ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কাজ | উদ্ধৃতি 74

ঈশ্বরের সাথে মানুষের কখনোই তুলনা করা যায় না। তাঁর সারসত্য এবং তাঁর কাজ মানুষের কাছে ধারণাতীত এবং অজ্ঞেয়। ঈশ্বর যদি নিজে মানুষের জগতে তাঁর কাজ না করেন এবং তাঁর বাক্য না বলেন, তাহলে মানুষ কখনোই ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে সক্ষম হবে না। এবং তাই, যারা তাদের সমগ্র জীবন ঈশ্বরের জন্য উৎসর্গ করেছে, তারাও তাঁর অনুমোদন পেতে সক্ষম হবে না। যদি ঈশ্বর কাজ করার জন্য প্রস্তুত না হন, তবে মানুষ যতই ভালো কাজ করুক না কেন, তা সম্পূর্ণ নিষ্ফল হবে, কারণ ঈশ্বরের চিন্তা সর্বদা মানুষের চিন্তার চেয়ে উচ্চতর এবং ঈশ্বরের জ্ঞান মানুষের বোধগম্যতার বাইরে। আর তাই আমি বলি যে যারা ঈশ্বর এবং তাঁর কাজকে “পুরোপুরি বোঝে” বলে দাবি করে তারা অযোগ্য ব্যক্তি; তারা সকলেই দাম্ভিক ও অজ্ঞ। মানুষের ঈশ্বরের কাজকে সংজ্ঞায়িত করা উচিত নয়; অধিকন্তু, মানুষ ঈশ্বরের কাজকে সংজ্ঞায়িত করতে অক্ষম। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মানুষ পিঁপড়ার মতই নগণ্য; তাহলে মানুষ কীভাবে ঈশ্বরের কাজের গভীরতা নির্ণয় করতে পারে? যারা ক্রমাগত বলতে পছন্দ করে, “ঈশ্বর এভাবে বা ওভাবে কাজ করেন না,” বা “ঈশ্বর এইরকম বা ওইরকম”—তারা কি অহংকার করে কথা বলছে না? আমাদের সকলেরই জানা উচিত যে মানুষ, যে আসলে রক্তমাংসের তৈরী, শয়তান দ্বারা ভ্রষ্ট হয়েছে। মানবজাতির স্বভাবই হল ঈশ্বরের বিরোধিতা করা। মানবজাতি ঈশ্বরের সমকক্ষ হতে পারে না, মানবজাতি ঈশ্বরের কাজে পরামর্শ দেওয়ার আশা করতে পারে না। ঈশ্বর কীভাবে মানুষকে পথ দেখাবেন, তা স্বয়ং ঈশ্বরের কাজ। এটাই সঙ্গত যে এটা-ওটা দৃষ্টিভঙ্গি স্বীকার না করে মানুষের উচিত আত্মসমর্পণ করা, কারণ মানুষ ধূলিকণা ব্যতীত আর কিছুই নয়। যেহেতু ঈশ্বরের সন্ধান করা আমাদের অভিপ্রায়, তাই ঈশ্বরের বিবেচনার জন্য আমাদের ধারণাগুলিকে তাঁর কাজের উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়, উপরন্তু, আমাদের ভ্রষ্ট স্বভাবকে ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের কাজের বিরোধিতা করার জন্য প্রয়োগ করা তো আরোই অনুচিত। তার ফলে কি আমরা খ্রীষ্টবিরোধী হয়ে পড়বো না? এই ধরনের মানুষ কীভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারে? যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি যে একজন ঈশ্বর আছেন, এবং যেহেতু আমরা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে চাই এবং তাঁকে দেখতে চাই, তাই আমাদের সত্যের পথ অনুসন্ধান করা উচিত এবং ঈশ্বরের সাথে সুসংগত হওয়ার পথের সন্ধান করা উচিত। আমাদের তাঁর বিরুদ্ধে একগুঁয়ে বিরোধিতা করা উচিত নয়। এই ধরনের কাজের থেকে কীই বা লাভ হতে পারে?

আজ, ঈশ্বর নতুন কাজ করেছেন। তুমি এই বাক্যগুলি গ্রহণ করতে সক্ষম নাও হতে পারো এবং সেগুলি তোমার কাছে অদ্ভুত বলে মনে হতে পারে, তবে আমি তোমাকে তোমার স্বাভাবিকতা প্রকাশ না করার পরামর্শই দেবো, কারণ যারা ঈশ্বরের সামনে ন্যায়পরায়ণতার জন্য প্রকৃতপক্ষেই ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত বোধ করে, শুধুমাত্র তারাই সত্য লাভ করতে পারে, এবং যারা সত্যিকারের ভক্ত তারাই তাঁর দ্বারা আলোকিত ও পরিচালিত হতে পারে। সংযমী প্রশান্তির মাধ্যমে সত্য অনুসন্ধান করলেই ফলাফল লাভ করা যায়, দ্বন্দ্ব ও বিরোধের মাধ্যমে নয়। যখন আমি বলি যে, “আজ, ঈশ্বর নতুন কাজ করেছেন,” তখন আমি ঈশ্বরের দেহরূপে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি বলছি। হতে পারে এই কথাগুলি তোমার উপর কোনও প্রভাব ফেলে না; হতে পারে তুমি সেগুলিকে অবজ্ঞা করো; অথবা হতে পারে সেগুলি তোমার অত্যন্ত আগ্রহের বিষয়। যাই হোক না কেন, আমি আশা করি যারা ঈশ্বরের আবির্ভাবের জন্য সত্যিকারের আকুল, তারা এই ঘটনাটির সম্মুখীন হতে পারবে এবং সেটি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে সেগুলি ভালো করে যাচাই করতে উদ্যোগী হবে; একজন জ্ঞানী ব্যক্তির এটাই করা উচিত।

এইরকম একটি বিষয়ে অনুসন্ধান করা কঠিন নয়, কিন্তু এর জন্য আমাদের প্রত্যেকের এই সত্যটি জানতে হবে: যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের সারসত্যের অধিকারী হবেন, এবং যিনি ঈশ্বরের অবতার তিনি ঈশ্বরের অভিব্যক্তির অধিকারী হবেন। যেহেতু ঈশ্বর দেহরূপ ধারণ করেছেন, সেহেতু তিনি সেই কাজ নিয়ে আসবেন যা তিনি করতে চান, এবং যেহেতু তিনি দেহরূপ ধারণ করেছেন, তিনি তাঁর স্বরূপ প্রকাশ করবেন এবং সেই সত্যটি মানুষের সামনে নিয়ে আসতে সমর্থ হবেন, তাকে জীবন দান করবেন এবং তার জন্য পথ চিহ্নিত করবেন। যে দেহরূপে ঈশ্বরের সারসত্য নেই তাকে ঈশ্বরের অবতার বলে গণ্য করা হয় না; এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা তা যদি মানুষ অনুসন্ধান করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই যে স্বভাব তিনি প্রকাশ করেন এবং যে সকল বাক্য তিনি বলেন, তার থেকেই তা জানতে হবে। অর্থাৎ, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কিনা, এবং এটিই প্রকৃত পথ কিনা, তা সুনিশ্চিত করতে অবশ্যই তাঁর সারসত্যের ভিত্তিতে বিচার করতে হবে। এবং তাই, কেউ ঈশ্বরের দেহরূপী অবতার কি না, তা নির্ণয় করার মূল বিষয়টি তাঁর বাহ্যিক চেহারার পরিবর্তে তাঁর সারসত্য (তাঁর কাজ, তাঁর কথন, তাঁর স্বভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের), উপর নির্ভরশীল। মানুষ যদি শুধু তাঁর বাইরের চেহারাটাই যাচাই করে এবং এর ফলে তাঁর সারসত্যকে উপেক্ষা করে, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে সেই মানুষটি অজ্ঞানতিমিরে আচ্ছন্ন এবং অজ্ঞ। বাইরের চেহারা কখনই সারসত্য নির্ণয় করতে পারে না; উপরন্তু, ঈশ্বরের কাজ কখনোই মানুষের ধারণার সাথে সঙ্গত হতে পারে না। যীশুর বাহ্যিক চেহারা কি মানুষের ধারণার বিপরীত ছিল না? তাঁর মুখমণ্ডল ও পোশাক কি তাঁর আসল পরিচয় সম্পর্কে কোনো সূত্র দিতে অক্ষম ছিল না? প্রথম দিকের ফরিশীরা যে যীশুর বিরোধিতা করেছিল তার সুনির্দিষ্ট কারণ কি এটাই ছিল না যে তারা শুধুমাত্র তাঁর বাহ্যিক রূপই দেখেছিল আর তাঁর মুখনিঃসৃত বাক্যকে নিজেদের অন্তরে গ্রহণ করেনি? আমি আশা করি যে প্রত্যেক ভাই এবং বোন যারা ঈশ্বরের আবির্ভাবের সন্ধান করে তারা এই বিয়োগান্তক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে না। তোমরা কিছুতেই যেন আধুনিক কালের ফরিশীদের মতো হয়ে উঠে আবার ঈশ্বরকে ক্রুশবিদ্ধ কোরো না। কীভাবে ঈশ্বরের প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাবে তা তোমার যত্ন সহকারে বিবেচনা করা উচিত, এবং কীভাবে তুমি সত্যের কাছে আত্মসমর্পণকারী একজন ব্যক্তি হয়ে উঠবে সে সম্পর্কে তোমার পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। যারা যীশুর মেঘে চড়ে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছে, এটা তাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। আমাদের উচিত আমাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকে ঘষেমেজে পরিষ্কার করে নেওয়া, এবং অতিরঞ্জিত কাল্পনিক কথায় বিভ্রান্ত না হওয়া। আমাদের উচিত ঈশ্বরের ব্যবহারিক কাজ সম্পর্কে চিন্তা করা এবং ঈশ্বরের ব্যবহারিক দিকটি একবার দেখে নেওয়া। দিবাস্বপ্নে নিজেকে হারিয়ে ফেলো না, সর্বদা সেই দিনের জন্য আকুল হও যেদিন প্রভু যীশু, মেঘের উপর চড়ে, হঠাৎ তোমাদের মধ্যে নেমে আসবেন, এবং তোমরা যারা তাঁকে কখনও চেনোনি বা দেখোনি এবং কীভাবে তার ইচ্ছা পূরণ করবে তা জানো না, তাদের নিয়ে যাবেন। আরো ব্যবহারিক বিষয়ে চিন্তাভাবনা করাই বেশি যুক্তিযুক্ত হবে!

—বাক্য, খণ্ড ১, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও তাঁর কার্য, ভূমিকা

প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।

সম্পর্কিত তথ্য

ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: কর্মের তিনটি পর্যায় | উদ্ধৃতি 28

রাজ্যের যুগে, নিজের কর্ম পদ্ধতির পরিবর্তন আনতে এবং তা দিয়ে সমগ্র যুগের কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য তিনি নতুন যুগের সূচনায় তাঁর বাক্য ছড়িয়ে...

ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: জীবনে প্রবেশ | উদ্ধৃতি 463

প্রতিটি যুগে ঈশ্বর তাঁর স্বভাবের কথা যেভাবে ব্যক্ত করেছেন তা বাস্তবসম্মত ভাষায় এমনভাবে বোঝাতে পারো, যা সেই যুগের তাৎপর্য যথাযথভাবে প্রকাশ...

ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: জীবনে প্রবেশ | উদ্ধৃতি 392

প্রাচীনকালে অনেকেই দুরন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষায় এবং বিশ্বাস অনুসারে এইভাবেই ঈশ্বরকে চেয়েছেন। তাদের চাওয়া ছিল একান্ত ভাবেই তাদের নিজস্ব কামনার...

ঈশ্বরের প্রতিদিনের বাক্য: জীবনে প্রবেশ | উদ্ধৃতি 390

যদিও অনেক মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, কিন্তু খুব কম মানুষই জানে ঈশ্বরে বিশ্বাসের অর্থ কী এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণের জন্য তাদের কোন কাজটি অবশ্যই...

Messenger-এর মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন