ঈশ্বরের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

মানুষ যখন ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, ভালোবাসে, এবং তাঁকে পরিতুষ্ট করে, তখন তারা তাদের হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের আত্মাকে স্পর্শ করে ও তার ফলে তাঁর পরিতৃপ্তি অর্জন করতে পারে, তারা ঈশ্বরের সংস্পর্শে আসতে তাদের হৃদয়কে ব্যবহার করে, এবং এইভাবে তাঁর আত্মার দ্বারা চালিত হয়। তুমি যদি একটি সাধারণ আধ্যাত্মিক জীবন যাপন করতে চাও এবং ঈশ্বরের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাও, তাহলে প্রথমে তোমার হৃদয় তাঁকে উৎসর্গ করতে হবে। শুধুমাত্র যখন তুমি তাঁর সম্মুখে তোমার হৃদয়কে শান্ত করতে পারবে আর তোমার সমগ্র হৃদয় তাঁর কাছে উজাড় করে দেবে, তখনই তুমি এক স্বাভাবিক আধ্যাত্মিক জীবন ধীরে ধীরে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। ঈশ্বরের প্রতি তার বিশ্বাসে মানবজাতি যদি তাদের হৃদয় ঈশ্বরের কাছে নিবেদন না করে, এবং তাদের হৃদয় যদি তাঁর সাথে না থাকে, এবং তারা ঈশ্বরের দায়ের ভার তাদের নিজেদের বলে মনে না করে, তাহলে তারা যা করে তা শুধু ঈশ্বরকে প্রতারণা করারই নামান্তর, যা যেকোনো একজন ধর্মবিশ্বাসী মানুষের আচরণেরই সমান, এবং তা কখনোই ঈশ্বরের প্রশংসা লাভ করতে পারে না। এই ধরনের ব্যক্তিদের থেকে ঈশ্বর কিছুই লাভ করে উঠতে পারেন না, শুধু তারা নিজেরা বিপরীত বৈশিষ্ট্যের প্রকাশের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাজকে আরও মহিমান্বিত করে তুলতে পারে। এরা শুধু ঈশ্বরের গৃহের গৃহসজ্জার বস্তুর মতো—শুধু সংখ্যা বাড়ানোই তাদের কাজ, তারা আবর্জনা ছাড়া কিছু নয়, এবং ঈশ্বর তাদের ব্যবহার করেন না। শুধু এটুকুই নয় যে এদের উপর পবিত্র আত্মার কাজ করার কোনো সম্ভাবনা নেই, এদের নিখুঁত করতে তোলার কোনো অর্থও নেই। এই প্রকার ব্যক্তি প্রকৃত অর্থে একজন চলমান মৃতদেহ। এদের মধ্যে এমন কিছুই নেই যা পবিত্র আত্মা ব্যবহার করতে পারবেন, এরা সকলেই শয়তানের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে প্রভাবিত ও গভীরভাবে ভ্রষ্ট। ঈশ্বর এদের বহিষ্কার করবেন। আজ যখন পবিত্র আত্মা মানুষকে ব্যবহার করেন, তিনি শুধু তাদের কাঙ্খিত অংশটুকুই ব্যবহার করেন তা নয়, তাদের অনাকাঙ্খিত অংশগুলিকেও নিখুঁত ও পরিবর্তিত করে তোলেন। তুমি যদি তোমার হৃদয় ঈশ্বরের প্রতি নিবেদিত করতে পারো এবং তোমার হৃদয়কে তাঁর সম্মুখে শান্ত করতে পারো, তবে তুমি পবিত্র আত্মার দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার এবং পবিত্র আত্মার আলোকপ্রদান ও প্রদীপ্তি লাভের সুযোগ ও যোগ্যতা লাভ করবে। এমনকি তার চেয়েও বেশি, পবিত্র আত্মার দ্বারা তোমার দোষত্রুটির সমাধানের সুযোগও পাবে। তুমি যখন ঈশ্বরকে তোমার হৃদয় নিবেদন করবে, তার ইতিবাচক দিক হচ্ছে যে তুমি গভীরতর প্রবেশ লাভ করবে এবং অন্তর্দর্শনের এক উচ্চতর স্তর অর্জন করবে। আর নেতিবাচক দিক হচ্ছে, নিজের ত্রুটি ও ঘাটতি সম্পর্কে তুমি আরও স্পষ্ট ধারণা লাভ করবে, এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য আরো আকুল হয়ে উঠবে ও আরও সচেষ্ট হবে। তাছাড়াও, তুমি আর নিষ্ক্রিয় থাকবে না, সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করতে সমর্থ হবে। এ থেকে দেখতে পাওয়া যায় যে তুমি একজন সঠিক মানুষ। যদি ধরে নেওয়া হয় যে তোমার হৃদয় ঈশ্বরের সম্মুখে শান্ত থাকতে সক্ষম, তাহলে তুমি পবিত্র আত্মার প্রশংসা পাবে কি না, এবং তুমি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারবে কি না, তা গুরুতরভাবে নির্ভর করবে তুমি সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করতে পারো কি না তার উপর। যখন পবিত্র আত্মা মানুষকে আলোকপ্রদান করেন এবং তাদের ব্যবহার করেন, তিনি কখনোই তাদের নেতিবাচক করে তোলেন না, তিনি সবসময়েই তাদের সক্রিয় অগ্রগতিকে সম্ভব করে তোলেন। এবং যখন তিনি এই কাজ করেন, মানুষের তখনও নিজস্ব দুর্বলতাগুলি থাকে, কিন্তু তারা সেই দুর্বলতার মধ্যেই জীবন যাপন করে না। তারা তাদের জীবনের অগগ্রগতিকে ব্যাহত করে না, এবং তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করার চেষ্টা করতে থাকে। এটি একটি নির্ধারিত মান। তুমি যদি এই নির্ধারিত মানে পৌঁছতে পারো, তা থেকে প্রমান হয় যে তুমি পবিত্র আত্মার উপস্থিতি লাভ করেছ। কোন মানুষ যদি সর্বদা নেতিবাচক হয়, এমনকি আলোকপ্রাপ্তির পরেও এবং আত্মোপলব্ধি লাভের পরেও নেতিবাচক ও নিষ্ক্রিয়ই থেকে যায়, এবং এগিয়ে এসে ঈশ্বরের সাথে কাজ করতে না পারে, তাহলে তারা শুধু ঈশ্বরের অনুগ্রহই লাভ করেছে, পবিত্র আত্মা তাদের সাথে নেই। তাদের নেতিবাচকতার অর্থ হলো যে তাদের হৃদয় ঈশ্বরের অভিমুখী হয়নি, এবং তাদের আত্মা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা চালিত হয়নি। এটি সকলের ভালো করে অনুধাবন করা দরকার।

অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দেখতে পাওয়া যায় যে ঈশ্বরের সামনে হৃদয়কে প্রশান্ত করা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা মানুষের অধ্যাত্মজীবন ও জীবনের অগ্রগতির মতো বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। তোমার সত্যের সাধনা ও স্বভাবের পরিবর্তনের সাধনা শুধুমাত্র তবেই ফলপ্রসূ হবে, যদি ঈশ্বরের সম্মুখে তোমার হৃদয় প্রশান্ত থাকে। এর কারণ হলো, যেহেতু তুমি সর্বদা অনুভব করো যে তুমি অনেক দিক থেকেই অসম্পূর্ণ, অজস্র সত্য আছে যা তোমাকে জানতে হবে, প্রভূত বাস্তবতার অভিজ্ঞতা তোমাকে লাভ করতে হবে, এবং তোমার উচিত ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি বিবেচনা প্রদর্শন করা, তাই তুমি ঈশ্বরের সম্মুখে এসেছো ভারাক্রান্ত হয়ে। এই বিষয়গুলি সবসময়েই তোমার চিন্তার মধ্যে রয়েছে, মনে হয় যেন সেগুলি তোমাকে এতদূর শক্তির সাথে চেপে ধরেছে যে তোমার দমবন্ধ হয়ে আসছে, যার ফলে তোমার হৃদয় ভারাক্রান্ত লাগছে (যদিও তুমি নেতিবাচক অবস্থায় নেই)। শুধু এইরকম মানুষই ঈশ্বরের বাক্যের আলোকপ্রাপ্তি লাভের যোগ্য এবং ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা চালিত হওয়ার যোগ্য। তাদের ভারগ্রস্ত হওয়ার কারণে, তাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত হওয়ার কারণে, এবং একথাও বলা যায় যে তারা যে মূল্যপ্রদান করেছে ও ঈশ্বরের সামনে যে যন্ত্রণা ভোগ করেছে সেই কারণে, তারা ঈশ্বরের দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত ও প্রদীপ্ত হবে। কারণ ঈশ্বর কারো সাথেই পক্ষপাতদুষ্ট নন। মানুষের সাথে তাঁর আচরণে তিনি সর্বদাই ন্যায্য, কিন্তু তিনি মানুষকে অযৌক্তিকভাবে বা নিঃশর্তে কিছু প্রদানও করেন না। এটি তাঁর ন্যায়পরায়ণ স্বভাবের একটি দিক। বাস্তব জীবনে বেশিরভাগ মানুষ এখনও এই মানসিক জগতে পৌঁছতে পারেনি। খুবই কম করে হলেও, তাদের হৃদয় এখনও সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের অভিমুখী হয়নি, তাই তাদের জীবন চরিত্রে এখনও কোনো সুবিশাল পরিবর্তন আসেনি। কারণ তারা শুধু ঈশ্বরের অনুগ্রহেই জীবনযাপন করে এবং পবিত্র আত্মার কাজ তারা এখনও লাভ করেনি। ঈশ্বরের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার জন্য যে যে গুণাবলীর প্রয়োজন, সেগুলি এরকম: তাদের হৃদয় ঈশ্বরের অভিমুখী হতে হবে, ঈশ্বরের বাক্যের ভার তাদের হৃদয়ে বহন করতে হবে, তাদের আকুল হৃদয়ের অধিকারী হতে হবে, এবং সত্যের সন্ধান করার সংকল্প থাকতে হবে। শুধু এই মানুষেরাই পবিত্র আত্মার কাজ লাভ করতে পারে এবং প্রায়শঃই তাঁর আলোকপ্রদান ও প্রদীপ্তি লাভ করতে পারে। যেসকল মানুষকে ঈশ্বর ব্যবহার করেন তাদের বাহ্যিকভাবে যুক্তিবোধহীন মনে হয় এবং অন্যদের সঙ্গে তারা স্বাভাবিক সম্পর্কবিহীন বলে মনে হয়, কিন্তু তারা সতর্কভাবে কথা বলে, এবং তারা যথাযথ কথা বলে, এবং তারা সর্বদা ঈশ্বরের সম্মুখে হৃদয়ে প্রশান্তি রাখতে সক্ষম। ঠিক এই ধরনের মানুষই পবিত্র আত্মার দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্য। এই যেসব “যুক্তিবোধহীন” মানুষদের কথা ঈশ্বর বলেন, মনে হয় যেন অন্যদের সাথে তাদের স্বাভাবিক সম্পর্কের অভাব রয়েছে এবং তারা বাহ্যিক ভালোবাসা বা বাহ্যিক অনুশীলনের বিষয়ে যত্নবান নয়, কিন্তু যখন তারা আধ্যাত্মিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে, তখন তারা তাদের হৃদয় উন্মুক্ত করে দিতে পারে ও নিঃস্বার্থভাবে অন্যদের সেই আলোক ও প্রদীপ্তি প্রদান করতে পারে যা তারা ঈশ্বরের সম্মুখে তাদের প্রকৃত অভিজ্ঞতা থেকে লাভ করেছে। এইভাবেই তারা ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণ করে। যখন অন্যরা তাদের অপবাদ দেয় এবং উপহাস করে, তখন তারা বাইরের মানুষ, ঘটনা ও বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হওয়াকে পরিহার করে, এবং ঈশ্বরের সম্মুখে প্রশান্ত থাকে। মনে হয় যেন তাদের নিজস্ব অনন্য অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে। অন্যরা যাই করুক না কেন, এদের হৃদয় কখনো ঈশ্বরকে ত্যাগ করে না। অন্যরা যখন গল্পগুজব ও হাসিঠাট্টা করে, এদের হৃদয় তখনও ঈশ্বরের সম্মুখেই থাকে, এরা তাঁর বাক্যের চিন্তা করে, অথবা ঈশ্বরের অভিপ্রায় জানতে চেয়ে নিঃশব্দে নিজের অন্তরে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে। অন্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক রক্ষা করাকে এরা কখনো গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না, এই এদের যেন জীবনযাপনের কোনো দর্শনই নেই। এদের দেখে মনে হয় প্রাণবন্ত, ভালোবাসার যোগ্য, ও নিষ্পাপ, কিন্তু তাদের আবার এক সুনির্দিষ্ট প্রশান্তিও রয়েছে। ঈশ্বর যে ধরনের মানুষদের ব্যবহার করেন তারা এরকমই হয়। জীবনযাপনের দর্শন কিংবা “সাধারণ যুক্তিবোধের” মতো বিষয়গুলি এদের মধ্যে কাজ করে না। এরা ঈশ্বরের বাক্যে নিজের সম্পূর্ণ হৃদয় উৎসর্গ করেছে, আর মনে হয় এদের হৃদয়ে শুধু ঈশ্বরেরই স্থান রয়েছে। এরাই সেই ধরনের “বোধ বিহীন” মানুষ যাদের কথা ঈশ্বর উল্লেখ করেন, এবং নির্দিষ্টভাবে এরাই সেই ধরণের মানুষ যাদের ঈশ্বর ব্যবহার করেন। ঈশ্বর যাদের ব্যবহার কেন এমন মানুষের লক্ষণ হল: যখন বা যেখানেই তারা থাক, তাদের হৃদয় সর্বদাই ঈশ্বরের সম্মুখে থাকে, এবং অন্যরা যতই দুশ্চরিত্র হোক, বা অন্যরা লালসা ও দৈহিক আনন্দকে প্রশ্রয় দিক, এরকম মানুষদের হৃদয় কখনোই ঈশ্বরকে ত্যাগ করে না, এবং এরা ভিড়ের অনুসরণ করে না। শুধু এইরকম ব্যক্তিই ঈশ্বরের ব্যবহারের উপযুক্ত, আর কেবল এইরকম ব্যক্তিকেই পবিত্র আত্মা নিখুঁত করে তোলেন। যদি তুমি এই বিষয়গুলি অর্জনে অক্ষম হও তাহলে তুমি ঈশ্বরের দ্বারা অর্জিত হওয়ার বা পবিত্র আত্মা দ্বারা নিখুঁত হয়ে ওঠার উপযুক্ত নও।

যদি তুমি ঈশ্বরের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক তাহলে তোমার হৃদয়কে অবশ্যই ঈশ্বরের অভিমুখী হতে হবে; এই ভিত্তির উপর নির্ভর করে অন্যদের সাথেও তুমি স্বাভাবিক সম্পর্ক লাভ করবে। যদি ঈশ্বরের সঙ্গে তোমার একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক না থাকে, তাহলে অন্যদের সাথে তোমার সম্পর্ক রক্ষনাবেক্ষনের জন্য তুমি যত চেষ্টাই করো, তুমি যত কঠিন পরিশ্রমই করো বা যত শক্তিই ব্যয় করো, তা সবই জীবনযাপনের জন্য মানুষের এক দর্শন হয়ে থাকবে। তা শুধু মানুষের মাঝে তোমার অবস্থানকে সুরক্ষিত রাখা এবং মানবিক দর্শনের আঙ্গিক থেকে তাদের প্রশংসা অর্জন করাই হবে, ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে স্বাভাবিক পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে না। তুমি যদি মানুষের সাথে তোমার সম্পর্কের প্রতি মনোযোগী না হও এবং তার পরিবর্তে ঈশ্বরের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখো, তুমি যদি ঈশ্বরকে তোমার হৃদয় অর্পণ করতে চাও এবং তাঁকে মান্য করতে শেখো, তাহলে তোমার ব্যক্তিগত পারস্পরিক সম্পর্কগুলিও স্বচ্ছন্দে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। তাহলে আর এই সম্পর্কগুলি দেহের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠবে না, বরং গড়ে উঠবে ঈশ্বরের ভালোবাসার ভিত্তিতে। অন্য মানুষের সাথে তোমার আর প্রায় কোনো দৈহিক আদানপ্রদানে থাকবে না, কিন্তু একটি আধ্যাত্মিক স্তরে, তোমাদের নিজেদের মধ্যে থাকবে সহকারিতা ও পারস্পরিক ভালোবাসা, স্বাচ্ছন্দ্য, ও সংস্থান। এই সমস্ত কিছুই সম্পন্ন হয় ঈশ্বরকে পরিতুষ্ট করার আকাঙ্খার উপর ভিত্তি করে—জীবনযাপনের মানবিক দর্শনের উপর ভিত্তি করে এই সম্পর্কগুলির রক্ষনাবেক্ষন করা হয় না, এগুলি স্বাভাবিকভাবেই গঠিত হয় যখন কেউ ঈশ্বরের জন্য ভার বহন করে। এই সম্পর্কগুলির জন্য তোমার কোনো কৃত্রিম, মানবিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন পড়ে না, তোমাকে শুধু নীতি অনুসারে ঈশ্বরের বাক্যের অনুশীলন করতে হবে। তুমি কি ঈশ্বরের ইচ্ছার কথা বিবেচনা করতে ইচ্ছুক? তুমি কি ঈশ্বরের সম্মুখে “বোধ বিহীন” একজন ব্যক্তি হতে ইচ্ছুক? তুমি কি ঈশ্বরকে সম্পূর্ণ রূপে তোমার হৃদয় নিবেদন করতে এবং অন্য মানুষের মধ্যে তোমার অবস্থান উপেক্ষা করতে ইচ্ছুক? যত মানুষের সাথে তোমার যোগাযোগ আছে, তাদের মধ্যে কার সাথে তোমার সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো? কার সাথে তোমার সম্পর্ক সব থেকে খারাপ? মানুষের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কি স্বাভাবিক? তুমি কি সকল মানুষের সাথে সমান আচরণ করো? অন্যদের সাথে তোমার সম্পর্ক কি তোমার জীবনযাপনের দর্শনে অনুসারে বজায় থাকে, না কি সেই সম্পর্কগুলি ঈশ্বরের ভালোবাসার ভিত্তির উপর নির্মিত? যখন মানুষ তাদের হৃদয় ঈশ্বরকে অর্পণ করে না, তখন তাদের আত্মা স্থুল, অসাড় এবং অচেতন হয়ে পড়ে। এই ধরনের মানুষ কখনো ঈশ্বরের বাক্য অনুধাবন করতে পারবে না, কখনোই ঈশ্বরের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক লাভ করবে না, এবং কখনোই তাদের স্বভাবের পরিবর্তন অর্জন করতে পারবে না। কারো স্বভাবের পরিবর্তন হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতি সম্পূর্ণরূপে হৃদয় নিবেদনের ও তাঁর বাক্য থেকে আলোকপ্রাপ্তি ও প্রদীপ্তি লাভ করার একটি প্রক্রিয়া। ঈশ্বরের কাজ মানুষকে সক্রিয়ভাবে প্রবেশে সক্ষম করে, এবং নিজের সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করার পর নিজেদের নেতিবাচক অংশগুলিকে পরিত্যাগ করতে তাদের সক্ষম করে তোলে। তুমি যখন তোমার হৃদয় ঈশ্বরকে প্রদান করবে, প্রতিবারেই তুমি অনুভব করবে যে তোমার আত্মা সামান্য চালিত হয়েছে, এবং ঈশ্বরের আলোকপ্রদান ও প্রদীপ্তি প্রদানের প্রতিটি অংশকে জানতে পারবে। যদি তুমি অটল থাকো, তুমি ধীরে ধীরে পবিত্র আত্মার দ্বারা নিখুঁত হয়ে ওঠার পথে প্রবেশ করবে। ঈশ্বরের সম্মুখে যত শান্ত থাকবে তোমার হৃদয়, ততই সংবেদনশীল ও সুক্ষ্ম হবে তোমার আত্মা, এবং তুমি আরও বেশি উপলব্ধি করতে পারবে পবিত্র আত্মা কেমন করে তোমার আত্মাকে চালিত করেন, এবং ঈশ্বরের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। স্বাভাবিক পারস্পরিক ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় কারোর হৃদয়কে ঈশ্বরের অভিমুখী করে তোলার ভিত্তির উপর, মানুষের প্রচেষ্টার মাধ্যমে নয়। ঈশ্বর যদি কারোর হৃদয় থেকে অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে অন্যদের সাথে তাদের সম্পর্কগুলি শুধুই দৈহিক সম্পর্কের নামান্তর। সেই সম্পর্কগুলি স্বাভাবিক নয়, তারা লালসাপূর্ণ প্রশ্রয়, এবং তারা ঈশ্বরের ঘৃণা ও বিতৃষ্ণার উদ্রেক করে। যদি তুমি বল যে তোমার আত্মার পরিবর্তন হয়েছে, অথচ তুমি শুধু তাদের সাথেই সহকারিতা করতে চাও যাদের তুমি পছন্দ করো ও শ্রদ্ধা করো, এবং যাদের অপছন্দ করো তাদের বিরুদ্ধে তুমি পক্ষপাতদুষ্ট ও তারা যখন তোমার কাছে সন্ধানের জন্য আসে তুমি তাদের সাথে কথা বলতে অস্বীকার করো, তবে তা আরও বড় প্রমান যে তুমি আবেগের দ্বারা শাসিত এবং তোমার একেবারেই ঈশ্বরের সাথে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক নেই। তুমি ঈশ্বরকে প্রতারণার চেষ্টা করছ এবং নিজের কদর্যতা ঢাকার চেষ্টা করছ। তুমি হয়তো তোমার জ্ঞানের কিছু অংশ ভাগ করে নিতে পারো, কিন্তু তোমার উদ্দেশ্য যদি সঠিক না হয়, তাহলে তুমি যা করো তার সবকিছু শুধু মানুষের মানদণ্ড অনুযায়ীই ভালো, ঈশ্বর তোমার প্রশংসা করবেন না। তোমার কর্ম চালিত হবে তোমার দেহের দ্বারা, ঈশ্বরের দায়ভারের দ্বারা নয়। তুমি যদি তাঁর সম্মুখে তোমার হৃদয়কে প্রশান্ত রাখতে পারো এবং যারা তাঁকে ভালোবাসে তাদের সকলের সাথে তোমার স্বাভাবিক যোগাযোগ থাকে, শুধুমাত্র তাহলেই তুমি ঈশ্বরের ব্যবহারের উপযুক্ত। তা যদি তুমি করতে পারো, তাহলে অন্যদের সাথে তুমি যেমন আচরণই করো না কেন, তুমি শুধু বেঁচে থাকার এক দর্শন পালন করছ না, তুমি ঈশ্বরের দায়ভারের বিষয়ে বিবেচনা করছ এবং তাঁর সম্মুখে জীবনযাপন করছ। এরকম মানুষ তোমাদের মধ্যে কতজন আছে? অন্যদের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কি সত্যিই স্বাভাবিক? সেগুলি কীসের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে? বেঁচে থাকার কতগুলি দর্শন তোমার মধ্যে রয়েছে? তুমি কি সেগুলি পরিত্যাগ করেছ? তোমার হৃদয় যদি সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের অভিমুখী হতে না পারে, তাহলে ঈশ্বরের নয়, তুমি বরং শয়তানের থেকে এসেছ, তুমি পরিশেষে শয়তানের কাছেই ফিরে যাবে, এবং তুমি ঈশ্বরের মানুষদের একজন হওয়ার যোগ্য নও। এইসমস্ত বিষয় তোমাদের অত্যন্ত সতর্কভাবে পরীক্ষা করতে হবে।

পূর্ববর্তী: ঈশ্বর বিশ্বাসে, তোমার ঈশ্বরকে মান্য করা উচিত

পরবর্তী: একটি সাধারণ আধ্যাত্মিক জীবন মানুষকে সঠিক পথে নিয়ে যায়

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন