিল এবং তার সময়কালে বিশেষ প্রসিদ্ধও ছিল। যখন পৌল সেগুলি লিখেছিল, তখন তার ভাই ও বোনদের অনুশীলনীয় এক পথ খুঁজে পেতে সহায়ক কোনো আধ্যাত্মিক সাহিত্যকর্ম, অথবা তার নিজের অভিজ্ঞতাসমূহ প্রকাশের উদ্দেশ্যে এক আধ্যাত্মিক জীবনী রচনার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না; একজন লেখক হয়ে ওঠার জন্য বই লেখার অভিপ্রায়ও তার ছিল না। সে কেবল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের গির্জার ভাই ও বোনদের উদ্দেশ্যে পত্র লিখছিল। একজন পরিচারকের অবস্থান থেকে তার দায়ভার, প্রভু যীশুর ইচ্ছা, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষের উপর তাঁর অর্পিত দায়িত্বসমূহের বিষয়ে তাদের অবহিত করার উদ্দেশ্যেই পৌল তার ভাই ও বোনদের শিক্ষাদান করেছিল। পৌল এই কাজই সম্পাদিত করেছিল। ভবিষ্যতের সমস্ত ভাই ও বোনেদের অভিজ্ঞতার জন্য, তার বাক্যগুলি বেশ শিক্ষাপ্রদ ছিল। তার এই পত্রাবলীর মাধ্যমে যে সত্য সে জ্ঞাপন করেছিল, তা ছিল অনুগ্রহের যুগে মানুষের যা অনুশীলন করা উচিত, আর সে কারণেই পরবর্তী প্রজন্ম এই পত্রগুলিকে নতুন নিয়মের মধ্যে সজ্জিত করেছিল। পৌলের কাজের ফলাফল অন্তিমে যেমনই দাঁড়াক না কেন, সে ছিল এমন একজন যে তার সময়কালে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং যে গির্জার ভাই ও বোনেদের অবলম্বন যুগিয়েছিল। তার কাজের ফলাফল নির্ধারিত হয়েছিল তার অন্তর্নিহিত উপাদানের দ্বারা, এবং একই সঙ্গে আদিতে ঈশ্বর কর্তৃক তার আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার দ্বারাও বটে। পবিত্র আত্মার কার্যের অধিকারী ছিল বলেই সে সেই সময়ে এই সমস্ত কথা বলতে সক্ষম হয়েছিল, আর এই কাজের জন্যই গির্জাগুলির দরুন পৌলকে অনেক কষ্টস্বীকার করতে হয়েছিল। সেই অর্থে, সে তার ভাই ও বোনেদের সংস্থান সরবরাহ করতে সক্ষম ছিল। কিন্তু, নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ পরিস্থিতির কারণে, পৌল নিজে সশরীরে কাজকর্মের জন্য গির্জায় যেতে সক্ষম ছিল না, সেই কারণেই সে প্রভুর ভাই ও বোনেদের ভর্ৎসনা করতে তাদের পত্র লিখেছিল। প্রথমে, পৌল প্রভু যীশুর শিষ্যদের নিগৃহীত করেছিল, কিন্তু যীশুর স্বর্গারোহণের পর—অর্থাৎ, পৌল “আলো প্রত্যক্ষ” করার পরে—প্রভু যীশুর শিষ্যদের নির্যাতনে সে ক্ষান্তি দিয়েছিল, এবং প্রভুর পথের স্বার্থে সুসমাচার প্রচারকারী সন্তদেরও আর নিপীড়ন করে নি। এক উজ্জ্বল আলো রূপে যীশুকে তা সম্মুখে আবির্ভূত হতে দেখার পর থেকে, পৌল প্রভুর অর্পিত দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এবং এইভাবেই সে পবিত্র আত্মার দ্বারা সুসমাচার প্রচারের কাজে ব্যবহৃত একজন ব্যক্তি হয়ে উঠেছিল।

সেই সময়ে পৌলের কাজ ছিল শুধুমাত্র তার ভাই ও বোনেদের অবলম্বন ও সংস্থানের যোগান দেওয়া। যারা নিজেদের জন্য এক সফল পেশাদারী জীবন গড়ে তুলতে চায় বা সাহিত্য সৃষ্টির ইচ্ছা পোষণ করে, অন্য কোনো উপায় অন্বেষণ করতে চায়, বা গির্জার সকল লোকেদের নতুন প্রবেশ লাভের পথ দেখাতে বাইবেলের পথ ব্যতিরেকে অন্য পথের অন্বেষণ করে—পৌল তাদের মত মানুষ ছিল না। পৌল এমন এক ব্যক্তি ছিল যাকে ব্যবহার করা হয়েছিল; তার কাজকর্মের মাধ্যমে, সে নিছকই তার কর্তব্য পালন করছিল। গির্জার জন্য কষ্টস্বীকার না করলে, সেটা তার কর্তব্যে অবহেলা বলে বিবেচিত হত। কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি হলে, বা গির্জায় বিশ্বাসঘাতকতার কোনো ঘটনা ঘটার ফলে সেখানকার লোকদের মধ্যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, সে তার কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করে নি বলে বিবেচনা করা হতে পারত। কোনো কর্মী যদি গির্জার স্বার্থে কষ্টভোগ করে, এবং তাদের যথাসাধ্য কাজও করে, তাহলেই প্রমাণিত হয় যে এই ব্যক্তি একজন যোগ্য কর্মী—ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। কোনো কর্মী যদি গির্জার জন্য কষ্টস্বীকারের কোনো তাগিদ অনুভব না করে, এবং তার কাজে কোনো ফলাফল অর্জিত না হয়, আর তাদের নেতৃত্বাধীন অধিকাংশ লোক যদি দুর্বল বা এমনকি নিম্নগামী হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেই কর্মী তার কর্তব্য পূরণ করে নি। তেমনভাবেই, পৌলও কোনও ব্যতিক্রম ছিল না, সেই কারণেই তাকে গির্জার দেখাশোনা করতে হয়েছিল এবং ভাই ও বোনেদের ঘন ঘন পত্র লিখতে হয়েছিল। এই ভাবেই সে গির্জাগুলিকে সংস্থান সরবরাহ করতে, এবং ভাই-বোনেদের দেখাশোনা করতে সক্ষম হয়েছিল; শুধুমাত্র এই উপায়েই গির্জাগুলি তার থেকে রসদ ও পরিচালনা লাভ করতে পারতো। তার পত্রে লিখিত কথাগুলি খুবই গভীর হলেও, সেগুলি কিন্তু পবিত্র আত্মার দ্বারা তার আলোকপ্রাপ্তির পরেই ভাই-বোনেদের উদ্দেশ্যে লিখিত হয়েছিল, আর তার লেখায় নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অনুভূত দায়ভারের বুনন ফুটে উঠেছিল। পৌল ছিল নিছকই পবিত্র আত্মা দ্বারা ব্যবহৃত এক ব্যক্তি, এবং তার সকল পত্রের বিষয়বস্তুতে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা ছড়ানো ছিল। তার সম্পাদিত কাজ কেবলমাত্র একজন প্রেরিত শিষ্যের কাজের প্রতিনিধিত্ব করে, তা যেমন প্রত্যক্ষভাবে পবিত্র আত্মার সম্পাদিত কাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, তেমনই তা খ্রীষ্টের কাজের থেকেও আলাদা। পৌল নিছকই তার দায়িত্ব পালন করছিল, যে কারণে সে তার প্রভুর ভাই ও বোনেদের, তার দায়ভারের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং অন্তর্দৃষ্টিও সরবরাহ করেছিল। পৌল তার ব্যক্তিগত অন্তর্দৃষ্টি এবং উপলব্ধি প্রদানের মাধ্যমে নিছকই ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদন করছিল; নিশ্চিতভাবেই তা স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে সম্পাদিত কার্যের কোনো দৃষ্টান্ত ছিল না। সেই অর্থে, পৌলের কাজের মধ্যে মানবিক অভিজ্ঞতা, মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং গির্জার কাজের উপলব্ধির সংমিশ্রণ ঘটেছিল। তবে, এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং উপলব্ধিকে মন্দ আত্মার কাজ বা রক্তমাংসের মানুষের কাজ বলে অভিহিত করা যায় না; বরং তাদের শুধুমাত্র পবিত্র আত্মার দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা হিসাবেই বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে আমি বোঝাতে চাইছি যে, পৌলের পত্র স্বর্গ থেকে প্রেরিত কোনও পুস্তক নয়। সেগুলি পবিত্র নয়; এবং আদৌ পবিত্র আত্মার দ্বারা উচ্চারিত বা অভিব্যক্ত নয় নি; সেগুলি নিছকই গির্জার কারণে পৌলের ওপর অর্পিত দায়ভারের এক অভিব্যক্তি। আমার এই সব বলার উদ্দেশ্য তোমরা যাতে ঈশ্বর এবং মানুষের কাজের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারো: ঈশ্বরের কার্য স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করে, আর মানুষের কাজ মানুষের কর্তব্য এবং অভিজ্ঞতার প্রতিনিধিত্ব করে। ঈশ্বরের স্বাভাবিক কার্যকে মানুষের ইচ্ছা এবং তাঁর অতিপ্রাকৃতিক কার্যকে ঈশ্বরের ইচ্ছা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়; তদুপরি, মানুষের উচ্চমার্গের ধর্মীয় আলোচনাকে ঈশ্বরের উচ্চারণ বা স্বর্গীয় পুস্তক হিসাবে বিবেচনা করাও উচিত নয়। এই ধরনের যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিই অনৈতিক হবে। পৌলের তেরোটি পত্র সম্পর্কে আমার এই বিশ্লেষণ শুনে অনেকে মনে করে যে পৌলের পত্রগুলি পড়া উচিত নয় এবং পৌল খুবই পাপী এক মানুষ ছিল। এমনকি অনেকেই আবার আমার বাক্যগুলিকে সহানুভূতিহীন বলে মনে করে, ভাবে পৌলের পত্র সম্পর্কে আমার এই মূল্যায়ন সঠিক নয় এবং মনে করে সেই পত্রগুলিকে মানুষের অভিজ্ঞতা এবং দায়ভারের অভিব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা যায় না। তাদের বিশ্বাস হল, এগুলিকে বরং ঈশ্বরের বাক্য হিসাবেই গণ্য করা উচিত, যেন সেগুলি যোহনের উদ্ঘাটন পুস্তিকার সমান গুরুত্বপূর্ণ, তাতে কোনোভাবেই কিছু যোগ করা বা সংক্ষিপ্ত করা যায় না, এবং তদুপরি, সেগুলিকে লঘুভাবে ব্যাখ্যাও করা যায় না। এই সকল মনুষ্যোচিত দাবি কি ভুল নয়? এগুলি কি মানুষের নির্বুদ্ধিতার ফল নয়? পৌলের পত্রগুলি সত্যিই মানুষের অনেক উপকারসাধন করেছে, আর সেগুলির ইতোমধ্যেই ২০০০ বছরের চেয়েও বেশি সময়ের ইতিহাস রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আজও অনেকেই তার সেই সময়ে বলা কথাগুলির অর্থ উদ্ধার করতে পারে না। লোকেরা পৌলের পত্রগুলিকে সমগ্র খ্রীষ্টধর্মের মহানতম কীর্তি বলে মনে করে, মনে করে কেউই সেগুলিকে উদ্ঘাটন করতে এবং সম্পূর্ণ বুঝে উঠতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে, এই পত্রগুলি একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তির আত্মজীবনীর মতো, এবং সেগুলিকে কোনোমতেই যীশুর বাক্য বা যোহনের দেখা মহান দর্শনের সাথে তুলনা করা যায় না। প্রতিতুলনাক্রমে, যোহন স্বর্গের মহান দর্শন প্রত্যক্ষ করেছিল—ঈশ্বরের নিজের কাজের ভবিষ্যদ্বাণী চাক্ষুষ করেছিল—যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয়, আর সেখানে পৌলের পত্রগুলি হল শুধুই মানুষের চোখে দেখা ও অভিজ্ঞতালব্ধ ঘটনার বিবরণমাত্র। মানুষ এগুলি সম্পাদনে সক্ষম, কিন্তু এগুলি ভবিষ্যদ্বাণী বা দর্শন কোনোটাই নয়; এগুলি নিছকই বিভিন্ন স্থানে প্রেরিত পত্র। সেই সময়ের মানুষের কাছে অবশ্য পৌল ছিল একজন কর্মী, আর তাই তার কথার গুরুত্ব ছিল, কারণ সে তার উপর ন্যস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। সুতরাং, যারা খ্রীষ্টের অন্বেষণ করতো, তাদের সকলের কাছেই এই পত্রগুলি উপযোগী ছিল। ওই কথাগুলি স্বয়ং যীশুর দ্বারা কথিত না হলেও, পরিশেষে সেগুলি সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অপরিহার্য ছিল। সেই কারণেই, পৌলের পরবর্তীকালের মানুষজন তার পত্রগুলিকে বাইবেলে সন্নিবিষ্ট করেছিল, এই ভাবে সেগুলি বর্তমান কাল পর্যন্ত হস্তান্তরিত হয়ে আসতে পেরেছে। তোমরা কি আমার কথার অর্থ বুঝতে পারছো? আমি কেবল তোমাদের এই পত্রগুলির এক যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করছি, আর তথ্যসূত্র হিসাবে মানুষের কাছে সেগুলির উপযোগিতা বা মূল্য অস্বীকার না করেই এগুলিকে কাটাছেঁড়া করছি। আমার বাক্য পাঠ করার পরেও, তোমরা যদি পৌলের পত্রগুলিকে অস্বীকার করো, সেগুলিকে মূল্যহীন বা বিরুদ্ধমত বলে গণ্য করো, তাহলে বলতে হয় যে, তোমাদের উপলব্ধির ক্ষমতা নিতান্তই অপ্রতুল, একই ভাবে তোমার অন্তর্দৃষ্টি এবং কোনো বিষয়কে বিচারের ক্ষমতাও অত্যন্ত অকিঞ্চিৎকর; আমার বক্তব্যগুলিকে কোনোক্রমেই অতিরিক্ত রকমের একপেশে বলে আখ্যাত করা যায় না। এখন কি তোমরা বুঝতে পারছ? তোমাদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ হল সেই সময়ে পৌলের কাজের প্রকৃত পরিস্থিতি এবং যে পটভূমিতে পত্রগুলি লেখা হয়েছিল, তা অনুধাবন করা। এই সমস্ত পরিস্থিতির সবিষয়ে তোমাদের যদি একটি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তাহলে পৌলের পত্রগুলির বিষয়েও তোমাদের এক যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। একই সঙ্গে, একবার তুমি যদি পত্রগুলির সারসত্যকে হৃদয়ঙ্গম করে ফেল, তখন বাইবেল সম্পর্কে তোমার মূল্যায়নও সঠিক হবে, আর তখন তুমি তখন উপলব্ধি করবে পৌলের পত্রগুলি কেন এত বছর ধরে পরবর্তী প্রজন্মের মানুষের দ্বারা পূজিত হয়ে এসেছে, আর কেনই বা এখনো অনেকে তাকে ঈশ্বর বলে গণ্য করে। আমার কথাগুলি উপলব্ধি না করলে, তোমরাও কি এমনটাই চিন্তা করতে না?

