শুধুমাত্র অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট মানুষকে অনন্ত জীবনের পথ দেখাতে পারেন

জীবনের পথ কারো দখলে থাকতে পারে না, বা এটি সহজে অর্জন করতে পারার মতো বিষয়ও নয়। কারণ জীবন কেবল ঈশ্বর প্রদত্ত, অর্থাৎ, শুধুমাত্র ঈশ্বর নিজেই জীবনের সারসত্যের অধিকারী এবং কেবলমাত্র স্বয়ং ঈশ্বরেরই রয়েছে জীবনের পথ। আর তাই একমাত্র ঈশ্বরই হলেন প্রাণের উৎস এবং প্রাণ সঞ্চারী জলের অনন্ত প্রবাহী ধারা। তিনি যখন পৃথিবী সৃষ্টি করলেন তখন থেকেই, ঈশ্বর জীবনের প্রাণশক্তির সাথে সম্পর্কিত বহু কাজ করেছেন, অনেক কাজ করেছেন যা মানবজাতিতে প্রাণ সঞ্চার করে, এবং প্রভূত মূল্য পরিশোধ করেছেন যাতে মানবজাতি জীবন অর্জন করতে পারে। এর কারণ ঈশ্বর নিজেই অনন্ত জীবন, এবং ঈশ্বর নিজেই সেই পথ যার মাধ্যমে মানুষ পুনরুত্থিত হতে পারে। ঈশ্বর কখনই মানুষের হৃদয়ে অনুপস্থিত নন, তিনি সর্বদা মানুষের মধ্যে থাকেন। তিনি মানুষের জীবনের চালিকাশক্তি, মানুষের অস্তিত্বের মূল, এবং জন্ম-পরবর্তীকালে অস্তিত্বের এক সযত্নে লালিত সম্পদ। তাঁর জন্যই মানুষের পুনর্জন্ম হয় এবং তিনিই তাকে প্রতিটি ভূমিকা যথাযথ ভাবে পালনে সক্ষম করেন। তাঁর অপার শক্তি এবং অদম্য প্রাণশক্তির বদান্যতায় মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বেঁচে আছে, যেখানে ঈশ্বরের জীবনীশক্তিই মানুষের অস্তিত্বের মূল ভিত্তি এবং ঈশ্বর এর জন্য এমন মূল্য প্রদান করেছেন যা সাধারণ মানুষের কল্পনাতীত। ঈশ্বরের জীবনীশক্তি সমস্ত শক্তির ওপর জয়লাভ করতে পারে; তদুপরি, এটি যেকোনও শক্তিকেই অতিক্রম করতে সক্ষম। তাঁর জীবন চিরন্তন, তাঁর শক্তি অসাধারণ এবং তাঁর জীবনীশক্তি কোনও সৃষ্ট সত্তা বা প্রতিপক্ষ শক্তি দ্বারা পরাভূত হতে পারে না। স্থান-কাল নির্বিশেষে ঈশ্বরের প্রাণশক্তি বিদ্যমান এবং তা উজ্জ্বল দীপ্তির আলোকে উদ্ভাসিত। আকাশ ও পৃথিবীতে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের জীবন চিরকালের জন্য অপরিবর্তনীয়। সমস্ত কিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও ঈশ্বরের জীবন তখনও থেকে যাবে, কারণ ঈশ্বরই সমস্ত অস্তিত্বের উৎস এবং মূল। মানুষের জীবনের উৎপত্তিস্থল ঈশ্বর, স্বর্গের অস্তিত্বের মূলেও রয়েছেন ঈশ্বর, এমনকি পৃথিবীর অস্তিত্বও ঈশ্বরের জীবনীশক্তি থেকেই উদ্ভূত হয়েছে। জীবনীশক্তি সম্পন্ন কোনও কিছুই ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বকে অতিক্রম করতে পারে না এবং শক্তি সম্পন্ন কোনও কিছুই ঈশ্বরের কর্তৃত্বের সীমানা এড়িয়ে যেতে পারে না। এইভাবে, নিজেদের স্বরূপ নির্বিশেষে প্রত্যেককে অবশ্যই ঈশ্বরের আধিপত্যের অধীনে বশ্যতা স্বীকার করতে হবে, প্রত্যেককেই ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে জীবনযাপন করতে হবে, এবং কেউই তাঁর হাত এড়িয়ে যেতে পারবে না।

তুমি হয়তো এখন জীবন লাভ করতে চাও, অথবা তোমার হয়তো সত্য লাভের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। যাই হোক না কেন, তুমি আসলে ঈশ্বরকে খুঁজতে চাইছো, এমন ঈশ্বর যার উপর তুমি নির্ভর করতে পারো এবং যিনি তোমাকে অনন্ত জীবন প্রদানের ক্ষমতা রাখেন। তুমি অনন্ত জীবন পেতে চাইলে তোমাকে অবশ্যই প্রথমে অনন্ত জীবনের উৎসকে জানতে হবে এবং অবশ্যই জানতে হবে ঈশ্বর কোথায় আছেন। আমি আগেই বলেছি যে একমাত্র ঈশ্বরই শাশ্বত জীবন এবং একমাত্র ঈশ্বরই জীবনের গতিপথের অধিকারী। অপরিবর্তনীয় জীবনের কারণেই তিনি অনন্ত জীবনের অধিকারী; যেহেতু একমাত্র ঈশ্বরই হলেন জীবন যাপনের পথ, তাই ঈশ্বর নিজেই অনন্ত জীবন লাভের পথ। সুতরাং, তোমাকে প্রথমেই বুঝতে হবে ঈশ্বর কোথায় আছেন, এবং কীভাবে এই অনন্ত জীবন লাভ করা সম্ভব। এসো, এখন এই দুটি বিষয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করা যাক।

তুমি যদি প্রকৃতপক্ষেই অনন্ত জীবনের পথ লাভ করতে চাও, এবং এর সন্ধানে উদগ্রীব হয়ে থাকো, প্রথমে এই প্রশ্নের উত্তর দাও: ঈশ্বর আজ কোথায়? সম্ভবত তোমার উত্তর হবে, “ঈশ্বর স্বর্গে আছেন, অবশ্যই—তিনি তো আর তোমার বাড়িতে থাকবেন না, তাই না?” হয়তো তুমি বলবে যে ঈশ্বর স্পষ্টতই সমস্ত কিছুর মধ্যেই বাস করেন। অথবা বলতে পারো যে ঈশ্বর প্রত্যেকের হৃদয়ে বাস করেন, বা ঈশ্বর আধ্যাত্মিক জগতে আছেন। আমি এর কোনোটিই অস্বীকার করি না, তবে আমাকে অবশ্যই বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বোঝাতে হবে। ঈশ্বর মানুষের হৃদয়ে বাস করেন এই কথাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে এটি সম্পূর্ণ ভুলও নয়। কারণ, ঈশ্বরবিশ্বাসীদের মধ্যে, এমন অনেকে আছে যাদের বিশ্বাস সত্য, এবং অনেকে আছে যাদের বিশ্বাস মিথ্যা, এমন অনেকে আছে যাদের ঈশ্বর অনুমোদন করেন, এবং এমনও অনেকে আছে যাদের অনুমোদন করেন না, তারাও আছে যাদের উপর তিনি সন্তুষ্ট, এবং এমনও অনেকে আছে যাদের তিনি অপছন্দ করেন, এমন অনেকে আছে যাদের তিনি নিখুঁত করে তোলেন, আবার অনেককেই তিনি পরিত্যাগ করেন। আর তাই আমি বলি যে ঈশ্বর শুধুমাত্র কিছু মানুষের হৃদয়েই বাস করেন যারা নিঃসন্দেহে ঈশ্বরবিশ্বাসী, যাদের ঈশ্বর অনুমোদন করেন, যারা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারে এবং যাদের তিনি নিখুঁত করে তোলেন। এই ধরণের মানুষেরাই ঈশ্বরের দ্বারা পরিচালিত হয়। ঈশ্বরের দ্বারা পরিচালিত বলেই, তারা ইতিমধ্যে ঈশ্বরের অনন্ত জীবনের গতিপথ সম্পর্কে অবগত। যাদের ঈশ্বরবিশ্বাস মিথ্যা, যারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত নয়, যারা ঈশ্বরের দ্বারা অবহেলিত, যারা ঈশ্বর দ্বারা ত্যাজ্য—তারা ঈশ্বরের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে বাধ্য, তারা জীবনের গতিপথ ছাড়াই থাকতে বাধ্য, এবং ঈশ্বর কোথায় আছেন সে সম্পর্কে অজ্ঞ থাকতে বাধ্য। অপরপক্ষে, যাদের অন্তরে ঈশ্বর বাস করেন, তারা জানে তিনি কোথায় আছেন। তাদেরকেই ঈশ্বর অনন্ত জীবন যাপনের পথে চলার আশীর্বাদ দেন এবং তারাই ঈশ্বরকে অনুসরণ করে। এখন তুমি কি জানো ঈশ্বর কোথায় আছেন? ঈশ্বর মানুষের মনে এবং মানুষের পাশে উভয়ই স্থানেই আছেন। কেবল আধ্যাত্মিক জগতেই নয়, সবকিছুর ঊর্ধ্বেই তাঁর বিচরণ, কিন্তু, সর্বোপরি তাঁর উপস্থিতি মানুষের আবাসস্থল এই পৃথিবীতে। এবং তাই অন্তিম সময়ের আগমন ঈশ্বরের কর্ম পদক্ষেপকে এক নতুন শিখরে নিয়ে গেছে। সর্বত্র সমস্ত জিনিসের উপর ঈশ্বরের সার্বভৌমত্ব আছে এবং মানুষের হৃদয়ে তিনিই প্রধান অবলম্বন, অধিকন্তু, তিনি মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান। কেবল এইভাবেই তিনি মানবজাতির মধ্যে জীবন যাপনের ধারা প্রবর্তন করেন এবং মানুষকে জীবনের পথে নিয়ে আসেন। ঈশ্বর পৃথিবীতে এসেছেন, এবং তিনি মানুষের মধ্যে বসবাস করেন, যাতে মানুষ জীবন যাপনের পথ লাভ করতে পারে এবং যাতে মানুষের অস্তিত্ব বজায় থাকে। পাশাপাশি, মানুষদের মধ্যে তাঁর ব্যবস্থাপনা নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য ঈশ্বর সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। এবং তাই, যদি তুমি এই মতবাদে বিশ্বাস করো যে ঈশ্বর কেবলমাত্র স্বর্গে এবং মানুষের হৃদয়ে বাস করেন, তবুও মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সত্যতা অস্বীকার করো, তাহলে তুমি কখনই জীবন লাভ করতে পারবে না এবং কখনও সত্যের পথ লাভ করতেও পারবে না।

ঈশ্বর নিজেই জীবন, এবং সত্য, এবং তাঁর জীবন ও সত্য একই সাথে সহাবস্থান করে। যারা সত্যকে অর্জন করতে অক্ষম তারা কখনও জীবন লাভ করতে পারে না। সত্যের দিশানির্দেশ, সমর্থন এবং বিধান ব্যতীত, তুমি কেবল কিছু আক্ষরিক তত্ত্ব, মতবাদ এবং সর্বোপরি মৃত্যুই লাভ করবে। ঈশ্বরের জীবন সর্বত্র বিরাজমান এবং তাঁর সত্য ও জীবন সহাবস্থান করে। তুমি সত্যের উৎস উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হলে, জীবনের পরিপোষণ অর্জন করতে পারবে না; জীবনের বিধান লাভ করতে না পারলে, নিশ্চিত ভাবে তোমার কাছে সত্য থাকবে না, এবং তাই, কল্পনা এবং ধারণা ব্যতীত, তোমার সম্পূর্ণ শারীরিক অস্তিত্বে শুধু তোমার দুর্গন্ধময় রক্তমাংস ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। তোমার জানা উচিত যে বইয়ে লেখা শব্দকে জীবন বলে না, ইতিহাসের নথিকে সত্য মনে করে শ্রদ্ধা করা যায় না এবং অতীতের নিয়মগুলিকে বর্তমানে ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত বাক্যের মতো করে ব্যবহার করা যায় না। পৃথিবীতে এসে মানুষের মধ্যে বসবাসের সময় ঈশ্বর যা প্রকাশ করেছেন, তাই হল সত্য, জীবন, ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং তাঁর বর্তমান কর্মপদ্ধতি। তুমি যদি অতীতে বলা ঈশ্বরের বাক্যকে বর্তমানে প্রয়োগ করো, তাহলে তুমি এক প্রত্নতত্ত্ববিদ ছাড়া আর কিছুই নও, তোমাকে খুব বেশি হলে ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের বিশেষজ্ঞ বলা যায়। কারণ তুমি সবসময় ঈশ্বরের অতীত কার্যকলাপের উপরেই বিশ্বাস রাখো, ঈশ্বর অতীতে মানুষের মধ্যে যে কাজ করেছিলেন শুধুমাত্র সেই কাজের পড়ে থাকা ছায়ায় উপর ভরসা রাখো এবং অতীতের দিনগুলিতে ঈশ্বর তাঁর অনুসারীদের যে পথ প্রদর্শন করেছিলেন শুধু তার উপরেই তোমার বিশ্বাস রয়েছে। তুমি আজকের দিনে ঈশ্বরের কর্মের নির্দেশনায় বিশ্বাস করো না, বর্তমান যুগে ঈশ্বরের মহিমাময় মুখমণ্ডলে বিশ্বাস করো না এবং বর্তমানে ঈশ্বর প্রদর্শিত সত্যের পথেও বিশ্বাস করো না। আর তাই তুমি নিঃসন্দেহে এমন একজন দিবাস্বপ্ন দেখা ব্যক্তি, যার বাস্তবের সাথে কোনও সম্পর্কই নেই। তবু যদি তুমি এখনও মানুষের মধ্যে প্রাণসঞ্চারে অপারগ বাণীসমূহ আঁকড়ে ধরে থাকো, তবে তুমি নিষ্প্রাণ কাষ্ঠ খণ্ড[ক] ব্যতীত আর কিছুই নও, কারণ তুমি অত্যন্ত রক্ষণশীল, অত্যন্ত অনমনীয়, কোনও যুক্তির পরোয়াই করো না!

ঈশ্বরের অবতাররূপকেই খ্রীষ্ট বলা হয়, এবং তাই যে খ্রীষ্ট মানুষকে সত্যের সন্ধান দেন তাঁকেই ঈশ্বর বলা হয়। এটি অতিশয়োক্তি নয়, কারণ তিনিই ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী এবং তাঁর মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বরের স্বভাব এবং প্রজ্ঞা, যা মানুষের পক্ষে অর্জন করা অসাধ্য। যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্ট বলে দাবি করে, কিন্তু ঈশ্বরের কাজে অপারগ, তারা আসলে প্রতারক। খ্রীষ্ট নিছক পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রকাশ নন, বরং ঈশ্বরের অবতাররূপ, যা ধারণপূর্বক তিনি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করেন এবং তা সম্পূর্ণ করেন। এই অবতাররূপ যেকোনো মানুষ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা অসম্ভব, বরং তিনি হলেন এক অবতাররূপ, যিনি যথাযথভাবে পৃথিবীতে ঈশ্বরের কর্ম সম্পাদন করতে পারেন, ঈশ্বরের স্বভাব প্রকাশ করতে পারেন, যথাযথ ভাবে ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন এবং মানুষকে জীবন দান করতে পারেন। একদিন না একদিন, খ্রীষ্টের ছদ্মরূপ ধারণকারী প্রত্যেকের পতন অনিবার্য, কারণ তারা নিজেদের খ্রীষ্ট বলে দাবি করলেও, তাদের মধ্যে খ্রীষ্টের সারসত্যের ছিটেফোঁটাও নেই। আর তাই আমি বলি খ্রীষ্টের সত্যতা মানুষ সংজ্ঞায়িত করতে পারে না, বরং তার সত্যতা বিচার এবং সংজ্ঞা নির্ধারণ স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারাই করা সম্ভব। এইভাবে, তুমি সত্যিই জীবনের পথ খুঁজতে চাইলে অবশ্যই প্রথমে তোমাকে স্বীকার করতে হবে যে শুধুমাত্র পৃথিবীতে এসেই ঈশ্বর মানুষকে জীবন যাপনের পথের সন্ধান দেবার কাজ করেন, এবং তোমাকে এটাও মানতেই হবে যে একমাত্র অন্তিম সময়েই ঈশ্বর পৃথিবীতে আসেন মানুষকে জীবন যাপনের সঠিক পথের সন্ধান দেবার জন্য। এটা অতীত নয়; বর্তমানেই ঘটছে।

অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট নিয়ে আসেন জীবন, এবং নিয়ে আসেন সত্যের চিরস্থায়ী ও শাশ্বত পথ। এই সত্যের পথেই মানুষ জীবন লাভ করে এবং এটিই একমাত্র পথ যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরকে জানতে পারে এবং ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত হয়। অন্তিম সময়ের খ্রীষ্ট জীবনের যে পথ প্রদান করেছেন, তুমি যদি তার অনুসন্ধান না করো, তবে তুমি কখনোই যীশুর অনুমোদন লাভ করতে পারবে না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের যোগ্য কখনোই হয়ে উঠতে পারবে না, কারণ তুমি কেবল ইতিহাসের হাতের পুতুল এবং তার বন্দী। যারা নিয়ম-কানুন, লিখিত মতবাদ এবং ইতিহাসের শৃঙ্খলে আবদ্ধ, তারা কখনই জীবনকে অর্জন করতে পারে না বা জীবন যাপনের চিরস্থায়ী পথ অর্জন করতে পারে না। কারণ তাদের জীবন সিংহাসন থেকে প্রবাহিত প্রাণসঞ্চারী জলের পরিবর্তে হাজার হাজার বছর ধরে আবদ্ধ অস্বচ্ছ জলের মতো। যাদের জীবনে এই প্রাণসঞ্চারী জলের সরবরাহ থাকে না তারা চিরকালই মৃতদেহের অনুরূপ, শয়তানের খেলার সামগ্রী এবং নরকের সন্তান হয়েই থেকে যাবে। তাহলে তারা কীভাবে ঈশ্বরকে দেখতে পাবে? যদি তুমি শুধুমাত্র অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করো, সমস্তকিছুকে নিশ্চল করে রাখার চেষ্টা করো, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকো এবং ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করো, তাহলে তুমি কি সর্বদা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারী নও? ঈশ্বরের কর্মকাণ্ডের পর্যায়গুলি বিশাল এবং শক্তিশালী, ঠিক উথালপাথাল ঢেউ এবং গর্জনকারী বজ্রের মতো—তবুও তুমি নিষ্ক্রিয়ভাবে ধ্বংসের অপেক্ষায় বসে আছো, নিজের অজ্ঞতা আঁকড়ে ধরে আছো এবং নিশ্চেষ্ট রয়েছ। এইভাবে, তুমি মেষশাবকের পদাঙ্ক অনুসরণকারীর মতো কীভাবে বিবেচিত হতে পারো? তুমি কীভাবে সেই ঈশ্বরকে প্রমাণ করবে যাকে তুমি ঈশ্বর বলে আঁকড়ে ধরে থাকো, যিনি সর্বদা নতুন এবং কখনও পুরানো হন না? হলুদ হয়ে যাওয়া জীর্ণ বইয়ের বাক্য কীভাবে তোমাকে নতুন যুগে নিয়ে যেতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমাকে ঈশ্বরের কাজের পদক্ষেপগুলির সন্ধানে পরিচালিত করতে পারে? সেগুলি কীভাবে তোমার স্বর্গের পথ প্রশস্ত করতে পারে? তোমার হাতে ধরা বইগুলি শুধুই অক্ষরের সমাহার, যা কেবল অস্থায়ী শান্তি প্রদান করতে পারে, জীবনদায়ী সত্যের সন্ধান দিতে সক্ষম নয়। তোমার পড়া শাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র তোমার জিহ্বাকে সমৃদ্ধ করতে পারে, মানব জীবনের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যকারী জীবন দর্শনের সন্ধান দিতে তারা অক্ষম, নিখুঁত হওয়ার অভিমুখে চলার পথ হবার যোগ্যতা তো এগুলির আরোই কম। এই অমিলগুলি কি তোমাকে ভাবনার রসদ জোগাতে পারে না? এটা কি তোমাকে অন্তর্নিহিত রহস্য বুঝতে সাহায্য করে না? তুমি কি স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য এবং নিজের সামর্থ্যেই ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে সক্ষম? ঈশ্বরের আগমন ব্যতীত তুমি কি ঈশ্বরের সাথে পারিবারিক সুখ উপভোগ করতে স্বর্গে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি কি এখনও দিবাস্বপ্ন দেখছো? আমি পরামর্শ দিচ্ছি যে, তাহলে তুমি দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেখো যে এখন কে কাজ করছেন—দেখো কে এখন অন্তিম সময়ে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো না পারলে তুমি কখনই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে না এবং কখনও জীবন লাভ করতে পারবে না।

যারা খ্রীষ্টের বাণীর সত্যের উপর নির্ভর না করে জীবন লাভ করতে চায় তারা পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যকর মানুষ এবং যারা খ্রীষ্ট প্রদত্ত জীবন যাপনের পথের সন্ধান পেতে চায় না তারা অলীক কল্পনার জগতে বিভোর হয়ে আছে। তাই বলছি যে যারা অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে গ্রহণ করে না তারা চিরকাল ঈশ্বরের দ্বারা ঘৃণার পাত্র হয়েই থাকে। অন্তিম সময়ে খ্রীষ্টই মানুষের কাছে রাজ্যের প্রবেশপথ, এবং কেউ তাঁকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারে না। খ্রীষ্টের মধ্যস্থতা ছাড়া কেউ ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে পারে না। তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করলে, অবশ্যই তাঁর বাক্য মেনে নেবে এবং তাঁর প্রদর্শিত পথের অনুবর্তী হবে। তুমি সত্য প্রাপ্তি না করে এবং জীবনের বিধান গ্রহণে অক্ষম হয়ে কেবল আশীর্বাদ লাভের কথা ভেবে যেতে পারো না। খ্রীষ্ট অন্তিম সময়ে আসেন, যাতে তাঁর প্রকৃত অনুরাগীদের জীবন প্রদান করতে পারেন। পুরাতন যুগের পরিসমাপ্তি ঘটানো এবং নতুন যুগে প্রবেশের উদ্দেশ্যেই তাঁর কাজ, আর যারা নতুন যুগে প্রবেশ করবে, তাঁর কাজের এই পথ তাদের গ্রহণ করতেই হবে। যদি তুমি তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করো এবং তার পরিবর্তে তাঁর নিন্দা করো, তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করো অথবা নির্যাতন করো, তাহলে তুমি অনন্তকাল জ্বলতে থাকবে এবং কখনই ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ খ্রীষ্ট স্বয়ং পবিত্র আত্মার প্রতিরূপ, ঈশ্বরের মূর্ত প্রকাশ, এমন একজন যাকে ঈশ্বর পৃথিবীতে তাঁর হয়ে কাজ করার দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তাই আমি বলছি যে অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টের কর্মকাণ্ড মেনে নিতে না পারার অর্থ পবিত্র আত্মার নিন্দা করা। যারা পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তাদেরকে প্রদত্ত শাস্তির স্বরূপ সকলের কাছে স্বতঃসিদ্ধ। আমি তোমাকে এটাও বলছি, তুমি যদি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রতিহত করো, যদি তুমি অন্তিম সময়ের খ্রীষ্টকে প্রত্যাখ্যান করো, তবে তোমার পরিণতি বহন করার মতো আর কেউ থাকবে না। উপরন্তু, আজ থেকে তুমি ঈশ্বরের অনুমোদন লাভের আর কোনও সুযোগ পাবে না; এমনকি প্রায়শ্চিত্তের চেষ্টা করলেও, তুমি আর কখনও ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য লাভ করবে না। কারণ তোমার প্রত্যাখ্যান করা, বর্জন করা ব্যক্তি কোনও মানুষ নন, তিনি খ্রীষ্ট। তুমি কি জানো এর পরিণতি কী হবে? তাহলে এটা কোনও ছোটখাটো ভুল হবে না, বরং একটি জঘন্য অপরাধ হবে। তাই আমি সবাইকে উপদেশ দিচ্ছি যে সত্যের সামনে শ্বদন্ত বিকশন কোরো না বা অযৌক্তিক সমালোচনা কোরো না, কারণ শুধুমাত্র সত্যই তোমাকে জীবন দিতে পারে, এবং সত্য ব্যতীত অন্য কিছুই পুনর্জন্ম এবং পুনরায় ঈশ্বরের মুখ দেখার সৌভাগ্য দিতে পারবে না।

পাদটীকা:

ক. নিষ্প্রাণ কাষ্ঠ খণ্ড: একটি চীনা প্রবাদ, যার অর্থ “সাহায্য সীমার বাইরে চলে যাওয়া”।

পূর্ববর্তী: তুমি কি জানতে? ঈশ্বর মানুষের মধ্যে এক মহান কাজ করেছেন

পরবর্তী: তোমার নিয়তির জন্য যথাযথ সৎকার্যসমূহ প্রস্তুত করো

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সেটিংস

  • লেখা
  • থিমগুলি

ঘন রং

থিমগুলি

ফন্টগুলি

ফন্ট সাইজ

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

লাইনের মধ্যে ব্যবধান

পৃষ্ঠার প্রস্থ

বিষয়বস্তু

অনুসন্ধান করুন

  • এই লেখাটি অনুসন্ধান করুন
  • এই বইটি অনুসন্ধান করুন

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন