অধ্যায় ৫৯
যে পরিবেশগুলির সম্মুখীন তুমি হবে সেখানে তুমি আরো বেশি করে আমার ইচ্ছার সন্ধান করো, এবং তুমি অবশ্যই আমার অনুমোদন লাভ করবে। তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার অন্বেষণে এবং আমার প্রতি সম্মানশীল হতে ইচ্ছুক থাকবে, ততদিন তোমার যা-যা ঘাটতি রয়েছে আমি তোমায় তা প্রদান করবো। গির্জা বর্তমানে এক আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের মধ্যে প্রবেশ করছে, এবং সবকিছুই সঠিক পথে রয়েছে। বিষয়গুলি আগে যেরকম ছিল, অর্থাৎ যখন সেগুলি ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে তার এক পূর্বাভাসমাত্র ছিল, এখন আর তেমন নেই; তোমাদের আর দ্বিধাগ্রস্ত হলে এবং বিচক্ষণতায় ঘাটতি থাকলে চলবে না। আমি কেন চাই যে তোমরা সমস্ত কিছুর বাস্তবে প্রবেশ করো? তুমি কি প্রকৃতই তার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছ? আমি যেমন তোমাদের পরিতৃপ্ত করি, তেমন আমি তোমাদের কাছ থেকে যা চাই তার দ্বারা কি তোমরা প্রকৃতই আমায় পরিতৃপ্ত করতে পারো? শঠ হয়ো না! আমি কেবলই বার বার তোমাদের সহ্য করে চলেছি, এবং তা সত্ত্বেও তোমরা বারংবার ভালো ও মন্দের পৃথগীকরণে, এবং তোমাদের তরফ থেকে প্রশংসা প্রদর্শনে, ব্যর্থ হও।
আমার ন্যায়পরায়ণতা, আমার মহিমা, আমার বিচার, এবং আমার ভালোবাসা—এই সকল কিছুর আমি অধিকারী—এই সকল কিছুই হল যা আমি—তুমি কি প্রকৃতপক্ষেই সেগুলির আস্বাদ গ্রহণ করেছ? তুমি প্রকৃতপক্ষেই কত অবিবেচক, এবং তুমি আমার ইচ্ছাকে উপলব্ধি না করার জেদ করো। আমি তোমাদের বারবার বলেছি সে আমার তৈরি ভোজের স্বাদ নিতেই হবে, তা সত্ত্বেও সেগুলি তোমরা বারবার ধ্বংস করো, এবং মন্দ পরিবেশ থেকে ভালো পরিবেশকে আলাদা করতে পারো না। এই পরিবেশগুলির মধ্যে কোনটি তোমরা নিজেরা সৃষ্টি করেছ? কোনটি আমার করতলে আয়োজিত হয়েছে? নিজেদের পক্ষ সমর্থন করা বন্ধ করো! আমি সবকিছুই অত্যন্ত পরিষ্কার ভাবে দেখি, এবং সত্যটা হল যে, তুমি আদৌ অন্বেষণ করোই না। এর অধিক আমি কী-ই বা আর বলতে পারি?
যারা আমার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করে তাদের সকলকে স্বাচ্ছন্দ্য দেব, এবং তাদের কোনো কষ্টভোগ করতে দেব না, বা তাদের কোনো ক্ষতি হতে দেব না। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমার ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হওয়া। যারা এমন করে তারা অবশ্যই আমার আশীর্বাদ লাভ করবে এবং সুরক্ষার অধীনে আসবে। কারা প্রকৃতপক্ষে এবং সম্পূর্ণভাবে নিজেদের আমার জন্য ব্যয় করে পারে, এবং আমার জন্য নিজেদের সকল কিছু উৎসর্গ করতে পারে? তোমরা সকলেই উদ্যমহীন; তোমাদের চিন্তা বহুধা-বিক্ষিপ্ত, গৃহ, বহির্বিশ্ব, খাদ্য ও পোশাক-আশাক নিয়েই তোমাদের যত চিন্তা। তুমি এখানে আমার সম্মুখে রয়েছ, আমার জন্য কর্ম করছ, এই সত্যিটা সত্ত্বেও, মনের গভীরে এখনো তুমি বাড়িতে থাকা স্ত্রী, সন্তান ও পিতা-মাতার কথা চিন্তা করছ। এই সকল বস্তু কি তোমার সম্পত্তি? তুমি কেন এগুলির দায়িত্ব আমার হস্তে অর্পন করছ না? তোমার কি আমার উপর যথেষ্ট বিশ্বাস নেই? নাকি তুমি এই ভেবে ভীত যে আমি তোমার অনুপযোগী আয়োজন করব? তুমি কেন সবসময় তোমার দেহরূপ পরিবারকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগো? তুমি সর্বদা প্রিয়জনদের জন্য আকুল কামনা করো! তোমার হৃদয়ে কি আমার জন্য কোনো নির্দিষ্ট আসন আদৌ রয়েছে? তুমি এখনো আমাকে তোমার অন্তরে রাজত্ব করার এবং তোমার সামগ্রিক সত্তাকে অধিকার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বল—এ সকল কিছুই বিভ্রান্তিকর মিথ্যা! তোমাদের মধ্যে কতজন গির্জার প্রতি সর্বান্তঃকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ? এবং তোমাদের মধ্যে কে নিজের কথা না ভেবে আজকের রাজ্যের স্বার্থে ক্রিয়াকলাপ করে চলেছ? এই বিষয়ে খুব সযত্নে চিন্তাভাবনা কোরো।
তোমরা আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছ যে, আমার হস্ত ব্যবহার করে আমি শুধুমাত্র তোমাদের প্রহার করতে এবং সম্মুখে চালিত করতেই পারি; আমি তোমাদের আর মিষ্টকথায় ভুলাব না। তার কারণ আমিই প্রাজ্ঞ ঈশ্বর, এবং তোমরা আমার প্রতি কতটা অনুগত, সেই অনুসারে আমি বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আচরণ করি। আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর—আমার অগ্রসর হওয়ার পথে কে বাধা সৃষ্টির সাহস করবে? এখন থেকে, যারা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত আচরণ করা স্পর্ধা দেখাবে অবশ্যই আমার প্রশাসনিক ফরমানসমূহের অধীনস্থ হবে, যাতে তাদেরকে আমার সর্বশক্তিমানতা জানানো যায়। প্রচুর সংখ্যক মানুষ আমি চাই না, আমি চাই উৎকর্ষ। যারাই অবিশ্বস্ত, অসৎ, কুটিল আচরণ এবং চাতুরিতে লিপ্ত, তাদেরই আমি পরিত্যাগ করব ও শাস্তি দেব। আর এমন ভেবো না যে আমি ক্ষমাশীল বা আমি প্রেমময় এবং দয়ালু; এই ধরনের চিন্তাভাবনা শুধুমাত্র ভোগপরায়ণতা। আমি জানি যে আমি তোমায় যতই আনন্দে রাখতে চাই, ততই তুমি নেতিবাচক ও নিষ্ক্রিয় হয়ে এবং নিজের যত্ন নিতে তদধিক অনিচ্ছুক হয়ে পড়। মানুষ যখন এত মাত্রায় জটিল হয়ে পড়ে, তখন আমি নিরন্তর তাদের আঘাত করে যাই এবং এবং টেনে নিয়ে যাই। এটা জেনে রাখো! এখন থেকে, আমি বিচারকর্তা ঈশ্বর, আমি আর সেই মানুষের কল্পিত ক্ষমাশীল, দয়ালু, ও প্রেমময় ঈশ্বর নই!