যে নিজে স্বয়ং ঈশ্বর নয়, সে কখনোই স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। পৌলের কাজকে অংশত মানবিক অভিমত এবং অংশত পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। পৌল এই বাক্যগুলি পবিত্র আত্মার আলোকপ্রাপ্তি সহযোগে, এক মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখেছিল। এটা কোনও বিরল ব্যাপার নয়। আর তাই অনিবার্যভাবেই তার কথাগুলির মধ্যে কিছু মানবিক অভিজ্ঞতা প্রক্ষিপ্ত ছিল, এবং পরবর্তীতে সেই সময়ে তার ভাই-বোনদের রসদ ও অবলম্বন যোগানোর মানসে সে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলিকে ব্যবহার করেছিল। তার লিখিত পত্রগুলিকে জীবনচরিত হিসাবে, অথবা আত্মজীবনী বা বার্তা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায় না। তদুপরি, এগুলি গির্জার অনুশীলিত সত্য বা গির্জার প্রশাসনিক ফরমানও ছিল না। তা ছিল দায়িত্বভারপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি—পবিত্র আত্মার দ্বারা কর্মে নিযুক্ত এক ব্যক্তির সাধারণ করণীয় কাজ। পবিত্র আত্মা মানুষকে উন্নীত করে তাদের ওপর কার্যভার অর্পণ করলে, যদি মানুষ গির্জার কাজ গ্রহণ না করে, এর বিষয়াদি যথাযথভাবে পরিচালনা করতে না পারে, বা তার সমস্যাসমূহের সন্তোষজনক সমাধান করতে অক্ষম হয়, তাহলে প্রমাণিত হয় যে, সেই লোকগুলি তাদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করছে না। তাই একজন প্রেরিত শিষ্যের পক্ষে তার কার্যকালে পত্র লিখতে সমর্থ হওয়াটা খুব কিছু রহস্যজনক ব্যাপার ছিল না। এটা তাদের কাজেরই অংশ ছিল; এটা করতে তারা বাধ্য ছিল। জীবনচরিত বা আধ্যাত্মিক জীবনী লেখা এই পত্রলিখনের উদ্দেশ্য ছিল না, আর সন্তদের জন্য এটি অন্য একটা পথ উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয় তো একেবারেই ছিল না। বরং, তারা তা করতো তাদের নিজেদের কর্তব্য পালন এবং ঈশ্বরের অনুগত সেবাকারী হওয়ার জন্যই, যাতে তারা ঈশ্বরের দ্বারা তাদের উপর অর্পিত কাজ সম্পন্ন করে তাঁর কাছে জবাবদিহি প্রদান করতে পারে। তাদের নিজেদের এবং কার্যস্থলে তাদের ভাই-বোনেদের কৃতকর্মের দায়িত্ব তাদের নিতে হতো, আর তাদের উপর অর্পিত কাজ তাদের ভালোভাবে নিষ্পন্ন করতে হতো এবং গির্জার বিষয়কর্মাদি অন্তর দিয়ে গ্রহণ করতে হতো: এই সমস্ত কিছুই শুধুমাত্র তাদের কাজের অঙ্গই ছিল।

পৌলের পত্রগুলির বিষয়ে তোমরা একটা উপলব্ধি অর্জন করে থাকলে, পিতর ও যোহনের পত্রের বিষয়েও তোমাদের একটা সঠিক ধারণা এবং মূল্যায়ন তৈরি হবে। তোমরা এই পত্রগুলিকে আর কখনও পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় স্বর্গীয় পুস্তিকা হিসাবে গণ্য করবে না, এবং পৌলকে ঈশ্বর বলে তো একেবারেই বিবেচনা করবে না। যতোই হোক, ঈশ্বরের কাজ মানুষের কাজের থেকে আলাদা, তদুপরি, তাঁর অভিব্যক্তি কীভাবে মানুষের অনুরূপ হতে পারে? ঈশ্বরের নিজস্ব বিশেষ স্বভাব রয়েছে, আর মানুষের রয়েছে কর্তব্য, যা তাদের পালন করতেই হবে। ঈশ্বরের স্বভাব তাঁর কার্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়, আর সেখানে মানুষের কর্তব্য তার অভিজ্ঞতার মধ্যে মূর্ত হয় এবং তার সাধনায় তা প্রকাশিত হয়। কাজেই কোনো একটি বিষয় ঈশ্বরের অভিব্যক্তি নাকি মানুষের, তা সম্পাদিত কার্যটির মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্বয়ং ঈশ্বরের তা ব্যাখ্যা করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই, বা এর সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য মানুষের সংগ্রাম করাও নিষ্প্রয়োজন; তদুপরি, এর দরুন স্বয়ং ঈশ্বরের কোনো ব্যক্তিকে দমন করার প্রয়োজনও পড়ে না। এই সবই এক প্রাকৃতিক উদ্ঘাটন রূপেই আসে; এটা বলপূর্বক করানো হয় না, এবং মানুষ হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম এমন কোনো বিষয়ও এটি নয়। মানুষের দায়িত্ব তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জানা যায়, এবং এর জন্য মানুষকে কোনো অতিরিক্ত অভিজ্ঞতামূলক কাজ করতে হয় না। মানুষের সমস্ত সারসত্য তাদের কর্তব্য সম্পাদনের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়, সেখানে ঈশ্বর তাঁর কার্য সম্পাদনকালে নিজের সহজাত স্বভাবকে প্রকাশ করেন। মানুষের কাজ আড়াল করা যায় না। আর তা যদি ঈশ্বরের কার্য হয়, তাহলে কারোর পক্ষে ঈশ্বরের স্বভাবকে প্রচ্ছন্ন রাখা তো আরোই অসম্ভব, আর মানুষের দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হওয়া তো অকল্পনীয়। কোনো মানুষকেই ঈশ্বর বলে গণ্য করা যায় না, আর তাদের কাজ বা কথাকেও পবিত্র বা অপরিবর্তনীয় হিসাবে বিবেচনা করা যায় না। ঈশ্বর দেহের আবরণে নিজেকে ভূষিত করেছিলেন বলেই তাকে মানুষ বলে অভিহিত করা যায়, কিন্তু তাঁর কার্যকে মানুষের কাজ বা মানুষের দায়িত্ব বলে বিবেচনা করা যায় না। তদুপরি, ঈশ্বরের উচ্চারণ ও পৌলের পত্রকে তুল্যমূল্য বলে গণ্য করা যায় না, এবং ঈশ্বরের বিচার ও শাস্তি এবং মানুষের নির্দেশনামূলক কথাকেও সমান দরের বলে বিবেচনা করা যায় না। সুতরাং, ঈশ্বরের কার্য ও মানুষের কাজের মধ্যে একটা নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। তাদের সারসত্য অনুযায়ী তারা পৃথক, কাজের পরিসর বা সাময়িক কার্যকারিতা অনুসারে নয়। এই বিষয়টায়, অনেকেই নীতিগত ভুল করে। এর কারণ মানুষ কেবল তাদের দৃষ্টিগ্রাহ্য বাহ্যিক দিকটিই দেখে, আর ঈশ্বর দেখেন সারসত্য, যা মানুষের স্থূলচোখের অগোচর। ঈশ্বরের কার্য ও বাক্যকে তুমি যদি একজন গড়পড়তা মানুষের কর্তব্য বলে মনে করো এবং মানুষের বৃহদায়তন কর্মকে মানুষের পালনীয় কর্তব্য হিসাবে দেখার বদলে দেহরূপী ঈশ্বরের কার্য বলে গণ্য করো, তাহলে কি তোমার নীতিগত ভুল হচ্ছে না? মানুষের পত্র ও আত্মজীবনী সহজেই লেখা যায়, কিন্তু কেবল পবিত্র আত্মার কার্যের ভিত্তিভূমির উপরেই তা করে ওঠা সম্ভব। কিন্তু, ঈশ্বরের উচ্চারণ ও কার্য মানুষ সহজেই নিষ্পন্ন করে ফেলতে পারে না, এবং মানবীয় প্রজ্ঞা বা চিন্তাশক্তির দ্বারা তা অর্জনসাধ্যও নয়, আর তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের পরেও মানুষ সেগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যাদানে অক্ষম। এই নীতিগত বিষয়গুলি যদি তোমাদের মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করে, তাহলে বুঝতে হবে যে, স্পষ্টতই তোমাদের বিশ্বাস খুব অকৃত্রিম বা পরিমার্জিত নয়। শুধুমাত্র এটুকুই বলা যেতে পারে যে, তোমাদের বিশ্বাস অস্পষ্টতায় পূর্ণ, এবং একাধারে বিভ্রান্ত ও নীতিহীনও বটে। এবম্বিধ যে বিশ্বাস, যেখানে এমনকি ঈশ্বর এবং মানুষের সবচেয়ে মৌলিক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলিও অনুপলব্ধ রয়েছে, তা কি উপলব্ধিক্ষমতার সামগ্রিক অভাবকে সূচিত করে না? পৌল কীভাবে সমগ্র ইতিহাস ব্যাপী একমাত্র ব্যবহৃত ব্যক্তি হতে পারে? কীভাবে সে গির্জার নিমিত্ত কাজ করেছে এমন একমাত্র ব্যক্তি হতে পারে? এমন কীভাবে সম্ভব যে সে-ই একমাত্র ব্যক্তি যে গির্জাগুলিকে অবলম্বন প্রদানের জন্য পত্র লিখেছে? এই মানুষগুলির কাজের পরিসর বা প্রভাব, অথবা এমনকি কাজের ফলাফল নির্বিশেষে, এই ধরনের কাজগুলির নীতি ও সারসত্য কি সব একইরকম নয়? এদের মধ্যে এমন কিছু কি নেই, যা ঈশ্বরের কার্যের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন? ঈশ্বরের কার্যের প্রতিটি পর্যায়ের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য থাকলেও, এবং তাঁর কার্যের অনেক পদ্ধতি সম্পূর্ণ সদৃশ না হলেও, সেগুলির সবক’টিই কি সেই একই সারসত্য এবং উৎসের অধিকারী নয়? তদনুযায়ী যদি কারোর এখনও এই সমস্ত বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকে, তাহলে তার মধ্যে যুক্তিবোধের অভাব অত্যন্ত প্রকট। এই সমস্ত বাক্য পাঠ করার পরেও যদি কেউ এখনো পৌলের পত্রগুলিকে পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় বলে, এবং কোনো আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের আত্মজীবনীর থেকে স্বতন্ত্র কিছু ভাবে, তাহলে লোকটির যুক্তিবোধ অতীব অস্বাভাবিক, আর এই ধরনের মানুষটি নিঃসন্দেহে সম্পূর্ণ বোধবুদ্ধিহীন একজন মতবাদ বিশেষজ্ঞ মাত্র। এমনকি তুমি যদি পৌলের উপাসনা করো, তাহলেও তার প্রতি তোমার সপ্রেম অনুভূতিকে ব্যবহার করে তুমি প্রকৃত সত্যকে উল্টে দিতে বা সত্যের অস্তিত্বকে খণ্ডন করতে পারো না। তাছাড়াও, আমি যা বলেছি তা কোনোভাবেই পৌলের সমস্ত কাজ এবং পত্রগুলিকে ভস্মসাৎ করে দেয় না বা তথ্যসূত্র হিসাবে তাদের মূল্য সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে না। যাই হোক না কেন, আমার এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য হল, তোমরা যাতে সকল বিষয় এবং মানুষের সম্বন্ধে একটা যথাযথ উপলব্ধি এবং যুক্তিসঙ্গত মূল্যায়নের ক্ষমতা লাভ করতে পারো: শুধুমাত্র এটাই হল স্বাভাবিক যুক্তি; সত্যের অধিকারী ধার্মিক ব্যক্তিদের কেবল এর দ্বারাই নিজেদের সজ্জিত করা উচিত।

পূর্ববর্তী: ঈশ্বর সকল সৃষ্টির প্রভু

পরবর্তী: সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ভর করছে মানুষ কোন পথে চলবে তার উপর

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন