বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য (১)
শয়তানের দ্বারা গভীরভাবে কলুষিত মানবজাতি জানেই না যে ঈশ্বর আছেন, আর ঈশ্বরের উপাসনা করাও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। সূচনাকালে, যখন আদম ও হবা সৃষ্ট হয়েছিল, তখন যিহোবার গৌরব ও সাক্ষ্য সর্বদা উপস্থিত ছিল। কিন্তু কলুষিত হওয়ার পর, মানুষ সেই গৌরব ও সাক্ষ্য হারিয়ে ফেলেছিল, কারণ সকলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল এবং তাঁকে সম্মান করা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছিল। আজকের বিজয়কার্য হল সেই সাক্ষ্য এবং সকল গৌরব পুনরুদ্ধার, এবং সকল মানুষকে ঈশ্বরের উপাসনায় রত করানোর কাজ, যাতে সৃষ্ট সত্তাদের মধ্যে সাক্ষ্য থাকে; এই পর্যায়ে এই কাজই করতে হবে। ঠিক কীভাবে মানবজাতিকে জয় করা যায়? মানুষকে সম্পূর্ণরূপে স্থিতপ্রত্যয়ী করানোর জন্য এই পর্যায়ের বাক্যের কাজ ব্যবহার করে; তাকে পুরোপুরি রাজি করানোর জন্য প্রকাশ, বিচার, শাস্তি এবং নির্দয় অভিশাপ ব্যবহার করে; মানুষের বিদ্রোহ প্রকাশ করে এবং তার প্রতিরোধ বিচার করে, যাতে সে মানবজাতির অন্যায়পরায়ণতা এবং কলুষ সম্পর্কে জানতে পারে, এবং, এইসকলকে এমনভাবে ব্যবহার করা যে তার তুলনায় ঈশ্বরের ন্যায়পরায়ণ স্বভাব পরিস্ফুট হয়। মূলত এইসকল বাক্যের মাধ্যমেই মানুষকে জয় করা হয় এবং সম্পূর্ণরূপে প্রত্যয়ী করানো হয়। বাক্যই হল মানবজাতিকে চূড়ান্তভাবে জয় করার মাধ্যম, এবং যারা ঈশ্বরের বিজয়কে স্বীকার করে, তাদের অবশ্যই তাঁর বাক্যের আঘাত এবং বিচারকে মেনে নিতে হবে। বর্তমানে বাক্যে বলার পদ্ধতিই হল বিজয়কার্য সম্পাদনের প্রক্রিয়া। এবং মানুষের ঠিক কীভাবে এতে সহযোগিতা করা উচিত? এই বাক্য কীভাবে ভোজন ও পান করতে হবে ত জেনে, এবং সেগুলির বিষয়ে উপলব্ধি অর্জনের মাধ্যমেই তা করতে হবে। মানুষকে যেভাবে জয় করা হয়, সেটা তারা নিজে নিজে করতে অপারগ। তুমি যা করতে পার, তা হল এই সমস্ত বাক্য ভোজন ও পানের মাধ্যমে নিজের দুর্নীতি এবং মলিনতা, বিদ্রোহী মনোভাব এবং অন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে জানতে পারো, এবং ঈশ্বরের সামনে পতিত হতে পারো। ঈশ্বরের ইচ্ছা জানার পর, তুমি যদি তা অনুশীলন করতে পারো, এবং তোমার যদি দর্শন থাকে, যদি স্বতঃপ্রবৃত্ত ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে এই সমস্ত বাক্যের প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করতে পারো, তাহলে তোমায় জয় করা হয়েছে—এবং তা এই বাক্যেসমূহেরই ফল হবে। মানবজাতি কেন সাক্ষ্য হারিয়েছিল? কারণ ঈশ্বরের প্রতি কারোর বিশ্বাস নেই, মানুষের মনের মধ্যে ঈশ্বরের কোনো স্থান নেই। মানবজাতিকে জয় করার কার্য হল, মানবজাতির বিশ্বাসের পুনরুদ্ধারের কার্য। মানুষ সর্বদাই বিবেচনাহীন ভাবে এই জাগতিক বিশ্বের দিকে ধাবমান হতে চায়, তারা মনের মধ্যে অত্যধিক আশা পোষণ করে, ভবিষ্যতের জন্য অত্যধিক আকাঙ্ক্ষা করে, এবং তাদের মধ্যে প্রভূত অসংযত দাবি থাকে। তারা সর্বদা দৈহিক সুখের কথা চিন্তা করছে, তার জন্যই পরিকল্পনা করছে, এবং ঈশ্বরবিশ্বাসের পথ অনুসন্ধানের বিষয়ে তাদের কোন আগ্রহই নেই। শয়তান তাদের হৃদয় লুণ্ঠন করে নিয়েছে, তারা ঈশ্বরের প্রতি সম্মান হারিয়ে ফেলেছে, এবং শয়তানের ওপরেই নিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু মানুষ ঈশ্বরের দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছিল। এইভাবে, মানুষ সাক্ষ্য হারিয়ে ফেলেছে, অর্থাৎ, সে ঈশ্বরের গৌরব হারিয়ে ফেলেছে। মানবজাতিকে জয় করার উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরের প্রতি মানুষের সম্মানকে পুনরুদ্ধার করা। এটাকে এইভাবে বলা যেতে পারে: অনেক মানুষই জীবনের অন্বেষণ করে না; যদিও বা কয়েকজন করে থাকে, তারা সংখ্যায় মুষ্টিমেয়। মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে মগ্ন থাকে এবং জীবনের প্রতি কোনো মনোযোগই দেয় না। কেউ কেউ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, তাঁকে প্রতিরোধ করে, তাঁর পশ্চাতে তাঁকে বিচার করে এবং সত্যের অনুশীলন থেকে বিরত থাকে। সেই সব মানুষদের এখন উপেক্ষা করা হয়েছ, এই মুহূর্তে এই বিদ্রোহের পুত্রদের কিছুই করা হচ্ছে না; কিন্তু ভবিষ্যতে, তুমি দাঁতে দাঁত ঘষে কেঁদে কেঁদে, অন্ধকারে জীবনপাত করবে। আলোতে থাকাকালীন তুমি তার মূল্য উপলব্ধি করতে পারো নি, কিন্তু যেই না তুমি অন্ধকার রাত্রির মধ্যে জীবনযাপন শুরু করবে, তখন তুমি এর মূল্য উপলব্ধি করবে, এবং দুঃখিত বোধ করবে। তুমি এখন ভালো বোধ করলেও, একটা সময় আসবে যখন তুমি দুঃখিত বোধ করবে। যখন সেই দিন যখন আসবে, যখন অন্ধকার নেমে আসবে এবং আলোর লেশমাত্র থাকবে না, তখন অনুশোচনা করার পক্ষে অনেক দেরি হয়ে যাবে। যেহেতু তুমি এখনও বর্তমানের কাজ বোঝো না, সেই কারণেই নিজের বর্তমান সময়কে লালন করতে ব্যর্থ হয়েছ। সমগ্র বিশ্বের কাজ শুরু হয়ে গেলে, অর্থাৎ, যখন আমার বলা সমস্ত কিছু সত্যি হয়ে যাবে, তখন অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে যন্ত্রণায় রোদন করবে। আর এমন করার ফলে, তারা কি দাঁতে দাঁত ঘষে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধকারে পতিত হবে না? যারা সত্যিই জীবনের অন্বেষণ করে এবং যাদের সম্পূর্ণ করে তোলা হয়, তাদের সবাইকেই ব্যবহার করা যায়, কিন্তু সেইসব বিদ্রোহের পুত্র, যারা ব্যবহারের অযোগ্য, তারা অন্ধকারে পতিত হবে। তারা পবিত্র আত্মার কাজ থেকে বঞ্চিত হবে, এবং যেকোনো বিষয় অনুধাবনে অক্ষম হবে। এইভাবে তারা দণ্ডে নিমজ্জিত হয়ে কাঁদতে থাকবে। যদি তুমি কাজের এই পর্যায়ের জন্য সুপ্রস্তুত হও এবং নিজের জীবনে সমৃদ্ধ হয়ে থাকো, তাহলে তুমি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। যদি তুমি যথাযথ প্রস্তুত না হও, তাহলে তোমায় পরবর্তী পর্যায়ে কাজের জন্য ডাকা হলেও তুমি ব্যবহারের অযোগ্যই হবে—এই সময়ে তুমি নিজেকে সজ্জিত করতে চাইলেও, আর কোনো সুযোগ তোমার থাকবে না। ঈশ্বর চলে যাবেন; তোমার সামনে এখন যে ধরনের সুযোগ রয়েছে, তখন তা কোথায় খুঁজে পাবে? স্বয়ং ঈশ্বর যে অনুশীলন প্রদান করেছেন, তা পাওয়ার জন্য তুমি কোথায়ই বা যেতে পরবে? ততক্ষণে, ঈশ্বর আর ব্যক্তিগতভাবে কথা বলবেন না অথবা তাঁর কণ্ঠ ধ্বনিত করবেন না; তখন তুমি শুধু বর্তমানে যা কিছু বলা হচ্ছে, তা পড়তে পারবে—তাহলে তখন সহজে উপলব্ধি কীভাবে আসবে? বর্তমানের থেকে ভবিষ্যতের জীবন ভালো হবে কী করে? সেই সময়, তুমি যখন দাঁতে দাঁত ঘষে কাঁদবে, তখন তুমি কি জীবন্ত অবস্থাতেই মৃত্যুর যন্ত্রণা ভোগ করবে না? এখন তোমায় আশীর্বাদ প্রদান করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা কীভাবে উপভোগ করতে হয়, তা তুমি জানো না; তুমি আশীর্বাদের সুখের মধ্যেই জীবনযাপন করছ, তবুও সে বিষয়ে অজ্ঞাত রয়েছ। এটাই প্রমাণ করে যে, তুমি কষ্ট ভোগের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত! বর্তমানে, কেউ কেউ প্রতিরোধ করে, কেউ বিদ্রোহ করে, কেউ এটা করে, কেউ বা ওটা করে, আর আমি সেগুলো শুধুই উপেক্ষা করি—কিন্তু এমন ভেবো না যে, তোমরা কী করতে চাইছ সে বিষয়ে আমি অজ্ঞাত। আমি কি তোমাদের সারসত্য বুঝি না? আমার সাথে কেন সংঘাত করে চলেছ? তুমি কি এই কারণেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করো না যাতে তোমার নিজের স্বার্থে জীবনের ও আশীর্বাদের অন্বেষণ করতে পারো? তোমার বিশ্বাসের কারণ কি শুধুই তোমার স্বার্থ নয়? বর্তমান মুহূর্তে, আমি শুধুমাত্র কথা বলার দ্বারাই বিজয়কার্য নির্বাহ করছি, এবং, যেইমাত্র এই বিজয়কার্য শেষ হবে, তক্ষুনি তোমার অবসান অবশ্যম্ভাবী হবে। এটা কি আমায় তোমাকে স্পষ্ট করে বলতে হবে?
মানুষের অবসানকে স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যেই বর্তমানের বিজয়কার্য সম্পাদিত হয়। কেন বলা হয় যে, বর্তমানের শাস্তি এবং বিচার অন্তিম সময়ের মহান শুভ্র সিংহাসনের সামনে হওয়া বিচার? তুমি কি তা দেখতে পাও না? বিজয়কার্য কেন চূড়ান্ত পর্যায়ে? প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষের সমাপ্তি কেমন হবে, সেটা সঠিকভাবে প্রকাশ করার জন্যই কি তা করা হয় না? শাস্তি, বিচার ও বিজয়কার্য চলাকালীন, প্রত্যেককে তাদের প্রকৃত চেহারা দেখানোর এবং পরে তাদের প্রকার অনুসারে শ্রেণিবিভক্ত করার অনুমোদন দেওয়ার জন্যই কি তা করা হয় না? একে মানবজাতিকে জয় করার পরিবর্তে, এমন বলা ভালো যে, এর দ্বারা মানুষের প্রতিটি শ্রেণীর জন্য কী ধরনের সমাপ্তি অপেক্ষা করে রয়েছে, তা-ই দেখানো হচ্ছে। এ হল মানুষের পাপের বিচার করা এবং তারপরে মানুষের বিভিন্ন শ্রেণীকে প্রকাশ করে তারা ধার্মিক না মন্দ তা নির্ধারণ করার বিষয়। বিজয়কার্যের পরে, শিষ্টকে পুরস্কৃত করার এবং দুষ্টকে দণ্ড দেওয়ার সময় আসে। যেসব মানুষ সম্পূর্ণভাবে মান্য করে, অর্থাৎ যাদের সম্পূর্ণভাবে জয় করা হয়েছে—তাদের সমগ্র বিশ্বে ঈশ্বরের কাজ প্রসার করার পরবর্তী ধাপে স্থাপন করা হবে; যাদের জয় করা হয় নি, তাদের অন্ধকারে রেখে দেওয়া হবে এবং তারা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এইভাবে মানুষকে তাদের প্রকৃতি অনুসারে পৃথক করা হবে, যারা মন্দ কাজ করে তাদের মন্দদের সঙ্গে রাখা হবে, যাতে তারা আর সূর্যালোকের মুখ না দেখতে পায়, আর যারা ধার্মিক তাদের ভালোদের সঙ্গে রাখা হবে, যাতে তারা আলোকপ্রাপ্ত হতে পারে এবং সর্বদা আলোতেই বাঁচতে পারে। সব জিনিসেরই অবসান আসন্ন; মানুষের সমাপ্তি তার নিজের চোখের সামনেই স্পষ্ট করে দেখানো হয়েছে, এবং সকল বস্তুকেই তাদের প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণীবিভক্ত করা হবে। তাহলে, প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণিবিভক্ত হওয়ার যন্ত্রণার হাত থেকে মানুষ কীভাবে বাঁচতে পারে? সমস্ত কিছুর সমাপ্তি যখন কাছাকাছি চলে আসে, তখন প্রত্যেক ধরনের মানুষের সমাপ্তি প্রকাশিত হয়, আর তা সমগ্র বিশ্বের বিজয়কার্যের (বর্তমান কাজ থেকে শুরু করে, সমস্ত বিজয়কার্য সহ) সময়ে করা হয়। বিচারাসনের সামনে, শাস্তি এবং অন্তিম সময়ের বিজয়কার্যের সময়কালে, সমগ্র মানবজাতির সমাপ্তি উদ্ঘাটিত হয়। মানুষকে তাদের প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণীবিভিক্ত করার অর্থ, তাদের আদি শ্রেণীতে ফিরিয়ে দেওয়াকে বোঝায় না, কারণ সৃষ্টিলগ্নে মানুষকে যখন তৈরি করা হয়েছিল, তখন একই প্রকারের মানুষ ছিল, শুধুমাত্র পুরুষ ও নারীর শ্রেণীই বিদ্যমান ছিল। তখন বিভিন্ন ধরনের মানুষের বেশি প্রকার ছিল না। কয়েক হাজার বছর ধরে অনাচারের ফলে মানুষের বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভব হয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ অপবিত্র অপদেবতার রাজত্বের অধীনস্থ, আবার কেউ কেউ মন্দ অপদেবতার রাজত্বের অধীন, এবং যারা জীবনের প্রকৃত পথের অন্বেষণ করে, তারা সর্বশক্তিমানের আধিপত্যের অধীনে থাকে। কেবল এইভাবেই, ক্রমশ, মানুষের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর অস্তিত্ব প্রতীয়মান হয়, এবং কেবল এইভাবেই, এই বিশাল মানব-পরিবারের মাঝে, মানুষ বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়। সব মানুষেরই ভিন্ন ভিন্ন “পিতা” রয়েছে; প্রত্যেকেই যে সম্পূর্ণভাবে সর্বশক্তিমানের আধিপত্যের অধীন, তা নয়; এর প্রধান কারণ হল, মানুষ অত্যন্ত বিদ্রোহী। ধার্মিক বিচারের মাধ্যমে সব ধরনের ব্যক্তির প্রকৃত স্বভাব অনাবৃত হয়, কিছুই প্রচ্ছন্ন থাকে না। আলোতে সবার আসল চেহারা পরিস্ফুট হয়। এই সময়ে, মানুষ আর আগের মতো নেই, তার পূর্বপুরুষদের আসল প্রকৃতি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, কারণ আদম এবং হবার অগণন বংশধর বহু পূর্বেই শয়তানের হাতে বন্দী হয়েছে, তারা আর কখনো স্বর্গের সূর্যের বিষয়ে জানতে পারে নি, এবং মানুষ শয়তানের সমস্ত রকমের বিষে পরিপূর্ণ হয়েছে। এইভাবে, মানুষের নিজেদের যথাযথ গন্তব্য রয়েছে। তদুপরি, বিষের ভিন্নতার ভিত্তিতেই তাদের প্রকার অনুসারে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে, অর্থাৎ, তাদের বর্তমানে যে পরিমাণে জয় করা হয়েছে, সেই অনুযায়ীই শ্রেণীবিভক্ত করা হয়েছে। এই বিশ্ব সৃষ্টির আদিকাল থেকেই যে মানুষের সমাপ্তি পূর্বনির্ধারিত হয়েছে, এমনটা নয়। তার কারণ, সূচনাকালে, শুধুমাত্র একটাই শ্রেণী ছিল, যা সমষ্টিগতভাবে “মানবজাতি” নামে পরিচিত ছিল, এবং মানুষ প্রথমেই শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট হয় নি, সকল মানুষই অন্ধকারের লেশমাত্র ছাড়াই, ঈশ্বরের আলোকে বাস করত। কিন্তু মানুষ শয়তানের দ্বারা ভ্রষ্ট হওয়ার পর, সমস্ত ধরনের এবং প্রকারের মানুষ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল—পুরুষ ও নারীদের নিয়ে গঠিত “মানবজাতি” নামে পরিচিত পরিবার থেকেই তারা এসেছিল। তারা সকলেই নিজেদের পূর্বপুরুষদের দ্বারা বিচ্যুত হয়েছিল তাদের আদিমতম পূর্বপুরুষদের থেকে—যে মানবজাতি ছিল পুরুষ ও নারী (অর্থাৎ, সূচনালগ্নের আদম ও হবা, তাদের প্রাচীনতম পূর্বপুরুষ) দ্বারা গঠিত। সেই সময়ে, এই পৃথিবীতে, একমাত্র ইস্রায়েলীদের জীবনই যিহোবার দ্বারা নির্দেশিত হয়েছিল। সমগ্র ইস্রায়েল থেকে (অর্থাৎ, মূল পরিবারের বংশ থেকে) বিভিন্ন ধরনের মানুষ উদ্ভূত হয়েছিল, তারপর যিহোবার নির্দেশনা হারিয়েছিল। মানব জগতের বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ এই আদি মানুষেরা পরবর্তীকালে তাদের পূর্বপুরুষদের সাথে তাদের দাবিকৃত অঞ্চলে বসবাস করতে গিয়েছিল, যা বর্তমানকালেও অব্যাহত রয়েছে। এইভাবে, তারা কীভাবে যিহোবার থেকে বিচ্যুত হয়েছিল, এবং আজ পর্যন্ত কীভাবে সমস্ত রকমের অপবিত্র অপদেবতা এবং মন্দ আত্মাদের দ্বারা কলুষিত হয়েছে, সে সম্পর্কে অজ্ঞ। যারা গভীরভাবে কলুষিত হয়েছে এবং এখনও বিষপান করে চলেছে—যাদের শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা যাবে না—তাদের কাছে নিজেদের পূর্বপুরুষ, অর্থাৎ যেসব অপবিত্র অপদেবতা তাদের কলুষিত করেছিল, তাদের সঙ্গে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। যাদের শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা যাবে, তারা মানবজাতির উপযুক্ত গন্তব্যে পৌঁছে যাবে, অর্থাৎ যাদের শেষ পর্যন্ত উদ্ধার এবং জয় করা হয়েছে, তাদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে পৌঁছে যাবে। যাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব, তাদের উদ্ধারের জন্য সবকিছু করা হবে—কিন্তু যারা সংবেদনশীলতা বিহীন, নিরাময়ের অযোগ্য, তাদের কাছে পূর্বপুরুষদেরকে অনুসরণ করে শাস্তির অতল গহ্বরে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না। এমনটা ভেবো না যে, তোমার সমাপ্তি সূচনাকাল থেকেই পূর্বনির্ধারিত ছিল, এবং এখন শুধু প্রকাশিত হয়েছে। তুমি যদি এইভাবে চিন্তা করো, তাহলে কি তুমি ভুলে গিয়েছ যে, মানবজাতির প্রারম্ভিক সূচনাকালে, আলাদা কোনো শয়তানের শ্রেণী তৈরি করা হয় নি? তুমি কি ভুলে গিয়েছ যে আদম এবং হবাকে নিয়ে শুধুমাত্র একটি মানবজাতির সৃষ্টি হয়েছিল (অর্থাৎ শুধুমাত্র পুরুষ এবং নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছিল)? যদি তুমি শুরুতেই শয়তানের বংশধর হতে, তাহলে তার মানে কি এটা দাঁড়াত না যে, যিহোবা মানবজাতি সৃষ্টি করার সময় একটি শয়তানের দলকেও অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন? তিনি কি এইরকম কিছু করতে পারতেন? তিনি তাঁর সাক্ষ্যের স্বার্থেই মানুষদের সৃষ্টি করেছিলেন; নিজ গৌরবের স্বার্থেই তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন। জ্ঞাতসারে তাঁর প্রতিরোধ করতে পারে, এমন এক শ্রেণীর শয়তানের বংশধরদের তিনি কেন ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করবেন? যিহোবা এমনটা কীভাবে করতে পারতেন? যদি তিনি তেমন করতেন, তাহলে কে তাঁকে একজন ধার্মিক ঈশ্বর বলত? বর্তমানে আমি যখন উল্লেখ করি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ সমাপ্তিকালে শয়তানের সঙ্গে যাবে, তাঁর মানে এই নয় যে, শুরু থেকেই তুমি শয়তানের সঙ্গে ছিলে; বরং, এর অর্থ হল, তুমি এত নীচে তলিয়ে গিয়েছ যে, ঈশ্বর তোমায় উদ্ধার করতে চাইলেও, তুমি সেই পরিত্রাণ লাভে অক্ষম রয়ে গিয়েছ। শয়তানের সাথে তোমায় শ্রেণীবদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এর কারণ একমাত্র এই যে, তুমি পরিত্রাণের ঊর্ধ্বে, এই কারণে নয় যে ঈশ্বর তোমার প্রতি অন্যায়পরায়ণ এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তোমার ভাগ্যকে শয়তানের মূর্ত প্রতীক হিসাবে স্থির করেছেন, তারপরে তোমাকে শয়তানের সাথে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তোমাকে যন্ত্রণা ভোগ করাতে চান। এটা বিজয়কার্যের অন্তর্নিহিত সত্য নয়। যদি তোমার বিশ্বাস এইরূপ হয়ে থাকে, তবে তোমার উপলব্ধি খুবই একতরফা! বিজয়ের চূড়ান্ত পর্যায়টি মানুষকে উদ্ধারের জন্য, এবং তাদের সমাপ্তি প্রকাশের জন্যও সম্পাদিত হয়। এটি হল বিচারের মাধ্যমে মানুষের অধঃপতনের প্রকাশ ঘটানো, যাতে তারা অনুতপ্ত হয়, জাগ্রত হয়, এবং জীবন ও মানবজীবনের সঠিক পথ অন্বেষণ করে। অসাড় ও নির্বোধ মানুষের হৃদয়কে জাগিয়ে তুলে, বিচারের মাধ্যমে, তাদের অন্তর্নিহিত বিদ্রোহী মনোভাব দেখানোর জন্যই, এমন করা হয়। তবে, মানুষ যদি এখনও অনুতাপ করতে না পারে, মানবজীবনের সঠিক পথ অন্বেষণ করতে না পারে এবং নিজেদের দুর্নীতি সরিয়ে না রাখতে পারে, তাহলে তারা পরিত্রাণ লাভের ঊর্ধ্বে, এবং তারা শয়তানের গ্রাসে পরিণত হবে। এই-ই হল ঈশ্বরের বিজয়কার্যের গুরুত্ব: মানুষকে উদ্ধার করা এবং তাদের সমাপ্তি প্রদর্শন। ইতিবাচক ও নেতিবাচক সমাপ্তি—সকলই বিজয়কার্যের দ্বারা প্রকাশিত হয়। মানুষকে উদ্ধার করা হবে না অভিশাপ দেওয়া হবে, সে সমস্তই বিজয়কার্যের সময় প্রকাশিত হয়।
বিজয়ের দ্বারা সকল বস্তুকে যখন প্রকার অনুসারে শ্রেণীভুক্ত করা হবে, তা-ই হল অন্তিম সময়। অন্তিম সময়ের কাজই হল বিজয়; প্রকারান্তরে বললে, অন্তিম সময়ের কাজই হল প্রত্যেক মানুষের পাপের বিচার করা। অন্যথায়, মানুষকে কীভাবে শ্রেণিভুক্ত করা যাবে? তোমাদের মধ্যে শ্রেণীবিভাগ করার কাজই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এই কার্যের সূচনা করে। এরপরে, সমস্ত দেশ ও মানুষের ওপরেও এই বিজয়কার্য সম্পাদিত হবে। এর অর্থ হল, সৃষ্টির প্রত্যেক ব্যক্তিই প্রকৃতি অনুসারে শ্রেণীবিভক্ত হয়ে, বিচারের জন্য, বিচারাসনের সামনে নিজেদের সমর্পণ করবে। কোনো ব্যক্তি বা বস্তুই এই শাস্তি এবং বিচারের কষ্ট এড়াতে পারে না, অথবা কোনো ব্যক্তি বা বস্তু তার প্রকার অনুসারে শ্রেণীবদ্ধ হবে না, এমনটা হয় না; প্রত্যেক ব্যক্তিকেই শ্রেণিবিভক্ত করা হবে, কারণ সকল কিছুরই সমাপ্তিকাল আগতপ্রায়, এবং সমস্ত স্বর্গ ও পৃথিবী উপসংহারকালে উপনীত। মানুষ কীভাবে মানবজাতির অস্তিত্বের অন্তিম দিনগুলিকে এড়াতে পারে? আর তাই, তোমরা আর কতদিন তোমাদের অবাধ্যতামূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাবে? তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না যে, তোমাদের অন্তিম সময় আসন্ন? যারা ঈশ্বরকে সম্মান করে, তাঁর আবির্ভাবের কামনা করে, তারা কীভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতার আবির্ভাবের দিন না দেখে থাকতে পারে? তারা কীভাবে ভালোত্বের চূড়ান্ত প্রতিদান না পেয়ে থাকতে পারে? তুমি ভালো কাজ করো না মন্দ? তুমি কি এমন কেউ, যে ধার্মিক বিচার গ্রহণ করে এবং তারপরে মান্য করে, নাকি তুমি ধার্মিক বিচার গ্রহণ করে তারপর অভিশাপ লাভ করা কোনো ব্যক্তি? তুমি কি আলোর মধ্যে বিচারের আসনের সম্মুখে বাস করো, নাকি মৃতস্থানে অন্ধকারের মাঝে বাস করো? তুমি কি নিজেই স্পষ্টভাবে জানো না যে, তোমার সমাপ্তি পুরস্কারের হবে, নাকি শাস্তির? তুমি কি নিজেই সবচেয়ে স্পষ্টভাবে জানো এবং সবচেয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করো না যে, ঈশ্বর ধার্মিক? তাহলে, তোমার হৃদয় এবং আচরণ ঠিক কেমন? আজ যখন আমি তোমাকে জয় করি, তোমার আচরণ ভাল না মন্দ তা কি সত্যিই আমার স্পষ্ট করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে? তুমি আমার জন্য কতটুকু ত্যাগ করেছ? কতটা গভীরভাবে তুমি আমার উপাসনা করো? তুমি আমার প্রতি কেমন আচরণ করো, সেটা কি তুমি নিজেই সবচেয়ে ভালোভাবে জানো না? তুমি শেষ পর্যন্ত কী ধরনের সমাপ্তি পাবে, সেটা তোমারই সবচেয়ে ভালো ভাবে জানা উচিত! যথার্থই, আমি তোমায় বলি: আমি মানবজাতিকে, এবং তোমায়, কেবল সৃষ্টিই করেছি, কিন্তু আমি তোমাদেরকে শয়তানের হাতে তুলে দিই নি; তেমনই, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে তোমাদের আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা প্রতিরোধ করতে বাধ্য করে আমার দণ্ড ভোগ করাই নি। এই সমস্ত বিপর্যয় ও দুর্দশা কি তোমাদের কঠিন হৃদয় এবং ঘৃণ্য আচরণের কারণেই হচ্ছে না? তাহলে শেষ পর্যন্ত তোমরা কী পাবে, তা কি তোমাদের নিজেদের দ্বারাই নির্ধারিত হয় না? তোমরা কি তোমাদের অন্তরে, অন্য সবার থেকে ভালোভাবে জানো না যে, তোমাদের সমাপ্তি কীভাবে হবে? আমি মানুষকে জয় করি তাদের প্রকাশ করার, এবং, আরও ভালোভাবে, তোমায় পরিত্রাণের জন্য। তা তোমায় দিয়ে মন্দ কাজ করানোর জন্য নয়, আবার ইচ্ছাকৃতভাবে তোমায় ধ্বংসের নরকে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যও নয়। সময় এলে, তোমার এত যন্ত্রণা, কান্না আর দাঁতে দাঁত ঘষা—সবই কি তোমার নিজের পাপের কারণে হবে না? এইভাবে, তোমার নিজের ভালো বা মন্দ ভাবই কি তোমার শ্রেষ্ঠ বিচার করে না? তোমার শেষ কেমন হবে, এই-ই কি তাঁর শ্রেষ্ঠ প্রমাণ নয়?
আজ, আমি চীনে ঈশ্বরের নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্যে সমস্ত বিদ্রোহী প্রকৃতি উন্মোচনের জন্য, সমস্ত কদর্যতার মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য কাজ করি, এবং তা-ই আমার যা কিছু বলা প্রয়োজন, সেই সমস্ত কিছুর প্রসঙ্গ সরবরাহ করে। পরবর্তীকালে, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিজয়কার্যের পরবর্তী ধাপ সম্পাদনের সময়, আমি সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রত্যেকের অন্যায়পরায়ণতাকে বিচারের জন্য তোমাদের দেওয়া রায়কে ব্যবহার করব, কারণ, তোমরাই হলে মানবজাতির মধ্যে বিদ্রোহীদের প্রতিনিধিত্বকারী। যারা উত্তীর্ণ হতে পারবে না, তারা শুধুমাত্র তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্বস্থাপনের এবং সেবাদানের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সামগ্রী হিসাবে থেকে যাবে; এদিকে যারা উত্তীর্ণ হতে পারবে, তাদের ব্যবহার করা হবে। আমি কেন বলি যে, এই ধাপে অনুত্তীর্ণ ব্যক্তিরা কেবলমাত্র তাদের তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্বস্থাপনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সামগ্রী হিসাবেই সেবা করবে? কারণ, বর্তমানে, আমার সমস্ত বাক্য এবং কাজ তোমাদের পটভূমির প্রতি লক্ষ্য করেই করা হয়, এবং, কারণ, তোমরা হলে সমগ্র মানবজাতির প্রতিনিধি এবং বিদ্রোহের প্রতীক। পরবর্তীকালে, আমি তোমাদেরকে যে বাক্য দ্বারা জয় করেছি, সেগুলিকে বিদেশে প্রসারিত করব, সেখানকার মানুষদের জয় করার জন্য তা ব্যবহার করব, তবুও তুমি কিন্তু সেই বাক্য অর্জন করবে না। এ-ই কি তোমায় এমন সামগ্রীতে পরিণত করে না, যার তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্বস্থাপন ঘটে? সমগ্র মানবজাতির ভ্রষ্ট স্বভাব, বিদ্রোহী কাজকর্ম, এবং মানুষের কদাকার প্রতিমূর্তি ও চেহারা—এগুলির সমস্তই বর্তমানে তোমাদের জয় করার জন্য ব্যবহৃত বাক্যের মধ্যে নথিবদ্ধ করা রয়েছে। আমি তারপরে সমস্ত দেশ ও জাতির মানুষদের জয় করার জন্য এই বাক্য ব্যবহার করব, কারণ তোমরাই হলে আদিরূপ, প্রথম নজির। তবে, আমি কিন্তু তোমাদের ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ করি নি; যদি তুমি তোমার সাধনায় ভালোভাবে কাজ করতে না পারো, এবং, সুতরাং, অ-নিরাময়যোগ্য হিসাবে প্রতিপন্ন হও, তাহলে তুমি কি নিতান্তই সেবাদানের এবং তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্বস্থাপনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সামগ্রী হিসাবেই রয়ে যাবে না? একদা আমি বলেছিলাম যে আমার প্রজ্ঞা শয়তানের পরিকল্পনার ভিত্তিতে সাধিত হয়। আমি কেন এমন বলেছিলাম? তা আমি এখন যা বলছি এবং যা করছি, তার নিহিত সত্য নয়? তুমি যদি উত্তীর্ণ না হতে পারো, যদি তোমায় ত্রুটিমুক্ত করা না হয়, বরং, পরিবর্তে, শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে কি তুমি এমন এক পদার্থে পরিণত হবে না যার তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিভাত হয়? হয়ত তুমি তোমার সময়কাল অনেক কষ্টভোগ করেছ, কিন্তু তাও তুমি কিছুই উপলব্ধি করো না; জীবনের সকল বিষয়েই তুমি অজ্ঞ। তোমায় বিচার করা, এবং শাস্তি দেওয়া সত্ত্বেও, তোমার কিছুই পরিবর্তিত হয় নি, এবং অন্তরের অন্তঃস্থলে তুমি জীবন অর্জন করো নি। তোমার কাজের পরীক্ষার সময় চলে এলে, সেই বিচারের অভিজ্ঞতা হবে অগ্নিসম ভয়ঙ্কর, এবং কষ্টভোগ হবে ভয়ঙ্করতর। এই আগুন তোমার সমগ্র সত্তাকে ছাই করে দেবে। যে জীবনের অধিকারী নয়, যার মধ্যে এক বিন্দুও খাঁটিত্ব নেই, যে এখনও পুরনো ভ্রষ্ট স্বভাবে আবদ্ধ রয়েছে, এবং, তোমরা এমনকি ভালোভাবে তেমনও হতে পারো না, যেমনটা হলে তার তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিভাত হয়—তোমার অপসারণ কি অবশ্যম্ভাবী নয়? যে ব্যক্তির মূল্য এক কানাকড়ির চেয়েও কম, যে জীবনের অধিকারী নয়, সে কি বিজয়কার্যের কোনো প্রয়োজনে লাগতে পারে? যখন সেই সময় আসবে, তখন তোমার দিনগুলি সদোম ও নোহের থেকেও কঠিন হবে! তোমার প্রার্থনায় তখন আর কাজ হবে না। তুমি কীভাবে পরিত্রাণের কার্য শেষ হওয়ার পর, ফিরে এসে, নতুন করে অনুতাপ করতে পারো? পরিত্রাণের সমস্ত কাজ শেষ হওয়ার পরে আর কিছুই রইবে না; তখন কেবল মন্দ ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার কাজের সূচনা করাই বাকি থাকবে। তুমি প্রতিরোধ করো, তুমি বিদ্রোহ করো, এবং তুমি সেসব কাজ করো, যেগুলি তুমি মন্দ বলে জানো। তুমি কি গুরুদণ্ডের যোগ্য নও? আমি আজ তোমার জন্য পরিষ্কার করে বলছি। তুমি যদি কর্ণপাত করবে না বলেই স্থির করো, তাহলে পরবর্তীকালে তোমার ওপর বিপর্যয় আপতিত হলে, সেই সময়ে তোমার অনুশোচনা এবং বিশ্বাস করতে আরম্ভ করা পক্ষে প্রবল বিলম্ব হয়ে যাবে না? আজ আমি তোমায় অনুশোচনা করার সুযোগ দিচ্ছি, কিন্তু তুমি তা করতে রাজি নও। আর কতকাল তুমি অপেক্ষা করতে চাও? শাস্তির দিন আসা পর্যন্ত? আমি আজ তোমাদের অতীতের অধর্ম মনে রাখি না; আমি তোমায় বার বার ক্ষমা করে দিই, তোমার নেতিবাচক দিক থেকে সরে এসে শুধুমাত্র ইতিবাচক দিকটি দেখি, কারণ বর্তমানে আমার সকল বাক্য এবং কাজের উদ্দেশ্যই হল তোমায় উদ্ধার করা, এবং তোমার প্রতি আমার কোনো খারাপ অভিপ্রায় নেই। তবুও তুমি প্রবেশ করতে অস্বীকার করো; খারাপ ও ভালোর পার্থক্য করতে পারো না, এবং দয়াশীলতার প্রশংসাও করতে জানো না। এই ধরনের ব্যক্তিগণ কি কেবলমাত্র দণ্ডের আগমন ও ধার্মিক প্রতিশোধের অপেক্ষাতেই থাকে না?
মোজেস যখন প্রস্তরে আঘাত করেছিল এবং যিহোবা-প্রদত্ত ধারাস্রোত বিনির্গত হয়েছিল, তা তার বিশ্বাসের কারণে। ডেভিড যখন যিহোবা অর্থাৎ আমার প্রশস্তিতে মনের আনন্দে বীনা বাজিয়েছিল, তা-ও ছিল তার বিশ্বাসের কারণে। যোব যখন তার অপরিমিত ধনসম্পদ ও গবাদি পশুদের—যে পশুরা সমগ্র পার্বত্যপ্রদেশ ছেয়ে ফেলত—হারিয়ে ফেলেছিল, এবং তার সারা শরীর যন্ত্রণাদায়ক ফোঁড়ায় ভরে গিয়েছিল, এটাও ছিল তার বিশ্বাসের কারণে। সে যখন আমার অর্থাৎ যিহোবার কন্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল এবং আমার অর্থাৎ যিহোবার মহিমা দেখতে পেয়েছিল, তা-ও ছিল তার বিশ্বাসের কারণে। পিতর যে যীশু খ্রীষ্টকে অনুসরণ করতে পেরেছিল, তারও কারণ নিহিত আছে তার বিশ্বাসে। আমার নিমিত্ত সে যে ক্রুশে পেরেকবিদ্ধ হতে পেরেছিল ও গৌরবময় সাক্ষ্য দিয়েছিল, তার মূলেও ছিল তার বিশ্বাস। যোহন যখন মানব-পুত্রের মহিমান্বিত প্রতিরূপ দর্শন করে, এর-ও হেতু ছিল তার বিশ্বাস। সে যখন অন্তিম সময়ের দৃশ্য অবলোকন করে—সে তো তার বিশ্বাসের কারণে বটেই। যে কারণে অসংখ্য অইহুদি রাষ্ট্র আমার উদ্ঘাটন লাভ করেছে এবং জানতে পেরেছে যে মানুষের মধ্যে কার্য সম্পাদনের জন্য আমি স্থূলদেহে ফিরে এসেছি, সেও তাদের বিশ্বাসের মধ্যেই নিহিত। যে সকল ব্যক্তি আমার রূঢ বাক্যের দ্বারা আহত হয়, অথচ তা থেকেই সান্ত্বনা ও পরিত্রাণ পায়—এও কি তাদের বিশ্বাসের কারণেই ঘটে না? মানুষ তাদের বিশ্বাসের কারণে অনেক কিছুই পেয়েছে, তবে তা যে সর্বদা আশীর্বাদের রূপেই পেয়েছে, এমন নয়। দাউদ যে ধরনের সুখ ও আনন্দ অনুভব করেছিল অথবা মোশি যেমন যিহোবাকে দিয়ে জল অর্পণ করে পেয়েছিল, সেই ধরনের আনন্দ তারা হয়ত পায়না। উদাহরণস্বরূপ, ইয়োব বিশ্বাসের কারণে যিহোবার থেকে আশীর্বাদ লাভ করলেও, দুর্ভোগেরও শিকার হয়েছিল। তাই, তুমি আশীর্বাদ লাভ করো কিংবা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হও, দুটোই আশীর্বাদপূর্ণ ঘটনা। বিশ্বাস ছাড়া, তুমি জয়ের কাজ প্রাপ্ত করতে সক্ষম হতে না, আর আজ চোখের সামনে যিহোবার কাজ দেখা তো আরোই দূরের কথা। তুমি তা দেখতেই পাবে না, তা প্রাপ্ত করা তো আরোই দূরের কথা। এই আঘাত, এই দুর্যোগ, এবং সমস্ত বিচার—এইসব যদি তোমার উপর না আসত, তুমি কি যিহোবার কাজ দেখতে সক্ষম হতে? আজ বিশ্বাসের কারণেই তোমাকে জয় করা যায়, এবং এই বিজিত হওয়ার ফলেই যিহোবার প্রতিটি কাজে তুমি বিশ্বাস করতে পারো। এই বিশ্বাসের কারণেই তুমি এই ধরনের শাস্তি ও বিচার লাভ করো। এই শাস্তি ও বিচারের মাধ্যমেই তোমাকে জয় করা হয়, এবং নিখুঁত করা হয়। তুমি আজ যে ধরনের শাস্তি ও বিচার পাচ্ছ, সেগুলি না থাকলে তোমার বিশ্বাস বৃথা হয়ে যাবে, কারণ ঈশ্বরকে জানবে না; তুমি তাঁকে যতই বিশ্বাস করো না কেন, তোমার বিশ্বাস বাস্তবে শুধু ভিত্তিহীন ফাঁকা অভিব্যক্তি হয়েই থেকে যাবে। কেবলমাত্র বিজয়কার্য—যে কাজ তোমাকে এমনই সম্পূর্ণভাবে অনুগত করে তোলে—তা প্রাপ্ত হওয়ার পরই তোমার বিশ্বাস সত্য, নির্ভরযোগ্য হয়ে ওঠে, এবং তোমার অন্তর ঈশ্বরমুখী হয়ে ওঠে। যদি এই “বিশ্বাস” শব্দের ফলে তুমি গুরুতর বিচার ও শাস্তিও পাও, তা সত্ত্বেও কিন্তু তোমার প্রকৃত বিশ্বাস রয়েছে এবং তুমি প্রকৃততম, বাস্তবিকতম এবং মহার্ঘতম বস্তু প্রাপ্ত করেছ। এর কারণ হল, কেবলমাত্র বিচারের সময়েই তুমি ঈশ্বরের সৃষ্টিদের চূড়ান্ত গন্তব্য দেখতে পাও; এই বিচারের সময়েই তুমি দেখতে পাও যে স্রষ্টাকে ভালবাসতে হয়; এমন বিজয়কার্যেই তুমি ঈশ্বরের হাত প্রত্যক্ষ করতে পারো; এই বিজয়ের মধ্য দিয়েই তুমি মানবজীবনকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করতে পারো; এই বিজয়ের মাধ্যমেই তুমি মানবজীবনের সঠিক পথ লাভ করো এবং “মানুষ”-এর প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারো; এই বিজয়ের মধ্যেই তুমি সর্বশক্তিমানের ধার্মিক স্বভাব এবং তাঁর সুন্দর, মহিমান্বিত চেহারা দেখতে পাও; এই বিজয়কার্যের মধ্যেই তুমি মানুষের উৎপত্তি এবং সমগ্র মানবজাতির “অমর ইতিহাস” সম্পর্কে বুঝতে পারো; এই বিজয়ের মধ্যেই তুমি মানবজাতির পূর্বপুরুষ এবং মানবজাতির দুর্নীতির উৎস সম্পর্কে বুঝতে পারো; এই বিজয়ের মধ্যেই তুমি আনন্দ এবং আরামের পাশাপাশি, সৃষ্টিকর্তার থেকে তাঁর সৃষ্ট মানবজাতির প্রতি নিরন্তর শোধন, অনুশাসন এবং নিন্দার বাক্য লাভ করো; বিজয়ের এই কাজের মধ্যেই তুমি আশীর্বাদ লাভ করো, পাশাপাশি লাভ করো মানুষের প্রাপ্য বিপর্যয়…। এই সমস্তই কি তোমার সামান্য বিশ্বাসের কারণে হচ্ছে না? এবং এই সমস্ত কিছু অর্জন করার পরে কি তোমার বিশ্বাস বৃদ্ধি পায় নি? তুমি কি বহুল পরিমাণে লাভ করো নি? তুমি যে কেবল ঈশ্বরের বাক্য শুনেছ ও ঈশ্বরের প্রজ্ঞা প্রত্যক্ষ করেছ তা-ই নয়, বরং, ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর কাজের প্রতিটি ধাপের অভিজ্ঞতাও লাভ করেছ। হয়তো তুমি বলবে, যদি তোমার বিশ্বাস না থাকত, তাহলে এই ধরনের শাস্তি বা বিচারের যন্ত্রণা ভোগ করতে না। কিন্তু তোমার জানা উচিত, বিশ্বাস না থাকলে, তুমি যে কেবল সর্বশক্তিমানের থেকে এই ধরনের শাস্তি বা পরিচর্যা পেতে অক্ষম হতে, তা-ই নয়, পাশাপাশি, তুমি সৃষ্টিকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগও চিরতরে হারিয়ে ফেলতে। তুমি মানবজাতির উৎস সম্পর্কে কোনোদিন জানতে পারতে না, মানবজীবনের গুরুত্বও উপলব্ধি করতে পারতে না। এমনকি তুমি যদি মৃত্যুবরণ করতে, তোমার আত্মা দেহ থেকে মুক্ত হয়ে যেত, তবুও তুমি সৃষ্টিকর্তার সমস্ত কাজের তাৎপর্য উপলব্ধি করতে অক্ষম হতে, সৃষ্টিকর্তা মানবজাতিকে সৃষ্টির পর এই পৃথিবীতে যে এত মহান কাজ করেছেন—তা আরোই কম অনুধাবন করতে। তাঁর সৃষ্ট মানবজাতির একজন সদস্য হিসাবে, তুমি কি মূর্খের মতো এই ভাবে অন্ধকারে পতিত হতে চাও? নিরন্তর শাস্তি ভোগ করতে চাও? তুমি যদি বর্তমানের শাস্তি ও বিচারের থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখো, তাহলে তুমি কী পাবে? তুমি কি মনে করো যে, বর্তমানের বিচারের থেকে নিজেকে আলাদা করে, তুমি এই কঠিন জীবন এড়াতে পারবে? এমন কি সত্যি নয় যে, তুমি যদি “এই স্থান” ত্যাগ করো, তাহলে তুমি বেদনাদায়ক যন্ত্রণা বা শয়তানের নিষ্ঠুর প্ররোচনারই সম্মুখীন হবে? তুমি কি অসহনীয় দিবস ও রজনীর সম্মুখীন হতে পারবে? তুমি কি মনে কর যে, আজ এই বিচারের থেকে অব্যাহতি পেয়ে, তুমি চিরকালের জন্য ভবিষ্যতের নির্যাতন এড়াতে পারবে? তোমার পথে কী আসবে? তা কি তুমি যে পরমলোক প্রাপ্তির আশা করো, তেমন হবে? তুমি কি মনে করো যে, এখন যেভাবে তুমি বাস্তবতা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছ, নিছক সেইভাবেই ভবিষ্যতের চিরকালীন শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে পারবে? আজকের পর, তুমি কি আর কখনো এই ধরনের সুযোগ এবং এই ধরনের আশীর্বাদ পেতে সক্ষম হবে? তোমার উপর বিপর্যয় নেমে আসার সময়কালে কি তুমি তা খুঁজে নিতে সমর্থ হবে? যখন সমস্ত মানবজাতি বিশ্রামে প্রবেশ করবে, তখন কি তুমি তা পেতে সক্ষম হবে? তোমার বর্তমান সুখী জীবন এবং সুসমন্বিত, ছোট্ট পরিবার—এগুলি কি তোমার ভবিষ্যতের শাশ্বত গন্তব্যের বিকল্প হতে পারে? যদি তোমার বিশ্বাস খাঁটি হয় এবং সেই বিশ্বাসের কারণে যদি তুমি অনেক কিছু লাভ করো, তাহলে সেসবই তোমার—এক সৃষ্ট সত্তা হিসেবে—অর্জনীয় বিষয়, এবং সেগুলিই সর্বাগ্রে তোমার মধ্যে থাকা উচিত ছিল। তোমার জীবন ও বিশ্বাসের পক্ষে এইরূপ বিজয়ের থেকে বেশি উপকারী আর কিছুই হতে পারে না।
আজ, যাদের জয় করা হয়েছে, তাদের থেকে ঈশ্বর কী চান, যাদের নিখুঁত করা হয়েছে তাদের প্রতি ঈশ্বরের আচরণ কীরূপ, এবং বর্তমানে তোমার কোথায় প্রবেশ করা উচিত—এইসব তোমাকে বুঝতে হবে। কিছু কিছু জিনিস তোমায় সামান্যই বুঝতে হবে। তোমায় কিছু রহস্যময় বাক্য বিশদে যাচাই করতে হবে না; সেগুলি জীবনের পক্ষে খুব বেশি সহায়ক নয়, তাই তাতে দ্রুত চোখ বোলালেই হবে। তুমি বিভিন্ন রহস্যের বিষয়ে পড়তে পারো, যেমন আদম ও হবার রহস্য: সেই সময়ে আদম ও হবা কেমন ছিল, এবং বর্তমানে ঈশ্বর কী করতে চান। তোমায় বুঝতে হবে যে, মানুষকে জয় এবং নিখুঁত করার সময়, আদম ও হবা আদিতে যেমন ছিল, ঈশ্বর মানুষকে সেই পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। ঈশ্বরের মানদণ্ড অর্জনের জন্য তোমাকে নিখুঁত হওয়ার কোন স্তর অবশ্যই অর্জন করতে হবে, সেই বিষয়ে নিজের অন্তরে অবশ্যই একটা স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে, এবং, অতঃপর তোমায় তা অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে। এটা তোমার অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত, আর এ তোমার বোঝা উচিত। এই সকল বিষয়ে ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে প্রবেশ করার ইচ্ছাই তোমার পক্ষে যথেষ্ট। যখন তুমি এটা পড়ো, “মানুষ আজ যেখানে পৌঁছেছে, সেখানে পৌঁছতে তার হাজার হাজার বছরের ইতিহাস অতিক্রম করতে হয়েছে,” তখন তুমি কৌতূহলী বোধ করো, আর তাই ভাই-বোনেদের থেকে এগুলির সদুত্তর পাওয়ার চেষ্টা করো। “ঈশ্বর বলেন যে মানবজাতি ছয় হাজার বছর আগে থেকে বিকশিত হয়েছে, তাই না? তাহলে এই হাজার হাজার বছরের বিষয়টা কী?” এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে কী লাভ? স্বয়ং ঈশ্বর হাজার হাজার বছর ধরে কাজ করছেন, নাকি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে—তাঁর কি সত্যিই এই বিষয়ে তোমায় জানানোর প্রয়োজন আছে? এ এমন কোনো বিষয় নয়, যা সৃষ্ট সত্তা হিসাবে তোমার জানা প্রয়োজন। শুধু নিজে এই ধরনের আলোচনা সংক্ষিপ্তভাবে বিবেচনা করো, তা দর্শন হিসাবে বোঝার চেষ্টা কোরো না। তোমার আজ কীসে প্রবেশ করা উচিত এবং কী উপলব্ধি করা উচিত, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে, এবং তারপর তোমায় সেই বিষয়ে দৃঢ়ভাবে উপলব্ধি করতে হবে। একমাত্র তখনই তুমি বিজিত হবে। উপরের সমস্ত কিছু পড়ার পর, তোমার মধ্যে এই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত: ঈশ্বর ভীষণই উদ্বিগ্ন, তিনি আমাদের জয় করতে চান এবং গৌরব ও সাক্ষ্য অর্জন করতে চান, তাহলে আমাদের কীভাবে তাঁর সাথে সহযোগিতা করা উচিত? তাঁর দ্বারা সম্পূর্ণ বিজিত হতে এবং তাঁর সাক্ষ্যে পরিণত হতে, আমাদের আবশ্যিকভাবে কী করা উচিত? ঈশ্বরকে গৌরব অর্জনে সক্ষম করে তোলার জন্য আমাদের আবশ্যিকভাবে কী করা উচিত? শয়তানের আধিপত্যের অধীনতার পরিবর্তে, ঈশ্বরের আধিপত্যের অধীন হয়ে জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে আমাদের আবশ্যিকভাবে কী করতে হবে? এগুলোই মানুষের চিন্তার বিষয় হওয়া উচিত। তোমাদের প্রত্যেকেরই ঈশ্বরের জয়ের তাৎপর্যের বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া উচিত। তা-ই তোমাদের দায়িত্ব। শুধু এইরকম স্পষ্টতা অর্জনের পরেই তোমার প্রবেশ সম্ভব হবে, তুমি কাজের এই পর্যায় সম্পর্কে জানতে পারো, এবং সম্পূর্ণ অনুগত হতে পারবে। অন্যথায়, তোমরা প্রকৃত আনুগত্য লাভ করব না।