কী করে ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করা যায়
কেউ যখন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তার ঠিক কীভাবে ঈশ্বরের সেবা করা উচিত? যারা ঈশ্বরের সেবা করে, তাদের কী কী শর্ত পূরণ করা উচিত, আর কোন কোন সত্য উপলব্ধি করা উচিত? আর কোথায় কোথায় তোমাদের সেবা থেকে তোমরা বিচ্যুত হয়ে পড়তে পারো? এই সমস্ত বিষয়ের উত্তর তোমাদের জানতে হবে। সেই উত্তরগুলি স্পর্শ করে যায় তোমাদের ঈশ্বরে বিশ্বাস কেমন, কেমনভাবে তোমরা পবিত্র আত্মার নির্দেশিত পথে চলো এবং সমস্ত কিছুতে ঈশ্বরের সমন্বয়সাধনের কাছে সমর্পণ করো, এই সবকিছুকেই, আর এইভাবে তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের কার্যের প্রতিটি ধাপ বুঝতে সাহায্য করে। এই পর্যায়ে যখন পৌঁছবে, তখন তোমরা উপলব্ধি করতে পারবে ঈশ্বরে বিশ্বাস আসলে কী, কী করে সঠিকভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে হয়, আর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতি রেখে চলার জন্য কী করা উচিত। এই উপলব্ধি তোমাদের সম্পুর্ণ ও চূড়ান্তরূপে ঈশ্বরের কার্যের প্রতি অনুগত করে তুলবে; তোমাদের কোন অভিযোগ থাকবে না, এবং তোমরা ঈশ্বরের কার্যের বিচার বা বিশ্লেষণ করবে না, বা তা নিয়ে গবেষণাও করবে না। যার ফলে, তোমরা আমৃত্যু ঈশ্বরের অনুগত থাকতে সক্ষম হবে, ঈশ্বরকে সম্মতি দেবে তোমাদের পরিচালিত করতে এবং মেষের মতো তোমাদের নিধন করতে, যাতে তোমরা ১৯৯০ এর দশকের পিতরের মতো হয়ে উঠতে পারো, এবং ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার অবস্থায় পৌঁছলেও বিন্দুমাত্র অভিযোগ না করে ঈশ্বরকে সর্বান্তঃকরণে ভালবাসতে পারো। একমাত্র তবেই তোমরা ১৯৯০ এর দশকের পিতরের মতো করে জীবনযাপন করতে পারবে।
সংকল্প করলে সবাই ঈশ্বরের সেবা করতে পারে—কিন্তু যারা ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণ যত্নশীল এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা উপলব্ধি করতে পারে, একমাত্র তারাই ঈশ্বরের সেবা করার যোগ্যতাসম্পন্ন ও অধিকারী। তোমাদের মধ্যে আমি এটা আবিষ্কার করেছি: অনেক মানুষ বিশ্বাস করে, যতক্ষণ তারা আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করছে, ঈশ্বরের জন্য পথে নামছে, ঈশ্বরের জন্য নিজেকে ব্যয় করছে ও বিষয়বস্তু ত্যাগ করছে, এবং এই ধরণের অন্যান্য কাজ করছে, এর মাধ্যমে তারা ঈশ্বরের সেবা করছে। এমনকী আরো বেশি সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করে যে ঈশ্বরের সেবা করার অর্থ একটি বাইবেল হাতে নিয়ে দৌড়ে বেড়ানো, স্বর্গ-রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা, এবং অনুশোচনা ও স্বীকারোক্তি করানোর মাধ্যমে মানুষকে উদ্ধার করা। তাছাড়াও আরও অনেক ধর্মীয় আধিকারিক আছে যারা মনে করে, ঈশ্বরের সেবা করার মানে সেমিনারি থেকে উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উপাসনাস্থলে গিয়ে ধর্মপ্রচার করা, এবং বাইবেলের মূলগ্রন্থ থেকে পাঠ করে মানুষকে শিক্ষা দেওয়া। এছাড়াও, দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে এমন লোক আছে যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরের সেবা করা মানে তাদের ভাই-বোনেদের মধ্যে থেকে অসুস্থকে সারিয়ে তোলা ও ভূত তাড়ানো, অথবা তাদের জন্য প্রার্থনা করা, বা তাদের সেবা করা। তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা মনে করে ঈশ্বরের সেবা করার অর্থ ঈশ্বরের বাক্য ভোজন ও পান করা, প্রতিদিন ঈশ্বরের প্রার্থনা করা, আর সমস্ত জায়গার গির্জাতে যাওয়া ও সেখানকার কাজ করা। কিছু ভাই বোন আছে যারা মনে করে বিবাহ ও সংসার না করা, এবং সমস্ত সত্তা ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করাই ঈশ্বরের সেবা। তবে খুব কম লোকই জানে ঈশ্বর সেবার প্রকৃত অর্থ কী। আকাশের তারার মতো অগনিত মানুষ আছে যারা ঈশ্বরের সেবা করে, কিন্তু যারা প্রত্যক্ষভাবে সেবা করতে পারে, এবং যারা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করতে সক্ষম, সেরকম মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমি এ কথা কেন বলছি? এ কথা বলছি কারণ তোমরা আদৌ বোঝো না “ঈশ্বরের সেবা” কথাটার সার সত্য কী। আর ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতি রেখে কীভাবে সেবা করতে হয় সে সম্পর্কেও তোমাদের জ্ঞান অতি সামান্য। ঈশ্বরের কীরকম সেবা তাঁর ইচ্ছার সাথে সমন্বয়সাধন করতে পারে সেকথা বোঝার মতো মানুষের এখন খুবই আশু প্রয়োজন।
তোমরা যদি ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতি রেখে তাঁর সেবা করতে চাও, তোমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে ঈশ্বরের কেমন মানুষ পছন্দ, কীরকম মানুষদের তিনি ঘৃণা করেন, কেমন মানুষদের তিনি নিখুঁত করে তোলেন, আর কী ধরণের মানুষ ঈশ্বরের সেবা করার যোগ্য। অন্ততঃপক্ষে এই জ্ঞানটুকু তোমাদের থাকতে হবে। তাছাড়াও, ঈশ্বরের কাজের লক্ষ্য, এবং এখানে বর্তমানে কী কাজ তিনি করবেন, তাও তোমাদের জানতে হবে। এই উপলব্ধি হওয়ার পর, ঈশ্বরের পথপ্রদর্শনের মাধ্যমে প্রথমে তোমাদের প্রবেশ করতে হবে এবং ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। একবার তোমাদের ঈশ্বরের বাক্যের প্রকৃত অভিজ্ঞতা হলে, আর ঈশ্বরের কাজকে সঠিকভাবে জানতে পারলে, তোমরা ঈশ্বরের সেবা করার উপযুক্ত হয়ে উঠবে। আর যখন তোমরা তাঁর সেবা করবে, ঈশ্বর তোমাদের আধ্যাত্মিক চক্ষু উন্মীলিত করে দেবেন এবং তাঁর কাজের বৃহত্তর উপলব্ধি অর্জন করার ও আরো স্পষ্ট করে তা দেখার অনুমতি প্রদান করবেন। যখন এই বাস্তবতায় তোমরা প্রবেশ করবে, তোমাদের অভিজ্ঞতা আরও গভীর ও বাস্তব হয়ে উঠবে, আর তোমাদের মধ্যে যাদের এই অভিজ্ঞতা হয়েছে তারা বিভিন্ন গির্জায় গিয়ে তোমাদের ভাই-বোনেদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারবে, যাতে তোমরা প্রত্যেকে একে অপরের দক্ষতাকে ব্যবহার করে নিজেদের অসম্পূর্ণতাকে পরিপূরণ করতে পারো, এবং তোমাদের আত্মায় সমৃদ্ধতর জ্ঞান অর্জন করতে পারো। একমাত্র এই প্রভাব অর্জনের পরেই তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করতে সক্ষম হবে এবং তোমাদের সেবার সময়কালে ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে পারবে।
যারা ঈশ্বরের সেবা করে তাদের ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ হতে হবে, ঈশ্বরের পছন্দসই হতে হবে, এবং ঈশ্বরের প্রতি চরম আনুগত্যের যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। তুমি নিভৃতে কাজ করো বা জনসমক্ষে, তুমি ঈশ্বরের সামনে তাঁর আনন্দ অর্জনে সক্ষম, তুমি ঈশ্বরের সামনে দৃঢ়ভাবে দণ্ডায়মান হতে সক্ষম, এবং অন্যেরা তোমার সাথে যেমন আচরণই করুক না কেন, যে পথে চলা উচিত তুমি সর্বদা সেই পথে চলো, আর ঈশ্বরের অর্পিত দায়িত্বের প্রতি সবরকম যত্ন নাও। একমাত্র এই রকম মানুষই ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ। ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ মানুষেরা যে প্রত্যক্ষভাবে তাঁর সেবা করতে সক্ষম, তার কারণ হচ্ছে তাদের উপর ঈশ্বরের মহান দায়িত্ব ও কর্মভার অর্পিত, তারা ঈশ্বরের হৃদয়কে নিজের করে নিতে পারে, ঈশ্বরের কর্মভারকে নিজের মনে করে, এবং তারা তাদের ভবিষ্যৎ প্রত্যাশাকে বিবেচনার মধ্যে রাখে না: এমনকি যখন তাদের কোনো প্রত্যাশা থাকে না, এবং কিছু লাভ করার সম্ভাবনাও থাকে না, তখনও তারা প্রেমপূর্ণ হৃদয়ে সর্বদা ঈশ্বরে বিশ্বাস রেখে চলে। আর তাই, এইরকম মানুষই ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ। ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ মানুষেরা তাঁর বিশ্বস্তও বটে: শুধুমাত্র ঈশ্বরের বিশ্বস্তরাই তাঁর অস্থিরতা ও তাঁর চিন্তার ভাগ নিতে পারে, এবং তাদের দেহ যন্ত্রণাক্লিষ্ট ও দুর্বল হলেও ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য তারা যন্ত্রণা সহ্য করতে ও নিজের ভালবাসার বস্তু ত্যাগ করতেও সক্ষম। এরকম ব্যক্তিদেরই ঈশ্বর আরও বেশি ভার অর্পণ করেন, আর ঈশ্বরের অভিপ্রায় কী তা এই ধরণের ব্যক্তির সাক্ষ্যেই প্রকাশিত হয়। তাই এই মানুষেরা ঈশ্বরের প্রিয়, তারা ঈশ্বরের সেই ভৃত্য যারা ঈশ্বরের হৃদয়ের অনুসারী, এবং একমাত্র এই ধরণের মানুষই ঈশ্বরের সাথে মিলিতভাবে শাসন করতে পারে। যখন তুমি সত্যিই ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠো, সেটাই সেই নির্দিষ্ট সময় যখন তুমি ঈশ্বরের সাথে মিলিতভাবে শাসন করবে।
ঈশ্বরের অর্পিত সমগ্র মানবজাতির মুক্তির কার্যের দায়িত্ব সম্পাদন করতে যীশু সমর্থ ছিলেন, কারণ তিনি নিজের জন্য কোনো পরিকল্পনা বা ব্যবস্থা না করে ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণরূপে যত্নবান ছিলেন। সুতরাং তিনিও ছিলেন ঈশ্বরের—স্বয়ং ঈশ্বরের—অন্তরঙ্গ, যা তোমরা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছ। (আসলে, তিনিই ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর, যাঁর সাক্ষ্য ঈশ্বর নিজে বহন করেছিলেন। যীশুর ঘটনাকে ব্যবহার করে বিষয়টা উপস্থাপিত করার জন্য আমি এই কথার উল্লেখ করেছি।) তিনি সর্বদা ঈশ্বরের পরিচালনামূলক পরিকল্পনাকে কেন্দ্রে রাখতে সক্ষম ছিলেন, এবং সবসময় স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনা করতেন ও তাঁর ইচ্ছা কামনা করতেন। তিনি প্রার্থনা করে বলতেন: “পিতা ঈশ্বর! সেটাই সম্পাদন করো যা তোমার ইচ্ছা; তোমার পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য করো, আমার আকাঙ্খা অনুসারে নয়। মানুষ দুর্বল হতে পারে, কিন্তু তুমি কেন তার প্রতি মনোযোগী হবে? যে মানুষ তোমার হাতে পিপীলিকার মত, সে কীভাবে তোমার বিবেচনার যোগ্য হতে পারে? আমার হৃদয়ে, আমি কেবল তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে চাই, আর চাই যে তুমি তোমার নিজের ইচ্ছায় যা উচিত মনে করবে আমার মধ্যে তাই যেন করতে পারো”। জেরুশালেম যাওয়ার পথে যীশু নিদারুণ যন্ত্রণায় ছিলেন, যেন তাঁর হৃদয় ছুরিকাঘাতে বিদীর্ণ হচ্ছিল, তবুও নিজের বাক্য থেকে পশ্চাদপসরণ করার ন্যুনতম অভিপ্রায়ও তাঁর ছিল না; এক বলশালী শক্তি সর্বক্ষণ তাঁকে সেইদিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য করছিল যেখানে তিনি ক্রুশবিদ্ধ হবেন। পরিশেষে, তাঁকে পেরেক দিয়ে ক্রুশে বিদ্ধ করা হলো, এবং মানবজাতির মুক্তির কাজ সম্পূর্ণ করে তিনি পাপী দেহের অনুরূপ হলেন। তিনি মৃত্যু ও মৃতস্থানের শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত হয়েছিলেন। নশ্বরতা, নরক ও মৃতস্থান তাঁর সম্মুখে তাদের ক্ষমতা হারিয়েছিল, এবং তাঁর কাছে পরাজিত হয়েছিল। তিনি তেত্রিশ বছর বেঁচে ছিলেন, যার সমস্তটাতেই তিনি সর্বক্ষণ ঈশ্বরের সমসাময়িক কর্ম অনুযায়ী ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, নিজের ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির কথা কখনো ভাবেন নি, এবং সবসময় পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছার কথা চিন্তা করেছেন। তাই, তাঁর বাপ্তিষ্ম নেওয়ার পর ঈশ্বর বললেন: “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, আমার পরম প্রীতির পাত্র”। ঈশ্বরের সম্মুখে ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করার কারণে ঈশ্বর সমগ্র মানবজাতিকে মুক্তি দেওয়ার বিশাল কর্মভার তাঁর কাঁধে অর্পণ করেন এবং তাঁকে দিয়ে সেই কাজ সম্পূর্ণ করান। আর তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ কর্ম সম্পাদনের যোগ্য ও উপযুক্ত ছিলেন। তাঁর সমগ্র জীবৎকালে তিনি ঈশ্বরের জন্য অপরিসীম কষ্ট সহ্য করেছেন, এবং অসংখ্যবার শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হয়েছেন, কিন্তু কখনও নিরুৎসাহ হননি। ঈশ্বর তাঁকে এরকম এক বিশাল কাজ অর্পণ করেছিলেন কারণ তিনি তাঁকে বিশ্বাস করতেন ও ভালবাসতেন, তাই ঈশ্বর স্বয়ং বলেছিলেন: “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, আমার পরম প্রীতির পাত্র”। সেই সময়, একমাত্র যীশুই পারতেন এই দায়িত্ব পালন করতে। এবং ঈশ্বর যে অনুগ্রহের যুগে মানবজাতির মুক্তির কাজ সম্পূর্ণ করেছিলেন, এটা ছিল তার একটা ব্যবহারিক দিক।
যীশুর মতো তোমরাও যদি ঈশ্বরের অর্পিত কর্মভারের প্রতি পরিপূর্ণরূপে যত্নশীল হতে সক্ষম হও, যদি নিজের দৈহিক ইচ্ছা উপেক্ষা করতে পারো, তবে ঈশ্বর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কাজ বিশ্বাস করে তোমাদের অর্পণ করবেন, যাতে তোমরা ঈশ্বরের সেবা করার শর্তগুলি পূরণ করতে পারো। একমাত্র এই পরিস্থিতিতেই তোমরা সাহস করে বলতে পারবে যে তোমরা ঈশ্বরের কাজ করছো এবং তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছো, আর একমাত্র তাহলেই তোমরা একথা বলার সাহস করবে যে তোমরা প্রকৃত অর্থে ঈশ্বরের সেবা করছো। যীশুর উদাহরণের সাথে তুলনা করে একথা বলার সাহস কি তোমার আছে যে তুমি ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ? একথা বলার সাহস কি তুমি করতে পারো যে তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করছো? তুমি কি সাহস করে একথা বলতে পারবে যে তুমি প্রকৃত অর্থে ঈশ্বরের সেবা করছো? আজ, তুমি বোঝো না কেমন করে ঈশ্বরের সেবা করতে হয়, তোমার কি একথা বলার সাহস আছে যে তুমি ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ? তুমি যদি বলো যে তুমি ঈশ্বরের সেবা করো, তবে তা কি তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মবিদ্রোহী কথা নয়? ভেবে দেখো: তুমি কি ঈশ্বরের সেবা করছো, না নিজের? তুমি শয়তানের সেবা করো, অথচ জেদের সাথে বলো যে তুমি ঈশ্বরের সেবা করছো—এভাবে কি তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহী কথা বলছো না? আমার আড়ালে অনেকেই ব্যাকুলভাবে পদমর্যাদা কামনা করে, অপরিমিত আহারে নিমজ্জিত থাকে, নিদ্রামগ্ন থাকতে ভালোবাসে এবং দেহকে পূর্ণ মনোযোগ দেয়, সবসময় ভীত থাকে যে দেহের মুক্তির কোনো রাস্তা নেই। তারা গির্জায় তাদের প্রকৃত দায়িত্ব পালন করে না, বরং বিনা প্রতিদানে গির্জার সুবিধা ভোগ করে, নাহলে তারা তাদের ভাই-বোনেদের আমার বাক্য দিয়ে তিরস্কার করে, কর্তৃত্বের অবস্থান থেকে অন্যের উপর প্রভুত্ব করে। এরা বলতে থাকে যে এরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় কাজ করছে, আর সবসময়েই বলে যে তারা ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ—এমনটা কি হাস্যকর নয়? যদি তোমার উদ্দেশ্য সঠিক হয়, কিন্তু তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করতে অক্ষম হও, তবে সে তোমার মূর্খতা; কিন্তু তোমার উদ্দেশ্যই যদি সঠিক না হয়, অথচ তুমি বলো যে তুমি ঈশ্বরের সেবা করো, তাহলে তুমি আসলে এমন একজন যে ঈশ্বরের বিরোধিতা করছে, আর ঈশ্বরের দ্বারা তোমার শাস্তি পাওয়া উচিত। এরকম মানুষের প্রতি আমার কোনো সমবেদনা নেই। ঈশ্বরের আবাসস্থলে তারা কোনো প্রতিদান ছাড়াই সুযোগসুবিধা ভোগ করে, সবসময় দেহের স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি লালায়িত থাকে, আর ঈশ্বরের স্বার্থ বিষয়ে বিবেচনা করে না। নিজেদের জন্য যা ভালো তারা সর্বক্ষণ তারই সন্ধানে থাকে, ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি মনোযোগ দেয় না। তাদের কোনো কৃতকার্যের উপর ঈশ্বরের আত্মার খুঁটিয়ে দেখা তারা মানতে চায় না। তারা তাদের ভাই-বোনেদের সাথে সর্বক্ষণ কৌশল ও প্রতারণা করছে, তারা আঙুর ক্ষেতের শিয়ালের মতো দুমুখো, সবসময় আঙুর চুরি করছে এবং আঙুরক্ষেতকে পদদলিত করছে। এরকম মানুষ কি কখনও ঈশ্বরের অন্তরঙ্গ হতে পারে? তুমি কি ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাওয়ার যোগ্য? তোমার জীবন অথবা গির্জার জন্য তুমি কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করো না, তুমি কি ঈশ্বরের অর্পিত কর্মভার নেওয়ার যোগ্য? কে সাহস করবে তোমার মতো মানুষকে বিশ্বাস করতে? তুমি যদি এভাবে সেবা করো, তাহলে ঈশ্বর কি তোমায় বৃহত্তর কার্য অর্পণ করবেন? তাতে কি কার্য বিলম্বিত হবে না?
আমি এ কথা বলছি যাতে তোমরা জানতে পারো ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে সেবা করতে গেলে কোন কোন শর্ত পুরণ আবশ্যিক। যদি তোমরা তোমাদের হৃদয় ঈশ্বরকে দিতে না পারো, যদি ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি যীশুর মতো পূর্ণ যত্ন না নাও, তাহলে ঈশ্বর তোমাদের বিশ্বাস করতে পারবেন না, এবং পরিশেষে তোমাদের বিচার করবেন। আজ সম্ভবত ঈশ্বরের প্রতি সেবায় তুমি সবসময়েই ঈশ্বরকে প্রতারণার মনোবৃত্তি পোষণ করো এবং তাঁর সাথে তাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণ করো। সংক্ষেপে বলতে গেলে, তুমি যদি ঈশ্বরকে প্রতারণা করো, অন্য সব কিছু নির্বিশেষে তোমার উপর নির্মম বিচার নেমে আসবে। তোমাদের উচিত ঈশ্বর সেবার সঠিক পথে সদ্য-প্রবেশের সুবিধা গ্রহণ করা, যাতে তোমাদের আনুগত্যকে বিভাজিত হতে না দিয়ে সর্বপ্রথমে তোমাদের হৃদয় ঈশ্বরকে অর্পণ করতে পারো। তুমি ঈশ্বরের সম্মুখীন বা অন্য মানুষের, তা নির্বিশেষে, তোমার হৃদয় যেন সর্বদা ঈশ্বরে নিয়োজিত থাকে, তুমি যেন যীশুর মতো করে ঈশ্বরকে ভালবাসতে স্থিরসংকল্প হও। এইভাবে, ঈশ্বর তোমাকে নিখুঁত করে তুলবেন, যাতে তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একজন সেবক হয়ে ওঠো। তুমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে চাও, তোমার সেবাকে তাঁর ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে তুলতে চাও, তবে তোমাকে ঈশ্বর-বিশ্বাস সম্পর্কে পূর্বের সমস্ত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে, বদলে ফেলতে হবে সমস্ত পুরোনো পথ যা তুমি ব্যবহার করতে ঈশ্বরের সেবা করার জন্য, যাতে তুমি আরও বেশি করে ঈশ্বরের দ্বারা নিখুঁত হয়ে উঠতে পারো। এর ফলে, ঈশ্বর তোমাকে পরিত্যাগ করবেন না, এবং পিতরের মতো তুমি হয়ে উঠবে ঈশ্বর-প্রেমী মানুষের অগ্রদূত। যদি তুমি অনুতপ্ত না হও, তবে তোমার অন্তিম পরিণতিও যিহুদার মতোই হবে। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তাদের সকলেরই এই জ্ঞান থাকা উচিত।
The Bible verses found in this audio are from পবিএ বাইবেল CL Bible (BSI) (BENGALCL-BSI) and the copyright to the Bible verses belongs to the Bible Society of India. With due legal permission, they are used in this production.
প্রতিদিন আমাদের কাছে 24 ঘণ্টা বা 1440 মিনিট সময় থাকে। আপনি কি ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর বাক্য শিখতে 10 মিনিট সময় দিতে ইচ্ছুক? শিখতে আমাদের ফেলোশিপে যোগ দিন। কোন ফি লাগবে না।